আফগানিস্তানে জাফরি মাযহাবের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানাল শিয়া আলেমরা
(last modified Sun, 20 Aug 2023 11:41:24 GMT )
আগস্ট ২০, ২০২৩ ১৭:৪১ Asia/Dhaka

তালেবান সরকারের মন্ত্রিসভার প্রশাসনিক বিভাগের উপপ্রধান আব্দুল সালাম হানাফী বলেছেন, আফগানিস্তানের ইতিহাস জুড়ে শিয়া এবং সুন্নাত আল জামায়াত সব সময় একত্রে সহাবস্থান করার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে সমন্বিত ভূমিকা পালন করে আসছে। 

আফগানিস্তানে তালেবান গোষ্ঠীর পুনরায় ক্ষমতায় আসার দ্বিতীয় বার্ষিকীর স্মরণ সভার এক অনুষ্ঠানে আব্দুল সালাম হানাফি বলেন, আফগানিস্তানের ইতিহাস জুড়ে শিয়া ও সুন্নিরা শান্তিপূর্ণ ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে এবং সোভিয়েত বাহিনীর দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে একত্রে লড়াই করেছে।

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে হানাফীর বক্তব্যগুলো আফগানিস্তানের মুসলিম জনগণের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ইতিহাসের একটি সঠিক রেফারেন্স।  আফগানিস্তানে এই পরিস্থিতিকে বিঘ্নিত করার এবং দেশটিতে সাম্প্রদায়িক সংঘাত ও সংঘর্ষ তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছে তবে তা সফল হয় নি । এর অর্থ হল যে আফগান সমাজকে প্রভাবিত করে এমন উপাদানগুলো কেবল অভ্যন্তরীণ নয়, বরং তা বাইরে থেকে আমদানি করা হয়েছে এবং প্রধানত আফগান জনগণের ওপর হামলাকারী শত্রুদের মাধ্যমে এসব দুষ্ট মতপার্থক্য তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ঈসা হোসেনি মাজারি এ সম্পর্কে বলেছেন:

আফগানিস্তান হল শিয়া এবং সুন্নিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি ইসলামিক দেশ। এসব সম্প্রদায় আফগান ইতিহাস জুড়ে কেবল শান্তিপূর্ণভাবে একসঙ্গে বসবাস করে আসেনি বরং তারা একে অপরের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে আসছে। যেমন সুন্নি কাউন্সিল অফ হোসেইন (আ)  শিয়া মুসলমানদের পাশাপাশি  তারা ইমাম হোসেইন (আ) জন্য আজাদারি বা শোক প্রকাশ করে আসছে এবং তাদের সন্তানদের জন্য হুসাইনের নামে নামকরণ করে আসছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সুন্নি এবং শিয়াদের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ তাদের মধ্যে সম্পর্ক এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে আরও প্রসারিত করতে সাহায্য করেছে এবং এই প্রবণতা এখনও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তাই আব্দুল সালাম হানাফি জোর দিয়ে বলেছেন যে তালেবানরা গত দুই দশকে শিক্ষাকেন্দ্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এবং পাবলিক প্লেসে কোনো হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল না। আসল বিষয় হলো যে তালেবানরা তাদের শাসনের উভয় সময়কালেই আফগানিস্তানের শিয়া মুসলমানদের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেছে কারণ তারা আফগানিস্তানের বহু-জাতিগত এবং ধর্মীয় সমাজের একটি শক্তিশালী অংশ। আফগান শিয়ারা বাইরের শত্রুর মোকাবিলাসহ বিভিন্ন সময়ে আফগানিস্তানের সকল রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। 

এখন গত দুই বছরে আফগান শিয়া পণ্ডিতরা তালেবান কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য সব সময় জাতীয় ঐক্যের উপর জোর দিয়ে আসছেন। এর অর্থ হলো আফগানিস্তানের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন আফগানিস্তানের শিয়া সম্প্রদায়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ যাতে এদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে বসবাসের  মিষ্টি স্বাদ আস্বাদন করতে পারে।

যাই হোক, আবদুসসালাম হানাফীর সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত শিয়া আলেমরা গত দুই বছরে তালেবান শাসনামলে আফগানিস্তানে নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রশংসা করেন এবং দেশটিতে জাফরি​​মাযহাবের স্বীকৃতি দাবি করেন। আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পটভূমির দৃষ্টিকোণ থেকে শিয়ারা মুসলমানরা বাস্তবিক অর্থে দেখিয়েছে যে তারা তালেবানের সঙ্গে সহযোগিতায় শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার বিষয়টির ওপর গরুত্ব দিয়েছে। তাই শিয়ারা আশা করে যে তাদের অধিকার ও সম্মান  প্রতিষ্ঠায় তালেবানরা তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করবে। #

পার্সটুডে/বাবুল আখতার/২০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।