মে ২৬, ২০২২ ১৭:১১ Asia/Dhaka

শ্রোতা/পাঠকবন্ধুরা!কথাবার্তার প্রাত্যহিক আসরে আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ।আজ ২৬ মে বৃহষ্পতিবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। তারপর দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাব। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

ঢাকার কয়েকটি খবরের শিরোনাম

  • অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ-যুগান্তর
  • ৫ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে জাহাজে নিহত হাদিসুরের পরিবার –ইত্তেফাক
  • গুম নিয়ে জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের রিভিউ রিপোর্ট/ ৬৬ জনের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের দেয়া তথ্য অপর্যাপ্ত-মানবজমিননতুন বাজেট পাচার হওয়া অর্থ ফেরত
  • আনতে ঘোষণা আসছে-প্রথম আলো
  • সুপ্রিম কোর্ট ইমরানের পক্ষেই সায় দিয়েছে-বাংলাদেশ প্রতিদিন
  • বিশেষজ্ঞরা বলছেন ইভিএম চমৎকার মেশিন-কালের কণ্ঠ

কোলকাতার শিরোনাম:

  • জঙ্গিনেতা ইয়াসিন মালিকের যাবজ্জীবনে ক্ষুব্ধ পাকিস্তান, নিন্দায় মুখর শাহবাজ শরিফ -সংবাদ প্রতিদিন
  • ভোটের দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়ে ইসলামাবাদে ইমরানরা, রুখতে মোতায়েন সেনা-আজকাল
  • রাজ্যপাল নন, এ বার মুখ্যমন্ত্রীই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য, প্রস্তাবে সিলমোহর মমতা মন্ত্রিসভার-আনন্দবাজার পত্রিকা

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবারে বিশ্লেষণে যাচ্ছি। 

বিশ্লেষণের বিষয়:

১. ছাত্রলীগ-ছাত্রদল সংঘর্ষ, গুলি, ছাত্রদলের দুই নেতাকে বেধড়ক পিটুনি। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের অনেক পত্রিকা খবর দিয়েছে। কী বলবেন আপনি?

২.  ‘দারিদ্রের কবলে পড়ে থাকা পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াব না’- একথা বলেছেন ইয়েমেনের উপ প্রধানমন্ত্রী। বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

বিশ্লেষণের বাইরের কয়েকটি খবর:

নতুন বাজেট পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে ঘোষণা আসছে-প্রথম আলো

দেশ থেকে অর্থ পাচারের বিষয়টি এত দিন সরকার স্বীকারই করেনি। এবার অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নিচ্ছে। প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত ছিল বাজেট হবে ৬ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকার। শেষ পর্যন্ত কয়েক হাজার কোটি টাকা কমতে পারে।

আমদানি নিয়ন্ত্রণের আরও পথ খুঁজছে এনবিআর।

আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা হতে যাচ্ছে ৯ জুন। এ বাজেটের আগেই সরকার এ বিষয়ে নতুন ঘোষণা দিতে পারে বলে জানা গেছে। মূলত বিদেশ থেকে অর্থের প্রবাহ বাড়াতে চায় সরকার। এ জন্য আমলা, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ যেসব বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার করেছেন, নামমাত্র কর দিয়ে সেগুলো দেশে ফিরিয়ে আনাই সরকারের উদ্দেশ্য।

পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার ব্যাপারে বাজেটের আগেই পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে আভাস দেন অর্থমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। কানাডার বেগমপাড়া বা পশ্চিমবঙ্গে বন্দী প্রশান্ত কুমার হালদারদের মাধ্যমে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা হবে। যদি কেউ নিজ উদ্যোগে ফেরত নিয়ে আসেন তো ভালো। তাঁদের কোনো প্রশ্ন করা হবে না। অর্থ ফেরত আনার করও ধরা হবে ন্যূনতম।’

পাচার হওয়া অর্থ এভাবে ফেরত আনতে গেলে নতুন নতুন পাচারকারী তৈরি হতে পারে এবং অবৈধভাবে অর্জন করা অর্থ বিদেশে পাঠিয়ে পরে দেশে এনে বৈধ করার প্রবণতাও তৈরি হতে পারে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অর্থ আগে দেশে ফেরত আসা দরকার। সেভাবে আমরা এগোচ্ছি।’

প্রথম আলোর জার্মানি প্রতিনিধি সরাফ আহমেদ’র মতামত-ইউক্রেন নিয়ে পশ্চিমাদের আকুতি অন্য কোথাও দেখা যায় না কেন?-প্রথম আলো

‘চিরসুখী জন ভ্রমে কি কখন/ ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে।/ কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে/ কভু আশীবিষে দংশেনি যারে।’

বাঙালি কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের এই কবিতা আমরা সেই ছোটকাল থেকেই শুনে আসছি। আর এই কবিতার মর্মার্থ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই ইউরোপের সরকারগুলো অনুধাবন করছে। যুদ্ধ মানেই বিধ্বস্ত জনপদ, হত্যালীলা আর অশ্রুপাত। যুদ্ধকে বৈধতা দেওয়ার অর্থ মানুষের গভীর মানবিক দিকটাকে অবহেলা করা।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের প্রতি রাশিয়ার এই হামলা গণতন্ত্র ও মুক্ত পৃথিবীর প্রতি হামলা।’ আর পশ্চিমা মিত্ররাও জেলেনস্কির কথাকেই জ্ঞান করছেন; যেন গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন অবশ্যই নিন্দনীয়। তবে পৃথিবীর অন্য অঞ্চলের যুদ্ধ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পশ্চিমা সমাজের এই সংহতি সচরাচর দেখা যায় না। আজ খোদ ইউরোপের মাটিতে যুদ্ধের এই দংশন হচ্ছে বলেই কি এ সংহতি!

রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবরোধ আর নানা মানবিক সহযোগিতা, অর্থ ও মারণাস্ত্র নিয়ে এগিয়ে এসেছে পশ্চিমা শক্তি। প্রায় ৮০ বছর পর ইউরোপীয় দেশগুলোর ‘যুদ্ধ নয় শান্তি ও সংহতি’র হিসাব আচমকাই পাল্টে গেছে। ইউরোপের ভৌগোলিক অবস্থানে উত্তর-পূর্ব দিকে বিশাল অংশজুড়ে রাশিয়ার সীমান্ত। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে পশ্চিম ইউরোপের দেশ, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জি-৭ জোট—সবাই এককাট্টা হয়েছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নিজ মহাদেশে সাবেক যুগোস্লাভিয়া বা বলকান যুদ্ধের পর এমন বড় যুদ্ধ ইউরোপের জনগণ দেখেনি। এখন প্রতিদিন কাগজের পাতা আর টেলিভিশনের পর্দায় ভেসে আসছে যুদ্ধবিধ্বস্ত জনপদ, হতাহত হওয়ার খবর এবং লাখো শরণার্থীর প্রাণ বাঁচানোর আকুতি। যেমনটি আমরা দেখি বিশ্বের নানা অঞ্চলের যুদ্ধগুলোয়। তবে সেসব যুদ্ধে পশ্চিমাদের আকুতি বা সংহতি তেমনটি চোখে পড়ে না।

বলা হচ্ছে, ইউরোপে ন্যাটো সামরিক জোটের সম্প্রসারণ বা ইউক্রেনের এই জোটের সদস্য হওয়ার অভিপ্রায় এ যুদ্ধের একটি বড় কারণ। ন্যাটো সামরিক জোট কেন এখনো প্রয়োজন বা কেন এই জোটকে সম্প্রসারণ করার প্রয়োজন পড়ছে, সেটা জানতে একটু পিছিয়ে যেতে হবে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চার মিত্রশক্তি—সোভিয়েত ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স ফ্যাসিস্ট হিটলারের জার্মানির পৈশাচিক যুদ্ধকে রুখতে একসঙ্গে যুদ্ধ করেছিল। ১৯৪৫ সালের ৮ মে হিটলার বাহিনীকে পরাজিত করে সোভিয়েত লাল ফৌজ বার্লিন দখল করে নেয়। এর পরপরই ছয় বছরব্যাপী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। সেই সময় প্রেসিডেন্ট জোসেফ স্তালিনের নেতৃত্বে সোভিয়েত লাল ফৌজের রণকৌশল ও বীরত্ব সর্বজনবিদিত। কিন্তু ১৯৩৯ সালে অ্যাডলফ হিটলার আর স্তালিনের মধ্য পোল্যান্ড ভাগাভাগি করে নেওয়ার অনৈতিক চুক্তির বিষয় এবং উভয় দেশের মধ্য অনাক্রমণ চুক্তিটি ঐতিহাসিক সত্য। আবার বার্লিন বিজয়ের তিন বছর পর সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃক বার্লিনকে পূর্ব ও পশ্চিম অংশে বিভক্তকরণ এবং বার্লিনের পশ্চিম অংশকে ১৯৪৮ সালের জুন মাস থেকে প্রায় এক বছর অবরোধ করে খাদ্য, পানীয় ও জ্বালানি বন্ধ করে দেওয়া জোসেফ স্তালিনের নির্দেশেই হয়েছিল।

সেই সময় যুক্তরাজ্য ও মার্কিন বিমান অবরুদ্ধ পশ্চিম বার্লিনবাসীকে বিমানে করে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পৌঁছে দিয়েছিল। জোসেফ স্তালিনের এসব অবিশ্বাসী আচরণের কারণে মূলত ১৯৪৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ ৯ দেশ মিলে ন্যাটো সামরিক জোট তৈরি করে। যদিও সেই সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন বহু আগেই লুপ্ত হয়েছে, তবে বর্তমানে ভ্লাদিমির পুতিনের আগ্রাসী ভূমিকাকে স্তালিনের রাজনীতির কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে।

রাশিয়ায় কর্তৃত্ববাদী শাসন রয়েছে বা স্বচ্ছ গণতন্ত্রের অভাব রয়েছে। পৃথিবীর বহু দেশেই এমন শাসন রয়েছে। আট বছর ধরে সৌদি আরব প্রতিবেশী দেশ ইয়েমেনে যুদ্ধ চালিয়ে আড়াই লাখ মানুষকে হত্যা করেছে। পশ্চিমারা এ কথা জানার পরও সৌদি আরবের প্রতি কোনো অবরোধ তো দূরে থাক, দেশটির কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো অস্ত্র বিক্রি করছে দেদার। সৌদি আরবের ক্ষেত্রে পশ্চিমাদের মানবিকতা ও গণতন্ত্রের সংজ্ঞা অস্ত্র ব্যবসার কাছে মাথা নত করেছে।

অন্যদিকে, বিশ্বযুদ্ধের পর অনেক ইউরোপীয় দেশ অস্ত্র বিক্রির জমজমাট ব্যবসা করলেও নিজেদের সেনাবাহিনীকে তেমনটি করে গড়ে তোলেননি, যা দিয়ে রাশিয়ার সামরিক শক্তিকে ঠেকানো যায়। তবে ন্যাটো জোটের অনেক সদস্যদেশ বিগত সময়ে মার্কিনদের সব যুদ্ধের সঙ্গী হয়নি। তবে খোদ ইউরোপে যুদ্ধ নিয়ে এখন সবাই রাশিয়ার বিরুদ্ধে এক হয়েছে। ইউক্রেনকে ন্যাটোভুক্ত করার বিষয়ে জার্মানি ও ফ্রান্স আপত্তি করলেও মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি নিয়ে বেশি উৎসাহিত ছিল। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনকে আক্রমণ করার আগে পশ্চিমা নেতারা ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে অনেক কূটনৈতিক কথাবার্তা বললেও প্রেসিডেন্ট পুতিন তা আস্থায় নেননি। এ মুহূর্তে ইউরোপীয় নেতাদের মধ্য এমন কেউ নেই, যিনি মার্কিনদের বলতে পারেন, ন্যাটো জোটের বিস্তৃতির প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে। বিষয়টি ইউরোপীয় রাজনীতিকদের জন্য বড় ধরনের ব্যর্থতা

পশ্চিমা জোট যে কথা বলে রাশিয়ার বিরুদ্ধ নানা আর্থিক অবরোধ বা যুদ্ধে অংশ নিয়েছে, তা হলো সার্বভৌম ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার এই হামলা গণতন্ত্র ও মুক্ত পৃথিবীর প্রতি হামলার শামিল। রাশিয়ায় কর্তৃত্ববাদী শাসন রয়েছে বা স্বচ্ছ গণতন্ত্রের অভাব রয়েছে। পৃথিবীর বহু দেশেই এমন শাসন রয়েছে। আট বছর ধরে সৌদি আরব প্রতিবেশী দেশ ইয়েমেনে যুদ্ধ চালিয়ে আড়াই লাখ মানুষকে হত্যা করেছে। পশ্চিমারা এ কথা জানার পরও সৌদি আরবের প্রতি কোনো অবরোধ তো দূরে থাক, দেশটির কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো অস্ত্র বিক্রি করছে দেদার। সৌদি আরবের ক্ষেত্রে পশ্চিমাদের মানবিকতা ও গণতন্ত্রের সংজ্ঞা অস্ত্র ব্যবসার কাছে মাথা নত করেছে।

পশ্চিমারা যদিও বলছে, এ যুদ্ধ স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের লড়াই; তবে এই যুক্তি ধোপে টিকছে না। চিলিতে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়রগে হাইনে জার্মানির সুদ ডয়চে যাইটুং পত্রিকায় গত শনিবার একটি সাক্ষাৎকারে বলছেন, ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমারা এক হয়েছে, তা সঠিক; তবে আমরা যদি আফ্রিকা, এশিয়া, লাতিন আমেরিকার দিকে তাকাই, তবে তাদের বেশির ভাগ দেশ এই যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা অবরোধের বিষয়ে একমত নয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা করা উচিত। তবে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধের অনেক অঞ্চলে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই যথেষ্ট খারাপ। আর পশ্চিমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নানা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে ইউক্রেনের যুদ্ধের চেয়ে এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার ক্ষুধার্ত হয়ে মারা যাবে আরও বেশি মানুষ।’

৫ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে জাহাজে নিহত হাদিসুরের পরিবার-ইত্তেফাক

ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ‘এম ভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে নিহত থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের পরিবার ৫ লাখ ডলার (প্রায় ৫ কোটি টাকা) ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে।

ইনসিওরেন্স কোম্পানির কাছ থেকে এই ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি)। এ বিষয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার জাহাঙ্গীর আলম খান ইত্তেফাককে বলেন, আগামী মাসে এই ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে। এছাড়া জাহাজের অন্য সদস্যরা সাত মাসের বেতন পাবেন। নিহত হাদিসুরের ভাইকে বিএসসিতে চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার ভাই ১ জুন বিএসসিতে যোগদান করবেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন ইভিএম চমৎকার মেশিন-কালের কণ্ঠ

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) দেখার পর এটিকে চমৎকার মেশিন বলে আখ্যায়িত করেছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘মেশিনের ভালো-খারাপ নিয়ে এখন কিছু বলব না, আপনাদের আরো একটু অপেক্ষা করতে হবে। ’

গতকাল বুধবার কারিগরি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ইভিএম নিয়ে মতবিনিময় করে কমিশন। সকাল সোয়া ১০টা থেকে অনুষ্ঠিত প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী সভায় এর গঠনপদ্ধতি বুঝতে বিভিন্ন সার্কিট খুলে দেখেন তাঁরা। চাইলেই নিজের মতো করে ইভিএম কাস্টমাইজ করা যায় কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জাফর ইকবাল বলেন, ‘যারা এই কথাটা বলছে, তাদের আমি অনুরোধ করব তারা যেন সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ করেন, সমস্যা কোথায়, তা আমাদের জানান। এই মেশিনে টেকনিক্যাল দিক থেকে অন্য কিছু করা সম্ভব নয়। অন্য যেকোনো মেশিন থেকে এটা আধুনিক। এটি এমনভাবে করা, ম্যানুপুলেট করার আশঙ্কা নেই। ’

সুপ্রিম কোর্ট ইমরানের পক্ষেই সায় দিয়েছে-বাংলাদেশ প্রতিদিন

ইমরান খান সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য করে আজাদি মার্চ নামের লংমার্চ করছেন ইমরান খান, এই অভিযোগ তুলে পিটিশন দায়ের করেছিল পাকিস্তান সরকার। তবে বৃহস্পতিবার পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট সেই পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে। প্রধান বিচারপতি ওমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই সিদ্ধান্ত দেয়। সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চটি বলেছে, আদালত বুধবারের সিদ্ধান্তেই অটল আছে। গতকাল বুধবার পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারকে ইমরান খানের দলের শান্তিপূর্ণ লংমার্চের বাধা না দিয়ে বিকল্প পথ তৈরি করে দেওয়ার আদেশ দেয়।

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

জঙ্গিনেতা ইয়াসিন মালিকের যাবজ্জীবনে ক্ষুব্ধ পাকিস্তান, নিন্দায় মুখর শাহবাজ শরিফ-সংবাদ প্রতিদিন

কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) জঙ্গিনেতা ইয়াসিন মালিককে (Yasin Malik) যাবজ্জীবন জেলের সাজা দিয়েছে আদালত। এই সিদ্ধান্ত একেবারেই নাপসন্দ পাকিস্তানের (Pakistan)। ইতিমধ্যেই এই রায়ের তীব্র নিন্দা করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও অন্যান্য পাক নেতারা। এমনকী, রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশনকে চিঠিও লিখেছে পাকিস্তান। দাবি, ইয়াসিনের মামলাটি ‘সাজানো।

পাক প্রধানমন্ত্রী ইয়াসিনের সাজাপ্রাপ্তির পরই টুইটারে লেখেন দিনটি ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য ‘ব্ল্যাক ডে’। পাশাপাশি মালিককে ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী’ বলেও দাবি করেন তিনি। একই কথা বলেছেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো। ওই বিচারকে ‘সাজানো’ বলে ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি এটা কাশ্মীরের কণ্ঠস্বরকে চেপে দেওয়ার পদক্ষেপ বলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্যও করেন তিনি।

ভোটের দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়ে ইসলামাবাদে ইমরানরা, রুখতে মোতায়েন সেনা-আজকাল

অনাস্থা ভোটে তিনি পাকিস্তানের গদি হারিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন শাহবাজ শরিফ। তার পর ভোট করানোর কথা ছিল। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি নতুন সরকার। প্রতিবাদে ইসলামাবাদ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করে এসেছেন ইমরান এবং তাঁর দল পিটিআই–এর কর্মী–সমর্থকরা। রুখে মরিয়া শরিফ সরকার। মোতায়েন করল পাক সেনা। তাদের হাতে এন্তার ক্ষমতা তুলে দিল।

পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার জন্য শাহবাজ শরিফের সরকারকে ছয় দিন সময় দিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশ থেকে প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয় বুধবার। নাম ‘আজাদি মার্চ’। ৩০ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার সকালে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে ঢুকে এই হুঁশিয়ারি দেন পিটিআই প্রধান ইমরান খান।

ইমরান এও জানিয়েছে, তাঁর দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজধানীক ডি-চকে ‘অবস্থান কর্মসূচি’ চালিয়ে যাবেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন প্রায় ২০ হাজার।

এদিকে বর্তমান সরকার বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট, পার্লামেন্ট হাউস, প্রধানমন্ত্রী, প্রেসিডেন্টের বাসভবন প্রভৃতি সরকারি ইমারত রক্ষার জন্যই মোতায়েন হয়েছে সেনা। যদিও পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন এতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে। তাদের মতে, সমস্ত মানুষ এবং রাজনৈতিক দলের প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার সেনা মোতায়েন করে খর্ব করছে নতুন পাক সরকার।

রাজ্যপাল নন, এ বার মুখ্যমন্ত্রীই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য, প্রস্তাবে সিলমোহর মমতা মন্ত্রিসভার-আনন্দবাজার পত্রিকা

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় নন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য করতে চেয়ে আনা প্রস্তাবে সিলমোহর দিল মন্ত্রিসভা। শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য করতে চেয়ে বিধানসভায় বিল আনতে চলেছে সরকার।

শুক্রবার এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘মন্ত্রিসভায় সর্বসম্মতিক্রমে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গের সরকারি যত বিশ্ববিদ্যালয় আছে তার আচার্য পদে রাজ্যপালের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করতে চেয়ে বিধানসভায় বিল আনবে সরকার।’

বস্তুত, রাজ্যপাল এবং সরকারের সঙ্ঘাত পশ্চিমবঙ্গে নতুন নয়। শিক্ষাক্ষেত্রেও এই সঙ্ঘাত বারবার চরমে পৌঁছেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে রাজ্যপাল বৈঠক করতে চাইলেও উপাচার্যরা আসেননি। তার পর প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দেন রাজ্যপাল। এ ছাড়া উপাচার্য নিয়োগ নিয়েও রাজ্যের সঙ্গে সঙ্ঘাত বাধার নজির রয়েছে রাজ্যের। এমন আবহে আচার্য হিসাবে রাজ্যপালকে সরানোর ভাবনা-চিন্তা বহু আগেই শুরু হয়েছিল সরকারের অন্দরে। তখনই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, আচার্য হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীকেই ভাবতে চলেছে সরকার।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২৬

ট্যাগ