জুন ০৬, ২০২০ ১২:২৫ Asia/Dhaka

আমেরিকার নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের বাফেলো শহরে পুলিশের স্পেশাল টিম থেকে ৫৭ জন কর্মকর্তা একযোগে পদত্যাগ করেছেন। তারা বাহিনীর ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিমের সদস্য ছিলেন। ৭৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের সঙ্গে নির্দয় আচরণের দায়ে দুই কর্মকর্তাকে বিনা বেতনে বরখাস্তের প্রতিবাদে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারা।

এ বিষয়ে বাফেলো পুলিশ বেনেভোলেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জন ইভান্স বলেছেন, শুধু নির্দেশ পালনের দায়ে বাহিনীর দুই কর্মকর্তার সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে তার প্রতিবাদে ৫৭ জন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। তবে তারা শুধু ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম থেকে পদত্যাগ করেছেন, পুলিশ বাহিনী থেকে নয়।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, বাফেলো শহরে মার্টিন গাগিনো নামে ৭৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেয়ার ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে আমেরিকাজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। এরপরই ওই দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়।

ভিডিওতে দেখা যায়, ৭৫ বছরের ওই বৃদ্ধ কারফিউ কার্যকরের জন্য দায়িত্বরত পুলিশের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান তিনি। তার কান দিয়ে গলগল করে রক্ত বের হতে থাকে। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে দেখা যায়, তার মাথায় মারাত্মক আঘাত লেগেছে।

একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা হাঁটু গেড়ে বসে জর্জ ফ্লয়েডের গলার ওপর চাপ নেয়ার পর শ্বাস বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান।

নিউ ইয়র্ক রাজ্যের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো পুলিশের এই আক্রমণাত্মক আচরণের সমালোচনা করেছেন। এক টুইট বার্তায় বাফেলোর ঘটনাকে পুরোপুরি অযৌক্তিক এবং খুবই ন্যক্কারজনক হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।

এর আগে, বাফেলো পুলিশ বিভাগ থেকে প্রথমে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল তাতে দাবি করা হয়, ওই ব্যক্তি হোঁচট খান এবং ‘বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তির সময়’ তিনি মাটিতে পড়ে যান। এই বিবৃতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ঘটনা নিয়ে ক্ষোভে আরও মাত্রা যোগ করেছে। পরে পুলিশের মুখপাত্র জেফ রিনোল্ডো বলেন, যে অফিসাররা ওই বিবৃতি দিয়েছিলেন, তারা ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন না।

বাফেলো’র মেয়র বাইরন ব্রাউন বলেছেন, তিনি চান বরখাস্তকৃত দুই পুলিশ কর্মকর্তার ব্যাপারে যেন যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। তিনি বলেন, ‘আমি তাদের চাকরিচ্যুত করতে বলছি না।’

পুলিশ সদস্যদেরও সতর্কতা অবলম্বন, জনগণের সুরক্ষা দেওয়া এবং কমন সেন্স ব্যবহারের তাগিদ দিয়েছেন বাফেলোর মেয়র।

সম্প্রতি জর্জ ফ্লয়েড নামে একজন আফ্রিকা বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপলিসে পুলিশের নির্মম নির্যাতনে নিহত হন। এ মৃত্যুর ঘটনায় আমেরিকাজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত সকল পুলিশ কর্মকর্তাকে ২৬ মে বরখাস্ত করা হয়। ২৯ মে পুলিশ সদস্য ডেরেক চৌভিনকে এ হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে, বর্ণবাদ এবং পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নেমে এসেছেন মার্কিন নাগরিকরা।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

ট্যাগ