মার্চ ০৯, ২০২৩ ১৬:৪৯ Asia/Dhaka

শ্রোতাবন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক প্রীতি আর শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি চিঠিপত্রের সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান 'প্রিয়জন'। আজকের অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় রয়েছি আমরা তিনজন। আমি নাসির মাহমুদ, আমি আকতার জাহান এবং আমি আশরাফুর রহমান।

আশরাফুর রহমান: প্রত্যেক আসরের মতো আজও অনুষ্ঠানের শুরুতেই আমি একটি বাণী শোনাতে চাই। আমিরুল মোমেনীন ইমাম আলী (আ.) বলেছেন, 'মানুষের সুখ তখনই আসে যখন সে নিজেকে বিদ্বেষ ও প্রতিশোধপরায়ণতা থেকে মুক্ত রাখে।'

আকতার জাহান: আমরা সবাই বিদ্বেষ ও প্রতিশোষপরায়ণতা থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করব- এ প্রত্যাশায় নজর দিচ্ছি চিঠিপত্রের দিকে।

আসরের প্রথম মেইলটি এসেছে বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার মান্দা উজেলার সেতু রেডিও ফ্যান ক্লাব থেকে। আর পাঠিয়েছেন ক্লাবের সভাপতি সুলতান মাহমুদ সরকার।

নাসির মাহমুদ: অনেকদিন পর সুলতান ভাইয়ের চিঠি পেলাম। তো কী লিখেছেন তিনি?

আশরাফুর রহমান: হ্যাঁ, প্রায় এক বছর পর সুলতান মাহমুদ ভাই চিঠি লিখলেন। এই চিঠিতে তিনি 'নারী: মানব ফুল' শীর্ষক ধারাবাহিক অনুষ্ঠানের প্রশংসা করে লিখেছেন:

আকতার জাহান: "রেডিও তেহরানের সাপ্তাহিক পরিবেশনা 'নারী: মানব ফুল' একটি অসাধারণ অনুষ্ঠান যা নারীদের পথিকৃত হিসেবে ভূমিকা রাখে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি 'নারী: মানব ফুল' অনুষ্ঠানটি ওয়েবসাইট থেকে শুনলাম। এই পর্বে অত্যন্ত সুনিপুণভাবে ইসলামপূর্ব যুগের আরব সমাজের নারীদের অমানবিক অবস্থার বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। এই ধরনের একটি অনুষ্ঠান উপহার দেওয়ার জন্য রেডিও তেহরান বাংলা অনুষ্ঠানকে আন্তরিক মোবারকবাদ।"

নাসির মাহমুদ: সুলতান মাহমুদ সরকার ভাই আপনাকে ধন্যবাদ, দীর্ঘদিন পর আবারো চিঠি লিখার জন্য। আশা করি এখন থেকে নিয়মিত আপনার চিঠি পাব।

বাংলাদেশের পর এবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ইসলামপুর থেকে আসা একটি চিঠি চেক করছি। এটি পাঠিয়েছেন আমাদের নিয়মিত শ্রোতা ও পত্রলেখক তরুণ মৈত্র।

সবাইকে বসন্তের পলাশ ফুলের শুভেচ্ছা জানাবার পর তিনি লিখেছেন, "গত ১লা মার্চ প্রচারিত বিশ্বসংবাদ অতুলনীয় স্বাদ ও বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ ছিল। পরবর্তীতে স্বাস্থ্যকথা অনুষ্ঠানে মৃগী রোগের কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিশ্লষণমূলক আলোচনা শুনেছি ডা. আবুবকর সিদ্দিকের কাছ থেকে। আমার মতে রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগ এখন একটি দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্র। কেননা এখান থেকে প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন রোগের কারণ ও প্রতিকার জেনে আমরা ভীষণ উপকৃত হই।"

আশরাফুর রহমান: বিশ্বসংবাদ ও স্বাস্থ্যকথা অনুষ্ঠান সম্পর্কে সুন্দর মতামতের জন্য শ্রোতাবন্ধু তরুণ মৈত্র আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার সাপাহার থানার তিলনা খোচাপাড়া থেকে জননী বেতার শ্রোতা সংঘের সভাপতি আলী আহম্মেদ (আরিফ)। 

তিনি লিখেছেন, "আমার বয়স যখন ৮ কিংবা ৯ বছর তখন থেকে রেডিও তেহরান বেতারের সাথে যুক্ত হই। এখন জীবনের তাগিদে পাড়ি জমিয়েছি রাজশাহীর লক্ষীপুরে। এখন মাঝেমধ্যে অনুষ্ঠান শুনলেও কর্মব্যস্ততার কারণে লেখা হচ্ছে না। তবে যতদিন বেঁচে আছি তেহরান বেতারের সাথে থাকার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।"

চিঠির একাংশের এ শ্রোতাবন্ধু লিখেছেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত প্রিয়জন অনুষ্ঠানে আমিরুল মোমেনীন মানিকের কণ্ঠে ভাষার গানটি খুব ভালো লেগেছে।

আকতার জাহান: শৈশব থেকেই রেডিও তেহরানের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য ভাই আলী আহম্মেদ (আরিফ) আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

কুয়েত সিটি থেকে শাহজালাল হাজারী পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি। তিনি লিখেছেন, "ইথারের বন্ধু হয়ে রেডিও তেহরানের সাথে নিয়মিতই যুক্ত আছি সেই নব্বই দশকের পর থেকেই। রেডিও তেহরান বৈচিত্র্যময় নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শ্রোতাদের আত্মার খোরাক যোগাচ্ছে। সেইসঙ্গে আমরা শ্রেতারা এই বেতার থেকে পরকালের পাথেয় সংগ্রহ করে সমৃদ্ধ হচ্ছি। রেডিও তেহরান সম্পর্কে আমার মূল্যায়ন হলো- রেডিও তেহরান যেন শ্রোতাদের নিকট এক জ্ঞানের ভাণ্ডার এবং এক মহাসাগর; যা থেকে শ্রোতারা প্রতিনিয়ত কুড়িয়ে নিচ্ছে মুণি-মুক্তা, হিরা আর জহরত। শ্রোতাবান্ধব রেডিও তেহরান আমাদের জন্য আল্লাহর প্রদত্ত এক বিশেষ নেয়ামত। যার মাধ্যমে পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শান্তির সুবাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।

নাসির মাহমুদ: রেডিও তেহরানের গুরুত্ব সম্পর্কে আপনার মতামতটি আমাদেরকে নিঃসন্দেহে প্রেরণা জোগাবে। তো চমৎকার মতামতটির জন্য শাহজালাল হাজারী ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার বলরামপুর থেকে সুরজিৎ মাহান্তী পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।

তিনি রেডিও তেহরানের ভারত মনিটর নাজিম উদ্দিন ভাইয়ের মাধ্যমে রেডিও তেহরানের খোঁজ পান জানিয়ে লিখেছেন, "রেডিও তেহরান একটি উৎকৃষ্ট গণমাধ্যম। সময়ের সঙ্গে তালমিলিয়ে এ গণমাধ্যমটি শর্টওয়েভের পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউবে  নিয়মিত অনুষ্ঠান প্রচার করছে। রেডিও তেহরান যেসব অনুষ্ঠান প্রচার করছে সেগুলো সময়োপযোগী। প্রিয়জন অনুষ্ঠানটি শ্রোতাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের জন্য শ্রোতারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে।"

আশরাফুর রহমান: প্রিয়জনসহ রেডিও তেহরানের অনুষ্ঠানমালা আপনার ভালো লাগছে জেনে আমাদেরও ভালো লাগছে। তো মতামতের জন্য আপনাকে আর রেডিও তেহরানের সন্ধান দেওয়ায় নাজিম উদ্দিন ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের জলিরপাড় থেকে বিধান চন্দ্র টিকাদার পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি। তিনি গোপালগঞ্জ ইন্টারন্যাশনাল রেডিও ক্লাবের সভাপতি।

তিনি লিখেছেন, "বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের জন্য রেডিও তেহরানের সংবাদকেই আমি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকি। দৃষ্টিপাতও আমার খুব প্রিয় অনুষ্ঠান। প্রিয়জন অনুষ্ঠানে আমি নিয়মিত মেইল করে থাকি এবং আমার মেইল পড়াও হয়। বিশ্ব বেতার দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে অনেকেই মেইল করেছেন তাদের মেইল শুনলাম। আমি মনে করি, শুধু কয়েকজন নির্দিষ্ট শ্রোতাকে গুরুত্ব না দিয়ে আমাদের মতো শ্রোতাদেরকেও গুরুত্ব দেওয়া হলে শ্রোতা সংখ্যা অনেক বাড়বে।"

আকতার জাহান: ভাই বিধান চন্দ্র টিকাদার, আমরা নবীন-প্রবীণ সকল শ্রোতাকেও সমান গুরুত্ব দিয়ে থাকি। প্রিয়জনে মানসম্মত চিঠির জবাব দেওয়ার পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করা হয়। রেডিও তেহরানের শ্রোতা বৃদ্ধিতে আপনিসহ সিনিয়র শ্রোতাদের আরও সক্রিয় হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। চিঠি লিখার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে আমরা সরাসরি কথা বলব বাংলাদেশের একজন সিনিয়র শ্রোতা ও বেতার শ্রোতা সংগঠকের সঙ্গে। প্রথমেই তার পরিচয় জানা যাক।

আকতার জাহান: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার শীতলকুচি থানার গাদোপোতা গ্রাম থেকে সহিদুল ইসলাম পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।

তিনি লিখেছেন, রেডিও তেহরান থেকে প্রচারিত  বাংলা অনুষ্ঠান  আমি নিয়মিত শুনি। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে মনোমুগ্ধকর তেলাওয়াত শুনতে পাই যা আমার হৃদয়কে প্রশান্তিতে ভরিয়ে দেয় এবং মনকে সতেজ করে। এরপর শুনতে পাই সত্য ও নিরপেক্ষ বস্তুনিষ্ঠ বিশ্ব সংবাদ ও দৃষ্টিপাত। আর নিয়মিত পরিবেশনা কথাবার্তা অনুষ্ঠানে থাকে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জনপ্রিয় পত্রপত্রিকার শিরোনাম ও বিশ্লেষণ। সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান গুলির মধ্যে রংধনু এবং প্রিয়জন অনুষ্ঠানটি আমার খুবই ভালো লাগে।

নাসির মাহমুদ: আমাদের প্রাত্যহিক ও সাপ্তাহিক অনুষ্ঠানগুলো সম্পর্কে ভালোলাগার অনুভূতি প্রকাশ করে ইমেইল পাঠানোয় ভাই সহিদুল ইসলাম আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

বাংলাদেশের পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ীয়া থানার দক্ষিণ বন্দর কর্মকার পট্টি থেকে কৃষ্ণ কর্মকার কৌশিক পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি। তিনি উদ্ভাসিত বেতার শ্রোতা সংঘের সভাপতি।

আশরাফুর রহমান: তিনি কি তার ক্লাব কার্যক্রম সম্পর্কে কিছু লিখেছেন?
নাসির মাহমুদ: না, তেমন কিছু দেখছি না। কেবল জানিয়েছেন তার ক্লাবের সদস্যরাও আমাদের অনুষ্ঠানের প্রশংসা করেন। এরপর কৌশিকদা আমাদের দুটি সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান সম্পর্কে মতামত জানিয়ে লিখেছেন, “গত ১ ফেব্রুয়ারি তারিখে স্বাস্থ্যকথা অনুষ্ঠানটি ছিল খুবই চমৎকার। আমার পরিবারবর্গ নিয়ে একসঙ্গে অনুষ্ঠান শুনে খুব উপকৃত হয়েছি এবং অনেক অজানা তথ্য পেয়েছি। আর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তারিখে প্রিয়জন অনুষ্ঠানটিও খুব ভালো লেগেছে।”

আকতার জাহান: ভাই কৃষ্ণ কর্মকার কৌশিক, আমাদের অনুষ্ঠানমালা আপনার ভালো লাগছে জেনে আমাদেরও ভালো লাগল। আশাকরি আপনার ক্লাব কার্যক্রম সম্পর্কও জানাবেন।

আসরের পরের মেইলটি এসেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বারুইপাড়া থেকে। আর লিখেছেন এসএম নাজিম উদ্দিন।

রেডিও তেহরান বাংলা পরিবারের সকলের জন্যে বসন্তের একরাশ শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি লিখেছেন, “গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ইমাম জয়নুল আবেদিন (আ.)’র শুভ জন্মদিন উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানটি শুনলাম। কারবালার বিশ্বনন্দিত মহাবিপ্লবের ঘটনায় ইমাম হুসাইন (আ.)’র একমাত্র যে পুত্র বেঁচেছিলেন তিনি হলেন ইমাম জয়নুল আবেদিন (আ.)। অর্থাৎ তিনিই ছিলেন বিশ্বন’বী (স.)'র পবিত্র বংশধারার বা আহলে বাইতের একমাত্র পুরুষ সদস্য যিনি কারবালার ঘটনায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছিলেন। অসুস্থ ছিলেন বলে তিনি ওই জিহাদে সরাসরি যোগ দিতে পারেননি। আসলে মহান আল্লাহ অলৌকিকভাবেই তাঁকে রক্ষা করেছিলেন মুসলিম জাতিকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য এবং ইসলামের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের ভিত্তি রচনার জন্য। এমন একজন মহান ব্যক্তিত্বের শুভ জন্মদিন উপলক্ষ্যে রেডিও তেহরান যথার্থতার সাথে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছে। আমরাও তার সাথে একাত্ম হতে পারে ধন্য হয়েছি। ইতিহাসের এমন অসামান্য ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেবার জন্যে শুকরিয়া জানাই।”

আশরাফুর রহমান: ইমাম জয়নুল আবেদিন (আ.)-এর শুভ জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমাদেরও ভালো লাগল। মতামতের জন্য নাজিম উদ্দিন ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

শ্রোতাবন্ধুরা, দেখতে দেখতে আমাদের আজকের আসরের নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে এসেছে। অনুষ্ঠান শেষে বিদায় নেওয়ার আগে আপনাদের জন্য রয়েছে একটি আবৃত্তি। 'স্বাধীনতা' শিরোনামের কবিতাটি লিখেছেন কবি কবি আসাদ বিন হাফিজ। আর আবৃত্তি করেছেন 'আবৃত্তি বাংলাদেশ'-এর সভাপতি মুস্তাগিছুর রহমান রতন।

নাসির মাহমুদ: মুস্তাগিছুর রহমান রতন ভাইয়ের চমৎকার উচ্চারণে কবিতাটি শুনলেন। আশা করি ভালো লেগেছে। তো শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা ভালো ও সুস্থ থাকুন আবারো এ কামনা করে বিদায় নিচ্ছি প্রিয়জনের আজকের আসর থেকে।

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৯

ট্যাগ