ইয়েমেনের হাতে আমেরিকার এফ/এ-১৮ বিধ্বস্ত: 'ওয়াশিংটনের মিডিয়া গোপনীয়তা উন্মোচিত'
-
এফ/এ-১৮ সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান
পার্স টুডে: সামাজিক মাধ্যম ‘এক্স’-এর ব্যবহারকারীরা লোহিত সাগরে আমেরিকার অত্যাধুনিক এফ/এ-১৮ যুদ্ধবিমান ধ্বংসের ঘটনাকে ইয়েমেনের একটি কৌশলগত সাফল্য এবং আমেরিকার সামরিক-ও মিডিয়ার ব্যর্থতার লক্ষ্য হিসেবে অভিহিত করেছেন।
মার্কিন নৌবাহিনী সোমবার জানিয়েছে, 'ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান থেকে দেশটির নৌবাহিনীর একটি এফ/এ-১৮ সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান সাগরে পড়ে ডুবে গেছে। এ ঘটনায় একজন নাবিক সামান্য আহত হয়েছেন জানিয়ে নৌবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, রণতরীর যুদ্ধবিমান রাখার স্থানে এফ/এ-১৮ বিমানটি টেনে নেওয়া হচ্ছিল। এ সময় ক্রু যুদ্ধবিমানটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এতে যুদ্ধবিমান ও সেটিকে টেনে নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর দুটিই সাগরে পড়ে যায়।'
প্রথমদিকে ঘটনাটিকে ‘প্রযুক্তিগত ত্রুটি’ বলে দাবি করলেও পরবর্তীতে কিছু মার্কিন মিডিয়া সূত্রে জানা যায়, ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্রের হাত থেকে রক্ষা পেতে জাহাজটি দ্রুত গতিতে চলছিল—যা ওয়াশিংটনের বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরেও ‘ইউএসএস গেটিসবার্গ’ জাহাজ থেকে 'ভুলবশত' একটি এফ/এ-১৮ বিমান গুলি করে ফেলার কথা স্বীকার করে মার্কিন কর্তৃপক্ষ, যদিও তখন ইয়েমেনের বিমান-বিরোধী আক্রমণ চলছিল।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া: ‘যুক্তরাষ্ট্রের মিথ্যা প্রকাশিত’
পার্স টুডে-র জানিয়েছে, এক্স-প্ল্যাটফর্মে ব্যবহারকারীরা এফ/এ-১৮ যুদ্ধবিমান ধ্বংসের ঘটনাকে ‘প্রযুক্তিগত ত্রুটি’ নয়, বরং ইয়েমেনি প্রতিরোধের সামনে আমেরিকার অপারগতা বলে উল্লেখ করেছেন।
এক্স ব্যবহারকারী ইরানদোখত লিখেছেন, "এফ/এ-১৮, যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর মেরুদণ্ড, যা এবার যুদ্ধে নয়—ইয়েমেনের আকাশ থেকে ‘পলায়নরত’ অবস্থায় ধ্বংস হয়েছে। এই ছবিটি কোনও পাখির পতনের চিত্র ছিল না, বরং প্রতিরোধের মুখে বরং একটি পরাশক্তির মুখোশ উন্মোচন।"
আরবিভাষী ব্যবহারকারী আমিন আল-গাবেরিও পদার্থবিদ্যার সূত্র উদ্ধৃত করে মার্কিনীদের মিথ্যাবাদী বলে অভিহিত করেছেন এবং লিখেছেন: "পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল যত বড় হবে, ঘূর্ণনের সময় বস্তুর পতনের সম্ভাবনা তত কম হবে, এমনকি যদি এটি দ্রুত এবং তদ্বিপরীত হয়। এটা কি যুক্তিসঙ্গত যে শুধুমাত্র ট্রুম্যানের মতো আকারের ক্যারিয়ারের কৌশলের কারণে একটি এফ/এ-১৮ বিধ্বস্ত হবে? বিমানটি সরাসরি ইয়েমেনিদের দ্বারা আঘাত এবং গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে- পদার্থবিদ্যা আমেরিকানদের মিথ্যাচার ফাঁস করে দিয়েছে।"
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক স্প্রিন্টার অবজারভার লিখেছেন,: "লোহিত সাগরে একটি আমেরিকান এফ-১৮ সুপার হর্নেটের দুর্ঘটনা কেবল একটি কারিগরি ত্রুটি বা বিমানের দুর্ঘটনার চেয়েও বেশি কিছু। এই বিপর্যয় আমেরিকার সামরিক মূলে একটি ফাটল, এমন একটি মূল যা কয়েক দশক ধরে অটল বলে মনে হয়েছিল।"
রাজনৈতিক বিশ্লেষক আলীরেজা জাদেবর এক্সে লিখেছেন, "অবরুদ্ধ ইয়েমেনের জনগণ ৬০ মিলিয়ন ডলারের বিমান ধ্বংস করেছে, কিন্তু আমেরিকা বলছে ‘দুর্ঘটনা’! তারা ভয় পাচ্ছে—যদি স্বীকার করে নেয় দুর্বলরাও তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।"
‘এক্স’-এ আলী আকবর রায়েফিপুর লিখেছেন, "লোহিত সাগরে ইয়েমেনি প্রতিরোধের দ্বিতীয় বড় সাফল্য! আমেরিকার দাবি ‘দুর্ঘটনা’, কিন্তু বাস্তবতা হলো—ইয়েমেনের ক্ষেপণাস্ত্রই এই বিমান ভূপাতিত করেছে।"
পার্সটুডে/এমএআর/২