কথাবার্তা: রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ভোট দিলো বাংলাদেশ, তাৎপর্যপূর্ণ বলছেন পেশাদাররা
শ্রোতা/পাঠকবন্ধুরা!কথাবার্তার প্রাত্যহিক আসরে আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আজ ১৩ অক্টোবর বৃহষ্পতিবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। তারপর দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাব। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।
ঢাকার কয়েকটি খবরের শিরোনাম
- যেকোনো জায়গায় বসেই নির্বাচন বন্ধ করতে পারি: সিইসি-প্রথম আলো
- গাইবান্ধায় ভোট স্থগিত হওয়ায় জনগণ হতবাক : তথ্যমন্ত্রী-কালের কণ্ঠ
- রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ভোট দিলো বাংলাদেশ-মানবজমিন
- সঞ্চয় ও কৃচ্ছ্রতা সাধন করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী-যুগান্তর
- ইউক্রেনের ৪০ স্থাপনায় রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা-বাংলাদেশ প্রতিদিন
- খুলনায় ক্ষতিকর জেলি মেশানো ৯০০ কেজি চিংড়ি জব্দ–ইত্তেফাক
কোলকাতার শিরোনাম:
- ‘লাভ জেহাদ থেকে সাবধান! মুসলিমদের থেকে মেহেন্দি নয়’, হিন্দু তরুণীদের ‘সতর্কবার্তা’ হিন্দু মহাসভার-সংবাদ প্রতিদিন
- হাই কোর্টে বড় ধাক্কা, গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসার অনুমতি দিল না আদালত -আজকাল
- পার্থকে সাসপেন্ড করতে ছ’দিন সময় নেয় তৃণমূল, মানিকেরও কি একই পরিণতি হতে চলেছে?-আনন্দবাজার পত্রিকা
শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবারে বিশ্লেষণে যাচ্ছি।
বিশ্লেষণের বিষয়:
১. এই সরকারের অধীনে ইসিতে ফেরেশতা বসালেও ভোট সুষ্ঠু হবে না। -কথাটি বলেছেন বিএনপি নেতা সৈয়দ মুয়াজ্জেম হোসেন আলাল। আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
২. সৌদির আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। অন্যদিকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচন চায় রিয়াদ। কীভাবে দেখছেন ঘটনাকে?
বিশ্লেষণের বাইরের কয়েকটি খবর:
যেকোনো জায়গায় বসেই নির্বাচন বন্ধ করতে পারি: সিইসি-প্রথম আলো
নির্বাচন কমিশন (ইসি) মনে করলে যেকোনো জায়গায় বসে নির্বাচন বন্ধ করতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সিইসি এ কথা বলেন। গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন বন্ধ ঘোষণা প্রসঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন।আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঢাকায় বসে সিসিটিভি দেখে ভোট বন্ধ করে দেওয়া কতটা যৌক্তিক—এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আগেই বলেছি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমাদের সঙ্গে বসে প্রত্যক্ষ করতে পারতেন। অনেকের বক্তব্য শুনেছি, এটা কী করে সম্ভব হলো অফিসে বসে এতগুলো কেন্দ্র দেখা। সিসিটিভি দেখে রাস্তার নিয়ন্ত্রণও বিভিন্ন দেশে করা হয়। সিস্টেমটাকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে একটা জায়গায় বসে ২০০, ৪০০ জায়গার ফ্যাক্টস সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায়। আমরা মনে করি, এটা জুতসই একটা প্রযুক্তি।’প্রযুক্তি নিয়ে কথা নয়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের প্রশ্ন ঢাকায় বসে আপনারা এভাবে কেন্দ্র বন্ধ করতে পারেন কি না—এমন এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আইনের ৯১ ধারায় বলেছে, আমরা যদি মনে করি, কী দিয়ে মনে করলাম, ঢাকায় বসে মনে করব, না কুমিল্লায় বসে করব, না চট্টগ্রামে বসে করব বা আমরা জাহাজে বসে মনে করতে পারি, তা নয়; আমাদের কাছে যদি অনুমিত হয়, নির্বাচনটা সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না, তাহলে নির্বাচন কমিশন যেকোনো কেন্দ্রের বা সব কেন্দ্রের নির্বাচন বন্ধ করে দিতে পারে।’
মতামত সরকারবিরোধীদের তালিকা কেন ও কোন আইনে-সাংবাদিক কামাল আহমেদ তার এ মতামত কলামে লিখেছেন, গত ২৬ সেপ্টেম্বর একজন পাঠক আমার কাছে একটি সরকারি চিঠির ছবি পাঠান, যেটি পুলিশের বিশেষ শাখা (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) থেকে জারি করা। একটি জেলার বিশেষ শাখার পুলিশ সুপারের (এসপি) চিঠিটি এক দিন আগের, যাতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিএনপিসহ অন্যান্য সরকারবিরোধী সংগঠনের অর্থ জোগানদাতা ও সংগঠকদের নাম ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, মুঠোফোন নম্বরসহ কিছু ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হয়েছে।
ইউনিয়ন, উপজেলা ও পৌরসভা পর্যায়ে পাঁচজন করে আর জেলা পর্যায়ে আটজনের তথ্য দিতে বলা হয়েছে। এরপর ঢাকার ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড ১ অক্টোবর এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানায়, পুলিশের বিশেষ শাখা ২২ সেপ্টেম্বর ৬৪টি জেলার এসপি এবং মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারদের এ নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দিয়েছে (পুলিশ প্রিপেয়ারিং লিস্টস অব বিএনপি-জামায়াত প্যাট্রনস)। তারপর এসপি ও পুলিশ কমিশনাররা ওসিদের তারবার্তা পাঠিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজটি করতে বলেছেন।
খবরটি নিয়ে তাৎক্ষণিক তেমন একটা আলোচনা চোখে পড়েনি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ৬ অক্টোবর প্রথমবারের মতো বিষয়টি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন যে বিরোধীদের দমনের উদ্দেশ্যেই এ ধরনের তালিকা করা হচ্ছে। অভিযোগটি যে গুরুতর, তা নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।
তবে মির্জা ফখরুলের অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এ সম্পর্কে প্রথম আলোর প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার এই কাজ করতে যাবে কেন? সরকার পুলিশকে দিয়ে এমন কিছু করছে না। এসব ঢালাও অভিযোগ।’ (ঘরে ঘরে গিয়ে পুলিশ বিরোধীদের নাম নিচ্ছে: বিএনপির অভিযোগ।)
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্য ঠিক হলে প্রশ্ন ওঠে, পুলিশ কি তাহলে নিজস্ব উদ্যোগে এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে? খবরটি সংবাদপত্রে প্রকাশের আগেও সেপ্টেম্বরের গোড়ার দিকে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে ডিবিসি টেলিভিশনেও প্রচারিত হয়েছে। ডিবিসির প্রতিবেদকের কাছে পুলিশের ঢাকার একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, রুটিন কাজের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক নেতাদের তথ্য তাঁরা ফাইলে সংরক্ষণ করে থাকেন। পুলিশের ব্যাখ্যা যা-ই হোক না কেন, রুটিন হিসেবে কিংবা অন্য কোনো কারণে সরকারবিরোধীদের সম্পর্কে বিশেষ খোঁজখবর যে চলছে, তা মোটামুটি নিশ্চিত।
সরকারের অজান্তে, অর্থাৎ নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেছে বেছে শুধু সরকারবিরোধীদের তালিকা করা হয়ে থাকলে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে তা বন্ধ হওয়ার কথা এবং যে বা যারা এ ধরনের ক্ষমতাবহির্ভূত বেআইনি কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। মন্ত্রীর কথায় বোঝা যায়, সে রকম কিছু হয়নি, হলে তিনি তা বলতেন, অভিযোগ নাকচ করতেন না।
পুলিশের বিশেষ শাখার নির্দেশনায় যে সরকারবিরোধী সংগঠনের কথা বলা হয়েছে, তা শুধু রাজনৈতিক দল না হয়ে ছাত্র, শ্রমিক, নাগরিক অধিকার সংগঠনও হতে পারে। শর্ত শুধু একটাই—তারা সরকারবিরোধী কি না। সরকারবিরোধিতা কবে থেকে অপরাধ বা আইনশৃঙ্খলার বিষয় হলো, তা আমাদের জানা নেই। বিরোধী দল অভিধাটিকে পুলিশ কি তাহলে বাংলাদেশ থেকে বিদায় দিয়ে দিয়েছে? সবাইকে কি এখন শুধু সরকার সমর্থক হতে হবে?
রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ভোট দিলো বাংলাদেশ-মানবজমিন
ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে রুশ ফেডারেশনে যুক্ত করার নিন্দা করেছে জাতিসংঘ। এ নিয়ে সাধারণ পরিষদে রেকর্ড সংখ্যক ভোটে একটি নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশসহ ১৪৩টি দেশ ওই প্রস্তাবের পক্ষে আর রাশিয়ার বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। ইউক্রেনে আক্রমণের পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে উত্থাপিত কোনো নিন্দাসূচক প্রস্তাবে এই প্রথম ভোট দিলো বাংলাদেশ। তবে বরাবরের মতো ভারত ও চীন রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা জানানোর বৈশ্বিক আয়োজন থেকে নিজেদের সরিয়ে রেখেছে, দেশ দুটিসহ মোট ৩৫টি সদস্য ভোটদানে বিরত ছিল। রাশিয়াসহ এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া ও নিকারাগুয়া। ভোটদানে অনুপস্থিত ছিল মস্কো মিত্র ইরানসহ ১০টি দেশ। সম্প্রতি ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, খোরাসন, লুহানস্ক ও জাপোরিঝঝিয়াতে গণভোটের মধ্য দিয়ে এগুলোকে রুশ ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত করে মস্কো। এ গণভোট ও অন্তর্ভুক্তিকরণকে অবৈধ উল্লেখ করে আলবেনিয়া জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে নিন্দা প্রস্তাবটি আনে। যাতে পূর্ণ সমর্থন ছিল পশ্চিমা বিশ্বের।
জাতিসংঘে পাস হওয়া ওই প্রস্তাবে রুশ ফেডারেশনে যুক্ত করা ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে স্বীকৃতি না দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানোর পাশাপাশি সেই ঘোষণা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। তাছাড়া ওই প্রস্তাবে আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত নিরসনের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানানো হয়।
বাংলাদেশের অবস্থান বদল, যা বলেছে ঢাকা:
দুদিন আগেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ। ওই রেজুলেশনের ওপর ভোটাভুটির প্রক্রিয়া নিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বিতর্ক এবং ভোটে ভারতসহ অনেক দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও ভোটদানে বিরত ছিল বাংলাদেশ। সোমবারের ভোটাভুটিতে জাতিসংঘের ১০৭টি সদস্য রাষ্ট্র মস্কোর দাবির বিরুদ্ধে রায় দিলেও নির্মোহ ওই প্রস্তাবেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে যাওয়ার ঝুঁকি নেয়নি ঢাকা।
জাতিসংঘে পাস হওয়া ওই প্রস্তাবে রুশ ফেডারেশনে যুক্ত করা ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে স্বীকৃতি না দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানোর পাশাপাশি সেই ঘোষণা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। তাছাড়া ওই প্রস্তাবে আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত নিরসনের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানানো হয়।
বাংলাদেশের অবস্থান বদল, যা বলেছে ঢাকা:দুদিন আগেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ। ওই রেজুলেশনের ওপর ভোটাভুটির প্রক্রিয়া নিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বিতর্ক এবং ভোটে ভারতসহ অনেক দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও ভোটদানে বিরত ছিল বাংলাদেশ। সোমবারের ভোটাভুটিতে জাতিসংঘের ১০৭টি সদস্য রাষ্ট্র মস্কোর দাবির বিরুদ্ধে রায় দিলেও নির্মোহ ওই প্রস্তাবেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে যাওয়ার ঝুঁকি নেয়নি ঢাকা। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে (বুধবার নিউ ইয়র্ক সময় বিকেলে) পাস হওয়া মূল প্রস্তাবেই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে উত্থাপিত ওই পলিটিক্যাল রেজুলেশনে ইয়েস ভোট দিলো বাংলাদেশ। ঢাকার এই অবস্থান বদলকে রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলছেন পেশাদাররা।
অবশ্য কেউ এখানে নাটকীয়কতা দেখছেন, কেউ কেউ পশ্চিমা চাপের কাছে নতি স্বীকার বলে সামলোচনা করছেন। স্মরণ করা যায়, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিতে মার্কিন প্রশাসনের জোর তদবির ছাড়াও বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরাসরি ফোন করে বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছিলেন। বাংলাদেশ কেন শেষ পর্যন্ত ইয়েস ভোট দিয়েছে তার একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম এ মুহিত, যা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গণমাধ্যমে শেয়ার করেছে। ভাষ্যটি এমন- “ইউক্রেনের টেরিটোরিয়াল ইন্টিগ্রিটি: ডিফেন্ডিং দ্য প্রিন্সিপলস অব দ্য ইউএন সনদ’ শীর্ষক প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ। আমরা তা করেছি কারণ আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধা এবং আন্তর্জাতিক সমস্ত বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি সংক্রান্ত জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য এবং নীতিগুলি অবশ্যই সকলের জন্য সার্বজনীনভাবে মেনে চলতে হবে, সর্বত্র, কোনো ব্যতিক্রম ছাড়াই। আমরা এটাও বিশ্বাস করি যে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমানার মধ্যে যেকোনো দেশের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করা উচিত। এই প্রসঙ্গে, আমরা বিশেষভাবে ইসরায়েল দ্বারা ফিলিস্তিন এবং অন্যান্য আরব ভূমি দখলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনুরূপ অভিন্ন অবস্থান নেয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিচ্ছি। ইউক্রেনের সংঘাতের ধারাবাহিকতা এবং এর বৈশ্বিক আর্থ-সামাজিক প্রভাব নিয়ে বাংলাদেশ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা বিশ্বাস করি যুদ্ধ বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মতো বৈরিতা কোনো জাতির জন্য মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না।
সংলাপ, আলোচনা এবং মধ্যস্থতাই সংকট ও বিরোধ নিরসনের সর্বোত্তম উপায়। বহুপাক্ষিকতাবাদে দৃঢ় বিশ্বাসী হিসেবে, আমরা জাতিসংঘ এবং সেক্রেটারি জেনারেলের অফিসের পাশে দাঁড়াবো এবং আমাদের সাধ্যমতো তাদের সমর্থন করব। আমরা আহ্বান জানাই যে, সর্বস্তরের জনগণের আস্থা ও আস্থা অর্জনের জন্য জাতিসংঘ এবং সেক্রেটারি জেনারেলের অফিসকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে এবং সবার প্রত্যাশা পূরণে কাজ করতে হবে। তাই বাংলাদেশ, বিরোধের সব পক্ষকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তাকে বিপন্ন করতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে কূটনৈতিক সংলাপ পুনরায় শুরু করতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করার জন্য আহ্বান জানায়। মানবজাতির মঙ্গলের জন্য যুদ্ধের অবসান এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করার জন্য আমাদের সকলের কাজ করা উচিত। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে, শান্তি ও উন্নয়নের জন্য আমাদের (জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রের) একসাথে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।”
এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:
‘লাভ জেহাদ থেকে সাবধান! মুসলিমদের থেকে মেহেন্দি নয়’, হিন্দু তরুণীদের ‘সতর্কবার্তা’ হিন্দু মহাসভার –সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে করবা চৌথ। চলবে শুক্রবার পর্যন্ত। তার আগেই উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগর এলাকায় হিন্দু মহাসভা হুমকি দিল, মুসলিম মেহেন্দি শিল্পীরা হিন্দু মেয়েদের হাতে যেন মেহেন্দি না লাগান। শুধু তাই নয়, রীতিমতো মেহেন্দির দোকান খুলে সেখানে হিন্দু শিল্পীদের নিযুক্ত করার পদক্ষেপও করেছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটি।বিজেপি বিধায়ক বিক্রম সাইনির দাবি, তরুণ মুসলিম মেহেন্দি শিল্পীরা দোকান খোলেন অন্য ‘উদ্দেশ্যে। আসলে লাভ জেহাদের লক্ষ্যেই তাঁরা এই ব্যবসায় আসেন। তাঁর কথায়, ”মেহেন্দির আড়ালে ওঁরা লাভ জেহাদ করেন। এরকম অনেক উদাহরণ রয়েছে। হিন্দু মহিলাদের আমার অনুরোধ, ঘরে হোক বা বিউটি পার্লারে, নিজের সম্প্রদায়ের শিল্পীদেরই সহায়তা নিতে।”
পাখির চোখ লোকসভা নির্বাচন, বাংলা-সহ ১০ রাজ্যের ষাটোর্ধ্ব ভোটার টানতে নজর বিজেপির
বাংলা-সহ দশ রাজ্যের ষাটোর্ধ্ব নাগরিকের ভোটের দিকে নজর বিজেপির (BJP)। আগামী লোকসভা নির্বাচনের জন্য তারা ঘর গোছানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে। তাতেই দেশের প্রায় ১৩ কোটি ষাটোর্ধ্ব মানুষের ভোটের সিংহভাগ নিজেদের দখলে আনতে চাইছে গেরুয়া শিবির। এই লক্ষ্য সামনে রেখে তারা ‘মিশন প্রবীণ’ শীর্ষক কর্মসূচি শুরু করতে চলেছে খুব শীঘ্রই।কর্মসূচির রূপরেখা একপ্রকার তৈরি হয়ে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের দশটি রাজ্য যেখানে ষাটোর্ধ্ব ভোটারের সংখ্যা ৫০ লক্ষের বেশি, তাদের দিকেই বিশেষ নজর দেওয়া হবে বলেই ঠিক হয়েছে। রাজস্থান, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানাও এই তালিকায় রয়েছে।
টেট পরীক্ষার্থীদের আবেদন নাকচ, গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসার অনুমতি দিল না আদালত-আজকাল
বিপাকে ২০১৪ সালের টেট (TET 2014) উত্তীর্ণ আন্দোলকারীরা। মেয়ো রোডের গান্ধীমূর্তির পাদদেশে আপাতত আর ধরনায় বসতে পারবেন না তাঁরা। কলকাতা হাই কোর্টের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। নতুন করে আর ধরনায় বসার অনুমতি আর দেওয়া হল না ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৫০ চাকরিপ্রার্থীদের।
পার্থকে সাসপেন্ড করতে ছ’দিন সময় নেয় তৃণমূল, মানিকেরও কি একই পরিণতি হতে চলেছে?-আনন্দবাজার পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতোই মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তা হলে কী পার্থর মতোই পলাশিপাড়ার বিধায়ককে সাসপেন্ড করবে তৃণমূল? তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় ফিরলেই এ বিষয়ে বৈঠকে বসতে পারে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তার পরেই মানিককে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে দল। তৃণমূল বিধায়ক গ্রেফতারের পর দু’দিন কেটে গেলেও, এখনও মুখ খোলেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৩