জুলাই ২৫, ২০২৩ ২০:২৯ Asia/Dhaka

কারবালায় ইমাম ইমাম হুসাইনের শাহাদাতের ঘটনা কোনো আকস্মিক ঘটনা ছিল না। ইমাম হুসাইন (আ) জেনেশুনেই ইয়াজিদের নেতৃত্ব মেনে নিতে অস্বীকার করেছিলেন।

কারণ একজন নিষ্পাপ ইমাম যাকে স্বয়ং মহানবী বেহেশতি যুবকের সর্দার বলে ঘোষণা দিয়ে গেছেন তিনি একজন প্রকাশ্য মদখোর, ব্যভিচারী, নিরপরাধ লোকদের হত্যাকারী ও রাষ্ট্রীয় বায়তুল মালের অর্থকে পারিবারিক সম্পদের মত ব্যবহারকারী বা রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটে অভ্যস্ত ব্যক্তিকে ইসলামী রাষ্ট্রের নেতা হিসেবে মেনে নিতে পারেন না। সাধারণ মানুষদের মৃত্যুর ভয় দেখালে বা সহায়-সম্পদের প্রলোভন দেখালে তারা পরাক্রমশালী কুফরি শক্তি বা খোদাদ্রোহী শক্তির সঙ্গে আপোষ করে চললেও নবী-রাসুল ও নিষ্পাপ ইমামদের কাতারের ব্যক্তিত্বরা কখনও এসব ক্ষেত্রে আপোষ করতে পারেন না। তাই দেখা যায় অনেক নবী-রাসুলও আপোষ না করার কারণে বিভ্রান্ত বা শয়তানের অনুসারী ব্যক্তিদের হাতে শহীদ হয়েছেন। হযরত ইয়াহিয়ার শাহাদাত এবং এমনকি হযরত ঈসার অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার ঘটনাও ছিল উম্মতের বিভ্রান্ত হওয়ার পরিণতি।

 নবী-রাসুল ও ইমামরা ইসলামের মূল ভিত্তি রক্ষার কাজে বা জনগণকে সুপথে আনার কাজে খোদাদ্রোহী শক্তি বা শাসকগোষ্ঠীর বাধার সম্মুখীন হলে কখনও ভড়কে যান না। মৃত্যুর ভয় তাদের কাছে হাস্যকর বিষয়। যদি তাঁদের মত মানুষ শাস্তি বা মৃত্যুর ভয়ে কাতর হন তাহলে একত্ববাদ বা ইসলাম প্রচারের নেতৃত্ব তাঁদের ওপর মহান আল্লাহ কখনও অর্পণই করতেন না। হযরত ইব্রাহিম কি নমরুদের বিশাল অগ্নিকুণ্ডকে বিন্দুমাত্র ভয় পেয়েছিলেন? হযরত মুসা কি ফেরাউনের দলবল ও নীল দরিয়ার কাছে বনি ইসরাইলকে ধরে ফেলতে ছুটে আসা ফেরাউনি সেনাদের দেখে ভয় পেয়েছিলেন বিন্দুমাত্র?! না, তাদের সামনে তখন সাগর বা দরিয়া ও পেছনে খুব কাছেই চলে এসেছিল ফেরাউনের বিশাল বাহিনী, তবুও মুসা নবী নিশ্চিত ছিলেন যে আল্লাহর সাহায্য আসবেই! মহানবী (সা) কি বদর, ওহুদ ও খন্দকসহ প্রায় ৮০টি যুদ্ধে কাফের সেনাদের হাতে কখনও পরাজয়ের ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়েছেন যদিও মাঝে মধ্যে ভয়াবহ বিপর্যয়ও নেমে এসেছিল? ইমাম হুসাইনের মত মহান ইমামদের কাছেও ভয়াবহ বিপদ ও মৃত্যুর নিশ্চিত আশঙ্কা কখনও মনের মধ্যে খোদায়ি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র দ্বিধা-দ্বন্দ্বও সৃষ্টি করেনি। তাঁরা হাসিমুখে খোদায়ি দায়িত্ব পালনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।

'বলদর্পীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধক্ষেত্র হতে ক্রীতদাসদের মত আমি পলায়ন করব না'

 

ইমাম হুসাইন (আ) ও তাঁর সঙ্গীরা বীরত্বের কারণে চির-জীবন্ত হয়ে আছেন। ইমাম হুসাইন পেয়েছেন শহীদদের সম্রাট বা নেতা হওয়ার উপাধি।  নবী-রাসুলদের মত ঐশী ইমামদেরও একটা রীতি হল তারা জনগণের ওপর জোর করে নিজেদের নেতৃত্ব চাপিয়ে দেন না। জনগণ যদি তাঁদের মেনে নিতে অস্বীকার করে তাহলে জনগণই দুর্ভোগের শিকার হয় এবং নবী-রাসুলদের অমান্যকারীদের বেলায় দেখা যায় যে অবাধ্য জাতি বা খোদাদ্রোহী জাতিগুলোর ওপর নেমে এসেছিল কঠোর খোদায়ি শাস্তি। যেমন, নুহ নবীর যুগের মহাপ্লাবন, বনি ইসরাইলের ওপর খোদায়ি শাস্তি! আদ ও সামুদ জাতির ধ্বংস হয়ে যাওয়া কিংবা লুতের জাতির ধ্বংস হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। কিন্তু মুসলমানদের শাসনামলে মুসলমানরা পুরোপুরি নির্মূল হয়ে যাওয়ার শাস্তি ভোগ করেননি মহানবীর প্রতি মহান আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহের সুবাদে। কিন্তু আংশিক শাস্তির বিষয়টি লক্ষণীয়। ওহুদের বিপর্যয় ছিল মহানবীর কথা না শোনার ফল। কারবালার ঘটনার পরও মক্কা ও মদিনায় গণহত্যা চালিয়েছিল ইয়াজিদের বাহিনী। মদিনায় তিন দিন ধরে চলেছিল গণ-ধর্ষণ! কাবাঘরও ধ্বংস করেছিল ইয়াজিদ বাহিনী।

স্পেনে মুসলমানদের বিপর্যয় ও ক্রুসেডের ধ্বংসযজ্ঞ এবং হালাকু খানের হামলাও যে মুসলমানদের অনৈক্য ও অবহেলার পরিণতি তা সুস্পষ্ট। হযরত আলী ও ইমাম হাসানের মত ঐশী নেতৃত্বকে যথাযোগ্য সহযোগিতা দিতে মুসলমানদের ব্যর্থতার কারণেই ইসলামের পরাজিত শক্তি তথা আবু সুফিয়ানের  উমাইয়া বংশ মুসলমানদের নেতৃত্ব দখল করতে সক্ষম হয়। মুসলমানদের অনৈক্য ও জিহাদি চেতনার অনুপস্থিতির কারণেই বসনিয়ায় মুসলমানদের ওপর চালানো হয়েছে নৃশংস গণহত্যা এবং ফিলিস্তিনি জাতিসহ অনেক মজলুম মুসলিম জাতির শোচনীয় অবস্থা ও কুরআন অবমাননার কারণ হচ্ছে শাহাদাতের সংস্কৃতিকে ভুলে যাওয়া। এই শাহাদাতের সংস্কৃতিকে অনন্য উচ্চতা দান করেছিলেন কারবালার বীর শহীদবৃন্দ ও নবী-পরিবারের সদস্যরা। তাইতো এতসব অবর্ণনীয় বিপদ ও নৃশংসতার মাঝেও পাহাড়ের মত অবিচল ধৈর্যের প্রতীক হযরত যাইনাব সা. বলেছিলেন, সৌন্দর্য ছাড়া কিছুই দেখিনি!

ইমাম হুসাইন (আ) তাঁর কিয়াম বা বিপ্লবের উদ্দেশ্য তুলে ধরে নানা স্থানে বক্তব্য রেখেছিলেন। কারবালায় পৌছার প্রাক্কালে জেনারেল হুরের বাহিনীর সামনে ইমাম আরও বলেছিলেন, জেনে রেখ যে, এই অত্যাচারীরা শয়তানের আনুগত্য করেছে এবং রহমানের তথা আল্লাহর আনুগত্যকে পরিত্যাগ করেছে। ফ্যাসাদের বিস্তার ঘটিয়েছে এবং শরয়ী বিধানের প্রয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে তথা তারা চোর ও মদ্যপায়ীদের উপর আল্লাহর বিধান কার্যকর করে না। মুসলমানদের প্রাপ্য সম্পদ এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ,যেগুলি মুসলমানদের প্রয়োজনে ব্যয় হওয়া উচিত ছিল, সেগুলিকে নিজেদের করে নিয়েছে। আল্লাহর কৃত হারামকে হালাল এবং হালালকে হারাম করেছে। এই অবস্থায়, আমিই সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি যার রুখে দাঁড়ানো উচিত, আর অবশ্যই আমি রুখে দাঁড়াব।”অর্থাৎ ইসলামের সেই মহাদুর্দিনে না হযরত আমীরুল মু’মিনীন আলী ছিলেন (আ.), না ফাতিমা যাহরা (আ.) ছিলেন আর না ইমাম হাসান (আ.) বেঁচে ছিলেন।

মহানবীর আহলে বাইতের (আ.) বিদ্যমান একক ব্যক্তিত্ব হিসেবে হুসাইন ইবনে আলী (আ.) যদি সেদিন রুখে না দাঁড়াতেন তবে তা হত তৎকালীন প্রশাসনের সমস্ত কাজকেই বৈধতা দান করা। এ কারণেই তিনি বলেছিলেন : “আমি সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি যার রুখে দাঁড়ানো উচিত। কারবালায় পৌঁছার পর ইমাম হুসাইনকে ইয়াজিদি বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয় : “আপনাকে অবশ্যই আমীরুল মু’মিনীন ইয়াজিদের প্রতি বাইআত করতে হবে !” তিনি উত্তরে বলেন :” “না, আল্লাহর কসম ! হীন লোকদের হস্ত অর্পণ করার মত আমি তাদের হাতে আমার হাত অর্পণ করব না এবং বলদর্পীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধক্ষেত্র হতে ক্রীতদাসদের মত আমি পলায়ন করব না।”

আশুরার রাতেও, তিনি তাঁর সঙ্গী সাথিদেরকে বলেন : “তোমাদের মাঝ হতে যারা যেতে চাও, চলে যাও !” যাতে এমনটি না হয় যে, তাদের মাঝে কেউ লজ্জার কারণে অথবা অসচেতন অবস্থায় থাকে। আশুরার রাতেও তিনি তাঁর তাঁবুর চারপাশে পরিখা খনন করেন এবং তার মাঝে আগুন জ্বালান, যাতে শত্রুবাহিনী হঠাৎ করে তাঁদের উপর হামলা করতে না পারে এবং ইমাম (আ.) কে কথা বলা ও তাদের যুক্তি পেশের সকল পথ বন্ধ করা থেকে বিরত রাখতে না পারে। সেই আশুরার রাতে, উমর ইবনে সা’দের কয়েকজন সৈন্য তাদের দল ছেড়ে সায়্যিদুশ্ শুহাদার (আ.) শিবিরে যোগ দেন। অর্থাৎ কথিত বাহ্যিক বিজয়ীদের শিবির থেকে নিশ্চিত মৃত্যুর শিবিরে যোগ দেন!

হায়! যদি ইমামের জন্য হাজার বার নিহত হতে পারতাম!

আজ মহান তাসুয়া বা আশুরার পূর্ব দিন।  ৬১ হিজরির নয়ই মহররম কুফায় ইয়াজিদের নিযুক্ত কুখ্যাত গভর্নর ইবনে জিয়াদ  ইমাম হুসাইন (আ.)’র ছোট্ট শিবিরের ওপর অবরোধ জোরদারের ও হামলার নির্দেশ দেয়। এর আগেই আরোপ করা হয়েছিল অমানবিক পানি-অবরোধ। পশু-পাখী ও অন্য সবার জন্য ফোরাতের পানি ব্যবহার বৈধ হলেও এ অবরোধের কারণে কেবল নবী-পরিবারের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় এই নদীর পানি। ইয়াজিদ বাহিনীর সেনা সংখ্যাও ক্রমেই বাড়তে থাকে এবং দশই মহররমের দিনে তা প্রায় বিশ বা ত্রিশ হাজারে উন্নীত হয়।ইমাম হুসাইন (আ.) নয়ই মহররমের বিকালের দিকে এক দিনের জন্য যুদ্ধ পিছিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দেন যাতে দশই মহররমের রাতটি শেষবারের মত ইবাদত বন্দেগিতে কাটানো যায়। ইয়াজিদ বাহিনীর প্রধান প্রথমে রাজি না হলেও পরে এ প্রস্তাবে রাজি হয়। বিকালেই হযরত ইমাম হুসাইন (আ.) নিজ  সঙ্গীদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দেন। সঙ্গীরা আবারও তাঁর প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকার করেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলেছিলেন, হায় যদি ইমামের জন্য হাজার বার নিহত হতে পারতাম!

পরের দিন তাঁদের কেউ কেউ ইমামের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে তীরের আঘাত পেতে পেতে শহীদ হয়েছেন যাতে ইমাম জোহরের নামাজ আদায় করতে পারেন! ইমামের দুই কিশোর ইয়াতিম ভাতিজাও এই মহান জিহাদে শহীদ হয়েছেন যাদের একজন ছিলেন প্রায় ১৩ বছরের কাসেম ইবনে হাসান (র.) ও প্রায় দশ এগারো বছর বয়সের আবদুল্লাহ ইবনে হাসান (র.)। কাসেম বলেছিলেন, সত্যের পথে শাহাদাত তাঁর কাছে মধুর চেয়েও মিষ্টি! শহীদ হয়েছেন ইমামের ৬ মাসের শিশুও!   ইমাম হুসাইন (আ) এবং তার মহান সঙ্গীরা মানুষ ও মানবতার জন্যে নিজেদের কুরবানি করেছেন। একত্ববাদ,ন্যায়পরায়ণতা এবং মনুষ্যত্বের শ্রেষ্ঠত্ব রক্ষায় নিজেদেরকে বিলিয়ে দিয়েছেন। আর এ কারণেই সব মানুষই তাঁদেরকে ভালবাসে,তাঁদেরকে শ্রদ্ধা করে। যখন কোনো মানুষ এমন একজনকে দেখে যার নিজের জন্যে কিছুই নেই,মান-সম্মান,মর্যাদা,মানবতা যা আছে তা সবই অন্যের জন্যে -তখন সে নিজেকে ঐ ব্যক্তির সাথে একাত্ম করে নেয়। ইমাম হুসাইন কখনো অপমানের কাছে আত্মসমর্পণ করতে চাননি। মনুষ্যত্বের মাহাত্ম্য ও মর্যাদাকেই তিনি অক্ষুণ্ণ রাখতে চেয়েছেন।

পশ্চিমারা ও তাদের অন্ধ অনুসারী কথিত আধুনিকতাবাদীরা বলে ইসলাম ভাগ্য-নির্ভর ধর্ম। কিন্তু কুরআন বলে, ‘‘ আল্লাহ কোনো জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ না তারা নিজ থেকেই তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে অগ্রসর হয়।’’  ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের জন্য এর চেয়ে বেশী স্বাধীনতা,কর্তৃত্ব আর কি হতে পারে? মুসলমানদের মধ্যেও যারা সবকিছু আল্লাহ করবে এই আশায় হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকে,এই আয়াতের চপেটাঘাত তাদের মুখেও লাগে। আরেকটি আয়াতে পবিত্র কুরআন একটা কলুষিত জাতির পরিণতি তুলে ধরে বলছে: আল্লাহ কোনো জাতির জন্যে যে নেয়ামত দান করেছেন তা তিনি ফিরিয়ে নেন না যতক্ষণ তারা নিজেরাই তা বর্জন করে।’’ ( আনফালঃ ৫৩ )

যদি অন্যের ওপর ভরসা করে নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে থাকলে সমস্যার সমাধান হতো তাহলে ঐ পরিস্থিতিতে হযরত ইমাম হুসাইনও (আ.) সবার আগে তাই করতেন। কিন্তু কেন তা তিনি করেননি? কারণ তিনি নিজেই নিজ জাতির তথা নানার উম্মতের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। তিনি সমাজকে কলূষমুক্ত করতে চেয়েছিলেন যে কলুষতা বজায় থাকলে সবাইকে একই পরিণতি ভোগ করতে হবে।ইসলাম বলেছে: কেউ মারা গেলে তার জানাযায় শরীক হও,কুরআনখানিতে অংশ নাও। সবাই এসব কাজ করেও থাকে। কিন্তু ইসলাম সবসময় এ ধরনের সাধারণ কাজ চায় না। কখনো কখনো ইমাম হুসাইনের (আ.) মত পদক্ষেপ নিতে হয়,বিদ্রোহ করতে হয়। এমন কিছু করতে হয় যা কেবল ঐ সময়ের মুসলিম সমাজকেই ঝাঁকুনি দেবে না,বরং এক বছর পর তা এক রকমভাবে,পাঁচ বছর পর আরেক রকমভাবে আত্মপ্রকাশ করবে। এমন কি ৫০ বছর-১০০ বছর,শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তা সত্যের পথে সংগ্রামকারীদের জন্যে এক আদর্শ হিসেবেই চিরজাগরুক থাকবে। আর এটিই হলো নিজেদের ভাগ্যে নিজেরাই পরিবর্তন আনা। সবাইকে অশেষ শোক ও সমবেদনা জানিয়ে শেষ করছি আজকের এ অলোচনা। #

পার্সটুডে/এমএএইচ/২৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ