আমেরিকার কপটতা: মুখে শান্তির বুলি, প্রকাশ্যে ইসরাইলকে ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের সরবরাহ
(last modified Sun, 06 Oct 2024 11:44:42 GMT )
অক্টোবর ০৬, ২০২৪ ১৭:৪৪ Asia/Dhaka
  • আমেরিকার কপটতা: মুখে শান্তির বুলি, প্রকাশ্যে ইসরাইলকে ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের সরবরাহ

ফিলিস্তিনি এবং লেবাননের জনগণের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ অব্যাহত রাখার বিষয়ে  ইহুদিবাদী ইসরাইলি শাসক গোষ্ঠীকে সবুজ সংকেত দেয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট  জো বাইডেন স্বীকার করেছেন যে তার সরকার ইসরাইলকে যে পরিমান সাহায্য করেছে  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের  আর কোনো সরকারই এতটা সাহায্য করেনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি ইহুদিবাদীদের উদ্দেশ্যে এক বিবৃতিতে বলেছেন, "আমার সরকারের চেয়ে কোনো সরকারই ইসরাইলকে এত বেশি সাহায্য করেনি।" পার্সটুডে-এর মতে,জো বাইডেন যিনি নিজের স্বীকারোক্তিতে ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠী এবং এর যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সবচেয়ে বড় সমর্থক তিনি আরও দাবি করেছেন যে তার গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা হল পশ্চিম এশীয় অঞ্চলে একটি পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ ঠেকানো।

পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য আমেরিকার ইচ্ছার সঙ্গে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সমর্থনে তার কর্মকাণ্ডের কোনো সামঞ্জস্যতা নেই। দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক জনমতের চাপে গাজা ও লেবাননে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য একটি যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা এবং পক্ষগুলোর মধ্যে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে বলে দাবি করছে। মার্কিন সরকার পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা এবং হত্যা লবির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সর্বদা একাধিক এবং পরস্পর বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করার সময় এই দাবি করা হয়। এর ফলে ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীকে নির্ভীকভাবে তার অপরাধ চালিয়ে যেতে এবং এখন যুদ্ধের পরিধি লেবাননে প্রসারিত করতে তাকে সাহায্য করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে তেল আবিব ও ওয়াশিংটনের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী আমেরিকা প্রতি বছর ইহুদিবাদী ইসরাইলকে ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের সামরিক প্যাকেজ দেবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

অন্যদিকে একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,২০২৩ সালের ৭  অক্টোবর হামাসের সঙ্গে ইসরাইলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আমেরিকা ২০২৪ মার্চ বিল থেকে ৩.৮ বিলিয়ন ডলার এবং ২০২৪ এপ্রিলের একটি সম্পূরক বরাদ্দ বিল থেকে ৮.৭ বিলিয়ন ডলারসহ  ইসরাইল কমপক্ষে ১২.৫ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা প্রদানের আইন প্রণয়ন করেছে। একই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে ডলারের বিনিময় হারের ভিত্তিতে ১৯৪৬ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ইসরাইলকে মার্কিন সামরিক সহায়তার পরিমাণ ২৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

এদিকে; মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর সম্প্রতি লেবানন এবং অন্যান্য অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে সাহায্য করার জন্য ১৫৭  মিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি মানবিক সহায়তা প্যাকেজ বরাদ্দের দাবি করে একটি বিবৃতি জারি করেছে।

মানবিক পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য এই প্যাকেজ বরাদ্দের প্রতিক্রিয়ায় আল জাজিরা লিখেছে, এখন এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দান করা অস্ত্র যা লেবাননের বেসামরিকদের উপর অবতরণ করছে। ওয়াশিংটনের ব্যাপক কূটনৈতিক সমর্থনে তেল আবিবের কর্মকর্তাদের পশ্চিম এশিয়ায় আরও নৃশংসতা করতে উৎসাহিত করেছে। বিষয়টি এমন যে আমেরিকা গরু মেরে জুতা দান করছে।

এ প্রসঙ্গে মার্কিন সিনেটের সশস্ত্র বাহিনী কমিটির সিনিয়র সদস্য ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর মার্ক কেলি স্বীকার করেছেন যে, লেবাননে সাম্প্রতিক অপরাধযজ্ঞ ঘটানোর ক্ষেত্রে ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি গাইডেড বোমা ব্যবহার করেছে।

ওয়াশিংটন পোস্ট সংবাদপত্র ইহুদিবাদী শাসকদের দ্বারা প্রকাশিত চিত্রগুলো পরীক্ষা করার পরে লিখেছে: ইসরাইল সম্ভবত বৈরুতে হামলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি দুই হাজার পাউন্ড বোমা ব্যবহার করেছিল যার ফলে হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লাহ শহীদ হন।#

পার্সটুডে/এমবিএ/৬

খবরসহ আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সব লেখা ফেসবুকে পেতে এখানে ক্লিক করুন এবং নোটিফিকেশনের জন্য লাইক দিন

ট্যাগ