এপ্রিল ১৫, ২০২৩ ১৯:২০ Asia/Dhaka

পবিত্র রমজানের শেষ শুক্রবারে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে পালন করা হয়েছে বিশ্ব কুদস দিবস।

মুসলমানদের প্রথম কিবলা আল-আকসা মসজিদ এবং ফিলিস্তিনকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের হাত থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে মুসলিম বিশ্বে সচেতনতা ও জাগরণ এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে গত শতকের আশির দশকের শুরুতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন ইরানের ইসলামী বিপ্লবের রূপকার ইমাম খোমেনী (র)। 

মরহুম ইমাম খোমেনী বলেছিলেন, (আরব বিশ্বের) প্রত্যেক মুসলমান যদি এক বালতি করে পানি ঢালে তাহলে ইসরাইল ভেসে যাবে।এই কুদস দিবস পালনের সুবাদে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ইসরাইল বিরোধী চেতনা অনেক জোরদার হয়েছে। এ ছাড়াও কুদস দিবস হয়ে উঠেছে বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর ও শিয়া-সুন্নি নির্বিশেষে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের ক্রমবর্ধমান জোরালো বন্ধন।

এবার এমন সময়ে বিশ্ব কুদস দিবস পালন করা হল যখন ইহুদিবাদী ইসরাইল অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে পশ্চিম তীরসহ বিভিন্ন অঞ্চল ও সীমান্ত থেকে দখলদার-বিরোধী প্রতিরোধ সংগ্রামীদের কঠোর প্রতিরোধের মুখে রয়েছে এবং ঘরোয়া রাজনৈতিক সংকটের কারণেও নজিরবিহীন মাত্রায় বিপর্যস্ত হয়ে আছে।  অন্যদিকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের অবৈধ অস্তিত্বের জন্মদাতা ও মদদদাতা প্রধান শক্তি মার্কিন সরকার এবং তার সহযোগী পশ্চিমা শক্তিগুলোও অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই শক্তিগুলো ইরানে ইসলামী সরকারের পতনের স্বপ্ন দেখছিল এবং ইরানে দাঙ্গা-হাঙ্গামা উস্কে দিয়েছিল। কিন্তু তাদের সেই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হওয়ায় এ অঞ্চলের আরব সরকারগুলো এখন ইসলামী ইরান ও তার সহযোগী আঞ্চলিক সরকারগুলোর সঙ্গে আবারও সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার দিকে প্রবল আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি এইসব প্রেক্ষাপটের আলোকেই বলেছেন, ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে যে কার্যকর নিরাপত্তা অর্জন সম্ভব নয় তা স্পষ্ট হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, কুদস শরিফের মুক্তি এখন খুবই কাছে।

ইসরাইলি দৈনিক মারিভও সেনাসূত্রের বরাত দিয়ে লিখেছে, ইসরাইল এখন আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের মুখে রয়েছে।  ইসরাইল তথা অধিকৃত ফিলিস্তিন থেকে নিজেদের আসল দেশে ফিরে যাওয়ার প্রবণতাও কমেই বাড়ছে, ইসরাইলি কর্মকর্তাদের ৯০ শতাংশের মধ্যেও এখন এই একই চিন্তা জোরদার হচ্ছে বলে মার্কিন সংস্থা আইএটিআই ও ইসরাইলের একটি কোম্পানির পরিচালিত যৌথ জরিপে জানানো হয়েছে। নেতানিয়াহুর বিচার-বিভাগীয় সংস্কার নিয়ে ইসরাইলি নেতৃত্বে ও সমাজে বিভাজন ক্রমেই বাড়ছে।

ওদিকে এ অঞ্চলে মার্কিন প্রভাব কমে যাওয়ায় ওয়াশিংটনকে দিয়ে ইরানের ওপর চাপ জোরদারের বা হামলার ইসরাইলি স্বপ্ন কিংবা আরব দেশগুলোর অর্থ ব্যবহার করে ইরানের ওপর ইসরাইলি হামলার দুঃস্বপ্নও পুরোপুরি বানচাল হয়ে যাচ্ছে। অথচ ইসরাইল এক সময় নীল থেকে ফোরাত পর্যন্ত কথিত বৃহত্তর ইসরাইল গঠনের স্বপ্ন দেখছিল!

এটা স্পষ্ট ইসরাইলের ধ্বংস বা বিলুপ্তি যেমনটি ভাবা হচ্ছিল তার চেয়েও অনেক কম সময়ে ঘটতে পারে। সম্প্রতি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি ও প্রেসিডেন্ট রায়িসিও তা উল্লেখ করেছেন।#

পার্সটুডে/এমএএইচ/১৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ