কুরআনের আলো
সূরা আল-মুমতাহিনা: ৭-১৩ (পর্ব-২)
শ্রোতাবন্ধুরা, সালাম ও শুভেচ্ছা নিন। আশা করছি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আপনাদের হয়তো মনে আছে গত আসরে আমরা সূরা মুমতাহিনার ৬ নম্বর পর্যন্ত আয়াত নিয়ে আলোচনা করেছি। আজ আমরা এই সূরার ৭ থেকে ১৩ নম্বর পর্যন্ত আয়াতের সংক্ষিপ্ত তাফসির উপস্থাপন করব। প্রথমেই এই সূরার ৭ থেকে ৯ নম্বর পর্যন্ত আয়াতের তেলাওয়াত ও তর্জমা শোনা যাক:
عَسَى اللَّهُ أَنْ يَجْعَلَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ الَّذِينَ عَادَيْتُمْ مِنْهُمْ مَوَدَّةً وَاللَّهُ قَدِيرٌ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ (7) لَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَلَمْ يُخْرِجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ أَنْ تَبَرُّوهُمْ وَتُقْسِطُوا إِلَيْهِمْ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ (8) إِنَّمَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ قَاتَلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَأَخْرَجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ وَظَاهَرُوا عَلَى إِخْرَاجِكُمْ أَنْ تَوَلَّوْهُمْ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ (9)
“যাদের সাথে তোমাদের শত্রুতা ছিল, আশা করা যায় [মক্কা বিজয়ের সময় তাদের ইসলাম গ্রহণের মাধ্যমে] আল্লাহ তোমাদের ও তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি করে দেবেন। আর আল্লাহ সর্ব শক্তিমান এবং আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (৬০:৭)
“যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে স্বদেশ থেকে বহিস্কার করেনি তাদের প্রতি মহানুভবতা দেখাতে ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয় আল্লাহ্ ন্যায়পরায়ণদের ভালবাসেন।” (৬০:৮)
“আল্লাহ শুধু তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে স্বদেশ থেকে বের করে দিয়েছে এবং তোমাদেরকে বের করাতে সাহায্য করেছে। আর তাদের সাথে যারা বন্ধুত্ব করে তারাই তো যালিম।”(৬০:৯)
আগের আসরে আমরা সেইসব বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলেছিলাম যারা কুফর ও খোদাদ্রোহীতার কারণে শত্রুদের কাতারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। এরপর এই তিন আয়াতে যেসব মুসলমান মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করেছিলেন তাদের উদ্দেশ করে বলা হচ্ছে: আশা করা যায় মক্কায় তোমাদের যেসব কাফির আত্মীয়-স্বজন আছে তারা একদিন ইসলাম গ্রহণ করবে এবং তোমাদের বর্তমান সময়ের শত্রুতা সেদিন বন্ধুত্বে পরিণত হবে।
এখন এসব কাফিরের মধ্যে যারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা বা তাদের সেবা করার ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ নেই। নীতি-নৈতিকতার মানদণ্ড অনুযায়ী তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করা যায়। তবে এখানে খেয়াল রাখতে হবে তারা যেন তোমাদেরকে ঈমানের পথ থেকে বিচ্যুত করতে না পারে এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করার জন্য তোমাদের ঈমান যেন দুর্বল হয়ে না যায়।
এই তিন আয়াতের কয়েকটি শিক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে:
১- কারো সঙ্গে একজন মুসলমানের বন্ধুত্ব বা শত্রুতা হবে দ্বীনি শিক্ষা অনুযায়ী অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। যেসব অমুসলমান মুসলমানদের ক্ষতি করার চেষ্টা করেনি বা ষড়যন্ত্র করেনি তাদের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার করতে আল্লাহ তায়ালা নিষেধ করেননি। কিন্তু যেসব কাফির সারাক্ষণ মুসলমানদের ক্ষতি করার চেষ্টায় তৎপর তাদেরকে শত্রু গণ্য করতে হবে এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে।
২- কাফিররা শত্রুতা পরিহার করলে মুসলমানদের সঙ্গে তাদের অতীতের দুর্ব্যবহার ক্ষমা করে দেওয়া যেতে পারে।
৩- ইসলাম কল্যাণ ও ন্যায়পরায়নতার ধর্ম। এমনকি কাফিরের সঙ্গেও সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছে ইসলাম।
৪- দান করার সময় অসহায় কাফিরদের প্রতিও খেয়াল রাখতে হবে।
এবারে এই সূরার ১০ ও ১১ নম্বর আয়াতের তেলাওয়াত ও তর্জমা শোনা যাক:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا إِذَا جَاءَكُمُ الْمُؤْمِنَاتُ مُهَاجِرَاتٍ فَامْتَحِنُوهُنَّ اللَّهُ أَعْلَمُ بِإِيمَانِهِنَّ فَإِنْ عَلِمْتُمُوهُنَّ مُؤْمِنَاتٍ فَلَا تَرْجِعُوهُنَّ إِلَى الْكُفَّارِ لَا هُنَّ حِلٌّ لَهُمْ وَلَا هُمْ يَحِلُّونَ لَهُنَّ وَآَتُوهُمْ مَا أَنْفَقُوا وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ أَنْ تَنْكِحُوهُنَّ إِذَا آَتَيْتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ وَلَا تُمْسِكُوا بِعِصَمِ الْكَوَافِرِ وَاسْأَلُوا مَا أَنْفَقْتُمْ وَلْيَسْأَلُوا مَا أَنْفَقُوا ذَلِكُمْ حُكْمُ اللَّهِ يَحْكُمُ بَيْنَكُمْ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ (10) وَإِنْ فَاتَكُمْ شَيْءٌ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ إِلَى الْكُفَّارِ فَعَاقَبْتُمْ فَآَتُوا الَّذِينَ ذَهَبَتْ أَزْوَاجُهُمْ مِثْلَ مَا أَنْفَقُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي أَنْتُمْ بِهِ مُؤْمِنُونَ (11)
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কাছে [কাফির পুরুষদের কাছ থেকে তালাক গ্রহণকারী] মুমিন নারীরা হিজরত করে আসলে তোমরা তাদের [ঈমান] পরীক্ষা করে দেখো। আল্লাহ তাদের ঈমান সম্বন্ধে সম্যক অবগত। অতঃপর যদি তোমরা জানতে পার যে, তারা মুমিন নারী, তবে তাদেরকে কাফিরদের কাছে ফেরত পাঠিয়ে দিয়ে না। মুমিন নারীগণ কাফিরদের জন্য বৈধ নয় এবং কাফিরগণ মুমিন নারীদের জন্য বৈধ নয়।
কাফির স্বামীরা [মোহরানা হিসেবে] যা ব্যয় করেছে তা তাদেরকে ফিরিয়ে দিও। তারপর তোমরা তাদেরকে বিয়ে করলে তোমাদের কোন অপরাধ হবে না যদি তোমরা তাদেরকে তাদের মোহরানা দিয়ে দাও। আর তোমরা [আগে বিবাহ করা] কাফির নারীদের সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রেখো না। তোমরা [কাফিরদের কাছে আশ্রয় গ্রহণকারী তোমাদের স্ত্রীদের জন্য] যা ব্যয় করেছ তা [কাফিরদের কাছে] ফেরত চাইবে এবং কাফিররাও যা ব্যয় করেছে তা যেন তারা [তোমাদের কাছ থেকে] চেয়ে নেয়। এটাই আল্লাহর বিধান যা তিনি তোমাদের জন্য নির্ধারণ করে থাকেন। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।” (৬০:১০)
“আর তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যদি কেউ হাতছাড়া হয়ে কাফিরদের মধ্যে রয়ে যায় [এবং তোমরা কাফিরদের কাছ থেকে তোমাদের মোহরানার অর্থ আদায় করতে না পারো] তাহলে [যখনই] তোমরা যুদ্ধজয়ী হয়ে গনীমত লাভ কর, তখন যাদের স্ত্রীরা হাতছাড়া হয়ে গেছে তাদেরকে, তারা যা ব্যয় করেছে তার সমপরিমাণ [মোহরানা] প্রদান কর, আর যে আল্লাহর প্রতি তোমরা ঈমান এনেছো তাকে ভয় করো।”(৬০:১১)
আগের আয়াতগুলোতে অমুসলিমদের সঙ্গে মুসলিমদের সম্পর্কের পদ্ধতি বর্ণনা করার পর এই দুই আয়াতে স্বামী-স্ত্রীর যেকোনো একজন কাফের থাকলে করণীয় কি- সে সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। এখানে বলা হচ্ছে: যদি কোনো কাফির নারী ইসলাম গ্রহণ করে তোমাদের কাছে আশ্রয় চায় তাহলে তার ঈমান পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে পারলে তাকে আর কাফিরদের কাছে ফেরতে পাঠাবে না। এমন অবস্থায় ওই নওমুসলিম নারীর কাফির স্বামী যদি তার মোহরানা পরিশোধ করে থাকে তাহলে মুসলিম ভূখণ্ডের শাসক ওই নারীর পক্ষ থেকে তার কাফির স্বামীকে সেই মোহরানার অর্থ ফেরত দিয়ে দেবেন।
অপরদিকে কোনো মুসলিম পুরুষের স্ত্রী যদি ইসলাম গ্রহণ না করে কাফিরদের আশ্রয়ে চলে যায় তাহলে তার সঙ্গে মুসলিম পুরুষের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। এ অবস্থায় ওই নারীকে বিবাহকারী কাফির ব্যক্তি তার স্ত্রীর আগের মুসলিম স্বামীর মোহরানার অর্থ ফেরত দেবে। কিন্তু যদি সে তা না করে তাহলে কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থেকে লব্ধ গনিমতের মাল থেকে ওই মুসলিম স্বামীকে মোহরানার সমপরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হবে।
এই দুই আয়াতের শিক্ষণীয় দিকগুলো হলো:
১- নিজের জন্য ধর্ম বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামীর অনুগামী হতে বাধ্য নয়। স্ত্রী স্বাধীনভাবে নিজের ধর্ম বেছে নিতে পারবে।
২- স্বামী বা স্ত্রীর যেকোনো একজন যদি কাফির হয়ে যায় তাহলে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। কাফির স্ত্রী বা স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যাবে না। এক্ষেত্রে মুখে উচ্চারণ করে তালাক দেওয়ার কিংবা আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্রের কোনো প্রয়োজন হবে না।
৩- যখন কোনো কাফির নারী মুসলমান হওয়ার দাবি করবে তখন তার ঈমান আনার কারণ অনুসন্ধান করে দেখতে হবে। গুপ্তচরবৃত্তি করার জন্য বা আগের স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় কিংবা কোনো মুসলিম পুরুষের প্রেমে পড়ে মুসলমান হয়েছে কিনা সেটি পর্যালোচনা করে দেখতে হবে।
৪- আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে মুসলমান-কাফির নির্বিশেষে সবার অধিকার সমুন্নত রাখতে হবে। (তাওয়াশিহ)
এবারে সূরা মুমতাহিনার ১২ ও ১৩ নম্বর আয়াতের তেলাওয়াত ও তর্জমা শোনা যাক:
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا جَاءَكَ الْمُؤْمِنَاتُ يُبَايِعْنَكَ عَلَى أَنْ لَا يُشْرِكْنَ بِاللَّهِ شَيْئًا وَلَا يَسْرِقْنَ وَلَا يَزْنِينَ وَلَا يَقْتُلْنَ أَوْلَادَهُنَّ وَلَا يَأْتِينَ بِبُهْتَانٍ يَفْتَرِينَهُ بَيْنَ أَيْدِيهِنَّ وَأَرْجُلِهِنَّ وَلَا يَعْصِينَكَ فِي مَعْرُوفٍ فَبَايِعْهُنَّ وَاسْتَغْفِرْ لَهُنَّ اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ (12) يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا لَا تَتَوَلَّوْا قَوْمًا غَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ قَدْ يَئِسُوا مِنَ الْآَخِرَةِ كَمَا يَئِسَ الْكُفَّارُ مِنْ أَصْحَابِ الْقُبُورِ (13)
“হে নবী! মুমিন নারীগণ যখন আপনার কাছে এসে বাই’আত করে এ মর্মে যে, তারা আল্লাহর সাথে কোন শরীক স্থির করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, নিজেদের সন্তানদেরকে হত্যা করবে না ও তাদের গর্ভে থাকা [হারাম সন্তানকে] অপবাদ রচনা করে [স্বামীর ওপর] চাপিয়ে দেবে না এবং কোনো সৎকাজে আপনাকে অমান্য করবে না, তখন আপনি তাদের বাই’আত গ্ৰহণ করুন এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (৬০:১২)
“হে মুমিনগণ! আল্লাহ যে সম্প্রদায়ের প্রতি রুষ্ট তোমরা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করো না, তারা তো আখিরাত সম্পর্কে হতাশ হয়ে পড়েছে। যেমন হতাশ হয়েছে কাফিররা কবরবাসীদের [প্রত্যাবর্তনের] বিষয়ে।” (৬০:১৩)
আগের আয়াতগুলোতে মদীনায় হিজরত করে যাওয়া মুহাজির নারীদের অবস্থা বর্ণনা করার পর এই দুই আয়াতে সেইসব মুশরিক নারীর কথা বলা হয়েছে যারা মক্কা বিজয়ের পর মুসলমান হওয়ার দাবি করে রাসূলে খোদার হাতে বায়াত হতে চেয়েছে। এখানে নারীদের বায়াতের যেসব শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো পুরুষদের জন্যও প্রযোজ্য। তবে জাহিলিয়্যাতের যুগে এসব আচরণ নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যেত বলে এখানে তাদেরকে উদ্দেশ করে বিশেষভাবে বলা হয়েছে। তাদের এসব কুসংস্কারবাদী আচরণ সমাজ থেকে নির্মূল করাই ছিল আয়াতের অন্যতম উদ্দেশ্য।
স্বামীর সংসারের সম্পদ চুরি করে বাবার বাড়ি নিয়ে যাওয়া, স্বামীর অনুপস্থিতিতে অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গে ব্যাভিচারে লিপ্ত হওয়া, বৈধ বা অবৈধ নবজাতক বা ভ্রূণ হত্যা করা, অন্য পুরুষের ঔরষজাত সন্তানকে মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে স্বামীর নামে চালিয়ে দেওয়া- জাহিলিয়্যাতের যুগে প্রচলিত এসব অপরাধ থেকে নওমুসলিম নারীদের পবিত্র রাখার জন্য এই আয়াত নাজিল হয়েছে।
এই দুই আয়াতের শিক্ষণীয় বিষয়গুলো হলো:
১- নারী একটি স্বাধীন সত্ত্বা ও তার অধিকার ইসলামে স্বতন্ত্রভাবে স্বীকৃত। স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ভোগ করার অধিকার তার রয়েছে। সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে স্ত্রী তার স্বামীর মতাদর্শ গ্রহণ করতে বাধ্য নয় বরং নিজস্ব রুচি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। ইসলামের প্রাথমিক যুগে নারীরা সরাসরি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে কথা বলতেন এবং সেখানে স্বামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করারও অধিকার তাদের ছিল।
২- সমাজকে নৈতিক অধোঃপতন থেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে নারীদের চরিত্র সমুন্নত রাখার গুরুত্ব অপরিসীম। নারী যদি পর্দা রক্ষা করে চলে এবং পরপুরুষের সামনে নিজের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে তাহলে সমাজ থেকে বেশিরভাগ অবৈধ সম্পর্ক ও স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার অপরাধ বিলুপ্ত হবে। সেইসঙ্গে বল্গাহীন ও নৈতিক অধোঃপতনের কারণে সৃষ্ট সামাজিক দুর্গতিও লাঘব হবে।
তো শ্রোতাবন্ধুরা! এরইসঙ্গে শেষ করছি কুরআনের আলোর আজকের আয়োজন। আগামী আসরেও আপনাদের সঙ্গ পাওয়ার আশা রাখছি।
পার্সটুডে/এমএমআই/ বাবুল আখতার/ ১৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।