ইউক্রেনকে দিয়ে রাসায়নিক হামলার সম্ভাবনা ন্যাটোর
(last modified Tue, 16 Jul 2024 14:51:27 GMT )
জুলাই ১৬, ২০২৪ ২০:৫১ Asia/Dhaka
  • ইউক্রেনকে দিয়ে রাসায়নিক হামলার সম্ভাবনা ন্যাটোর

পার্সটুডে-রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি ন্যাটোর সমর্থন অব্যাহত রয়েছে। ওই সমর্থনের ধারাবাহিকতায় ইউক্রেন নিয়ে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক বৈঠক আয়োজন, আমেরিকার সঙ্গে যুক্ত নয় এমন কিছু দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা নবায়ন এবং রাশিয়ার ওপর রাসায়নিক যুদ্ধের আশঙ্কা-এগুলো গত কয়েকদিনে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ কিছু খবর।

চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সমর্থন

ইউক্রেনে যুদ্ধ এখনো চলছে যখন ন্যাটো সদস্য দেশগুলো যুদ্ধ চালিয়ে যেতে ইউক্রেনকে নানাভাবে সমর্থন দিচ্ছে। পার্সটুডের মতে, পশ্চিমা দেশগুলো শুধু ইউক্রেনে যুদ্ধ অব্যাহত রাখার ওপরই জোর দেয় না বরং রাজনৈতিকভাবেও বিশ্বকে আরও বেশি মেরুকরণ করার চেষ্টা করে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরও এক বছরের জন্য বাড়িয়ে দাবি করেছে: ইরান ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে ড্রোন নির্মাণ ও উৎপাদনে ব্যবহৃত সরঞ্জাম দিয়ে সাহায্য করেছে।

ইউক্রেন বিষয়ে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক বৈঠক অনুষ্ঠান

ইউক্রেন ঘোষণা করেছে তারা আগামী কয়েক মাসের মধ্যে রাশিয়ার সাথে ইউক্রেনের যুদ্ধে শান্তির লক্ষ্যে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক বৈঠক করতে যাচ্ছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ঘোষণা করেছেন কিয়েভ রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে শান্তির সম্ভাবনা নিয়ে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সভা করতে সক্ষম হবে।

জেলেনস্কি বলেছেন: আমি নভেম্বরে একটি সর্বাত্মক বৈঠক করার জন্য পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি।

গত মাসে ইউক্রেন সুইজারল্যান্ডে প্রথম শান্তি বৈঠক করেছিল, সেখানে ৯২ টি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু যুদ্ধের অপরপক্ষ রাশিয়া ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিল না। রাশিয়া এখন ঘোষণা করেছে যে মস্কো এই বৈঠকে অংশ নেবে না এবং দ্বিতীয় বৈঠকের পরিকল্পনা সম্পর্কে তার কোনো আইডিয়া নেই।

ইউক্রেন শান্তি বৈঠক গত এক মাস আগে সুইজারল্যান্ডের আমন্ত্রণে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। উল্লেখযোগ্য কোনো সাফল্য ছাড়াই ওই বৈঠক শেষ হয়। চূড়ান্ত বিবৃতিতে এ অঞ্চলে শান্তি অর্জনে সুনির্দিষ্ট কোনো সমাধানের প্রস্তাবও করা হয়নি।

রাশিয়ার আকাশে ইউক্রেনের ১৩টি ড্রোন ধ্বংস

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে তাদের দেশের আকাশ সীমার বিভিন্ন অংশে ১৩টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে। স্পুতনিক জানিয়েছে, রাশিয়ার আকাশে ওই ১৩টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করার ঘোষণা দিয়ে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের ভূখণ্ডে বেশ কয়েকটি ড্রোন ব্যবহার করে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর চেষ্টা করার জন্য ইউক্রেনকে অভিযুক্ত করেছে।

আমেরিকার দাবি ছিল ইউক্রেন যেন রুশ ভূখণ্ডের গভীরে আক্রমণ না করে

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন তাদের দেওয়া অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে হামলা না চালাতে ইউক্রেনকে বলা হয়েছিল। আমেরিকার এই আক্রমণ প্রতিরোধ করার ঘটনা ওয়াশিংটনের একটি "ইতিবাচক পদক্ষেপ"। ব্রিটেনও কিছুক্ষণ আগে ঘোষণা করেছে তারাও ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলার জন্য তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে দেয় নি।

ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটোর নয়া অবস্থান

ন্যাটো মহাসচিব বলেছেন: ন্যাটো জোট ইউক্রেন যুদ্ধে সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে না। এমনকি রাশিয়ার যুদ্ধবিমান নামানোর ব্যাপারেও সীমিত পর্যায়ে সহায়তা করবে। ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ পোল্যান্ডের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেজারি টমসিকের প্রশ্নের জবাবে এ বিষয়টি উত্থাপন করেন। ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন টমসিক। স্টলটেনবার্গ বলেছেন: ন্যাটো জোট রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করতে ইউক্রেনকে সহায়তা করবে তবে সরাসরি সংঘর্ষে জড়াবে না।

ইউক্রেনের রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ

রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সংস্থায় রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ভলোদিমির তারাব্রিন জোর দিয়ে বলেছেন: ইউক্রেনের জন্য রাশিয়ার কোনো রাসায়নিক হুমকি নেই। রাসায়নিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা সংস্থায় রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি কিয়েভকে তাদের প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত প্রতিষেধক, গ্যাস মাস্ক এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জামের মজুদ অব্যাহত রাখার জন্য অভিযুক্ত করেছেন।

তিনি বলেন: মনে হচ্ছে ইউক্রেন নিজেই রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের জন্য এই উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডগুলো করছে। রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সম্প্রতি বলেছেন: ইউক্রেনীয় সেনারা দোনেস্কের বিভিন্ন এলাকায় ক্লোরোপিক্রিন এবং ক্লোরস্টোফেনোনের মতো বিষাক্ত পদার্থ ব্যবহার করেছে। এর অনেক প্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে এবং এ বিষয়টি বহুবার নথিভুক্তও করা হয়েছে। কিন্তু আমেরিকা এসব ব্যাপারে এখন পর্যন্ত নীরব রয়েছে।#

পার্সটুডে/এনএম/১৬                       

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ