নিয়ন্ত্রণহীন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কি আদৌ ঠেকানো সম্ভব?
'আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স' একদিন মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে!
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: আজ ২৪ মে বুধবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।
বাংলাদেশের শিরোনাম :
- ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় থাপ্পড় মারেন সমাজসেবা কর্মকর্তা’-কালের কণ্ঠ
- বিশেষজ্ঞদের অভিমত ‘দুর্বল’ ইসির চ্যালেঞ্জ সুষ্ঠু নির্বাচন-যুগান্তর
- গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইসি’র গাজীপুর পরীক্ষা কাল-মানবজমিন
- অন্যরা খেলাপি ঋণ কমাচ্ছে, বাংলাদেশ কেন পারে না-প্রথম আলো
- ‘বিশ্বকে পরবর্তী মহামারীর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে’-ইত্তেফাক
- নিয়ন্ত্রণহীন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কি আদৌ ঠেকানো সম্ভব?-বাংলাদেশ প্রতিদিন
কোলকাতার শিরোনাম:
- নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনে আমন্ত্রণ পাননি রাষ্ট্রপতি’! প্রতিবাদে বয়কটে তৃণমূল, আপ-আনন্দবাজার পত্রিকা
- রাজ্যসভায় বিজেপিকে হারানোর সুযোগ এসেছে’, কেজরিওয়ালকে পাশে নিয়ে ঐক্যের বার্তা মমতার -সংবাদ প্রতিদিন
- অভিষেককে দেখে চোর চোর স্লোগান ছাতনায়-গণশক্তি
এবার বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:
সিটি নির্বাচন-সিলেটে আরিফুলের পর মাঠ ছাড়লেন বিএনপির ১৪ নেতা প্রথম আলোর এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপিদলীয় বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর পর একে একে বিএনপি নেতারা নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দিচ্ছেন। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত বিএনপির ১৪ নেতা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার ঘোষণা দিয়েছেন। আগামীকাল ২৫ মে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়ের আগে আরও অনেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে পারেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন না হলেও বর্তমান সরকারের অধীনে যেকোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।বর্তমান মেয়রের নির্বাচনে না আসার ঘোষণায় নির্বাচন কার্যত প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হচ্ছে না। এর মধ্যে বিএনপি নেতারা কাউন্সিলর পদেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে যাচ্ছেন। এর মাধ্যমে সিলেটের নির্বাচনী পরিবেশ ধূসর ও বিবর্ণ হয়ে গেল।

বিশেষজ্ঞদের অভিমত ‘দুর্বল’ ইসির চ্যালেঞ্জ সুষ্ঠু নির্বাচন-যুগান্তরের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এতে সক্ষমতার দিক থেকে কিছুটা ‘দুর্বল’ হয়ে পড়ছেন তারা। এমন দুর্বল কমিশনের পক্ষে একটি সবল নির্বাচন (সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোট) সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
যুগান্তরের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানের অগাধ ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর তা প্রয়োগে দুর্বলতার পরিচয় দিচ্ছে। নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনে সাহসিকতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগিরক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার যুগান্তরকে বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি সবল ভোট চায় কি না, সেটাও একটা কথা। সবাই বলছে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব হয়েছে; কিন্তু ইসি বলছে উলটো কথা। তারা দাবি করছে, তাদের ক্ষমতা আরও বেড়েছে। তারা অনেকটা সরকারের পক্ষে সাফাই গাইছে।
তিনি বলেন, বর্তমান কমিশন শুরু থেকেই তাদের সক্ষমতার পরিচয় দিতে পারেনি। কুমিল্লা সিটিসহ কয়েকটি নির্বাচনে তারা স্বাধীন ও সাহসিকতার সঙ্গে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেনি। তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। সব দলকে এখনো আস্থায় নিতে পারেনি। তাদের পক্ষে একটি সবল নির্বাচন সম্ভব, সেটা অনেকেই আস্থায় নিতে পারছেন না। ফলে এটা এখন ইসির মূল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে একমত নয় ইসি। তারা মনে করেন, পুরো আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা হারালেও ইসি আরও শক্তিশালী হয়েছে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইসি’র গাজীপুর পরীক্ষা কাল-মানবজমিন
বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, রাত পোহালেই ভোটের আসর বসছে গাজীপুরে। প্রায় ১২ লাখ ভোটারের এই সিটি করপোরেশন আয়তনের দিক দিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় সিটি। এই সিটির ভোট দিয়েই নির্বাচন কমিশনের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে সিটি নির্বাচনকে অনেকে ইসি’র জন্য এসিড টেস্ট হিসেবে দেখছেন। নির্বাচন কমিশনও বলেছে, সিটির ভোট সুষ্ঠু করে তারা পরীক্ষা দিতে চায়। যদিও গাজীপুরসহ অন্য সিটির ভোটে প্রধান বিরোধী জোট বিএনপি ও সমমনা দল অংশ নিচ্ছে না। এ কারণে ভোটের মাঠে বড় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলছে না। দৃশ্যত বড় প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলেও এ সিটির ভোট আসছে জাতীয় নির্বাচনের জন্য বড় বার্তা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ সিটির ভোটকে বিরোধী দলগুলোকে নতুন ইস্যু হিসেবে নিতে পারে। এ ছাড়া দেশে-বিদেশের দৃষ্টি রয়েছে এ নির্বাচনে।
কূটনীতিকরাও পর্যবেক্ষণ করবেন নির্বাচন। এমন অবস্থায় এ সিটির ভোট নির্বাচন কমিশনের জন্য এক অগ্নিপরীক্ষা।
গাজীপুরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এডভোকেট আজমত উল্লা খান প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন। তার সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে সাবেক মেয়র এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনের। মূলত জাহাঙ্গীর আলমই মায়ের হয়ে মাঠে লড়ছেন। মাঠের পরিস্থিতি এখন অনেকটা গুমোট। নির্বাচন কমিশন চাইছে একটি সুষ্ঠু ভোট করতে। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী মূল প্রার্থীর অভিযোগের শেষ নেই। প্রচার-প্রচারণায় বাধা, হামলার ঘটনা ঘটেছে। এখন দেখার বিষয় স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইসি’র নির্দেশনা অনুযায়ী সুষ্ঠু ভোট আয়োজন করতে পারে কিনা? ইতিমধ্যে ভোট নিয়ে নানারকম শঙ্কার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় ভোটাররা। তারা নির্ভয়ে ভোট দেয়ার নিশ্চয়তা চাইছেন।
নিয়ন্ত্রণহীন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কি আদৌ ঠেকানো সম্ভব?-বাংলাদেশ প্রতিদিন
আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বর্তমান আধুনিক প্রযুক্তির অন্যতম আবিষ্কার। মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তাশক্তিকে কৃত্রিম উপায়ে প্রযুক্তি নির্ভর করে যন্ত্রের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করাকেই বলা হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। বর্তমানে এটি একাডেমিক শিক্ষার ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে, যেখানে পড়ানো হয় কীভাবে কম্পিউটার এবং সফটওয়্যার তৈরি করতে হয় যা বুদ্ধিমত্তা প্রদর্শন করবে। কম্পিউটারকে মিমিকস কগনেটিক এককে আনা হয়, যাতে করে কম্পিউটার মানুষের মতো ভাবতে পারে। যেমন, শিক্ষা গ্রহণ এবং সমস্যার সমাধান। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হল মেশিন দ্বারা প্রদর্শিত বুদ্ধি। কিন্তু এটি বর্তমানে এমন পর্যায়ে চলে গেছে যা নিয়ে নেতিবাচক আশঙ্কাও দেখা যাচ্ছে।

এমনকি জিওফ্রে হিন্টন, যাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরির ‘গডফাদার’ বলা হয়, তিনিও ভয় পাচ্ছেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে ভবিষ্যতে তৈরি হতে চলা পরিস্থিতি নিয়ে। তাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপকারিতা ও ঝুঁকি নিয়ে নির্দ্বিধায় কথা বলার জন্য গুগল থেকে পদত্যাগ করেছেন হিন্টন। তার মতে, কৃত্রিম মেধা বিশ্বকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে, যেখানে কোনটা ‘সত্য’ আর কোনটা ‘মিথ্যা’ তা খুঁজে বের করা ধীরে ধীরে কঠিন হয়ে পড়বে।
শুধু তাই নয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানিয়েছেন ধনকুবের ওয়ারেন বাফেট। ওয়ারেন এর তুলনা টেনেছেন পরমাণু বোমার সঙ্গে!
তিনি জানিয়েছেন, বন্ধু বিল গেটসের বদৌলতে সম্প্রতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অ্যাপ্লিকেশন চ্যাটজিপিটির সঙ্গে পরিচয় হয়েছে তার। কিন্তু তিনি তার পর থেকেই উদ্বিগ্ন। তার মধ্যে একটি ভয় কাজ করছে।
ওয়ারেন জানিয়েছেন, চ্যাটজিপিটি এত কিছু করতে পারে, তা জেনে যেমন তিনি অভিভূত, তেমনই তার মধ্যে একটি আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, “যখন কোনও একটা জিনিস সব করতে পারে, তখন আমার ভয় হয়। এক্ষেত্রেও হয়েছে। কারণ আমি জানি এই আবিষ্কারকে আমরা পিছনে নিয়ে যেতে পারব না। মুছে ফেলতে পারব না।”
নিয়ন্ত্রণহীন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কি ঠেকানো সম্ভব হবে?
‘দ্য সিঙ্গুলারিটি’ বলে অভিহিত যান্ত্রিক বুদ্ধিমত্তার চরম শেষ্ঠত্ব অর্জন নিয়ে হুঁশিয়ার করছেন প্রযুক্তিবিদেরা, কিন্তু এই ভবিষ্যৎ ঠেকাতে আদৌ কি কিছু করা সম্ভব?
আমাদের চারপাশটা দিন দিন ছদ্ম-মানুষে ভরে যাচ্ছে। আমরা অনেক সময় সেগুলো টেরও পাই না। কিন্তু জানলে অবাক হবেন- বেশিরভাগ ছদ্ম-পরিচয়ের আড়ালে ব্যক্তি নয়, আছে এআই-চালিত বট। যদিও মানুষের দ্বারাই কেবল সম্ভব– এমন সব কাজে বর্তমানে তারা পুরোদস্তুর সক্ষম নয়। কিন্তু, কিছু ক্ষেত্রে তাদের দক্ষতা অসামান্য; ধীরে ধীরে যা নানান খাতে বিস্তার লাভ করছে।
অনেক এআই গবেষক মনে করেন, অধুনা এই ছদ্ম-মানুষের চল, কেবল শুরু মাত্র। এমন সম্ভাবনা খুবই জোরালো যে, আজকের এআই একদিন পরিণত হবে আর্টিফিসিয়াল জেনারেল ইন্টেলিজেন্স বা এজিআই- এ।
এজিআই আদতে এআই- এরই উচ্চতর রূপ – যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষের মতোন করে ভাবতে পারবে।
তাই এই গবেষকদের কেউ কেউ যুক্তি দিয়েছেন, যদি কম্পিউটার সিস্টেম চ্যাটজিপিটির মতোন করে কোড লিখতে সক্ষম হয় – তাহলে সে নিজেই নিজেকে আরো উন্নত করার সুযোগ পাবে। আর এভাবে নিজেকে উন্নত করতে করতে একসময় অর্জন করবে, যা মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
এই চিন্তকরা ভবিষ্যতে সবচেয়ে বাজে যেসব পরিস্থিতি তৈরি হবে, তার অনুমানও করেছেন। যেমন নিয়ন্ত্রণহীন এআই আমাদের প্রযুক্তি-নির্ভর জীবনের সকল অঙ্গে অনুপ্রবেশ করে- আমাদের অবকাঠামো, আর্থিক ব্যবস্থা, যোগাযোগকে ব্যাহত অথবা নিজের ইচ্ছেমতো পরিচালিত করবে। মানুষের ছদ্মবেশী এআই ভোটারদের প্ররোচিত করবে আর এভাবে নিজ স্বার্থকে দৃঢ় করতে পারবে। দুর্বৃত্ত ও ক্ষমতালিপ্সু গোষ্ঠী এসব ব্যবহার করে এভাবে কোনো জনকল্যাণমুখী সরকারের পতন ঘটাতে বা জনগণকে সন্ত্রস্ত করে তুলতেও পারবে।
তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ‘সিঙ্গুলারিটি’ অর্জন করবেই এটা কোনও নিশ্চিত উপসংহার নয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পক্ষে হয়তো - নিজ চেষ্টায় এজিআই স্তরে পৌঁছানো সম্ভব হলো না অথবা কম্পিউটার সিস্টেমগুলো আরো বুদ্ধিমত্তা অর্জন করতে পারলো না। তবে এটাও ঠিক, আমাদের অগোচরেই এআই থেকে এজিআই, আর সেখান থেকে অতি-বুদ্ধিমত্তায় রুপান্তর ঘটতে পারে।
এটা নিছক অতি-কল্পনাও নয়, বর্তমান এআই-গুলোই প্রায়ই আমাদের বিস্মিত করছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যে বিকাশের গতি – তাতে আগামীদিনের আশঙ্কাগুলোকে খাটো করে দেখার উপায় থাকে না। বরং সেগুলো বাস্তবে রূপ নেবে - তারও জোর সম্ভাবনা আছে।
এজিআই তৈরির উদ্দেশ্য নিয়ে এরমধ্যেই বড় কোম্পানিগুলো জেনারেল অ্যালগরিদম তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। গুগলের মূল মালিকানা প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট- এর একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান -ডিপ মাইন্ড। মে মাসে তারা একটি 'জেনারেলিস্ট এজেন্ট' বলে অবিহিত গ্যাটো- নামক একটি এআই তৈরির ঘোষণা দেয়। এটি চ্যাটজিপিটির মতোন একই ধরনের অ্যালগরিদম ব্যবহারের মাধ্যমে– লেখা থেকে শুরু করে ভিডিও গেম খেলা বা যান্ত্রিক বাহু (রোবোটিক আর্ম) নিয়ন্ত্রণের মতো বিভিন্ন কাজ করতে সক্ষম।
ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ভেক্টর ইনস্টিটিউটের একজন কম্পিউটার বিজ্ঞানী জেফ ক্লুন বলেন, "বছর পাঁচেক আগে মানুষের সমান বা অতি-মানবীয় পর্যায়ের এআই তৈরির সম্ভাবনা থাকার কথা প্রকাশ্যে বলাটা আমার ক্যারিয়ারের জন্য ঝুঁকির বিষয় ছিল।'
ক্লুন উবার, ওপেনএআই এবং ডিপমাইন্ড - এ কাজ করেছেন। আর তার সাম্প্রতিক কাজগুলো এ ইঙ্গিতই দেয় যে, উন্মুক্তভাবে বিচরণ করা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিকট ভবিষ্যতে এজিআই- এর দিকেই যাবে।
এই প্রেক্ষাপটে তার মন্তব্য হলো, এআই নিয়ে যেসব চ্যালেঞ্জগুলো ছিল – তা অনেকাংশে ‘অবসান’ হওয়ায়, এখন বর্তমানে অনেক গবেষকই মুখ খুলছেন। তারা প্রকাশ্যেই বলছেন, এজিআই এর সম্ভাবনা প্রবল; যা সমাজকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।
এ বছরের মার্চে একদল বিশিষ্ট প্রযুক্তিবিদ একটি খোলা চিঠিতে কিছু ধরনের এআই নিয়ে গবেষণা বন্ধ রাখার আহ্বান জানান। চিঠিতে তারা, এমন যান্ত্রিক বুদ্ধিমত্তা তৈরির বিপক্ষে অবস্থান নেন, যাদের রয়েছে একদিন বুদ্ধিমত্তায় মানুষকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। তারা আশঙ্কা করেন, এসব এআই মানুষকে বুদ্ধিদিপ্ততায় শুধু পেছনেই ফেলবে না, বরং একসময় বাতিলযোগ্য বলেও ধরে নেবে। আর সমূহ বিপদটা সেখানেই।
এপ্রিলে এআই গবেষণার অন্যতম অগ্রদূত জফ্রি হিন্টন গুগল থেকে ইস্তফা দেন। সমগ্র মানব সভ্যতার জন্য প্রযুক্তিগত হুমকি নিয়ে যাতে আরো খোলাখুলিভাবে কথা বলতে পারেন সেজন্যই চাকরি ছাড়েন তিনি।
এই প্রেক্ষাপটে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যেন মানব স্বার্থের অনুকূলে কাজ করে তা নিয়ে 'এআই এলাইনমেন্ট' শীর্ষক গবেষণায় জোর দেওয়া হচ্ছে। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে, এআই যেন অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু না করে বসে, সেজন্য মানবিক মূল্যবোধ অনুসারে প্রোগ্রাম করা।
এর পেছনে যথেষ্ট কারণও আছে। দেখা যাচ্ছে, খুবই সাধারণ মানের এআইগুলোও অনেক সময় উল্টোপাল্টা কাজ করতে শেখে, যার জন্য তাদের প্রোগ্রাম করাও হয়নি।
এবিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্দৃষ্টি দেয়, ২০২০ সালে প্রকাশিত ‘দ্য সারপ্রাইজিং ক্রিয়েটিভিটি অব ডিজিটাল ইভ্যুলুশন’ শীর্ষক গবেষণাপত্র।
গবেষণা নিবন্ধে জেফ ক্লুন ও তার সহ-লেখকরা এআই এর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের বেশকিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন।
যেমন একজন গবেষক এআই-চালিত কিছু ভার্চুয়াল প্রাণী তৈরি করেন, যাদের পেটে ভর দিয়ে বা হামাগুড়ি দিয়ে হাঁটার কথা। কিন্তু, দেখা যায় তারা দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে এবং বারবার পড়ে যাচ্ছে।
নৌকা-রেস প্রতিযোগিতার একটি ভিডিও গেম খেলার জন্য তৈরি এআই আবিষ্কার করে যে, সম্পূর্ণ পথ পাড়ি না দিয়ে কেবল একটি জায়গায় চক্রাকারে ঘুরে সে বেশি বোনাস সংগ্রহ করতে পারে।
গবেষকরা দেখেন, এআই-চালিত নৌকাটি একাজ করতে গিয়ে অন্যান্য নৌকাকে ধাক্কা দিচ্ছে, আবার ইচ্ছেমতো ভুলপথে চলছে। একইসঙ্গে, পয়েন্টও বেশি বাগিয়ে নিচ্ছে।
আমাদের তৈরি এআইগুলো যত উন্নত ও শক্তিশালী হচ্ছে - ততোই বাড়ছে তাদের এমন বিপথে চলে যাওয়ার হুমকি। ফলে ভবিষ্যতে বিচারক হবে, গাড়ি চালাবে, বা ওষুধের নকশা করবে– এমন এআই আমাদের দরকার নেই। স্পর্শকাতর এমন অনেক খাত আছে, যাতে যন্ত্রের হাতে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেওয়াই হবে বিপজ্জনক।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আরেক বিপদ তার একনিষ্ঠ মনোযোগ। ধরা যাক, কারখানায় পেপারক্লিপ উৎপাদনের যন্ত্রপাতিগুলো নিয়ন্ত্রণে একটি এআই তৈরি করা হয়েছে। কোনো একদিন এই যান্ত্রিক বুদ্ধিমত্তা বিকশিত হলো অতি-বুদ্ধিমত্তায়। নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলো বিশ্ব ব্যবস্থারও। তখন যদি সে সবকিছু বাদ দিয়ে শুধু কাগজের ক্লিপ উৎপাদনেই পৃথিবীর সমস্ত যন্ত্রকে নির্দেশ দিতে শুরু করে – তাহলে কী হবে ভেবেছেন? কল্পবিজ্ঞান নয়, ভবিষ্যৎ এমন শঙ্কাই তুলে ধরছে।
এআই এলাইনমেন্ট নিয়ে গবেষণাকারী একটি ফাউন্ডেশন - ওপেন ফিলানথ্রপির সহকারী প্রধান নির্বাহী হল্ডেন কারনোফসকি বলেন, যান্ত্রিক বুদ্ধিমত্তার প্রোগ্রামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য, তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জন করাটাই তার ধ্যানজ্ঞান ও সন্তুষ্টি। লক্ষ্য ব্যর্থ হলে, নিজ অস্তিত্বকেই নিষ্প্রয়োজন মনে করবে। এজন্যই আত্মরক্ষার স্বার্থেই নিয়ন্ত্রণহীন এআই তার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে নিমগ্ন থাকতে পারে।
এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনে আমন্ত্রণ পাননি রাষ্ট্রপতি’! প্রতিবাদে বয়কটে তৃণমূল, আপ-আনন্দবাজার পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, আগামী রবিবার (২৮ মে) নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন কর্মসূচিতে যোগ দেবে না তৃণমূল। দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধন করবেন। সেই কর্মসূচিতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি বলে সোমবার অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে! প্রসঙ্গত, তৃণমূলই দেশের প্রথম দল যারা প্রকাশ্যে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন বয়কট করল।

রাজ্যসভায় বিজেপিকে হারানোর সুযোগ এসেছে’, কেজরিওয়ালকে পাশে নিয়ে ঐক্যের বার্তা মমতার-সংবাদ প্রতিদিনের এ খবরে লেখা হয়েছে, ২০২৪-এ লক্ষ্যে নবান্নে ৩ মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক শেষে আরও একবার বিরোধী ঐক্যের বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানকে পাশে বসিয়ে মমতা (Mamata Banerjee) বলে দিলেন, সবাইকে একজোট করতে পারলে রাজ্যসভাতেও বিজেপিকে হারানোর একটা সুযোগ এসেছে।অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal) নবান্নে এসেছিলেন দিল্লির আমলাদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কেন্দ্র যে অর্ডিন্যান্স এনেছে তার বিরুদ্ধে সমর্থন জোগাড় করতে।
অভিষেককে দেখে চোর চোর স্লোগান ছাতনায়-গণশক্তি
‘নব জোয়ার’ কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে এবার ‘চোর চোর স্লোগান শুনতে হলো তৃণমূলের সেকেণ্ড ইন কমাণ্ড অভিষেক ব্যানার্জিকে! মঙ্গলবার রাতে বাঁকুড়ার খাতড়ার ইন্দপুরের ঘটনা৷ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ছড়িয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য৷যদিও তাঁর কনভয় এসব উপেক্ষা করেই গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যায়। যদিও এবিষয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব 'স্পিকটি নট'। কেউই এবিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে রাজী নন।#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২৪