ইরানের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যের চার দেশের বিবৃতি: আসন্ন ভিয়েনা বৈঠকে ছাড় আদায়ের চেষ্টা
(last modified Sun, 31 Oct 2021 11:06:48 GMT )
অক্টোবর ৩১, ২০২১ ১৭:০৬ Asia/Dhaka
  • ইরানের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যের চার দেশের বিবৃতি: আসন্ন ভিয়েনা বৈঠকে ছাড় আদায়ের চেষ্টা

ইরানের পরমাণু সমঝোতা নিয়ে সৃষ্ট চলমান অচলাবস্থার জন্য দায়ী আমেরিকা ও তিন ইউরোপীয় দেশের শীর্ষ নেতারা এক যৌথ বিবৃতিতে দাবি করেছেন, ইরান তার আচরণ পরিবর্তন করলে এই সমঝোতা আবার কার্যকর করা হতে পারে। বিবৃতিতে তারা আন্তরিকতার সাথে আলোচনায় বসার জন্য ইরানের প্রতি আহ্বান জানান যাতে পরমাণু সমঝোতায় তেহরান ও ওয়াশিংটনের ফিরে আসার ক্ষেত্র তৈরি হয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির শীর্ষ নেতারা শনিবার যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে এ মন্তব্য করেছেন। বিবৃতিতে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পালনে অক্ষমতার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে দাবি করা হয়েছে আমরা এ নিশ্চয়তা পেতে চাই যে ইরান যাতে কোনোভাবেই পরমাণু অস্ত্র অর্জন করতে না পারে। ইরান ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যখন আগামী নভেম্বরে ভিয়েনায় সপ্তম দফা আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঠিক তখনই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ওই তিনটি দেশ ইরানের বিরুদ্ধে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করল। এ থেকে বোঝা যায় ভিয়েনায় আলোচনা শুরুর আগে পাশ্চাত্য আসলে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক উদ্দেশ্যে পরমাণু তৎপরতার অভিযোগ এনে তেহরানের ওপর মনস্তাত্বিক চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আসন্ন বৈঠকে ইরানের কাছ থেকে আরো ছাড় আদায় করা। অর্থাৎ একদিকে পরমাণু কার্যক্রমে আরোপিত সীমাবদ্ধতা ইরানকে মেনে চলতে হবে এবং অন্যদিকে আরো কিছু বিষয় যেমন ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের তৎপরতা বন্ধের বিষয়টি আলোচনার টেবিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পাশ্চাত্যের এই চারটি দেশ বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হয়তো এটা  ভুলে গেছেন যে, পরমাণু সমঝোতায় বর্তমানে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে তার জন্য ওয়াশিংটনই দায়ী। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালের মে মাসে একতরফাভাবে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যান এবং তাদের অন্যায় আবদার মেনে নিতে বাধ্য করার জন্য ইরানের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন ও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এমনকি পরমাণু সমঝোতা রক্ষার যে কোনো উদ্যোগেরও তিনি বিরোধিতা করেছেন। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একসময় দাবি করতেন ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে ভুল করেছেন এবং তার এ পদক্ষেপ মার্কিন জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। কিন্তু পরে দেখা গেল তিনি নিজেও ইরানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির নীতি বহাল রেখেছেন। পরমাণু সমঝোতা লঙ্ঘনে মার্কিন ভূমিকাকে উপেক্ষা করে তিনি উল্টো দাবি করেন, ওয়াশিংটনকে পরমাণু সমঝোতায় ফিরিয়ে আনতে হলে তেহরানকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। এমনকি প্রেসিডেন্ট বাইডেনও নতুন আরো কিছু নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছেন ইরানের ওপর। 

অন্যদিকে ইউরোপীয়রাও ইরানের ব্যাপারে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি এবং ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ইউরোপ কেবল লোক দেখানো পরমাণু সমঝোতার প্রতি সমর্থন বজায় রাখলেও ইরানের সঙ্গে তারা পাওনাদারের মতো আচরণ করছে। 

যাইহোক বর্তমানে বল পাশ্চাত্যের কোর্টে। তাই তাদের উচিত হবে অযথা ইরানকে অভিযুক্ত না করে পরমাণু সমঝোতা রক্ষা করা এবং ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৩১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ