ইরাকে ন্যাটো জোটের সেনা আট গুণ বাড়ানোর আসল রহস্য!
(last modified 2021-02-20T14:20:42+00:00 )
ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২১ ২০:২০ Asia/Dhaka
  • ন্যাটো জোটের মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ
    ন্যাটো জোটের মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ

ইরাকে ন্যাটো জোটের সেনা-সংখ্যা ৫০০ থেকে  ৮ গুণ বাড়িয়ে চার হাজার করা হবে বলে জানিয়েছে ন্যাটো জোট।

ন্যাটো জোটের মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ দাবি করেছেন, ইরাকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশ বা আইএস-এর শক্তিশালী হয়ে ওঠা ঠেকানোর জন্যই পর্যায়ক্রমে ন্যাটোর সেনা-সংখ্যা ৮ গুণ বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে! ইরাকে ২০০৩ সালে মার্কিন হামলার পথ ধরেই ন্যাটো জোটের সেনা মোতায়েন শুরু হয়েছিল। তেল-সমৃদ্ধ এই দেশটিতে ন্যাটো জোটের নীতির এই আমূল তথা ১৮০ ডিগ্রি পরিবর্তনের রহস্যটা কী? 

ইরাকে গত বছরের জানুয়ারি মাসে ইরানের কুদ্‌স্‌ ব্রিগেডের প্রধান জেনারেল কাসেম সুলায়মানিকে হত্যার কারণে ইরান-মার্কিন উত্তেজনা জোরদারের প্রেক্ষাপটে ও করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে ন্যাটো জোটভুক্ত পশ্চিমা দেশগুলো ইরাক থেকে তাদের সেনা ব্যাপক হারে সরিয়ে নিয়েছিল এবং ইরাকি সেনাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার বেশিরভাগ কর্মসূচিই বন্ধ হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নতুন প্রেসিডেন্টে জো বাইডেনের ক্ষমতা গ্রহণ ও তার নতুন নীতির প্রেক্ষাপটে দায়েশ বা আইএস মোকাবেলার নামে ইরাকে ন্যাটোর সেনা-সংখ্যা ৮ গুণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই জোট। ইরাকে বর্তমানে ন্যাটোর মোট সেনা সংখ্যা ৫০০। 

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ঘোষণা অনুযায়ী ইরাকে ২০০৩ সালে ইঙ্গ-মার্কিন সেনা অভিযান ও দখলদারিত্ব ছিল অবৈধ। ওই অভিযানের ফলে ইরাকে সাদ্দাম সরকারের পতন ঘটেছিল। ২০০৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ন্যাটো জোট ইরাকি সেনা ও পুলিশকে পেশাগত প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয়ার নাম করে দেশটিতে অবস্থান করেছে। আইএস-বিরোধী আন্তর্জাতিক জোটের কথিত দায়েশ বিরোধী ভূমিকার বিপরীতে ন্যাটো জোট ইরাকে কখনও আক্রমণাত্মক ভূমিকা পালন করেনি।  

এ অবস্থায় ইরাকে যখন মার্কিন সেনা-সংখ্যা কমিয়ে যখন কেবল আড়াই হাজারে সীমিত করা হয়েছে ও মার্কিন সেনা-বহর আর ঘাঁটিগুলোতে ক্রমেই দখলদার-বিরোধী সশস্ত্র ইরাকি গ্রুপগুলোর হামলার সংখ্যা বাড়ছে তখন ন্যাটোর সেনা-সংখ্যা বৃদ্ধির কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। 

আসলে মার্কিন সেনা সংখ্যা হ্রাসের ফলে শক্তির যে তারতম্য ঘটেছে তা পুষিয়ে দিতেই ন্যাটো ইরাকে তার সেনা সংখ্যা বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে। আর এই বৃদ্ধির ঘটনা আসলে মার্কিন সরকারেরই নতুন খেলা মাত্র। ইরাকের সংসদ সব মার্কিন সেনাকে ইরাক থেকে বের করে দেয়ার যে আইন পাস করেছে সেই আইনি বাধা এড়ানোর জন্যই এখন ন্যাটো জোটের আওতায় পশ্চিমা সেনা বাড়াতে চাচ্ছে ওয়াশিংটন। তাই ন্যাটোর এই পদক্ষেপও বৈধ পদক্ষেপ নয়।  #

পার্সটুডে/এমএএইচ/২০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ