মে ১৭, ২০২২ ১৯:৩৬ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা! সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি গাজী আবদুর রশীদ শুরু করছি ১৭ মে মঙ্গলবারের কথাবার্তার আসর। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • মতামত: নির্বাচন কীভাবে হবে সেটিই এখন ‘রহস্য’-প্রথম আলো
  • বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন-যুগান্তর
  • ‘দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে দেশে ফিরেছিলাম’-কালের কণ্ঠ
  • সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ, শহরে হু-হু করে ঢুকছে পানি-ইত্তেফাক
  • শ্রীলঙ্কা থেকে বাংলাদেশের শিক্ষণীয় আছে-মানবজমিন
  • পিকে হালদার কোন কোন দেশে টাকা রেখেছেন, জানতে চান হাইকোর্ট-বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভারতের শিরোনাম:

  • ভারতীয় অর্থনীতির মন্দা অব্যাহত, বাজার খুলতেই টাকার দামে সর্বকালীন পতন-সংবাদ প্রতিদিন
  • অভিষেক–রুজিরাকে আপাতত কলকাতাতেই জেরা করা হোক, ইডিকে সুপ্রিম নির্দেশ-আজকাল 
  • স্বাস্থ্যসাথী ফেরালেই বাতিল হবে হাসপাতালের লাইসেন্স, আবার হুঁশিয়ারি মমতার-আনন্দবাজার পত্রিকা

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি- 

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১. বাংলাদেশে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী জনিয়েছেন, অপচয় রোধে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। কী বলবেন আপনি?

২. প্রতিবেশীদের মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ক বিরাজ করলে তা শত্রুকে হতাশ করবে- আরব আমিরাতকে একথা বলেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ইরানের এই কথা কীভাবে গ্রহণ করবে আমিরাত?

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর:

বাংলাদেশে নির্বাচন কীভাবে হবে সেটিই এখন রহস্য!

প্রথম আলোর উপসম্পাদক এ কে এম জাকারিয়া তার মতামত কলামে লিখেছেন, নির্বাচন কীভাবে হবে সেটিই এখন ‘রহস্য’! এই সংসদ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। নির্বাচন হতে হবে এই সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০ দিনের মধ্যে যেকোনো সময়ে। সরল হিসাবে, ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। তার মানে নির্বাচনের আরও অন্তত ১৭ মাস সময় আছে। কোনো কারণে আগাম নির্বাচন হলে অবশ্য ভিন্ন কথা। অঙ্কের হিসাবে কোনো বিভ্রান্তি থাকে না। এখানেও নেই। বিভ্রান্তি অন্যখানে, নির্বাচনটি কেমন বা কীভাবে হবে, তা কেউ জানে না। ২০১৪ সালের নির্বাচন আগের কোনো নির্বাচনের মতো হয়নি, ২০১৮ সালের নির্বাচনটিও আগের কোনো নির্বাচনের মতো হয়নি। দুটি নির্বাচনই ছিল ইউনিক বা অনন্য। এবারের নির্বাচনটি যে আগের দুটির কোনোটির মতোই হবে না, সে ব্যাপারে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মোটামুটি একমত। কীভাবে ও কেমন হবে আগামী নির্বাচন, এটা জনগণের সামনে এক বড় রহস্য।

প্রতিটি নির্বাচনে ভিন্ন ভিন্ন কৌশল গ্রহণের কৃতিত্ব যেমন আওয়ামী লীগকে দিতে হয়, তেমনি নির্বাচনের আগপর্যন্ত সেই কৌশল পুরোপুরি গোপন রাখার কৃতিত্বও দলটিকে দিতে হয়। তবে দল ও দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি দিনে দিনে যে মাত্রায় কেন্দ্রীভূত ও এককেন্দ্রিক হয়েছে, তাতে দলের কৌশল গোপন রাখার কাজটি খুব সহজ হয়ে গেছে। দলের লোকজনও তেমন কিছু জানেন বলে মনে হয় না।

২০১৮ সালের নির্বাচনের পরদিন সহকর্মী সোহরাব হাসানের সঙ্গে বের হয়েছি কী যেন কাজে। তিনি টিভিতে টক শোতে যান, পরিচিত মুখ। তাঁকে দেখে ষাটোর্ধ্ব এক লোক এগিয়ে এলেন। সেই নির্বাচন তখনো ‘রাতের ভোট’ নামে পরিচিতি পায়নি কিন্তু নির্বাচনটি কেমন হয়েছে, তা নিয়ে সবার মধ্যে নিজেদের মতো একটি ধারণা হয়ে গেছে। ওই ব্যক্তি ব্যাংকে চাকরি করতেন, এখন অবসরজীবন যাপন করছেন। নির্বাচন নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বললেন। বোঝা গেল, এই নির্বাচন তাঁকে চরম হতাশ করেছে। বিদায় নেওয়ার সময় বললেন, ‘আল্লাহ যেন আমাকে আরও পাঁচটি বছর বাঁচিয়ে রাখেন। ’১৪ সালের নির্বাচন আওয়ামী লীগ একভাবে করেছে, এবারের (২০১৮ সালের) নির্বাচন হলো আরেকভাবে, পরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কী কৌশল নেয়, তা নিয়ে আমার মধ্যে চরম কৌতূহল তৈরি হয়েছে। আল্লাহ যেন আমাকে তা দেখার সুযোগ দেন।’

সেই ভদ্রলোক কোথায় বা কীভাবে আছেন, জানি না। কিন্তু সামনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কৌশল কী হবে, তা দেখার জন্য শুধু তিনি নন, সম্ভবত পুরো জাতি এখন ‘চরম কৌতূহল’ নিয়ে অপেক্ষা করছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে সেই নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কেউ ভাবছেন বা তা নিয়ে কারও তেমন কৌতূহল আছে বলে এখনো খুব টের পাচ্ছি না।

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ, শহরে হু-হু করে ঢুকছে পানি-ইত্তেফাক

বন্যা 

বর্ষণ-পাহাড়ি ঢলে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে মঙ্গলবার (১৭ মে) দুপুরে। বিভাগের প্রধান নদী সুরমা, কুশিয়ারা বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেটের ৬টি ও সুনামগঞ্জের ৬টি মোট ১২টি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ নিয়েছে। 

এদিন দেখা গেছে, সিলেট শহরের নিকট সুরমার পানি বিপদসীমার উপরে। পানি উপচে শহরের অভিজাত এলাকা উপশহরে পানি ঢুকছে। এছাড়া তালতলা, কুশিঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় হু-হু করে পানি ঢুকছে। শহরের ড্রেন ও নালা, ছড়া দিয়ে পানি সুরমায় প্রবাহিত হচ্ছে না। কাজীর বাজারের কাছের নালাসহ বিভিন্ন নালা দিয়ে এখন সুরমার পানি শহরে ঢুকে সয়লাব। অনেকের বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে রান্নাবান্না বন্ধ। গ্রামীণ সড়ক এমনকি জেলা সদরের সাথে উপজেলা সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। সুনামগঞ্জের, ছাতক, তাহিরপুরের অবস্থাও শোচনীয়।

শ্রীলঙ্কা থেকে বাংলাদেশের শিক্ষণীয় আছে-মানবজমিন

শ্রীলঙ্কায় নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পতন ঘটেছে রাজাপাকসে সরকারের। আকাশছোঁয়া মুদ্রাস্ফীতি, পরিকল্পনাহীন ও অপ্রয়োজনীয় বিলাসবহুল প্রকল্প, ঋণের জট, রিজার্ভ সংকটসহ সরকারের দুর্বল অর্থনৈতিক ব্যবস্থাই এই বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ। শ্রীলঙ্কার এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য শিক্ষণীয় বলে মনে করছেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ. বি. মীর্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম। তিনি মানবজমিনকে বলেন, শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি সহসাই বাংলাদেশে হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কেননা, আমাদের রিজার্ভ পজিশন ভালো। এ ছাড়া ঋণের ব্যয়, রপ্তানি আয় এবং বৈদেশিক মুদ্রা আয়- সেটিও সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে। রিজার্ভ কিছুটা কমলেও এখনো পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো রিজার্ভ আছে। তাছাড়া শ্রীলঙ্কার অভ্যন্তরীণ যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেটিও বাংলাদেশে বিদ্যমান নয়। এ ছাড়া শ্রীলঙ্কার কৃষি খাতে বড় ধরনের বিপর্যয় নেমেছিল, তাদের পর্যটন খাতে সংকট নেমেছিল। সবমিলিয়ে বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

ভারতীয় অর্থনীতির মন্দা অব্যাহত, বাজার খুলতেই টাকার দামে সর্বকালীন পতন-সংবাদ প্রতিদিন

রেকর্ড পতন হল ভারতীয় টাকার দামে

ভারতীয় অর্থনীতির রক্তক্ষরণ অব্যাহত। করোনা আর যুদ্ধের জোড়া ফলায় বিদ্ধ ভারতীয় অর্থনীতি। লাফিয়ে বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি। এর মাঝেই ভারতীয় টাকার দাম পড়ল। রেকর্ড পতন হল ভারতীয় টাকার দামে। মঙ্গলবার ভারতীয় মুদ্রায় এক মার্কিন ডলারের দাম দাঁড়াল ৭৭ টাকা ৭৩ পয়সা। যা এখনও পর্যন্ত সর্বনিম্ন।মার্চের শুরুতেই ৭৭ টাকায় পৌঁছে যায় ডলারের দাম। তার পর থেকে রক্তক্ষরণ অব্যাহত।ওয়াকিবহাল মহল বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চিনে নতুন করে লকডাউনের প্রভাব পড়েছে টাকার দামে।

অভিষেক–রুজিরাকে আপাতত কলকাতাতেই জেরা করা হোক, ইডিকে সুপ্রিম নির্দেশ-আজকাল

কয়লা কাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি এবং তাঁর স্ত্রী রুজিরাকে কলকাতাতেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। মঙ্গলবার ইডিকে নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। কয়লা পাচার মামলায় তৃণমূল সাংসদ এবং তাঁর স্ত্রীকে বারবার দিল্লিতে সমন করেছে ইডি। এর বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এই দম্পতি। কিন্তু তাঁদের আর্জি গ্রহণ করেনি দিল্লির আদালত। পাল্টা গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক এবং রুজিরা। শীর্ষ আদালতে অভিষেকের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। তখনই সুপ্রিম কোর্ট ইডির কাছে জানতে চেয়েছিল, সস্ত্রীক অভিষেককে কলকাতায় জেরা করতে সমস্যা কোথায়? আদালতের প্রশ্নের উত্তর দিতে সময় চেয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই মামলায় এদিন স্বস্তি পেলেন অভিষেক–রুজিরা। এদিন শীর্ষ আদালত দিল্লি হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৯ জুলাই।

স্বাস্থ্যসাথী ফেরালেই বাতিল হবে হাসপাতালের লাইসেন্স, আবার হুঁশিয়ারি মমতার-আনন্দবাজার পত্রিকা

আগেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফেরানো নিয়ে একাধিকবার অভিযোগ উঠেছে। বার বার হাসপাতালগুলিকে সাবধান করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার আবারও হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বললনে, স্বাস্থ্যসাথী ফেরালেই এফআইআর দায়ের হবে থানায়। বাদ যাবে হাসপাতালের লাইসেন্স।# 

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৭