আগস্ট ০৮, ২০২৩ ১৫:০৪ Asia/Dhaka

শ্রোতা বন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক প্রীতি আর শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি চিঠিপত্রের জবারের আসর 'প্রিয়জন'। আজকের আসর উপস্থাপনায় রয়েছি যথারীতি আমরা তিনজন। আমি গাজী আব্দুর রশীদ, আমি আকতার জাহান এবং আমি আশরাফুর রহমান।

আশরাফুর রহমান: প্রত্যেক আসরের মতো আজও অনুষ্ঠানের শুরুতেই আমি একটি হাদিস শোনাতে চাই। বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন : যখন আল্লাহ্ কোনো উম্মতের ওপর ক্রুদ্ধ হন এবং তাদের ওপর শাস্তি নাজিল করেন, তখন তাদের দ্রব্যমূল্য বেড়ে যায়, তাদের আয়ু কমে যায়, তাদের ব্যবসায় লাভ হয় না, তাদের ফলমূল ভালো হয় না, তাদের নদী-নালাগুলো পানিতে পূর্ণ থাকে না, তাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষিত হয় না এবং তাদের দুষ্টরা তাদের ওপর কর্তৃত্বশীল হয়।

আকতার জাহান: আমরা এমন কিছু করব না যাতে আল্লাহ ক্রুব্ধ হন বরং সর্বদা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করব-এ কামনা করে নজর দিচ্ছি ইমেইলের দিকে। আজকের আসরে আমরা শ্রোতাদের চিঠির পাশাপাশি আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব বাংলাদেশ'-এর দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায়    অংশগ্রহণকারী কয়েকজন প্রতিযোগীর লেখা পড়ে শোনাব। প্রথম লেখাটি বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার সেতু রেডিও ফ্যান ক্লাবের সভাপতি সুলতান মাহমুদ সরকারের। তার লেখার কিছু অংশ তুলে ধরছি। তিনি লিখেছেন,

গাজী আব্দুর রশীদ: “আমি ১৯৯০ সালে ৯ম শ্রেণীর ছাত্র। তখন থেকেই রেডিও শোনা আমার শখ। রেডিও শোনা, রেডিওতে চিঠি লিখা, চিঠি লেখার পর তাঁদের কাছ থেকে তার উত্তর পাওয়া- সবমিলিয়ে রেডিওকে আমি তখন থেকে বন্ধু বানিয়ে ফেলেছি। একটি রেডিও থাকলে, একটি একটি নির্দিষ্ট বেতারের সাথে সম্পৃক্ত না থাকলেও- কিছু বেতার আছে, যা মনের গহীনে স্থান করে নিতে পারে। সেরকম একটি বেতার, রেডিও তেহরান। রেডিও তেহরানে বাংলা অনুষ্ঠান আমার মনে তখন থেকেই চিরস্থায়ী ভাবে স্থান করে নিয়েছে।”

আশরাফুর রহমান: রেডিও তেহরানের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সুলতান মাহমুদ ভাই লিখেছেন, “সারাদিনের কর্মক্লান্তির পরে একটু প্রশান্তির পরশ পেতে যোগ দিই রেডিও তেহরানের সাথে। যেখানে থাকে পাই ইসলামী জ্ঞান ও বিনোদনের এক অন্য রকম পরশ। পশ্চিমা প্রচার মাধ্যম যখন ইসলামের বিরুদ্ধে তথ্য সন্ত্রাসের মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করছে তখন কেবল মাত্র রেডিও তেহরানই সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে আমাদের অন্ধকারে আলোকবর্তিকা হয়ে আলো দেখিয়ে যাচ্ছে। সারা বিশ্বের মজলুম মুসলিমদের প্রকৃত অবস্থা সারা বিশ্বের মানুষের কাছে তুলে ধরে এক অনন্য দৃষ্ঠান্ত উপস্থাপন করেছে।”

আকতার জাহান: রেডিও তেহরানের ভূমিকা সম্পর্কে চমৎকার লেখাটির জন্য  সুলতান মাহমুদ সরকার ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি মাঝেমধ্যে আপনার লেখা পাব।

বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার আলী সাহারদির উৎস ডিএক্স কর্ণারের প্রেসিডেন্ট এইচ এম তারেক পাঠিয়েছেন পরের লেখাটি।

তিনি লিখেছেন, মনে পড়ে সেই সোনালি অতীতের কথা। সালটা ছিল ১৯৯২। আমি তখন ডিগ্রি ক্লাসের ছাত্র। পত্রমিতালী গাইড থেকে ঠিকানা নিয়ে রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগে চিঠি পাঠালাম ঢাকার পোস্ট বক্স-এর ঠিকানায়। প্রায় এক মাস পর ডাকপিয়ন একটি বড় হলুদ খাম নিয়ে আমার বাড়িতে হাজির। খুলে দেখি তার মধ্যে রয়েছে অনুষ্ঠানসূচি,স্টিকার ও ইংরেজি জমজম ম্যাগাজিন। সেই থেকে যাত্রা শুরু। রেডিও তেহরানের সাথে পরিচয়ের ১০ বছর পর অর্থাৎ ২০০৩ সালে আমি বিয়ে করি। তখন রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগ আমাকে ‘সুখী পরিবার’ নামে একটি বই পাঠায়। যা আমার সুখী সংসার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এজন্য রেডিও তেহরানের নিকট আমি চিরকৃতজ্ঞ।” 

গাজী আব্দুর রশীদ: রেডিও তেহরানকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে এইচ এম তারেক ভাই লিখেছেন, রেডিও তেহরান হলো বহুমাত্রিক জ্ঞানের ভাণ্ডার। জীবনকে সুন্দরভাবে সাজাতে এটি এক অপরিহার্য গণমাধ্যম। আমার মতে, রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগের অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে রংধনু হল-সবচেয়ে সেরা। অনুষ্ঠানটি ছোটদের জন্য প্রচার হলেও সব বয়সের শ্রোতাদের উপযোগী। এতে প্রচারিত গল্প ও বিষয়গুলো খুবই বাস্তবধর্মী ও শিক্ষণীয়-যা মানুষকে মানবিক উন্নয়নে যথাযথ ভূমিকা রাখবে।”

আশরাফুর রহমান: রেডিও তেহরানের সঙ্গে পরিচয়, ব্যক্তিজীবনে রেডিও তেহরানের প্রভাব ও অনুষ্ঠান সম্পর্কে মতামত জানানোর জন্য এইচ এম তারেক ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব বাংলাদেশ আয়োজিত প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় পরের লেখাটি জয়ন্ত চক্রবর্তীর। এটি ‌এসেছে ভারতের নয়াদিল্লির সিদ্ধার্থ এক্সটেনশন রোড থেকে।

তিনি লিখেছেন, “রেডিও তেহরান আমার ও আমার পরিবারের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ কারণ নবী মুহাম্মদ সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞানার্জন এবং বিস্ময়কর দেশ ইরান ও তার জনগণ সম্পর্কে জানা আর কোনো মিডিয়ায় বিরল। ইরানের সংস্কৃতি,সমাজ ও রাজনীতির প্রকৃত চিত্র বহির্বিশ্বের কাছে নিরপেক্ষভাবে তুলে ধরে রেডিও তেহরান। রেডিও তেহরান শুধুমাত্র একটি গতিশীল দেশের কণ্ঠস্বর নয়,এটি পশ্চিম এশিয়ার জ্ঞানের জানালা। এটি আমার বিনোদন, সংবাদ এবং পর্যালোচনার জগত। রেডিও তেহরান এক গর্বিত জাতির জীবন্ত প্রতীক। এক আকর্ষণীয় দেশের স্পন্দন যা শ্রোতারা অনুভব করতে পারে। রেডিও তেহরান বিশ্ব শান্তি,সম্প্রীতি, অগ্রগতি ও নিপীড়িতদের বলিষ্ঠ সমর্থক, যা সত্যিই প্রশংসনীয়।”

আকতার জাহান: সিনিয়র শ্রোতা জয়ন্ত চক্রবর্তীকে অসংখ্য ধন্যবাদ, রেডিও তেহরান সম্পর্কে সুন্দর প্রবন্ধটির জন্য।

‘কিছু কথা, কিছু স্মৃতি’ শিরোনামের প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় পরের লেখাটি পাঠিয়েছেন বাংলাদেশের বরিশাল সদরের কাশিপুর থেকে জিল্লুর রহমান জিল্লু। তিনি তৃণমূল বেতারশ্রোতা তথ্য ক্লাবের সভাপতি।

তিনি লিখেছেন, “ইসলামের ঐতিহ্য রক্ষার ধারক ও বাহক হিসেবে এশিয়া মহাদেশের মধ্যে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের রয়েছে সুদৃঢ় অবস্থান। গণমাধ্যম জগতেও ইরান বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। গণমাধ্যম জগতে সাহসী কণ্ঠযোদ্ধা হিসেবে যতগুলো প্রতিষ্ঠান আছে তার মধ্যে শ্রোতানন্দিত উল্লেখ্যযোগ্য গণমাধ্যম ‘রেডিও তেহরান’। সংবাদের পাশাপাশি ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাংস্কৃতির বিভিন্ন পর্ব রয়েছে এখানে। আজকের শিশু আগামীর কর্ণধার। সেই শিশুদের জন্য রেডিও তেহরানে আছে নৈতিক ও শিক্ষামূলক বিনোদন পর্ব রংধনু।”

গাজী আব্দুর রশীদ: রেডিও তেহরান সম্পর্কে চমৎকার কিছু কথা লেখার জন্য জিল্লুর রহমান জিল্লু ভাইকে ধন্যবাদ।

শ্রোতাবন্ধুরা, অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে আমরা রেডিও তেহরানের অনলাইন সংস্করণ পার্সটুডে সম্পর্কে সরাসরি মতামত জানব আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব কিশোরগঞ্জের সভাপতি মোঃ শাহাদত হোসেনের কাছ থেকে।

আশরাফুর রহমান: পার্সটুডে সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ মতামতের জন্য শাহাদত ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার অনুরোধের বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করব ইনশাআল্লাহ।

পার্সটুডে সম্পর্কে আরেকটি মতামত এসেছে বাংলাদেশের জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ থানার উত্তর কালিকাপুর থেকে। আর পাঠিয়েছেন জি. মোস্তফা।

তিনি লিখেছেন, "রেডিও তেহরান পৃথিবীর দেশে দেশে সত্য ও সৌন্দর্যের বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে। এ বেতারের ওয়েবসাইট পার্সটুডে সংবাদ প্রতিদিনই পড়ি। মধ্যপ্রাচ্যের টালমাটাল পরিস্থিতি, তেল রাজনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে সজাগ থাকতে হলে পার্সটুডের জুড়ি নেই। পশ্চিমা বিশ্ব মুসলিম বিশ্বের ওপর কীভাবে আগ্রাসন চালাচ্ছে সেগুলো জানতে হলেও আপনাকে পার্সটুডে ও রেডিও তেহরানে নজর রাখতে হবে। পার্সটুডে সাইটে ধারাবাহিকভাবে কোরআনের আয়াত, অর্থ ও তাফসির উপস্থাপন করা হয়। এসব বিষয় থেকে আমি ব্যক্তিগতভাবে উপকৃত হয়েছি।"

আকতার জাহান: ভাই জি. মোস্তফা, পার্সটুডে থেকে উপকৃত হচ্ছেন জেনে ভালো লাগল। আশা করি আবারো লিখবেন।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার চাপড়া থানার গোংড়া গ্রাম থেকে আলমিন সেখ হিরামন পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।

তিনি লিখেছেন, রেডিও তেহরান বাংলা না শুনলে অনেক অজানা তথ্য অজানাই থেকে যেত। এর আগে আমার কাছে বেতার মানে ছিল গান-বাজনা, সাহিত্য-সংস্কৃতি ইত্যাদি। কিন্তু রেডিও তেহরান আমার ধারণা বদলে দিয়েছে। এখানে শিক্ষা-সংস্কৃতিসহ সবকিছুই পাওয়া যায়। 

চিঠির শেষাংশে তিনি বর্ষা মৌসুমে নানান রোগব্যাধি নিয়ে স্বাস্থ্যকথা অনুষ্ঠানে আলোচনা শুনতে চেয়েছেন।

গাজী আব্দুর রশীদ: বর্ষাকালীন রোগব্যাধি নিয়ে স্বাস্থ্যকথা অনুষ্ঠানে আলোচনার প্রস্তাবটি আমাদের বিবেচনায় থাকল। সুন্দর মতামতের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সাভারে নামাগেন্ডা থেকে মো. হাবিবুর রহমান পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।

তিনি লিখেছেন, "আমি অনলাইনে রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠান শুনি। শুরুতে পবিত্র কুরআন তেলওয়াত ও তার বাংলা তর্জমা আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। রেডিও তেহরানের অন্য অনুষ্ঠানগুলোও খুব ভালো লাগে।"

আশরাফুর রহমান: অনলাইনে রেডিও তেহরান শোনার জন্য হাবিবুর রহমান ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আজকের আসরের শেষ মেইলটি এসেছে বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী থানার চরঝাকালিয়া থেকে। আর পাঠিয়েছেন মিয়া মোহাম্মদ ছিদ্দিক। 

তিনি লিখেছেন, "রেডিও তেহরানের প্রচারিত প্রতিটি অনুষ্ঠানই তথ্যবহুল, গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষণীয়। তবে চিঠিপত্রের আসর প্রিয়জন আমার ক্লাবের সকলের মন কেড়েছে। কারণ প্রিয়জনে শ্রোতাদের নিপুণ হাতের চিঠি ও সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানটিকে আকর্ষণীয় করে তোলে। ১২ জুন আমার একটি সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়। এজন্য রেডিও তেহরানের পরিচালক, সকল কলাকুশলী ও উপস্থাপককে জানাই অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা।" 

আকতার জাহান: প্রিয়জন সম্পর্কে মতামত জানানোর জন্য মিয়া মোহাম্মদ ছিদ্দিক ভাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

তো শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের আসরটিও শেষ করব একটি গান শুনিয়ে। মুখোশ শিরোনামের গানটির কথা লিখেছেন হোসাইন নূর, সূর করেছেন আহমদ আব্দুল্লাহ আর গেয়েছেন কণ্ঠশিল্পী: ইকবাল এইচ জে।

গাজী আব্দুর রশীদ: শ্রোতাবন্ধুরা, গানটি শুনতে থাকুন আর আমরা বিদায় নিই প্রিয়জনের আজকের আসর থেকে।  

 

ট্যাগ