জুন ১৬, ২০২৪ ১৮:২২ Asia/Dhaka
  • বিশ্ব কি একটি চরমপন্থি ইউরোপের জন্য প্রস্তুত?

পার্সটুডে-ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্টের সাম্প্রতিক নির্বাচনে, চরম ডানপন্থী দলগুলো ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে এবং ওই মহাদেশের প্রধান দেশগুলোর তরুণদের ভোট পেতে সক্ষম হয়েছে।

করোনা মহামারী, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটের পর ইউরোপ মহাদেশের বহু তরুণ ধীরে ধীরে পপুলিস্ট এবং উগ্র ডানপন্থী দলগুলোর দিকে ঝুঁকে পড়েছে। পার্সটুডে ম্যাগাজিনের মতে, ক্রমাগত সংকটের পর অতি-ডানপন্থী দলগুলো তরুণদের উদ্বেগকে তাদের নির্বাচনী প্রচারের মূল অ্যাজেন্ডায় পরিণত করেছে। যে ইস্যুটি শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে এই দলগুলোকে সাফল্য এনে দিয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলোর পাশাপাশি সামাজিক নেটওয়ার্ক মেসেঞ্জারগুলোর মতো যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ডানপন্থী দলগুলোর আপেক্ষিক আধিপত্যের কারণে তরুণ প্রজন্মের সাথে তাদের যোগাযোগ নিবীড় হয়েছে এবং নির্বাচনে তাদের সাফল্যের এটাই প্রধান কারণ।

ইউরোনিউজের এক সমীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী কট্টর ডানপন্থি 'অলটারনেটিভ ফর জার্মানি' দলের প্রতি, যারা অভিবাসন রোধ করতে চায়, পঁচিশ বছরের কম বয়সী তরুণদের মধ্যে ১১ শতাংশ সমর্থন বেড়ে ১৬ শতাংশে পৌঁছেছে। এই সমর্থন বৃদ্ধির ঘটনায় সংসদ নির্বাচনে 'অলটারনেটিভ ফর জার্মানি' দল দ্বিতীয় স্থান অধিকার করতে সক্ষম হয়েছে।

ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনের ফলাফল থেকে প্রমাণ হয় জার্মানির 'গ্রিন পার্টি' এই নির্বাচনে যুব সমাজের মাত্র ১১ শতাংশ ভোট পেয়েছে যা অতীতের তুলনায় ২৩ শতাংশ কম।

উগ্র ডানপন্থী দলের কয়েকজন নেতা

ইপসস (IPSOS) ইনস্টিটিউট জরিপের ফলাফল অনুসারে ফ্রান্সের চরম ডানপন্থী দল "ন্যাশনাল সোসাইটি" ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদের শতকরা ২৫ ভাগ ভোট পেয়েছে যা আগের তুলনায় দশ শতাংশ বেশি। পোল্যান্ডে ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী ভোটারদের মধ্যে অতি-ডানপন্থি কনফেডারেশনের প্রতি সমর্থন ১৮.৫ থেকে ৩০.১ শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। তার মানে হলো এই বয়সের তরুণ প্রজন্মের প্রথম পছন্দে পরিণত হয়েছে অতি-ডানপন্থী দল।

তরুণ জার্মানদের ওপর পরিচালিত সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখায গেছে যে তাদের শতকরা ৫৭ ভাগ তরুণই সামাজিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংবাদ কিংবা রাজনৈতিক ঘটনা অনুসরণ করে। এমনকি অন্যান্য অনেক ঐতিহ্যবাহী এবং মূলধারার রাজনীতিবিদদের মতো জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোল্টযও মাত্র কয়েক মাস আগে TikTok-এ যোগ দিয়েছেন।

স্পেনে, "লুইস পেরেজ", যিনি সামাজিক নেটওয়ার্কগুলিতে বেশ প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত, তিনি ইনস্টাগ্রাম এবং টেলিগ্রামে অভিবাসনের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করার পর, তরুণদের শতকরা ৬.৭ ভাগ ভোট আকর্ষণ করতে সফল হন।

এদিকে, চরম ডানপন্থী দল ভক্সেরও TikTok-এ ব্যাপক প্রচারণা কার্যক্রম ছিল এবং রয়েছে। তাই ২৫ বছরের কম বয়সী তরুণদের ভোটের ১২.৪ শতাংশ আকর্ষণ করতে পেরেছে তারা।

এইসব ঘটনা থেকে বোঝা যায় ভবিষ্যতে বিশ্ব আরও বর্ণবাদী এবং চরমপন্থি একটি ইউরোপ দেখতে পাবে। ইউরোপ ধীরে ধীরে সেদিকেই যাচ্ছে।#

পার্সটুডে/এনএম/১৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ