জুন ১১, ২০২৩ ১২:৩৩ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতাবন্ধুরা! আজ ১১ জুন রোববারের কথাবার্তার আসরে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • আঙ্কটাডের প্রতিবেদনের তথ্য মাদক ব্যবসার কারণে বছরে পাচার ৫ হাজার কোটি টাকা -প্রথম আলো
  • শিক্ষকদের আর্তনাদ, নির্বিকার প্রশাসন-মানবজমিন
  • মূল্যস্ফীতি ও ডলার সংকট অর্থনীতির প্রধান সমস্যা-ড.জাহিদ হোসেন-ইত্তেফাক
  • ইন্টারনেটে আসক্ত ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী -যুগান্তর
  • ‘গাধা’ ফেরাবে পাকিস্তানের অর্থনীতির হাল? চীনে রপ্তানির প্রস্তুতি -কালের কণ্ঠ

কোলকাতার শিরোনাম:

  • সুযোগ এসেছে চোর তাড়ানোর-গণশক্তি
  • ভোট লুট ঠেকাতে নির্দেশিকা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের, কিন্তু মনোনয়ন ঘিরে অশান্তি কমবে কিসে?-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • অন্তঃসত্ত্বাদের শোনানো হবে রামায়ণ, গীতা, ‘দেশভক্ত’ সন্তান গড়তে নয়া উদ্যোগ RSS ঘনিষ্ঠ সংগঠনের-সংবাদ প্রতিদিন

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি- 

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১. অগ্নি-সন্ত্রাস করতে জামায়াতকে মাঠে নামিয়েছে বিএনপি। একথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কী বলবেন আপনি?

২. বেলারুশ সীমান্তে পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করতে যাচ্ছে রাশিয়া এবং এ নিয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় আমেরিকা বলেছে -এটা উন্মাদনা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ। আপনার পর্যবেক্ষণ কী?

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর

আঙ্কটাডের প্রতিবেদনের তথ্য-মাদক ব্যবসার কারণে বছরে পাচার ৫ হাজার কোটি টাকা-প্রথম আলো

মাদকসংশ্লিষ্ট অর্থ পাচারের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। আর এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষে। 

মাদকের কারণে প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে যায় ৪৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। 

এ ছাড়া মাদক কেনাবেচা করে অর্থ পাচারের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে পঞ্চম। এশিয়ার দেশগুলো বিবেচনায় নিলে মাদকের মাধ্যমে টাকা পাচারের ঘটনায় বাংলাদেশ রয়েছে শীর্ষে। 

জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাড অবৈধ অর্থপ্রবাহসংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

তখন ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ফেনসিডিল ঢুকত। একসময় ফেনসিডিলের জায়গা দখল করে হেরোইন। এখন দেশে ইয়াবার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইয়াবার চেয়ে ভয়ংকর মাদক আইস দেশে ঢুকছে।

আঙ্কটাডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাদকের অবৈধ অর্থপ্রবাহের দিক থেকে বিশ্বে প্রথম অবস্থানে রয়েছে মেক্সিকো। এরপর যথাক্রমে রয়েছে কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, পেরু ও বাংলাদেশ। মাদক এবং অপরাধ প্রতিরোধে কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনওডিসির সহায়তায় এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাদকের মাধ্যমে অবৈধ অর্থপ্রবাহের অনুমানভিত্তিক এই হিসাব করেছে আঙ্কটাড। 

তালিকায় এশিয়ার যে পাঁচটি দেশের নাম রয়েছে, এর মধ্যে শীর্ষে থাকা বাংলাদেশের পরেই আছে মালদ্বীপ ও নেপাল। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে আফগানিস্তান ও মিয়ানমার। মূলত ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মাদকের মাধ্যমে অবৈধ অর্থপ্রবাহের এই চিত্র প্রথমবারের মতো তুলে ধরেছে আঙ্কটাড।

ডলার-সংকট -আমদানি কমছে, কাটছে না সংকট-প্রথম আলো

আমদানি খরচ কমলেও বিদেশি সেবা ও পরিবহন খরচ এবং ঋণ পরিশোধে যে খরচ হচ্ছে, তাতে ডলারের আয়-ব্যয়ে বড় অঙ্কের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।

ঋণপত্র খোলায় কড়াকড়ি আরোপ করার পর এখন প্রতি মাসে যে পরিমাণ রপ্তানি ও প্রবাসী আয় আসছে, তার চেয়ে আমদানি খরচ কম। তারপরও বিদেশি সেবা ও পরিবহন খরচ এবং বিদেশ থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধে যে খরচ হচ্ছে, তাতে প্রতি মাসে ডলারের আয়-ব্যয়ে বড় অঙ্কের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। আবার সময়মতো রপ্তানি আয় দেশে আসছে না, এতেও ডলারের সংকট আরও তীব্র হচ্ছে। 

এদিকে রপ্তানি আয় সময়মতো না আসায় রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে পোশাক খাতের অনেক উদ্যোক্তাকে ডলার দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ইডিএফের ৭০০ কোটি ডলার বা ৭ বিলিয়ন ডলারের তহবিল নেমে এসেছে ৪৪৯ কোটি ডলার বা ৪ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলারে। ফলে পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের ঋণপত্র খোলার সুযোগ সীমিত হয়ে এসেছে। আর অন্য খাতের উদ্যোক্তাদের ১১৩ টাকা পর্যন্ত দামে ডলার কিনে পণ্য আমদানি করতে হচ্ছে। 

এখন প্রশ্ন উঠেছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা সংকট এত পদক্ষেপ নেওয়ার পরও কেন কমছে না। গত বছরের জুলাইয়ে যোগ দিয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছিলেন, জানুয়ারিতেই ডলার-সংকট কেটে যাবে; কিন্তু তা হয়নি। তাই সংকট কাটতে এখন আর কোনো সময়সীমার কথা বলছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

ইত্তেফাকের খবরে লেখা হয়েছে, টাকার মান কৃত্রিমভাবে ধরে রাখার খেসারত দিতে হচ্ছে গোটা অর্থনীতিকে। ডলার-সংকটের প্রভাব এখন পুরো অর্থনীতিতে। এর ফলে লেনদেনে দেখা দিয়েছে রেকর্ড ঘাটতি, কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ঋণ পরিশোধে খরচ বেড়েছে, দেখা দিয়েছে জ্বালানির সংকট, অসহনীয় হয়ে উঠেছে মূল্যস্ফীতির চাপ। এটি ভুল অর্থনৈতিক নীতির খেসারত। এখন সরকারের অগ্রাধিকার হতে হবে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা। তা না হলে সংকট আরো বাড়বে। বাংলাদেশের অর্থনীতি কোন পথে এবং সমাধান কী—এ প্রসঙ্গে ইত্তেফাকের সঙ্গে এসব কথা বলেছেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন।

যুগান্তরের খবরে লেখা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন রিজার্ভে স্বস্তি ফিরিয়ে আনাই বড় চ্যালেঞ্জ

ডলার সংকটে আমদানি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি কমেছে * রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে অর্জিত হচ্ছে না লক্ষ্যমাত্রা * শিল্প, কৃষি ও সেবা খাতে কমেছে উৎপাদন।

সার্বিকভাবে আমদানির নতুন এলসি খোলা কমলেও বকেয়া এলসি দায় পরিশোধের চাপ এখন বেড়েছে। একই সঙ্গে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে আগের চেয়ে বেশি। এতে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ বেড়েছে।

এদিকে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স থেকে প্রত্যাশিত হারে বৈদেশিক মুদ্রা আয় বাড়ছে না। ফলে ডলারের চাহিদা বাড়ায় টাকার মান কমে যাচ্ছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের চাপে লাগাম টানতে বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে যাচ্ছে। এতে রিজার্ভ অব্যাহত গতিতে কমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় টাকার মানে ও বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় স্থিতিশীলতা রাখতে রিজার্ভ বাড়ানো অপরিহার্য।

কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতে এখন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়িয়ে স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়াই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশে তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়া ও অন্যান্য প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এর কিছুটা নেতিবাচক প্রভাবও অর্থনীতিতে পড়বে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়ে পড়ায় সার্বিকভাবে নিট বৈদেশিক সম্পদে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান খাত রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় প্রত্যাশিত হারে না বাড়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মোট বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ৭২ শতাংশই আসে এ দুটি খাত থেকে।

ইন্টারনেটে আসক্ত ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী-যুগান্তর

ইন্টারনেটের কারণে ৯১ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী মানসিক সমস্যায় ভুগছে। এদের মধ্যে ২৬ দশমিক ১ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করে, তাদের সমস্যার ‘পুরোপুরি দায়’ ইন্টারনেটের। আর ‘মোটামুটি দায়ী’ করতে চায় ৫৯ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। বাকিরাও তাদের মানসিক সমস্যার জন্য ইন্টারনেটকে কমবেশি দায়ী মনে করছে। কিন্তু এক্ষেত্রে দায়ী করছে না মাত্র ৮.৩ শতাংশ শিক্ষার্থী। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আঁচল ফাউন্ডেশনের এক সমীক্ষায় এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। শনিবার সংস্থাটি সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

সমীক্ষায় ইন্টারনেটসহ মোবাইল-কম্পিউটারের মতো বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস (যন্ত্র) ব্যবহারের কারণে শিক্ষার্থীদের সবমিলে ১৬ ধরনের সমস্যা মোকাবিলার তথ্য বের হয়ে এসেছে। মূলত করোনাকালে অনলাইন ক্লাসের নামে শিক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটের সঙ্গে পরিচিত হয়। এ সময় তারা অবাধে ডিভাইস ব্যবহারের সুযোগ পায়। সেটিই তাদের মধ্যে আসক্তি তৈরি করে। ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থীই এখন আসক্তি অনুভব করে। সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষ্যে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজির অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের প্রোগ্রামার বিপ্লব চন্দ্র সরকার, টাঙ্গাইলের ডেপুটি সিভিল সার্জন ড. মারুফ আহমেদ খান এবং আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট তানসেন রোজ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইন্টারনেট বর্তমানে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রতিদিনের কর্মকাণ্ডে ইন্টারনেট কোনো না কোনোভাবে যুক্ত থাকেই। কিন্তু ইন্টারনেট তরুণ শিক্ষার্থীদের জন্য অনেকাংশেই নেতিবাচক ফল নিয়ে আসছে। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ১৭৭৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭২.২ শতাংশ জানিয়েছে, তারা তাদের জীবনে কখনো না কখনো মানসিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে।

এতে বলা হয়, ৩৮.২ শতাংশ শিক্ষার্থী পড়াশোনাবিষয়ক কাজে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। বাকিদের কেউ অবসর সময় কাটাতে, আবার গেম খেলতে বা ভিডিও দেখাসহ অফলপ্রসূ কাজে ইন্টারনেটে বেশি সময় ব্যয় করে। মাত্র ৪২.৯ শতাংশ যোগাযোগের প্রয়োজনে ব্যবহার করে। অপরিমিত ইন্টারনেট ব্যবহার করছে ৬২.৩ শতাংশ শিক্ষার্থী। এদের মাঝে সর্বোচ্চ দিনে ১১ ঘণ্টার ওপরে অনলাইনে থাকা শিক্ষার্থী ৬.২ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন ৩২.৩ শতাংশ ব্যবহার করে ২ থেকে ৪ ঘণ্টা।

সমীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ৮১.৫ শতাংশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে ইন্টারনেট। তাদের মধ্যে ৩৪.৩ শতাংশ জানায়, ইন্টারনেটে সময় ব্যয় তাদের স্বাভাবিক জীবনে ‘প্রচণ্ড নেতিবাচক’ প্রভাব ফেলছে। ৫৭.২ শতাংশের স্বাভাবিক জীবনে ‘কিছুটা নেতিবাচক’ প্রভাব ফেলছে। নেতিবাচক প্রভাব বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৫৯.৬ শতাংশ মনে করে, ইন্টারনেটে সময় ব্যয় তাদের পড়াশোনায় মনোযোগ বিঘ্নতার জন্য দায়ী। ১৭.৮ শতাংশ ইন্টারনেটে পর্ন দেখা, সাইবার ক্রাইম, বাজি ধরা, বুলিং করা প্রভৃতি অপ্রীতিকর কাজের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে পড়েছে। ২৩ শতাংশ ধীরে ধীরে অন্তর্মুখী হয়ে পড়েছে। ৩৫.৬ শতাংশ ডিপ্রেশনসহ বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপ অনুভব করছে এবং ২০.৩ শতাংশ সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এছাড়া পড়াশোনায় মনোযোগ হারাচ্ছে তারা।

সমীক্ষা অনুসারে, পড়াশোনার কাজে ৯৪.১ শতাংশ শিক্ষার্থী ইন্টারনেট ব্যবহার করে। কিন্তু পড়াশোনার ফাঁকে অনলাইনে প্রবেশ করলে ৫২.৬ শতাংশের পড়াশোনার মনোযোগ হারিয়ে যায়। এছাড়াও ২৫.২ শতাংশের পড়া মনে রাখতে অসুবিধা হয়, ৫৭ শতাংশ মনে করে অযথা সময় নষ্ট হয় এবং ৩১.২ শতাংশের পড়াশোনায় অনীহা জন্ম নেয়।

ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী আসক্তি অনুভব করে। এ কারণে ৩.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ‘কখনোই’ পরিবারের সঙ্গে মন খুলে গল্প করে না। ১৯.২ শতাংশ শিক্ষার্থী জানায়, তারা ‘খুব একটা’ পরিবারের সঙ্গে মন খুলে গল্প করে না। মাঝেমধ্যে পরিবারের সঙ্গে আড্ডা দেয় ৪৪.৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। পরিবারের সঙ্গে আড্ডা না দেওয়া শিক্ষার্থী এবং পরিবারের মাঝে একধরনের দূরত্ব তৈরিতে ভূমিকা রাখে। তাদের আত্মকেন্দ্রিক করে তুলেছে। ৬.৫ শতাংশের নৈতিক অবক্ষয় ঘটেছে। ২৪ শতাংশ ব্যক্তিজীবন ও কর্মজীবনে লক্ষ্যচ্যুত হচ্ছে এবং ২৫.৭ শতাংশের অফলপ্রসূ কাজে সময় নষ্ট হচ্ছে বলে জানান।

ইন্টারনেট আসক্তিতে ঘুম ও শারীরিক সমস্যাও তৈরি করছে। কখনো কখনো অতিরিক্ত সময় ধরে ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহার এই সমস্যা সৃষ্টি করে। ৫৮.৭ শতাংশ শিক্ষার্থী প্রতিদিন পরিমিত ঘুমায় না। ৩০.৪ শতাংশ এর পেছনে তাদের ইন্টারনেট ব্যবহারকে পুরোপুরিভাবে দায়ী করেছে। ইন্টারনেট ব্যবহার পর্নোগ্রাফিতেও আসক্তি বাড়িয়েছে। ভিডিওর পাশাপাশি যৌন উত্তেজক গল্প শোনা কিংবা পড়া ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের এক অন্যতম আকর্ষণ। ৩২.৯ শতাংশ শিক্ষার্থীই ওয়েবসাইটে এসব দেখে বা পড়ে। আর এ কারণে ৩৫.১ শতাংশ শিক্ষার্থীর মাথায় বিভিন্ন সময় এবিষয়ক চিন্তা আসে। এছাড়া ১৩.৬ শতাংশ শিক্ষার্থী সব সময় এই ধরনের কাজের প্রতি আগ্রহ অনুভব করে, ২৫.৫ শতাংশের মনে নিজেকে নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগে, ১৫.৩ শতাংশ বিপরীত লিঙ্গের মানুষকে অসম্মানের দৃষ্টিতে দেখে, ১০.৫ শতাংশ অনৈতিকভাবে যৌনতৃপ্তি উপভোগ করে। তথ্য বিশ্লেষণে জানা যায়, ২৮.৮ শতাংশ শিক্ষার্থী যৌনতা সম্পর্কিত কৌতূহল মেটাতে এই ধরনের কাজ করে থাকে। ২৪ শতাংশ জানায়, তারা যৌনতৃপ্তি পেতে এবং ১৪.১ শতাংশ অবসরের খোরাক হিসাবে এই প্রকার কাজকর্ম করে। এছাড়াও, যৌনজীবন নিয়ে বিষণ্নতা থেকে ৯.৬ শতাংশ এবং একাকিত্ব ঘোচাতে ২৩.৫ শতাংশ এমন কাজ করে।

ইলেকট্রনিক ডিভাইস শিক্ষার্থীদের আচরণেও পরিবর্তন এনেছে। বিশেষ করে ২৭ শতাংশ শিক্ষার্থীর ধৈর্যশক্তির হ্রাস ঘটেছে। ২৬ শতাংশ হঠাৎ রেগে যায়, ২৭.৭ শতাংশ চুপচাপ হয়ে যায়, ২২.৫ শতাংশের ভেতর জড়তা তৈরি হয়, ২৪.৫ শতাংশের মধ্যে অবাস্তব প্রত্যাশা তৈরি হয় এবং ২৩.৬ শতাংশ ঘরকুনো হয়ে যায়। অন্যদিকে ৩০.২ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করে, তারা যখন অফলাইনে থাকে, তখন একাকিত্বে ভোগে। ২২.২ শতাংশের মাঝেমধ্যে একাকিত্ব অনুভূত হলেও ১৭.৩ শতাংশ বিষয়টি নিয়ে কখনো ভেবে দেখেনি বলে জানিয়েছে। আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট তানসেন রোজ বলেন, বিশ্বায়নের যুগে ইন্টারনেট ব্যবহার না করলে আমাদের তরুণ প্রজন্মই পিছিয়ে পড়বে। কিন্তু সমীক্ষা অনুযায়ী তারা ইন্টারনেটকে বিনোদনের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করতে চায়। কারণ, আমাদের দেশে বিনোদনের ক্ষেত্রগুলো প্রায়ই সংকীর্ণ হয়ে গেছে।

অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, সমীক্ষায় কিছু ক্ষেত্রে আশঙ্কার চিত্র ফুটে উঠেছে, যা আমাদের ভাবতে সহায়তা করবে। সেটি হচ্ছে-আসলেই ইন্টারনেটের ব্যবহার এ বয়সি মানুষের উপকার করছে নাকি অপকারটাই বয়ে নিয়ে আসছে। সমস্যা সমাধানে সংস্থাটি ১০টি সুপারিশ তুলে ধরেছে। এর মধ্যে আছে-ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিতে স্কুল, কলেজগুলোয় ‘ডিজিটাল লিটারেসি প্রোগ্রাম’ চালু করা। ইন্টারনেট রেসকিউ ক্যাম্প স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আসক্তি কাটিয়ে উঠতে কাউন্সেলিং, থেরাপি এবং শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম প্রদান করা। সামাজিক ও পারিবারিক যোগাযোগে ইন্টারনেট নির্ভরতার পরিবর্তে সরাসরি যোগাযোগকে উৎসাহিত করতে প্রচারণা চালানো। বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে নিয়ে ডিজিটাল লিটারেসির প্রশিক্ষণ দেওয়া। একাডেমিক পর্যায়ে আত্মসচেতনতামূলক (সেলফ কেয়ার অ্যাক্টিভিটিস) কার্যক্রম পরিচালনা করা। খেলাধুলা ও ব্যায়ামাগারের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা। সামাজিক যোগাযোগ বৃদ্ধিতে সোশ্যাল স্কিল ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা। যৌনবিষয়ক সঠিক পাঠ নিশ্চিত করা। সাইবার ক্রাইম বিষয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করা

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

অন্তঃসত্ত্বাদের শোনানো হবে রামায়ণ, গীতা, ‘দেশভক্ত’ সন্তান গড়তে নয়া উদ্যোগ RSS ঘনিষ্ঠ সংগঠনের-সংবাদ প্রতিদিনের এ খবরে লেখা হয়েছে, এবার মায়ের পেটেই শুরু দেশভক্ত হওয়ার শিক্ষা! অভিনব পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (RSS) একটি শাখা সংগঠন। ‘গর্ভ সংস্কার’ (Garbha Sansakar) প্রকল্পের আওতায় অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের গীতা, রামায়ণ তৎসহ সংস্কৃত শ্লোক আবৃত্তিতে উৎসাহ দেওয়া হবে। এর ফল পাবে গর্ভস্থ শিশু। ভবিষ্যতে সংস্কারি হয়ে উঠবে সে, এমনটাই দাবি আরএসএসের শাখা সংগঠনের।

সংঘ ঘনিষ্ঠ হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটির নাম ‘সংবর্ধিনী ন্যাস’ (Samvardhinee Nyas)। নয়া প্রকল্পে তাদের উদ্দেশ্য গর্ভ অবস্থা থেকেই সন্তানকে দেশভক্ত এবং সংস্কারি হিসেবে গড়ে তোলা। এই প্রকল্পে অন্তঃসত্ত্বাকে গীতা, রামায়ণ এবং সংস্কৃত শ্লোক আবৃত্তি করানোর পরিকল্পনা রয়েছে। জানা গিয়েছে, সংবর্ধিনী ন্যাসের অন্তর্গত চিকিৎসক সদস্যরা নেতৃত্বে দেবেন এই প্রকল্পে। তাঁদের দাবি, সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত এই প্রকল্প। কেন?

সংগঠন এক সদস্য জানান, গর্ভে চার সপ্তাহ থাকার পর থেকেই ভ্রূণের কানে শোনার ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায়, এমনটাই দাবি করেন বিজ্ঞানীরা। ওই অবস্থা থেকেই যদি শিশুর পরিবারের কথা, পাশাপাশি ভারতের কথা, মহাপুরুষদের কথা, যে রাজ্যে জন্ম নেবে শিশু, তার কথা শোনানো যায়, তবে তা শিশুটির গড়ে ওঠায় কাজে আসবে। ‘সংবর্ধিনী ন্যাস’ জানিয়েছে, গোটা দেশে এই প্রকল্প ছড়িয়ে দেওয়া হবে। গোটা দেশকে পাঁচটি অঞ্চলে ভাগ করে কাজ করবে ১০ জন করে চিকিৎসকদের একটি দল। প্রকল্প রূপায়নে একেকজন চিকিৎসক ২০ জন অন্তঃসত্ত্বার দায়িত্ব নেবেন।

ভোট লুট ঠেকাতে নির্দেশিকা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের, কিন্তু মনোনয়ন ঘিরে অশান্তি কমবে কিসে?-আনন্দবাজার পত্রিকা

গত পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা ছাড়াও ভোট লুটের বিস্তর অভিযোগ উঠেছিল। এ বার সে ব্যাপারে প্রত্যেক জেলা প্রশাসনকে সতর্ক করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এ ব্যাপারে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং কমিশনারদের বিস্তারিত নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার নিয়েও রাজ্য পুলিশকে ১৬ দফা নির্দেশাবলি পাঠিয়েছে কমিশন। প্রসঙ্গত, গত বারের হিংসার নজির উল্লেখ করেই ইতিমধ্যে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়েছে। বিজেপি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আর্জি জানিয়েছে। আগামিকাল, সোমবার এ ব্যাপারে আদালতে রিপোর্ট দেবে কমিশন। এই পরিস্থিতিতে কমিশনের এই নির্দেশিকা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে পর্যবেক্ষক মহল।

ভোট নিয়ে শুক্রবার জেলা প্রশাসনগুলিকে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে কমিশন। তবে পর্যবেক্ষক মহলের একাংশের প্রশ্ন, শুধু ভোটের সময়ের কথাই মাথায় রেখে নির্দেশগুলি দেওয়া হয়েছে। অথচ মনোনয়ন পর্ব থেকেই যে ভাবে অশান্তি শুরু হয়েছে জেলায় জেলায়, তা মোকাবিলার আগাম ব্যবস্থা করা হয়নি কেন? 

গণশক্তি পত্রিকার সম্পাদকীয়র শিরোনাম এরকম-সুযোগ এসেছে চোর তাড়ানোর। এতে লেখা হয়েছে, অনেকগুলি গুরুতর প্রশ্ন, অস্বচ্ছতা, উদ্বেগ রেখে আচমকা ঘোষণা করা হলো রাজ্যের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন। নতুন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পদে নিযুক্ত হবার পর ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই এত বড় মাপের একটা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করা অর্থ গোটাটাই আগে থেকেই তৈরি করা ছিল। সর্বমোট ৭০ হাজার আসনের জন প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য প্রায় ৬২ হাজার ভোট কেন্দ্র ৫.৬৭ লক্ষ ভোটারের ভোট গ্রহণ করা মামুলি বিষয় নয়।

সরকার আগে থেকেই সবকিছু ঠিকঠাক করে রেখেছিল। নতুন কমিশনার এসে সেগুলি ঘোষণা করেছেন মাত্র। বহুদলীয় গণতন্ত্রে নির্বাচনে সরকার বা কমিশনের এক তরফা সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের দ্যোতক নয়। নির্বাচনটা যেভাবেই হোক শাসক দলকে জেতানোর জন্য নয়। নির্বাচন ভোটারদের মতদানের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া এবং সমস্ত রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে পরিপূর্ণ ভাবে যুক্ত হবার সুযোগ দেওয়া। 

নির্বাচনে আসল প্রস্তুতি সেটা যেখানে জনগণ, প্রশাসন, পুলিশ ও কমিশন পরস্পরের প্রতি আস্থাশীল থাকে। বাস্তবে সবসময় সার্বিক আস্থা তৈরি না হলেও কমিশনকে সেই চেষ্টা করতে হয়। এক্ষেত্রে নির্ঘণ্ট তৈরি বা প্রস্তুতি পর্ব সারার আগে সর্বদলীয় বৈঠক করে সকলের বক্তব্য শুনতে হয়।

এরাজ্যে তৃণমূলী গণতন্ত্রে সেসবের বালাই নেই। কোনও রকমে নমো নমো করে একটা ভোট করতে পারলেই হলো। তাতেই গণতন্ত্রের ধ্বজা উড়িয়ে দেওয়া যাবে। নির্বাচন শান্তিতে ও অবাধে করা যাবে কিনা, প্রত্যেক ভোটার নিজের ভোট নিজে দিতে পারবেন কিনা, প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইচ্ছুক প্রত্যেক নাগরিক কোনও রকম বাধা, হুমকি, ভীতি ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন কিনা, জয়ী হবার পর স্বাধীনভাবে সমর্থন বা বিরোধিতার অধিকার পাবেন কিনা ইত্যাদি বিষয়গুলি তৃণমূলের গণতন্ত্রের অভিধানে নেই। 

তৃণমূল চায় যেভাবেই হোক তাদের জিততে হবে। একজন বিরোধীকেও জেতার সুযোগ দেওয়া যাবে না। বিরোধী শূন্য পঞ্চায়েত তারা চায় বাধাহীন, প্রশ্নহীন লুটতরাজের জন্য। এরজন্য তারা অভিযান শুরু করে মনোনয়ন দাখিলের দিন থেকে। যেভাবেই হোক বিরোধীদের মনোনয়ন জমা আটকানো হবে। তারপর যারা মনোনয়ন জমা দেবে তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করাবে জোর করে। এভাবে তাদের লক্ষ্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বেশির ভাগ আসনে জয়ী হওয়া।

অতঃপর যেখানে ভোটারদের তাড়িয়ে নিজেরাই ছাপ্পা ভোট দিয়ে জিতবে। এই গোটা প্রক্রিয়ায় শাসক দলের সবচেয়ে সহায়কের ভূমিকা পালন করে প্রশাসন, পুলিশ এবং নির্বাচন কমিশন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এটাই ছিল নির্মম অভিজ্ঞতা। এবার হুবহু তার পুনরাবৃত্তি না হলেও নতুন কিছু কলাকৌশল নিশ্চয়ই প্রদর্শিত হবে। 

সেক্ষেত্রে অবশ্যই নির্বাচন কমিশন তাদের সহায় হবে। অন্তত সূচনাকাল দেখেই তা স্পষ্ট হয়ে যায়।

গত প্রায় এক বছর ধরে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে চর্চা চলছে। কিন্তু খোলসা করে সরকারি উদ্দেশ্য বা পরিকল্পনা কখনোই জানানো হয়নি। বোঝা যাচ্ছিল শাসকদলের প্রস্তুতি শেষ হলেই ভোট হবে। 

সেই প্রস্তুতির একটা অংশ ভাইপোর অভিজাত জেলা পরিক্রমা। কৌশলটা ছিল এমন ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা ও ধোঁয়াশা জাগিয়ে রেখে নিজেদের প্রস্তুতি সারা হবে। বিরোধীরা টের পাবার আগেই আচমকা ভোট ঘোষণা হবে যাতে বিরোধীরা প্রার্থী নির্বাচন, প্রয়োজনীয় নথি জোগাড়, একাধিক দলের মধ্যে আসন ভাগাভাগি করা সুযোগ না পায়। অর্থাৎ শাসক দলকে সবদিক থেকে অনেকটা এগিয়ে রেখে ঘোষণা হয়েছে নির্বাচন।

বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে যাতে নাজেহাল হয় তাই ঘোষণার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে শুরু করে দেওয়া হয়েছে মনোনয়ন জমার কাজ এবং ৭০ হাজার আসনের জন্য কয়েক লক্ষ প্রার্থীর মনোনয়ন জমার সময় বরাদ্দ হয়েছে ৬টি দিনে মোট ২৪ ঘণ্টা। সব ভোট কেন্দ্রে একজন পুলিশ দেবার মত পুলিশ রাজ্যের নেই। শেষে হয়ত আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সিভিক পুলিশরূপী শাসক দলের ক্যাডারদের ব্যবহার করা হবে।

যাইহোক শত শত অনিয়ম, অপকৌশল সত্ত্বেও নির্বাচন হচ্ছে এটাই বড়কথা। তৃণমূলের চরিত্র অনুযায়ী সন্ত্রাস করবে, গুণ্ডামী করবে, ভোটাধিকার কাড়বে, প্রশাসন, পুলিশ ও কমিশনকে নির্লজ্জভাবে ব্যবহার করবে। কিন্তু মানুষকে জোটবদ্ধ হয়ে সেসব আটকাতে হবে। মানুষের জোটই পারবে এই চোর-জোচ্চোরদের হটাতে।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ১১

ট্যাগ