গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থনের বিরুদ্ধেও আইন পাস করেছে বাইডেন প্রশাসন!
(last modified Tue, 12 Dec 2023 13:16:33 GMT )
ডিসেম্বর ১২, ২০২৩ ১৯:১৬ Asia/Dhaka

দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রধান সমর্থক এবং পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আমেরিকা গাজা যুদ্ধে তেল আবিব সররকারকে কেবল ব্যাপক রাজনৈতিক ও সামরিক সহায়তাই দেয় নি বরং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ফিলিস্তিনিদের সমর্থক এবং গাজায় ইসরাইলের পাশবিক হামলার বিরুদ্ধে সমালোচনাকারীদের ওপর ব্যাপক চাপ বাড়িয়েছে।

ফিলিস্তিনের সমর্থকরা বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মার্কিন প্রশাসনের ক্রমাগত নানা ধরনের চাপ এবং হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। এমন কি সেখানে কর্মরত ব্যক্তিরা চাকরি হারানোর বা পদত্যাগ করতে বাধ্য হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। এই বিষয়ে গত ৫ ডিসেম্বর মার্কিন কংগ্রেসের শিক্ষা ও কর্মপন্থা বিষয়ক কমিটিৃর বৈঠকে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট এলিজাবেথ ম্যাগিল, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিন গে এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি)র প্রেসিডেন্ট "স্যালি কর্নব্লুথ"কে গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের পাশবিক অপরাধযজ্ঞের বিরুদ্ধে আমেরিকায় প্রতিবাদকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের বিষয়ে উত্তর দিতে বলা হয়েছিল। 

গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের চলমান পাশবিক হামলার বিরুদ্ধে আমেরিকার কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিক্ষোভের পর মার্কিন কংগ্রেস তাদের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে একটি প্রস্তাব পাস করার পরে ওই কমিটি  এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্টদের তলব করে। 

এই প্রস্তাব অনুসারে ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস, হিজবুল্লাহ এবং অন্যান্য প্রতিরোধকামী সংগঠনের প্রতি  যেকোনো সমর্থন দেয়াকে মার্কিন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিন্দা জানানো হবে। যদিও ওই প্রস্তাবে দাবি করা হয়েছিল যে এটি মানা আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক নয় এবং এটি নিছক একটি প্রতীকী পদক্ষেপ। ফলে আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতিদের গাজায় ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা এই দাবির বিপরীত চিত্রই ফুটে উঠেছে। বরং এর মাধ্যমে প্রমাণ হচ্ছে যে মার্কিন কংগ্রেসে পাস হওয়া এই প্রস্তাব আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোত বাস্তবায়িত হচ্ছে।  

এদিকে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট এলিজাবেথ ম্যাগিল গত ৯ ডিসেম্বর (শনিবার) পদত্যাগ করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনের নির্যাতিত জনগণের প্রতি সমর্থন জানিয়ে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ  বিক্ষোভ করার পর ম্যাগিলকে মার্কিন কংগ্রেসে তলব করা হয়েছিল এবং সেখানে তিনি বিক্ষোভকারীদের প্রতি নিন্দা জানাতে অস্বীকার করেছিলেন। 

এছাড়া গাজার জনগণকে সমর্থন করার জন্য এবং ইসরাইলের পাশবিকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেওয়ার জন্য হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন ছাত্রকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির কাছে ডাকা হয়েছিল। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফিলিস্তিনি জনগণেরর প্রতি সমর্থন জানিয়ে তাদের ক্যাম্পাসে যেকোনো বিক্ষোভ সমাবেশকে অগ্রহণযোগ্য আচরণ বলে বর্ণনা করেছে। তাদের এ পদক্ষেপ নিসন্দেহে ছাত্রদের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করছে। 

হার্ভার্ড বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র "কোজো আচাম্পং" এসব ছাত্রক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কারের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তব তিনি বলেন.  তারা (বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ) যা করছে তা আমাদের থামাতে পারে না এবং তাদের এই পদক্ষেপ ফিলিস্তিনি জনগণের সংহতি প্রকাশে আমাদেরকে বিরত রাখতে পারবে না। যাইহোক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন ইসরাইলের মানবাধিকার রক্ষার কথা বলে গাজায় পাশবিক হামলা অব্যাহত রাখতে তেল আবিবকে সব ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মার্কিন জনগণ, শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা গাজায় ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভে শামিল হচ্ছেন। তারা অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতি পালন করে সেখানে রক্তপাত বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছেন। #  

পার্সটুডে/এমবিএ/ ১২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ