জুন ১২, ২০২২ ১৫:৩২ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতাবন্ধুরা! আজ ১২ জুন রোববারের কথাবার্তার আসরে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • এখনো সময় আছে, পরে পালাবার সময় পাবে না সরকার: ফখরুল-প্রথম আলো
  • নিবিড় পর্যবেক্ষণে খালেদা জিয়া-ইত্তেফাক
  • এলাকা ছাড়তে এমপিকে জোর করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের নেই: সিইসি-মানবজমিন
  • দুদকের মামলায় স্বাস্থ্যের আজাদ ও রিজেন্ট শাহেদের বিচার শুরু-যুগান্তর
  • নিম্নমধ্যবিত্তের স্বস্তির জায়গা নেই-কালের কণ্ঠ
  • এসএসসিতে কমেছে  ২ লাখের বেশি শিক্ষার্থী-বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভারতের শিরোনাম:

  • নাবালিকাকে গণধর্ষণ, নির্যাতনের ভিডিও লাইভ করল  অভিযুক্তরা! চাঞ্চল্য মধ্যপ্রদেশে-সংবাদ প্রতিদিন
  • দেশে ফিরবেন ‘মৃত্যুপথযাত্রী’ পারভেজ মুশারফ! পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে জল্পনা-সংবাদ প্রতিদিন
  • ভারতের কি করোনার চতুর্থ ঢেউ চলছে!-আজকাল 
  • লাঠির ঘা পড়ছে, পরিত্রাহী চিৎকার করছেন বন্দিরা, প্রকাশ্যে উত্তরপ্রদেশের লকআপের ভিডিয়ো-আনন্দবাজার পত্রিকা

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি- 

জনাব সিরাজুল ইসলাম কথাবার্তার বিশ্লেষণে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি। জনাব সিরাজুল ইসলাম,

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১. বোনের ইজ্জত রক্ষায় ভাইয়ের প্রাণপণ চেষ্টার ভিডিও ভাইরাল। দৈনিক মানবজমিন এই খবর দিয়েছে। সেখানে পুলিশের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়ার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। কী বলবেন আপনি?

২. দুই দিনব্যাপী ইরান সফর করলেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। প্রশ্ন হচ্ছে- ভেনিজুয়েলার মতো দেশের সঙ্গে ইরানের এই সম্পর্কের গুরুত্ব কী?

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর:

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

সরকারকে হুঁশিয়ার দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এখনো সময় আছে। এখনো বাঁচতে পারবেন। এখনো কিছুটা রক্ষা পেতে পারেন। এরপরে আর পালাবার সময় পাবেন না।’ আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই হুঁশিয়ারি দেন মির্জা ফখরুল। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বিদেশে পাঠানোর পাশাপাশি তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশের আয়োজক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর শাখা বিএনপি।

মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতি-অবাধ নির্বাচন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের ভিত্তি-মানবজমিন

কোনো ধরনের প্রতিহিংসার শিকার হওয়ার আশঙ্কা বা প্রতিশোধের ভয় ছাড়াই সর্বজনীন মানবাধিকার সমুন্নত রাখার প্রয়াসে মানুষের স্বাধীনতা থাকা উচিত বলে মনে করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার গণমাধ্যমে প্রেরিত মার্কিন দূতাবাসের এক বিবৃতিতে (মিডিয়া নোট) বলা হয়, আইনের শাসন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, মুক্তভাবে মতপ্রকাশের অধিকার এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সুস্থ বা শক্তিশালী গণতন্ত্রের ভিত্তি এবং এটি সকলের অধিকারও। ভোটাভুটিকে সামনে রেখে নির্বাচন, দুর্নীতি অনুসন্ধান এবং রিপোর্ট প্রকাশ, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো নথিভুক্তকরণ কিংবা সাধারণ কোনো উদ্দেশ্য হাসিলে মানুষের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ- যে কারণেই তা শিরোনামে আসুক না কেন- মনে রাখতে হবে মানুষ এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠনগুলোই (এনজিও) সর্বত্র জীবন এবং গণতন্ত্রের মূলনীতি বা মূল্যবোধকে সুরক্ষা দেয়। নাগরিকদের বিচার-বিশ্লেষণ তথা সমালোচনামূলক ভূমিকা এবং একটি বহুত্ববাদী সুশীল সমাজ গঠন সম্পর্কে পদক্ষেপ বা প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস বিষয়ক ডিক্লারেশনে, যা অনুপ্রেরণাদায়ক। ওই ডিক্লারেশন ১৯৯৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত হয়। সেই ঘোষণায় জোর দিয়ে বলা হয়- ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রয়াসে প্রচার এবং প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালানোর অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে। এটা ব্যক্তিগতভাবে কিংবা অন্যদের সঙ্গে মিলে করতে পারে।’ মানবাধিকার সমুন্নত রাখার ওই ক্যাম্পেইনে প্রতিটি দেশের জনগণের স্বাধীনতা থাকা উচিত বলেও উল্লেখ করে মার্কিন দূতাবাস। বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন ‘কোনো দেশের গণতন্ত্রই যথার্থ বা নিখুঁত নয়। কোনো গণতন্ত্র কখনোই চূড়ান্ত নয়। গণতন্ত্রের পথে প্রত্যেকটি অর্জন, প্রতিটি বাধা ডিঙানো- দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং অবিরাম পরিশ্রমের ফল।’

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

বেহদ

শিশু শ্রম বাড়ছে

লকডাউনে বেড়েছে শিশুশ্রমিক, বাল্যবিবাহ-আজকালের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, ১২ জুন বিশ্বজুড়ে পালিত হবে শিশু শ্রমিক বিরোধী দিবস। যেখানে এই দিনটির তাৎপর্য বোঝাতে গিয়ে তুলে ধরা হবে শিশুশ্রম কতটা খারাপ বা আইনের চোখে কতটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুনে মুখ ঢাকবে অনুষ্ঠানমঞ্চ। বোঝানোর চেষ্টা করা হবে, 'শিশুরাই দেশের ভবিষ্যৎ'। পরিস্থিতি কি পাল্টাবে? কারণ, অনুষ্ঠানের শেষে যেমন আমন্ত্রিতরা ফিরে যান যাঁর যাঁর কাজে, তেমনই শিশুরাও ফিরে যাবে তাদের কর্মজগতে। একদিন প্রতিদিনের মতো। আইন, সামাজিক অনুশাসনের তোয়াক্কা না করে এবং অবশ্যই কম মজুরিতে তাদের জায়গা হবে হয় কোনও কারখানায় অথবা কোনও দোকানে। কোথাও বা বাড়ির পরিচারক বা পরিচারিকা রূপে। দূর থেকেই তারা দেখবে মালিকের বাড়ির ছেলেমেয়েদের পড়ার বই বা খেলার জিনিস। শিশুপাঠ্যের কাহিনি আর তাদের পড়া হয় না।

পরিস্থিতি ঠিক কী পর্যায়ে আছে? রাজ্য মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-এর সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিৎ শুরের অভিযোগ, 'করোনা এবং লকডাউনের পর এই রাজ্য-সহ গোটা দেশেই বিরাট পরিমাণে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েছে এবং এই সূচকটা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কেন্দ্রের নতুন শ্রম আইনে শিশু শ্রমিকরা খুবই বিপন্ন। ঠিক কতজন শিশু শ্রমিক এই মুহূর্তে গোটা দেশে আছে সেটা বোঝাটাও খুবই সমস্যার। কারণ, এদের ঠিকমতো চিহ্নিতকরণই করা হয় না। যেখানে যেখানে এই শিশুরা কাজ করছে সেখানকার কর্তাদের সঙ্গে এক শ্রেণির সরকারি কর্মীদের যোগসাজশে খাতায় কলমে এদের দেখানোই হয় না। এই রাজ্যে অন্যান্য জায়গা ছাড়াও বিভিন্ন ইঁটভাটা এবং যেখানে কাজের জন্য সূক্ষ্ম এবং নরম আঙুলের প্রয়োজন সেখানে এই শিশুদের শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগানো হচ্ছে।' 

আপনি তো কলেজ ড্রপআউট’, ইতিহাস নিয়ে অমিত শাহর মন্তব্যের পালটা তৃণমূলের-সংবাদ প্রতিদিন

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) ইতিহাস বিকৃত করার মন্তব্যের জেরে গোটা দেশে আলোড়ন। শনিবার তাঁকেই তীব্র কটাক্ষে বিঁধলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। তাঁর কথায়, শাহ তো কলেজ ড্রপআউট। ইতিহাস নিয়ে আবার কী বলবেন! একদিন আগেই আক্ষেপের সুরে শাহকে বলতে শোনা গিয়েছে পান্ড্য, চোল, মৌর্য, গুপ্তদের ইতিহাসে উপেক্ষা করা হয়েছে। শুধুমাত্র মুঘলদের ইতিহাসকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিতেই নতুন ইতিহাস রচনার কথা বলেন শাহ। জবাব দেন সুখেন্দুশেখর (Sukhendu Sekhar Roy)। তাঁর কথায়, “ইতিহাসটা বিকৃত কি বিকৃত নয়, সেটা জানতে গেলেও ইতিহাস সম্পর্কে ধ্যানধারণা দরকার। তার জন্য কিছু কালিকলমের আঁচড় থাকা দরকার। যে ভদ্রলোক এ কথা বলছেন, আমি ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখেছি তাঁর নামের পাশে যে শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা লেখা আছে তা হল SY BSC।” সাংসদের প্রশ্ন, “কেউ কখনও শুনেছে এমন শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা? খোঁজখবর নিয়ে দেখলাম এই এসওয়াই মানে ‘সেকেন্ড ইয়ার’। অর্থাৎ একটা কলেজের ড্রপআউট (কলেজছুট)।” এর পরেই আশঙ্কার কথা জানিয়ে রাজ্যসভার সাংসদের মন্তব্য, “তিনি (শাহ) ইতিহাস নিয়ে ভাবনা শুরু করেছেন এটা দেশের পক্ষে ভয়ঙ্কর। আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য ভয়ঙ্কর।” বস্তুত, একাধিক রাজনৈতিক ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহের কাজ করেছেন এই তৃণমূল সাংসদ নিজে। ফলে ইতিহাস-বিকৃতি প্রসঙ্গে শাহকে তাঁর জবাব তাৎপর্যপূর্ণ। সুখেন্দুবাবু মনে করিয়ে দিয়েছেন, “ইতিহাস যাঁরা লিখেছেন তাঁরা সব ইংরেজ ঐতিহাসিক। সব থেকে বেশি ইতিহাস তাঁরাই লিখে গিয়েছেন। বাবর বা আকবর কোনও ইতিহাস লিখে যাননি। পরবর্তীকালে ভারতীয় ঐতিহাসিক (Indian Historian) এবং ওদের ভাষায় হিন্দু ঐতিহাসিকরাই বেশি।”

উত্তরপ্রদেশে থানার ভিতরেই বিক্ষোভকারীদের মার, ‘দাঙ্গাবাজদের রিটার্ন গিফট’, টুইট BJP বিধায়কের-সংবাদ প্রতিদিন

থানার (Uttar Pradesh Police Station) মধ্যে বেধড়ক মারধর করছে পুলিশ। নির্যাতনের মুখে পড়ে ‘অভিযুক্ত’দের কাতর আরজি, যেন তাঁদের রেহাই দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও ভ্রূক্ষেপ করছে না পুলিশ। লাঠি দিয়ে সমানে চলছে মারধর। এখানেই শেষ নয়। গোটা ঘটনার ভিডিও টুইট করে বিজেপি বিধায়ক শালাব মনি ত্রিপাঠী লিখলেন, “দাঙ্গাবাজদের জন্য রিটার্ন গিফট”! উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) এই ঘটনায় পুলিশের নির্মমতা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠছে। ঘটনার প্রতিবাদ করে টুইট করেছেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব।

এ সম্পর্কে আনন্দবাজার পত্রিকার শিরোনাম এরকম,লাঠির ঘা পড়ছে, পরিত্রাহী চিৎকার করছেন বন্দিরা, প্রকাশ্যে উত্তরপ্রদেশের লকআপের ভিডিয়ো।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১২

ট্যাগ