মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আফগানিস্তান সফর: সেনা প্রত্যাহার নিয়ে রয়েছে মতবিরোধ
https://parstoday.ir/bn/news/world-i90194
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেন আকস্মিক সফরে গতকাল আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে গেছেন। আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সঙ্গে তার বৈঠকে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার, শান্তি প্রক্রিয়া এবং ইস্তাম্বুল বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
(last modified 2025-07-09T12:00:31+00:00 )
এপ্রিল ১৬, ২০২১ ১৫:৫৮ Asia/Dhaka

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেন আকস্মিক সফরে গতকাল আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে গেছেন। আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সঙ্গে তার বৈঠকে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার, শান্তি প্রক্রিয়া এবং ইস্তাম্বুল বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

এ বৈঠকে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি বলেছেন তার দেশের নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষমতা সেনাবাহিনীর রয়েছে। একইসঙ্গে তিনি ওয়াশিংটন-কাবুল এর মধ্যে সহযোগিতার জন্য নতুন কর্মপরিকল্পনা ঠিক করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তবে নিজস্ব সক্ষমতার ব্যাপারে আফগান প্রেসিডেন্টের এ বক্তব্য সত্বেও সে দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির ব্যাপারে উদ্বেগ রয়েই গেছে। আফগান সংসদের স্পিকার মির রাহমান রহমানি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন মার্কিন সেনারা যদি সে দেশ থেকে চলে যায় তাহলে আবারও গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা রয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে তার দেশের সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন কাবুল সফরে গেলেন। কাবুল পৌঁছে তিনি বলেছেন আফগানিস্তানে দীর্ঘতম যুদ্ধ অবসানের সময় এসেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পাঁচ মাস পর আফগানিস্তান থেকে তাদের সমস্ত সেনা প্রত্যাহার করা হবে বলে ঘোষণা দেয়ার পর ন্যাটো জোটও জানিয়েছে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সাথে সাথে ওই জোটের সেনাদেরকেও সে দেশ থেকে সরিয়ে আনা হবে।

ধারণা করা হচ্ছে, কয়েকটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফগানিস্তান সফরে এসেছেন। প্রথমত কাবুলের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক অব্যাহত রাখা এবং ওই দেশটিতে মার্কিন সাহায্য বজায় রাখার ব্যাপারে আফগান কর্মকর্তাদেরকে তিনি নিশ্চয়তা দিতে চান। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আফগানিস্তানের প্রতি ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সমর্থন এবং প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা বজায় থাকবে। এছাড়া আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়ার প্রতিও সমর্থন বজায় থাকবে বলে তিনি জানান। আফগানিস্তানে সামরিক অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেবে না জানিয়ে তিনি বলেন কাবুলের প্রতি কূটনৈতিক ও মানবিক সাহায্য সমর্থন বজায় থাকবে।

দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর নাগাদ আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা সরিয়ে আনা হবে। ধারণা করা হচ্ছে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে এবং দেশটির বিভিন্ন শহরে তালেবানদের হামলা বেড়ে যাওয়ার ব্যাপক আশঙ্কা থাকায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার দেশের সেনাদেরকে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে আশেপাশের অন্য কোন দেশে মোতায়েন করার চেষ্টা করছেন। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগন এবং দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এমনটাই আভাস দিয়েছেন। মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, আফগানিস্তানে আবারো সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য ঠেকানোর জন্য তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে। পেন্টাগন বর্তমানে তাজিকিস্তান, কাজাকিস্তান এবং উজবেকিস্তানে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে যাতে ওই অঞ্চলে নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়।

তবে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই সিদ্ধান্তে খোদ মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাট দলের প্রধান ন্যান্সি পেলোসি যদিও বাইডেনের এই পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন কিন্তু অনেক রিপাবলিকান নেতা এর সমালোচনা করেছেন। রিপাবলিকান দলের সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পরিণতির ব্যাপারে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন এতে করে আরেকটি ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।#

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৬