‘গাজা থেকে ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রের ৬৫ শতাংশই ঠেকাতে পারে নি আয়রন ডোম’
(last modified Mon, 06 May 2019 18:03:51 GMT )
মে ০৭, ২০১৯ ০০:০৩ Asia/Dhaka
  • ‘গাজা থেকে ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রের ৬৫ শতাংশই ঠেকাতে পারে নি আয়রন ডোম’

সম্প্রতি অবরুদ্ধ গাজা উপদ্বীপ থেকে ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্র বা রকেটের ৬৫ শতাংশই ঠেকাতে পারে নি ইহুদিবাদী ইসরাইলের কথিত অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম।

ইসরাইলের সামরিক গোয়েন্দা বাহিনী রিসার্চ ডিপার্টমেন্টের সাবেক প্রধান এ কথা স্বীকার করেছেন। তিনি খোলাখুলি ভাবেই স্বীকার করেন, গাজা থেকে ছোঁড়া সব রকেট ঠেকাতে পারে নি আয়রন ডোম।

ইহুদিবাদী ইসরাইলের নিজের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা আয়রন ডোম নিয়ে এর আগে কথার ফুলঝুরি ছুটিয়েছে তেল আবিব এবং একে অত্যন্ত নিখুঁত হিসেবে তুলে ধরার সব রকম প্রয়াসও চালিয়েছে।

ইসরাইলি দৈনিক জেরুজালেম পোস্টকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রিসার্চ ডিপার্টমেন্টের সাবেক প্রধান ইয়াকোভ আমিড্রোর দাবি করেন, অনেকগুলো ক্ষেপণাস্ত্র খুবই নিকট থেকে ছোঁড়া হয়েছে। ফলে এ সব ঠেকানোর ব্যবস্থা নেয়ার মতো সময়ও পায় নি আয়রন ডোম।

এ ছাড়া, খালি বা জনমানব বসতিহীন অঞ্চলকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রকে ঠেকানোর কোনও চেষ্টাও করে না আয়রন ডোম। আয়রন ডোমকে তৈরি করার সময়ই এমন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

আয়রন ডোম তৎপরতা চালাচ্ছে

চলতি মাসের ৪ তারিখে গাজা থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া শুরু হয়। এ ভাবে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ৬৯০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়। এর মধ্যে আয়রন ডোম মাত্র ২৪০টিকে প্রতিহত করতে পেরেছে। গাজার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৪ ইসরাইলি নিহত হওয়ার কথাও স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে তেল আবিব।

এদিকে, ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন ইসলামি জিহাদের সশস্ত্র শাখা আল-কুদস ব্রিগেড নিজেদের তৈরি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করেছে। ইহুদিবাদী ইসরাইলের অধিকৃত অঞ্চল লক্ষ্য করে নিক্ষেপের মাধ্যমে বদর-৩ নামের এ ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করা হয়।

এর আগে একই ধাঁচের ক্ষেপণাস্ত্র ৪০ কিলোগ্রাম বোমা বা ওয়ারহেড বহন করতে পারলেও বদর-৩ বহন করতে পারে আড়াইশ কিলোগ্রাম বোমা। বোমা বহনের সক্ষমতা এক লাফে বাড়িয়ে তোলার মধ্য দিয়ে আল কুদস ব্রিগেডের প্রযুক্তিগত দক্ষতাই প্রমাণিত হচ্ছে। এদিকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আল-কুদস ব্রিগেড বলেছে যে, এরপর যা আসছে তা হবে আরও অনেক বড় এবং শক্তিশালী।

বদর -৩

পাশাপাশি, ইসরাইলি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে স্বীকার করা হয়েছে যে আয়রন ডোম পরিচালনা ব্যবস্থা খুবই ব্যয়বহুল। একবার মাত্র ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে আয়রন ডোমের ব্যয় হয় ৮০ হাজার ডলার। একে অধিক কার্যকর করার জন্য ডেভিড স্লিং বা অ্যারো ২ ক্ষেপণাস্ত্র সহযোগে ব্যবহার করা হলে এ খরচের পরিমাণ এক ধাক্কায় ২০ লাখ ডলার স্পর্শ করে।

রকেট প্রতিহত করার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিও করতে দীর্ঘ সময়ের দরকার। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলনগুলোকে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে তেমন কোনও খরচের ধকল সামলাতে হয় না।  তারা যে সব রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে তা অতি অল্প খরচেই তৈরি করা যায়। ফিলিস্তিনিদের ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার এতোই সমৃদ্ধ যে, ইসরাইল হাইওম নামের সংবাদ মাধ্যম স্বীকার করেছে যে মজুদ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরাইলের শত্রুরা তেল আবিবের বিরুদ্ধে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ অনায়াসে চালিয়ে যেতে পারবে। এ জন্য তাদেরকে মোটেও নতুন করে সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করতে হবে না।# 

পার্সটুডে/মূসা রেজা/৬