জুন ০৯, ২০২২ ১৬:৫৪ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতাবন্ধুরা! আজ ৯ জুন বৃহষ্পতিবারের কথাবার্তার আসরে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ-জেনারেল হাসপাতালে থাকা রমিজের খোঁজ নেয়নি কেউ-প্রথম আলো
  • ‘পাঁচ শতাংশের মালিককে ডিপোর মালিক বলা কোনোভাবেই সমীচীন নয়’-তথ্যমন্ত্রী ইত্তেফাক
  • নির্বাচিত কলাম-চলতি পথে-সস্তা লাশের দেশে-মানবজমিন
  • প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দিল মন্ত্রিসভা  -যুগান্তর
  • নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে ইসির সংলাপ আজ, ৩২ সংস্থাকে আমন্ত্রণ-কালের কণ্ঠ

ভারতের শিরোনাম:

  • ইসলাম বিদ্বেষী মন্তব্যের জের, নূপুরের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের দিল্লি পুলিশের-সংবাদ প্রতিদিন
  • লাদাখ সীমান্তে চিনের পরিকাঠামো নিয়ে চিন্তিত যুক্তরাষ্ট্র-আজকাল 
  • ১৫ দিনের শিশুকে বিক্রি করে দিলেন মা, মেটালেন বাড়ির জিনিস কেনার শখ-আনন্দবাজার পত্রিকা

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি- 

জনাব সিরাজুল ইসলাম কথাবার্তার বিশ্লেষণে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি। 

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১. রাজপথ কি ইজারা নিয়েছেন, মির্জা ফখরুলকে ওবায়দুল কাদের। এটি দৈনিক বাংলাোদশ প্রতিদিন পত্রিকার শিরোনাম। কীভাবে দেখবেন এই শিরোনামকে?

২. আমেরিকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেছেন, তাকে পক্ষ ত্যাগ করে পুতিনের কর্মকাণ্ডের নিন্দা করার প্রস্তাব দিয়েছিল আমেরিকা। তার এই বক্তব্যের গুরুত্ব কী?

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর:

সীতাকুণ্ড ট্রাজেডি

সীতাকুণ্ড ট্রাজেডি নিয়ে প্রথম আলোর ফলোআপ খবরে লেখা হয়েছে, বিএম ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে দগ্ধ রিফাইনার শ্রমিক রমিজ উদ্দিন (২৫) একাই রয়েছেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। এ ঘটনায় দগ্ধ অন্য রোগীরা ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় বিএম ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে দগ্ধ রমিজ উদ্দিন ছয় দিন ধরে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কলকারখানা ও পরিদর্শন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ওই ঘটনায় দগ্ধ যাঁরা ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন, তাঁরা সরকারি অনুদানের চেক পেয়েছেন। তবে রমিজ উদ্দিন এখনো সেই অনুদানের টাকা পাননি।র পাশেই একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাঁর স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে।

পাঁচ শতাংশের মালিককে ডিপোর মালিক বলা কোনোভাবেই সমীচীন নয়’-তথ্যমন্ত্রী-ইত্তেফাক

সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর পাঁচ শতাংশের মালিক আওয়ামী লীগ নেতা মজিবুর রহমানকে পুরো ডিপোর মালিক বানিয়ে দেওয়া বিশাল ভুল এবং কোনোভাবেই সমীচীন নয়’ বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

শত শত লাশ মিলছে মারিউপোলে: জেলেনস্কি-যুগান্তর

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, পূর্ব ইউক্রেনের একাধিক শহর থেকে শত শত লাশ উদ্ধার হচ্ছে। সম্পূর্ণ ধসে যাওয়া মারিউপোলের বহুতল ভবনগুলো খণ্ডহরে পরিণত হয়েছে। বাড়িগুলো থেকে শত শত লাশ উদ্ধার হচ্ছে। বেশিরভাগই বেসামরিক ব্যক্তির। লাশগুলো নিয়ে গিয়ে কবরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বুধবার সন্ধ্যায় দৈনিক বক্তৃতায় ওই অঞ্চলের অন্য জায়গা থেকেও একইভাবে লাশ উদ্ধারের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জেলেনস্কি।জেলেনস্কি জানিয়েছেন, এযাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ লড়াই হচ্ছে সেভেরোদনেৎস্কে। ইউক্রেনের সেনা জীবন দিয়ে রক্ষা করার চেষ্টা করছে শহরটি। যদিও এদিনই রাশিয়া দাবি করেছে, সেভেরোদনেৎস্কে অঞ্চলটি রাশিয়ার সেনা প্রায় দখল করে নিয়েছে। এদিকে জেলেনস্কির দাবি, দোনবাসের যুদ্ধে রাশিয়ার প্রভূত ক্ষতি হচ্ছে। তাদের বহু সেনার মৃত্যু হয়েছে।

পূর্ব ইউক্রেন থেকে তিন বিদেশি যোদ্ধাকে গ্রেফতার করেছিল রাশিয়ার সেনা। তাদের মধ্যে দুজন যুক্তরাজ্যের নাগরিক এবং একজন মরক্কোর। রাশিয়া জানিয়েছে, তাদের বিচার শুরু হয়েছে এবং তারা আংশিক অপরাধ স্বীকার করেছেন।

রাশিয়ার দাবি, ওই যোদ্ধারা ইউক্রেনের হয়ে লড়াইয়ে শামিল হয়েছিলেন। আদালতে তারা অস্ত্র প্রশিক্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। তবে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেওয়ার কথা বলেননি। আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ড দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, তারা সবরকমভাবে নিজেদের নাগরিকদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।

নির্বাচিত কলাম-চলতি পথে-সস্তা লাশের দেশে সিনিয়র সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক শুভ কিবরিয়া  নির্বাচিত কলাম চলতি পথে লিখেছেন, গ্যাসের দাম বেড়েছে। বিদ্যুতের দাম বাড়বো বাড়বো করছে। পানির দাম বাড়ার আওয়াজ কখন আসে তার ঠিক নেই। জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে বাড়তি খরচের বিপরীতে বেতন বাড়ানোর দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন গার্মেন্ট শ্রমিকরা। বাজেট পেশের সময়ও সমাগত। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের সময় এসে গেছে প্রায়। চলছে প্রচণ্ড গরম। দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমে গেছে পাউরুটি শিঙাড়া আর কেকের সাইজ। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসের দাম বাড়তেই আছে। বাজারের আগুন আর গ্রীষ্মের উত্তাপ যখন মানুষের জীবনে স্বস্তি প্রায় কেড়ে নিয়েছে ঠিক তখনই ৪ঠা জুন শনিবার ২০২২ রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে অগ্নিদগ্ধ লাশের খবর নতুন মাত্রা এনেছে।

এই কন্টেইনার ডিপোতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় ৫০ ঘণ্টা লেগেছে। দু’দিনেও আগুন নেভানো যায়নি। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আগুন নেভাতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় অগ্নিনির্বাপক বাহিনী ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ১০ জন কর্মী অপারেশনে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। নিখোঁজ রয়েছেন ২ জন। নিহতের সংখ্যা এই লেখা অবধি ৪৩ ছুঁয়েছে। আহতের সংখ্যা শতাধিক। এই ঘটনার ফেসবুক লাইভ করতে গিয়েও এক তরুণের করুণ মৃত্যু হয়েছে। 

চট্টগ্রামে সীতাকুণ্ডের কেশবপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে তৈরি হয়েছে এই বিএম কন্টেইনার ডিপো। এটি একটি জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি। এটি নেদারল্যান্ডস-বাংলাদেশ যৌথ মালিকানায় তৈরি হয়েছে ২০১১ সালে। আমদানি-রপ্তানিতে ব্যবহৃত কন্টেইনারের ব্যবস্থাপনা ও খালি কন্টেইনারের সংরক্ষণ করা হয় এখানে। বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে পাঠানো রপ্তানি পণ্য অথবা আমদানি করা পণ্য কন্টেইনারে করে এই ডিপোতে এনে জমা করা হয়। এরপর সেটি জাহাজে করে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয় অথবা দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। রপ্তানিকারক কোম্পানিগুলো এই ডিপোর জায়গা ভাড়া নিয়ে কন্টেইনার রাখে। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার ডিপোগুলোর অন্যতম। সীতাকুণ্ডেই এরকম তিনটি বেসরকারি কন্টেইনার ডিপো রয়েছে। নেদারল্যান্ডসের নাগরিক বার্ট প্রঙ্ক কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশের মোস্তাফিজুর রহমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এই ডিপোতে বাংলাদেশের স্মার্ট গ্রুপের অংশীদারিত্ব রয়েছে। যে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড নামের রাসায়নিক পদার্থ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, সেটিও স্মার্ট গ্রুপের আরেক প্রতিষ্ঠান আল রাজী কেমিক্যাল কমপ্লেক্সের। পোশাক, এলপিজি ও খাদ্যপণ্য খাতে বিনিয়োগ রয়েছে স্মার্ট গ্রুপের। 

 বিএম কন্টেইনার ডিপোর মালিকানা ও সংশ্লিষ্ট মালিকদের ব্যবসা বাণিজ্যের যে খবর মিডিয়ায় আসছে তাতে বোঝা যাচ্ছে এই ব্যবসায়ীরা যথেষ্ট প্রফেশনাল। এই প্রাইভেট ডিপো ব্যবহার করে আমাদের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের একটা বড় অংশের কাজ-কারবার চলে। কিন্তু বিপদের কথা হচ্ছে, এই পেশাদারিত্বের আড়ালে এখানে যে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড নামের দাহ্য কেমিকেলের সংরক্ষণ ও আমদানি-রপ্তানি চলতো, সেই দাহ্য কেমিকেলের ব্যবস্থাপনায় কোনো পেশাদারিত্ব মানা হয়নি। সরকারের দায়িত্বশীল বিভাগগুলো বিশেষ করে পরিবেশ অধিদপ্তর, বিস্ফোরক পরিদপ্তর, কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রায় সবাই বলছে, এই কন্টেইনারে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড নামের দাহ্য কেমিক্যাল রাখার কোনো লাইসেন্স বা অনুমতি নেই। ছিল না। অথচ এই কন্টেইনারের যারা মালিক সেই স্মার্ট গ্রুপের হাইড্রোজেন পার অক্সাইড তৈরির কারখানা রয়েছে চট্টগ্রামেই। তাহলে সরকারের সকল দপ্তর-অধিদপ্তর-পরিদপ্তর, বিভাগের অজান্তেই এই ঘটনা ঘটেছে এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? যদিও চট্টগ্রামের পরিবেশ অধিদপ্তর মিডিয়াকে বলেছে, বিএম কন্টেইনার ডিপো রাসায়নিক পদার্থ রাখার ব্যাপারে কখনো কোনো লাইসেন্স পায়নি। তাদের বক্তব্য, কন্টেইনার ডিপোগুলোকে অরেঞ্জ-এ, অরেঞ্জ-বি এবং রেড- এই তিন ধরনের ক্যাটাগরিতে তারা লাইসেন্স দেন। হাইড্রোজেন পার অক্সাইড বা কোনো রাসায়নিক পদার্থ মজুতের জন্য রেড লাইসেন্স দেয়া হয়। আর এই রেড লাইসেন্স পেতে হলে অর্থাৎ হাইড্রোজেন পার অক্সাইড বা অন্য কোনো রাসায়নিক পদার্থ মজুতের ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিস এবং বিস্ফোরক পরিদপ্তরের অনুমতিপত্র নিতে হয়। সেই অনুমতিপত্রের ভিত্তিতে সেই প্রতিষ্ঠানকে পরিবেশ অধিদপ্তর রেড লাইসেন্স বা অনুমতি দিয়ে থাকে। 

বাংলাদেশের মানুষের দুর্ভাগ্য- এখানে উন্নয়নের জোয়ারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত লাশের সংখ্যা বাড়ছেই কেবল। লঞ্চে, ফ্যাক্টরিতে, ডিপোতে, পরিত্যক্ত জাহাজে, ইটভাটায়, আগুনেই পুড়ছে হাজার হাজার প্রাণ। প্রবাস থেকেও আসছে প্রাণহীন শ্রমিকের লাশ। সড়ক-নৌ দুর্ঘটনায় যাচ্ছে প্রতিদিন প্রাণ

এই অগ্নিকাণ্ডে এত বিপুল প্রাণহানির পর স্বভাবতই কিছু প্রশ্ন উঠছে-

প্রথমত, বিএম কন্টেইনার ডিপোতে বিপজ্জনক দাহ্য রাসায়নিক আনা-নেয়া বা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যে আন্তর্জাতিক প্রটোকল মানা প্রয়োজন ছিল তার অনেক কিছুই অনুপস্থিত বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এই ডিপোতে আগুন লাগলে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার কোনো পূর্ব প্রস্তুতি যে এই প্রতিষ্ঠানের ছিল সেটার প্রমাণ মেলেনি। এ বিষয়ে কোনো মানসম্মত ব্যবস্থা, প্রশিক্ষিত জনবল, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনার অনুপস্থিতি দেখা গেছে প্রকটভাবে। সরকারি তদারকি সংস্থাগুলোর তরফে জানানো হয়েছে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড সংরক্ষণ-পরিবহন-লোড-আনলোড করার কোনো অনুমতিও নাকি ছিল না এই ডিপোর। বলা বাহুল্য এটি আমাদের হাতেগোনা পেশাদার বেসরকারি কন্টেইনার টার্মিনালগুলোর অন্যতম একটি। তারই এই দুরবস্থা। তাহলে দেশে কেমিকেল উৎপাদন-পরিবহন-বিতরণ করা দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলে আদৌ কিছু আছে কি-না সেটা বড় সংশয়ের বিষয়। এই দুর্ঘটনা ঘটার পর ডিপোর কন্টেইনারে কি মালামাল আছে, কোনো বিপদজনক দাহ্য পদার্থ আছে কিনা, সেই ন্যূনতম অথচ অতি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটুকু দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো বিশেষ করে আগুন নেভানোর কাজে জড়িত ফায়ার সার্ভিসের কাছেও বিএম কন্টেইনার ডিপো সরবরাহ করতে পারেনি। শুধু এটুকু তথ্য হাতে পেলেও হয়তো ফায়ার সার্ভিসের এতজন কর্মীর এরকম করুণ মৃত্যু এড়ানো যেত। সব বিবেচনায়, বিএম কন্টেইনার ডিপো পেশাদার প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আগুনজনিত দুর্ঘটনা প্রতিরোধে তাদের প্রাথমিক দায়িত্বশীলতার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ফলে, এই কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও আগুনজনিত কারণে মানুষের মৃত্যুকে কেউ কেউ যখন হত্যাকাণ্ড বলে অভিহিত করছেন, সেটাকে অগ্রাহ্য করা যায় না।

দ্বিতীয়ত,বিপদ দেখলে ‘সব দোষ হয় নন্দ ঘোষের’। অন্যরা তখন ধোয়া তুলসীপাতা হয়ে পড়ে! বিস্ফোরক পরিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ তরফে যেসব বক্তব্য এখন অবধি মিডিয়াতে এসেছে, তাতে এই নারকীয় মৃত্যুযজ্ঞে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সবাই নিজেদের দায়িত্ব বেমালুপ চেপে যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, বিপজ্জনক কেমিক্যাল ডিপোতে রাখতে হলে রেড লাইসেন্স নিতে হয়। এই ডিপোর সেটা ছিল না। ভালো কথা। তাহলে পরিবেশ অধিদপ্তর সেটা এতকাল দেখেনি কেন? বিএম ডিপোর সহযোগী প্রতিষ্ঠান হাইড্রোজেন পার অক্সাইড উৎপাদন করে। চট্টগ্রামেই তাদের সেই কারখানা আছে। তাহলে পরিবেশ অধিদপ্তর, বিস্ফোরক পরিদপ্তর কি এতকাল ঘুমিয়ে ছিল? নাকি দেখেও দেখেনি! অথবা তাদের সেই প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতাই গড়ে ওঠেনি। নাকি, তারা ম্যানেজ হয়ে ছিল? সেসব প্রশ্ন ওঠা জরুরি। যদি প্রাতিষ্ঠানিক অক্ষমতা হয়ে থাকে, তাহলে সেটাও জরুরিভাবে দেখা দরকার। এত উন্নয়ন হচ্ছে, এত প্রজেক্ট হচ্ছে, এত নতুন নতুন অবকাঠামো গড়ে উঠছে, দেশি-বিদেশি ট্রেনিং চলছে, তারপরও সক্ষমতা গড়ে উঠছে না কেন? গলদ কোথায়? অবকাঠামো, প্রশিক্ষণ, জনবল, ব্যবস্থাপনার মান উন্নয়ন কোনটা আগে দরকার, সেটা এখন তাহলে একটা প্রায়োরিটির প্রশ্ন? সেটাও বিবেচনায় নেয়া দরকার। বিস্ফোরক পরিদপ্তর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ যারা এই তদারকির কাজে জড়িত তাদের সব রকম প্রাতিষ্ঠানিক অক্ষমতা, দুর্নীতি, অপেশাদারিত্বের বিষয় জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে। কেননা, তদারকি সংস্থা এই দুর্ঘটনা ও তার কারণে সংঘটিত লাশের দায় কোনোমতেই এড়াতে পারে না।

তৃতীয়ত, সবচাইতে দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কাজের ক্ষেত্রে। ভিডিও ফুটেজে যতটুকু দেখা গেছে, তাতে যে তরুণটি এই অগ্নিকাণ্ডের ফেসবুক লাইভ করছিলেন তার সঙ্গে ওখানে আগুন নেভানোর কাজে দায়িত্বরত ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের মুভমেন্টের বিশেষ তফাত চোখে পড়েনি। তারা খুব ক্যাজুয়ালভাবে আর দশটি আগুন নেভানোর মতোই স্বাভাবিক মুডে কাজ করছিলেন। কন্টেইনার ডিপোতে কি আছে সে বিষয়ে কোনো পূর্বানুমান এই অপারেশনে ছিল বলে মনে হয় না। এটা যে একটা বিশেষ জায়গা, এই আগুন যে একটি বিশেষ ধরনের আগুন, সেই চিন্তা এই ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের অপারেশন ও পরিকল্পনার মধ্যে প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে বলে মনে হয় না। তাদের যন্ত্রপাতি ও পোশাকেও সেই ছাপ দেখা যায়নি। পরে জানা গেছে, এরকম বিশেষ ধরনের আগুন নেভানোর বিশেষায়িত ব্যবস্থাদিও তাদের নাকি নেই! যদি সেটা হয়ে থাকে, তবে এর চাইতে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে? ফায়ার সার্ভিসের এত উন্নয়ন ঘটছে, জনবল-অবকাঠামো বাড়ছে, বরাদ্দ বাড়ছে অথচ তারা ফায়ার ফাইটিং যন্ত্রপাতি আর ট্রেনিংয়ের অভাবে ভুগছে? তাহলে এই প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন কোন ক্ষেত্রে আগে দরকার, সেটা একটা প্রায়োরিটির প্রশ্ন, সেটা কী বিবেচনায় নেয়া হয়েছে? সেটাও ভাবা দরকার। মনে রাখতে হবে, সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুন নেভানোর কাজে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের যেসব কর্মী বিস্ফোরণে প্রাণ হারালেন, তাদের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন উঠলে এই প্রতিষ্ঠান তার দায় এড়াতে পারবে না!

বাংলাদেশের মানুষের দুর্ভাগ্য- এখানে উন্নয়নের জোয়ারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত লাশের সংখ্যা বাড়ছেই কেবল। লঞ্চে, ফ্যাক্টরিতে, ডিপোতে, পরিত্যক্ত জাহাজে, ইটভাটায়, আগুনেই পুড়ছে হাজার হাজার প্রাণ। প্রবাস থেকেও আসছে প্রাণহীন শ্রমিকের লাশ। সড়ক-নৌ দুর্ঘটনায় যাচ্ছে প্রতিদিন প্রাণ। তাজরীন গার্মেন্ট, রানা প্লাজা, নারায়ণগঞ্জের জুস কারখানা, নিমতলী, চকবাজার- বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছেন মানুষ। এসব ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদের সঠিক বিচার হচ্ছে না। কখনো কখনো বিচার হলেও বিলম্বিত বিচার বিচারহীনতারই সৃষ্টি করছে। দোষীদের অনেকেই রাজনৈতিক পরিচয়ে বিচার এড়াচ্ছেন। বিচারহীনতা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দায়মুক্তি দিচ্ছে। ফলে, দুর্ঘটনা প্রতিরোধের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা কাটছে না। মানুষ আরও বেশি করে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। দেখা যাচ্ছে, এসব ঘটনায় যারা প্রাণ হারাচ্ছেন তাদের সিংগভাগই ব্রাত্য মানুষ, প্রান্তিকজন, গরিব-ক্ষমতাহীন। ফলে, গণমানুষের এই লাশ দু-চারদিন জনসহানুভূতি পেলেও, এসব ঘটনার হোতারা, রাজনৈতিক শক্তিতে-আর্থিক শক্তিতে পার পেয়ে যাচ্ছে। সস্তা লাশের পৌনপৌনিক উৎপাদন তাই থামছে না...।

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

ইসলাম বিদ্বেষী মন্তব্যের জের, নূপুরের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের দিল্লি পুলিশের-সংবাদ প্রতিদিন

ফের অস্বস্তিতে পড়লেন বরখাস্ত বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মা (Nupur Sharma)। এবার তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করল দিল্লি পুলিশ। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ নিয়েই মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নবীন জিন্দল, সাংবাদিক সাবা নকভি-সহ আরও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধেও আলাদা করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ তোলা হয়েছে এঁদের বিরুদ্ধে।দিল্লি পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, দু’টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। একটিতে নুপুর শর্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আলাদা করে এফআইআর করা হয়েছে। পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, “বিশেষ কিছু সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বিদ্বেষ ছড়িয়েছেন অভিযুক্তরা। তার ফলে জনতার মধ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে।” আরও বলেছেন, অভিযুক্তদের মধ্যে সব ধর্মের মানুষই রয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের কার্যকলাপ খতিয়ে দেখবে পুলিশ (Delhi Police)। একই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে নূপুর, নবীন সহ অন্যদের বিরুদ্ধে।

একটি টিভি বিতর্কে অংশ নিয়ে হজরত মহম্মদের বিরুদ্ধে অস্মমানজনক মন্তব্য করেছিলেন নূপুর শর্মা। সেই মন্তব্যকে সমর্থন করেন টুইট করেন নবীন জিন্দল (Naveen Jindal)। তারপরেই তীব্র নিন্দার মুখে পড়েন নূপুর। অবস্থা সামাল দিতে বিবৃতি প্রকাশ করে বিজেপি। তারপরেই জাতীয় মুখপাত্রের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় নূপুরকে। দল থেকে বহিস্কার করা হয় নবীনকে। পরে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন নূপুর। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

লাগাতার দলত্যাগ নিয়ে উদ্বিগ্ন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, সুকান্ত-শুভেন্দুদের তোপ বি এল সন্তোষের-সংবাদ প্রতিদিনের এ খবরে লেখা হয়েছে,

একের পর এক নেতা দল ছাড়ছেন। অভিযোগ করছেন, দলের মধ্যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ। বঙ্গ বিজেপির (BJP) এমন পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এ নিয়ে বুধবার দলের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে সুকান্ত-শুভেন্দু-দিলীপদের কড়া বার্তা দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বি এল সন্তোষ (B L Santosh)। প্রশ্ন তুললেন রাজ্য নেতৃত্বের যোগ্যতা নিয়েও।এদিন রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বি এল সন্তোষ বলেন,”সন্দেহ করে দলের ক্ষতি হচ্ছে। সংগঠনের ক্ষতি হচ্ছে।” এর পরই সবাইকে নিয়ে চলার বার্তা দেন তিনি। সন্তোষের স্পষ্ট বার্তা, “অহেতুক সন্দেহ করে দল চলে না।” সম্প্রতি দুই সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়-অর্জুন সিং (Arjun Singh) দল ছেড়েছেন। ফুল বদল করেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বর বিরুদ্ধে।

লাদাখ সীমান্তে চিনের পরিকাঠামো নিয়ে চিন্তিত যুক্তরাষ্ট্র-আজকাল

বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, ভারতে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ সেনা অফিসার জেনারেল চার্লস এ ফ্লিন। সদ্য ভারতের সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। যৌথ মহড়ার কথাও হয়েছে। মার্কিন সেনাবাহিনীর প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান জেনারেল চার্লস এ ফ্লিন সম্প্রতি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে, হিমালয়জুড়ে চিন যেভাবে পরিকাঠামো তৈরি করছে, তা নিয়ে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন। চিনের এই কর্মকাণ্ড ভারতীয় উপমহাদেশ অঞ্চলে শান্তিপ্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটাচ্ছে বলে জানিছেন তিনি। ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পাণ্ডের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে তাঁর। চিনের বিরুদ্ধে স্ট্র্যাটেজি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে সেনা-সূত্র জানিয়েছে।গত প্রায় দুই বছর ধরে লাদাখ অঞ্চলে চিনের সঙ্গে ভারতের সংঘাত চলছে।

১৫ দিনের শিশুকে বিক্রি করে দিলেন মা, মেটালেন বাড়ির জিনিস কেনার শখ-আনন্দবাজার পত্রিকা

শিশু বিক্রি করে ঘরের জিনিস কেনাকাটা বাবা মায়ের

সদ্যোজাত সন্তানকে অর্থের বিনিময়ে বিক্রি দিলেন এক মা! এ ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। এ দেশে অনেকেই সন্তান বড় করার খরচ সামলাতে পারেন না। আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় এর আগেও কোলের সন্তানকে অন্যের হাতে তুলে দিয়েছেন অনেকে। তবে এই ঘটনা যেন সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে। কেনাকাটার শখ ছিল মা-বাবার। সন্তানও তাঁরা সে ভাবে চাইছিলেন না। তাই তড়িঘড়ি ১৫ দিনের সন্তানকে বিক্রি করে দেন সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকার বিনিময়। সেই টাকা পকেটে নিয়ে চলে যান বাজারে! কিনে ফেলেন মোটরবাইক— আরও অনেক খুচরো বাড়ির জিনিস।

মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের বাসিন্দা ২৩ বছরের শাইনা বাঈ সপ্তাহ দুয়েক আগে জন্ম দিয়েছেন শিশুটির। মহিলার সঙ্গী সন্তানের কোনও দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন। মহিলার সঙ্গী পেশায় দিনমজুর। ভাড়া বাড়িতেই বাস তাঁদের। বাড়ির মালিক প্রথম শিশু বিক্রির বিষয়টি খেয়াল করেন। বাড়িওয়ালার কথা অনুযায়ী, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকেই শাইনা ও তাঁর সঙ্গীর মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। শিশুর জন্মের পরে সেই অশান্তি আরও চরমে ওঠে। তার পরেই এই সন্তান বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কি না, তা এখনও জানা যায়নি। ইনদওর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে নবজাতকেক বিক্রি করে দেন তাঁরা। এক সন্ধ্যায় শিশুটিকে সঙ্গে নিয়ে তাঁরা বেরিয়েছিলেন। যখন তাঁরা ফিরে এসছিলেন তখন শিশুটি তাঁদের সঙ্গে ছিল না। পরিবর্তে মোটর সাইকেল, টিভি, ফ্রিজ এবং ওয়াশিং মেশিন নিয়ে ফিরেছিলেন তাঁরা!

এ সব দেখে সন্দেহ দানা বাঁধে প্রতিবেশীদের মনে। তাঁরাই খবর দেন থানায়। পুলিশ এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে পুলিশি জেরার মুখে ভেঙে পড়েন শাইনা। সন্তান বিক্রির টাকা দিয়েই এত সব জিনিস কিনেছেন বলে জানান শাইনা এবং তাঁর সঙ্গী।

সরকারি হাসপাতাল থেকে ছেলের লাশ ছাড়িয়ে নিতে ভিক্ষা করছেন মা-বাবা-এনডিটিভি

সরকারি হাসপাতাল থেকে ছেলের লাশ ছাড়িয়ে নিতে অর্থের জন্য শহরের অলিগলি ঘুরে ভিক্ষা করছেন মা-বাবা। ভারতের বিহার রাজ্যের সমষ্টিপুরে হৃদয়বিদারক এ ঘটনা ঘটেছে। অসহায় বয়স্ক এই দম্পতির ভিক্ষা করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

অভিযোগ উঠেছে, ছেলের লাশ হস্তান্তরে মা-বাবার কাছে ৫০ হাজার রুপি দাবি করেন হাসপাতালের এক কর্মী। কিন্তু এই দম্পতির কোনো অর্থকড়ি না থাকায় তাঁরা শহরে ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা শুরু করেন।

নূপুর শর্মা

আনন্দবাজারের রিপোর্ট-বহু দেশ নিন্দা করলেও মৈত্রী, ঘরে শান্তির লক্ষ্যে নূপুর-মন্তব্য নিয়ে এখনও চুপ ঢাকা-বিজেপি মুখপাত্রদের পয়গম্বর সংক্রান্ত নিন্দনীয় মন্তব্যের জেরে পাকিস্তান, আফগানিস্তানসহ পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশ এবং ইসলামি সংগঠনের তীব্র রোষের মুখে মোদী সরকার। কিন্ত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলির এই রোষানলের তালিকায় এখনও পর্যন্ত ব্যতিক্রম প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ।

এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি বিবৃতি নেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয় থেকে। তবে ভারতের এই ঘটনাকে সামনে নিয়ে এসে বাংলাদেশের মুসলিম সমাজ এমনকি, সংখ্যালঘুরাও দাবি করছেন, ধর্মীয় সহিষ্ণুতার প্রশ্নে পশ্চিমি দুনিয়া তাদের যতই সমালোচনা করুক না কেন, হাসিনা সরকারের জমানায় পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভারতের চেয়ে অনেকটাই ভাল।

সরকারিভাবে নূপুরের মন্তব্যের নিন্দা করে বিবৃতি না দেয়া হলেও আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপকমিটি কিছু দিন পর একটি বিবৃতি দিতে পারে।

কলকাতার প্রতিষ্ঠিত দৈনিক আনন্দবাজার অনলাইন এ খবর দিয়েছে। ৯ই জুন ভোর ৬ টা ৬ মিনিটে প্রচারিত রিপোর্টে অগ্নি রায় লিখেন- আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন-এর গভর্নর খন্দকার গোলাম মওলা নকশেবন্দী গত রাতে ভারতীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় বিষয়টি নিয়ে সরব হলেন। তার কথায়, ভারতে ওই ঘৃণাসূচক মন্তব্যের ১০ দিন পরও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী মুখ খোলেননি। যখন পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলি রোষ প্রকাশ শুরু করল, তখন ব্যবস্থা নেয়া হল। কারণ, তাদের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য সম্পর্কে আঁচ পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অথচ এখানে সংখ্যালঘুদের উপর সাম্প্রতিক অতীতে যা নিপীড়নের খবর এসেছে, হাসিনা সরকার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ করেছে। দোষীদের গ্রেপ্তার করেছে।এমন বিষয় ফেলে রাখলেই তুষের আগুনের মতো ছড়াতে থাকে।

সূত্রের খবর, সরকারিভাবে এই ঘটনার নিন্দা করে বিবৃতি না দেয়া হলেও আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপকমিটি কিছু দিন পর একটি বিবৃতি দিতে পারে। তবে খন্দকার জানিয়েছেন, পরিস্থিতির উপর আপাতত নজর রাখা হচ্ছে।

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/৯

ট্যাগ