মার্কিন গোয়েন্দা বিমান ভূপাতিত করে দেয়ার উত্তর কোরিয়ার হুমকির রহস্য
(last modified Tue, 11 Jul 2023 07:59:26 GMT )
জুলাই ১১, ২০২৩ ১৩:৫৯ Asia/Dhaka

উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মার্কিন গুপ্তচর বিমান ব্যবহার করে দেশটির  আকাশসীমা লঙ্ঘনের বিষয়ে ওয়াশিংটনকে সতর্ক করে একটি বিবৃতি জারি করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তার উস্কানিমূলক বিমান উড্ডয়নের জন্য চরম মূল্য দিতে হবে বলে উত্তর কোরিয়া তার বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। কারণ পিয়ংইয়ংয়ের আকাশসীমায় গুপ্তচরবৃত্তি এবং অনুপ্রবেশের জন্য এসব মার্কিন বিমান পরিচালিত হয় হয়ে আসছে। উত্তর কোরিয়া সব সময় বলে আসছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোরীয় উপদ্বীপে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে পিয়ংইয়ংকে তার দাবির কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করার চেষ্টা করছে, অন্যদিকে উত্তর কোরিয়া মার্কিন আধিপত্যবাদ রুখে দিতে বা মার্কিন হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে নিজের প্রতিরক্ষা শক্তি দিন দিন জোর করছে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে আসছে যে তারা পূর্ব এশিয়ায় নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করতে চায় আসলে ওয়াশিংটনের এসব ধ্বংসাত্মক তৎপরতা  এই  অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরো বিপদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। 

আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ লি মিং এ সম্পর্কে বলেছেন, "মার্কিন নীতি হচ্ছে কোরীয় উপদ্বীপে এবং সাধারণভাবে পূর্ব এশিয়ায় তার সামরিক উপস্থিতি অব্যাহত রাখা। তাই এই অঞ্চলে তার সামরিক উপস্থিতির ন্যায্যতা প্রমাণ করতে আমেরিকা এ অঞ্চলে উত্তর কোরীয় ভীতি  তৈরির চেষ্টা করছে। 

তাই, উত্তর কোরিয়া জোর দিয়ে বলছে যে পূর্ব সাগরে মার্কিন বিমান বাহিনীর একটি কৌশলগত গুপ্তচর বিমান ধ্বংসের মতো ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটবে না এমন কোনো নিশ্চয়তা দেয়া যায় না। মুলত এটি উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য মারাত্মক হুমকি হতে পারে। উত্তর কোরিয়ার এই সক্ষমতা রয়েছে। ফলে গুপ্তচর বিমানের উড্ডয়নসহ আমেরিকার যেকোনো হুমকি মোকাবেলা করার ব্যাপারে এখানে উত্তর কোরিয়ার দৃঢ়চিত্তের বিষয়টি এখানে ফুটে উঠেছে।

জুলাইয়ের প্রথম দিকে, ইউএস RC-135 এবং U-2S স্পাই প্লেন, সেইসাথে একটি RQ-4B গ্লোবাল হক ড্রোন, কোরীয় উপদ্বীপের উপর দিয়ে উড়েছিল এবং বেশ কয়েকবার উত্তর কোরিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছিল। সুতরাং, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দিয়ে উত্তর কোরিয়া ওয়াশিংটনকে এই বার্তা দিয়েছে যে তারা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে এই অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে। পিয়ংইয়ং এই বার্তাও দিয়েছে যে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি উত্তর কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে উঠতে দেবে না। 

আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ লি হাইডং এ প্রসঙ্গে বলেছেন, "পূর্ব এশিয়ায় আমেরিকার সামরিক উপস্থিতির প্রধান লক্ষ্য হল চীন। বারাক ওবামা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে এই দেশটির নীতি চীনকে সংযত করার দিকে চলে গেছে।আমেরিকা চীনের চারপাশের জলসীমায় তার জাহাজ পাঠিয়ে এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় উন্নত বিমান মোতায়েন করে চীন ও উত্তর কোরিয়ার উপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।"

যাইহোক, উত্তর কোরিয়া কোরীয় উপদ্বীপে কৌশলগত পারমাণবিক সরঞ্জামের অনুপ্রবেশ ঘটানোর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি বার্তা উচ্চারণ করেছে। কারণ ওয়াশিংটনের এই ধ্বংসাত্বক তৎপরতা উত্তর কোরিয়া এবং এই অঞ্চলের দেশগুলো বিরুদ্ধে একটি সুস্পষ্ট পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল এবং শান্তির জন্য একটি মারাত্মক হুমকি। এছাড়া আমেরিকা পূর্ব এশিয়ায় এবং সম্প্রতি চীন এবং উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে একটি নৌবহর এবং পারমাণবিক বিমান পাঠিয়ে হুমকির মাত্রা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। আমেরিকা এই অঞ্চলে উত্তেজনা এবং পারমাণবিক প্রতিযোগিতায় ইন্ধন জোগাচ্ছে যার ফলশ্রুতিতে এই অঞ্চলের দেশগুলির জন্য একটি বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। তাই যে কোনও অনাকাঙ্খিত ঘটনার সম্পূর্ণ দায়ভার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেই বহন করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তার কোরিয়া।#

পার্সটুডে/এমবিএ/১১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ