মিশরের মসজিদে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রকৃত হোতা কারা?
(last modified Sat, 25 Nov 2017 11:03:13 GMT )
নভেম্বর ২৫, ২০১৭ ১৭:০৩ Asia/Dhaka

মিশরের বিমান বাহিনীর জঙ্গি বিমান উত্তর সিনাইয়ে বোমা-হামলা চালিয়ে একদল সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে। গতকাল (শুক্রবার) সেখানকার একটি মসজিদে  সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরই এই হামলা চালানো হল। 

সুফি আর রাওদা নামের ওই মসজিদে তাকফিরি সন্ত্রাসীদের হামলায় অন্তত ২৫০ জন মুসুল্লি নিহত ও একশ জনেরও বেশি আহত হন। ভয়াবহ ওই হামলার প্রেক্ষাপটে মিশরে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা  হয়েছে।

সাধারণত মিশরের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা ও ইসলামী সুফিবাদে বিশ্বাসী মুসলমানরা ওই মসজিদে নামাজ পড়তে যান বলে ওই মসজিদকে টার্গেট করা হয়েছে বলে কোনো কোনো সূত্র জানিয়েছে। মিশরের আল আজহারের প্রধান আহমাদ আততাইয়্যেব এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।   

ইরাক ও সিরিয়ায় তাকফিরি-ওয়াহাবি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশ তথা আইএসআইএল-এর সর্বশেষ ঘাঁটিগুলোর পতনের প্রেক্ষাপটে মিশরে তাকফিরি গোষ্ঠীর এ হামলা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে প্রকাশ্য ময়দানে দায়েশের পরাজয় ঘটলেও তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতার অবসান খুব সহজেই হচ্ছে না।

তবে বিশেষভাবে লক্ষণীয় ব্যাপার হল মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আলসিসি মধ্যপ্রাচ্যে নতুন যে কোনো যুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন। বিশেষ করে  সাম্প্রতিক সময়ে লেবাননের ওপর নতুন করে যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়ার যে পাঁয়তারা সৌদি সরকার ও দখলদার ইসরাইল করছিল তাতে সহযোগী হতে রাজি হননি সিসি।

 লেবাননের জনপ্রিয় ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহকে দুর্বল করার জন্য সৌদি সরকার ও ইসরাইল এই যুদ্ধ শুরু করতে চায়। কিন্তু সিসি তার বিরোধিতা করায় মিশরকে এই সন্ত্রাসী হামলার শিকার করা হয়েছে বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন। লেবাননের হিজবুল্লাহ এই সন্ত্রাসী হামলাকে তাকফিরি-ওয়াহাবিদের কাজ বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।  

মিশরের সিনাইয়ে দীর্ঘকাল ধরেই অশান্তি ও সন্ত্রাস জিইয়ে রেখেছে বিদেশী মদদপুষ্ট তাকফিরি সন্ত্রাসীরা। ইসরাইল সীমান্তের অদূরে সক্রিয় এইসব সন্ত্রাসীকে ইসরাইলের মদদপুষ্ট বলে মনে করা হয়।  অথচ ইসরাইল এই সন্ত্রাসীদেরকে ইখওয়ান তথা মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে প্রচার করে এসেছে। মিশরের সিসি সরকারের সঙ্গে ইখওয়ানের সম্পর্ক খুব খারাপ হয়ে পড়ায় ইসরাইল এ বিষয়টিকে ব্যবহার করে সিনাইসহ গোটা মিশরের অশান্তি জিইয়ে রাখতে চায় বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন। কারণ, মিশরে স্থিতিশীলতা থাকলে দেশটির সরকার আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এমন কিছু গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে পারে যা সৌদি-ইহুদিবাদী ও মার্কিন মহলের স্বার্থের অনুকূল নাও হতে পারে। 

মিশরের সিনাইয়ে তাকফিরিদের বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলা থেকে বোঝা যায় তারা ইরাক ও সিরিয়ায় বিধ্বস্ত হওয়ার পর এখন উত্তর আফ্রিকায় সক্রিয় হতে চায়। মিশরের সিসি সরকারও তাকফিরি সন্ত্রাসীদের কঠোর জবাব দেয়ার জোরালো অঙ্গীকার করায় উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলে তাকফিরি সন্ত্রাসীদের গোপন ও প্রকাশ্য তৎপরতা ঠেকাতে যুদ্ধের নতুন ফ্রন্ট খোলা অনিবার্য হয়ে পড়বে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। #  

পার্সটুডে/এমএএইচ/২৫ 
 

ট্যাগ