যুদ্ধের গুঞ্জন
ভেনিজুয়েলার চারপাশে ব্যাপক মার্কিন সেনা মোতায়েন
-
যুক্তরাজ্যের মহাকাশ কমান্ডের প্রধান পল টেডম্যান,
পার্সটুডে - ভেনেজুয়েলার জলসীমার আশেপাশে মার্কিন সেনা এবং সামরিক সরঞ্জামের ব্যাপক মোতায়েনের ফলে এই অঞ্চলে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে।
মাদক পাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার দাবিতে ভেনেজুয়েলার উপকূলে ওয়াশিংটন তার নৌবাহিনী মোতায়েন করেছে কিন্তু এই সীমিত অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি মার্কিন সেনা মোতায়েনের কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। পার্সটুডে অনুসারে, বর্তমান বাহিনীর মোতায়েনের মাধ্যমে ভেনেজুয়েলার গুরুত্বপূর্ণ বন্দর এবং বিমানবন্দর দখল এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব; এটি এমন একটি পদক্ষেপ যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ভেনেজুয়েলার ভূখণ্ডের ভিতরে স্থায়ী সামরিক উপস্থিতি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম করবে।
এনবিসি নিউজের মতো সংবাদমাধ্যমগুলোও দাবি করেছে যে ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার জলসীমায় হামলার নির্দেশ দিয়েছে, তবে মার্কিন সামরিক বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি (যার মধ্যে বেশ কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ, ১০টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ২,২০০ সৈন্য এবং যুদ্ধবিমান সহ একটি মেরিন কর্পস অভিযাত্রী বাহিনী, একটি নৌবাহিনীর সাবমেরিন এবং বিশেষ বাহিনী অন্তর্ভুক্ত) এত সীমিত পরিস্থিতির বাইরে বলে মনে হচ্ছে।
যুদ্ধের সম্ভাবনা বৃদ্ধির বিষয়ে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান বলেছেন যে বুদাপেস্ট এবং আরও বেশ কয়েকটি দেশ বিশ্বাস করে যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের যোগাযোগ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সচিব জোল্টান কাভাচ, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এক্স-এ অরবানের উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছেন, "হাঙ্গেরির মতো আরও দেশ মনে করে যে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে যুদ্ধের দিকে টেনে নেওয়া হচ্ছে এবং শীঘ্রই বা পরে নিহত তরুণদের কফিন দেশে ফিরে আসবে।"
"যুদ্ধের হুমকি বাড়ছে" জোর দিয়ে অরবান আরও বলেন: "আমরা ইউক্রেনের পরিণতি ভোগ করতে চাই না। ইউক্রেন যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশ করে, তাহলে আমরা রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ব। আমরা ইউক্রেনের জন্য মরতে চাই না।"
ইউক্রেনের যুদ্ধের সমাধান খুঁজে বের করার লক্ষ্যে রাশিয়ান এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৫ আগস্ট আলাস্কায় বৈঠক করেছিলেন, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও অগ্রগতি হয়নি। মস্কো কিয়েভের সাথে শান্তি চুক্তির জন্য পূর্ব ইউক্রেনের হস্তান্তরকে একটি শর্ত করেছে।
ট্রাম্প পরিস্থিতির প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে ঘোষণা করেছেন, আমি রাশিয়ার উপর ভারী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে প্রস্তুত, তবে শর্ত থাকে যে সমস্ত ন্যাটো দেশ সম্মত হবে এবং বাস্তবে একই কাজ শুরু করবে। সমস্ত ন্যাটো দেশকে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ করতে হবে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে যে রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামোতে দূরপাল্লার হামলার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করছে।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও এই সপ্তাহে নিশ্চিত করেছেন যে ওয়াশিংটন কিয়েভকে দূরপাল্লার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের জন্য ইউক্রেনের অনুরোধ বিবেচনা করছে।
ব্রিটিশ স্পেস কমান্ডের প্রধান রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন
মস্কো এবং কিছু ইউরোপীয় দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে, ব্রিটিশ স্পেস কমান্ডের প্রধান দাবি করেছেন যে রাশিয়া আমাদের সামরিক উপগ্রহের সংকেত ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।
জেনারেল পল টেডম্যান বলেছেন: "রাশিয়া ক্রমাগত আমাদের উপগ্রহগুলোকে ব্যাহত করছে।" তিনি আরো বলেন, "তাদের কাছে এমন সরঞ্জাম এবং সিস্টেম রয়েছে যা আমাদের উপগ্রহগুলোকে ট্র্যাক করতে পারে এবং তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে । যোগাযোগ এবং নজরদারির জন্য বর্তমানে ব্রিটেনের কক্ষপথে ছয়টি সামরিক উপগ্রহ রয়েছে।
জেনারেল টেডম্যান বলেছেন যে উপগ্রহগুলি জ্যাম-বিরোধী প্রযুক্তিতে সজ্জিত। তিনি আরও বলেন, রাশিয়ান বাহিনী "সাপ্তাহিক" উপগ্রহগুলিকে জ্যাম করছে এবং ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে এই তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সেপ্টেম্বরে, জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস প্রকাশ করেছিলেন যে রাশিয়া জার্মান সামরিক বাহিনী দ্বারা ব্যবহৃত দুটি ইন্টেলস্যাট উপগ্রহ ট্র্যাক করেছে। তিনি বলেন, "রাশিয়া উপগ্রহগুলোকে ব্যাহত করতে, পরিচালনা করতে বা এমনকি শারীরিকভাবে ধ্বংস করতে পারে,"। জার্মান সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে তার মহাকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষমতা শক্তিশালী করার জন্য ৩৫ বিলিয়ন ইউরো ব্যয় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, রাশিয়া এবং তার মিত্র চীনের হুমকির মুখে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।#
পার্সটুডে/এমবিএ/৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।