"১২ দিনের যুদ্ধে ইরানের জয়, ইসরাইল-আমেরিকার ষড়যন্ত্র ব্যর্থ"
https://parstoday.ir/bn/news/world-i150562-১২_দিনের_যুদ্ধে_ইরানের_জয়_ইসরাইল_আমেরিকার_ষড়যন্ত্র_ব্যর্থ
পার্সটুডে- ‘উম্মতে ওয়াহেদা- জবহে ইজ্‌যতে ইসলামি’ ফ্রন্টের পঞ্চম ভার্চুয়াল সভায় অংশগ্রহণকারীরা বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধে ইরানের বিজয়- সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য সান্ত্বনা ও সাহসের উৎস হয়ে উঠেছে।
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
জুলাই ২১, ২০২৫ ১৮:৪৫ Asia/Dhaka
  • মাওলানা আবদুল হক হাশমি
    মাওলানা আবদুল হক হাশমি

পার্সটুডে- ‘উম্মতে ওয়াহেদা- জবহে ইজ্‌যতে ইসলামি’ ফ্রন্টের পঞ্চম ভার্চুয়াল সভায় অংশগ্রহণকারীরা বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধে ইরানের বিজয়- সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য সান্ত্বনা ও সাহসের উৎস হয়ে উঠেছে।

পার্সটুডে জানিয়েছে, ‘মাজমায়ে আলামিয়ে কাদেমুন’-এর উদ্যোগে এবং পাকিস্তানের বিশিষ্ট আহলে সুন্নাত আলেম ও চিন্তাবিদদের অংশগ্রহণে গত (রোববার) উর্দু ভাষায় এই  ভার্চুয়াল সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। এর মূল প্রতিপাদ্য ছিল— ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ও ইসলামী বিপ্লবের প্রতি সমর্থন জানানো এবং মার্কিন ও ইহুদিবাদী হুমকিকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া।

এই সভায় মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখা এবং ইহুদিবাদী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রস্তুত থাকার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।

এই ভার্চুয়াল সভায় পাকিস্তানের বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের বিশিষ্ট নেতারা অংশ নেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন- জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ও বেলুচিস্তান আমির মাওলানা আবদুল হক হাশমি, মুত্তাহিদা উলামায়ে মাহাজ করাচির প্রধান (সিন্ধু প্রদেশ শাখা) শায়খুল হাদিস মুফতি মুহাম্মদ দাউদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তানের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাওলানা মনজারুল হক থানভী, জামায়াতে ইসলামী করাচি শাখার সাবেক প্রধান মিরাজ আল-হুদা সিদ্দিকী, মুতাহিদা উলামায়ে মাহাজ পাকিস্তানের সেক্রেটারি জেনারেল ও সিন্ধু প্রদেশের ধর্মীয় আলেম ও শায়খদের শাখার প্রধান মাওলানা মুহাম্মদ আমিন আনসারী, জাবহায়ে মুতাহিদা উলামায়ে মাহাজ পাকিস্তানের প্রধান আবদুল খালিক ফরিদী এবং গ্লোবাল কাউন্সিল ফর রিলিজিয়ন অ্যান্ড মাদহাব কনভার্জেন্স পাকিস্তানের প্রধান মুফতি হাফিজ আবদুল মজিদ।

বক্তারা আমেরিকা ও ইসরাইলী রাষ্ট্রের হুমকিকে নিন্দা জানানোর পাশাপাশি ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতার অবস্থানের পূর্ণ সমর্থন এবং ইসলামী উম্মাহর জাগরণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

কেবল ইরানই আমেরিকা ও ইসরাইলের অপরাধের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে

মুতাহিদা উলামায়ে মাহাজ পাকিস্তানের সেক্রেটারি জেনারেল ও সিন্ধু প্রদেশের ধর্মীয় আলেম ও শায়খদের শাখার প্রধান মাওলানা মুহাম্মদ আমিন আনসারী ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান ও ইসলামী প্রতিরোধ ফ্রন্টের প্রতি তাঁর সমর্থন জানান।

তিনি তাঁর বক্তব্য শুরু করেন ইসলামী বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ীকে সালাম জানিয়ে এবং তাঁর সাহসী নেতৃত্ব ও দূরদর্শিতার ভিত্তিতে ইরানের সাম্প্রতিক বিজয়কে অভিনন্দন জানিয়ে। তিনি বলেন, "ইরানের সাহসী পদক্ষেপের মাধ্যমে সমগ্র প্রতিরোধ জোট নতুন প্রাণশক্তি পেয়েছে। ইরানের উপর শত্রুরা আক্রমণ করেছে কারণ তারা ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। ইরানই একমাত্র দেশ যা আমেরিকা ও ইসরাইলের অপরাধের বিরুদ্ধে পুরোপুরি ফিলিস্তিন ও গাজার পাশে দাঁড়িয়েছে।"

ইরান ১২ দিনের যুদ্ধে আল্লাহর সাহায্যে বিজয়ী হয়েছে

মুতাহিদা উলামায়ে মাহাজ পাকিস্তানের ভাইস প্রেসিডেন্ট আল্লামা সাইয়্যেদ সাজ্জাদ শাবির রিজভী তাঁর বক্তৃতায় ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, "আল্লাহ ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানকে বিজয়ী করেছেন। আমেরিকা ও ইসরাইল মুসলমানদের উপর আক্রমণ করে বিজয়ী হতে চেয়েছিল, কিন্তু আল্লাহ তাঁর বান্দাদের নিরাশ করেন না এবং মুসলমানরা বিজয়ী হয়েছে।" তিনি যোগ করেন, "আল্লাহর সাহায্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন যার ফলে ইরান শুধু ১২ দিনের যুদ্ধে বিজয়ীই হয়নি, বরং কুফরের জগতও মুসলমানদের প্রকৃত শক্তির সাথে পরিচিত হয়েছে।"

ইসলামের পক্ষে লড়াইয়ে ইরান প্রথম সারিতে

গ্লোবাল কাউন্সিল ফর রিলিজিয়ন অ্যান্ড মাদহাব কনভার্জেন্স পাকিস্তানের প্রধান হাফিজ আবদুল মজিদ বর্তমান বিশ্ব ইসলামের অবস্থার কথা উল্লেখ করে বলেন, "দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরাইলীরা গাজা ও মসজিদুল আকসার বিরুদ্ধে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। দুর্ভাগ্যবশত, এই সময়ে বিশ্ব ইসলাম হয় নিশ্চুপ ছিল অথবা প্রতিরোধের সাহস দেখাতে পারেনি। কিন্তু ইসলামী ইরান সাহস, জাতীয় গৌরব ও উম্মাহর ব্যথা গভীরভাবে উপলব্ধি করে ময়দানে প্রবেশ করেছে এবং ইসলামের ক্ষতের উপর মলম দিয়েছে।"

আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী আজ ইসলামী উম্মাহর ঐক্য ও প্রতিরোধের কেন্দ্র

জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ও বেলুচিস্তান আমির মাওলানা আবদুল হক হাশমি বলেন, "আজ ইসলামী উম্মাহর সবচেয়ে বড় প্রয়োজন ঐক্য। ঐক্য ছাড়া উম্মাহর উজ্জ্বল ভবিষ্যত কল্পনা করা যায় না।" তিনি ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের নেতৃত্বের ভূমিকার উপর জোর দিয়ে বলেন, "বর্তমানে আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা, ইসলামী উম্মাহর ঐক্য ও প্রতিরোধের কেন্দ্র। আমাদেরকে নাগরিক, আলেম ও তালিবে ইলম হিসেবে ঐক্যের সঠিক ধারণা রাখতে হবে এবং তাঁর পক্ষে অবস্থান নিতে হবে।"

সাম্প্রতিক যুদ্ধে ইরান বিজয়ী হয়েছে

জাবহায়ে মুতাহিদা উলামায়ে মাহাজ পাকিস্তানের প্রধান মাওলানা আবদুল খালিক ফরিদী ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে শিয়া-সুন্নি ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। এই ধর্মীয় নেতা তাঁর বক্তৃতায় বলেন, "ইসরাইল সবসময় মুসলমানদের সাথে শত্রুতা ও ইসলামী দেশগুলোর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। কিন্তু আজ, আল্লাহর অনুগ্রহে, ইরান, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও সৌদি আরবসহ ইসলামী দেশগুলো একত্রিত হয়েছে এবং একসাথে জুলুম ও ঔদ্ধত্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে।" তিনি যোগ করেন, "আজ ইসলামের পতাকা গৌরবের সাথে উড্ডীন হয়েছে এবং ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান এই যুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে ইসরাইলী রাষ্ট্র ও তার সমর্থকদেরকে শক্ত জবাব দিয়েছে।"#

পার্সটুডে/এমএআর/২১