নভেম্বর ১৪, ২০২৩ ১৮:১৪ Asia/Dhaka

শ্রোতাবন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক প্রীতি আর শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি চিঠিপত্রের আসর প্রিয়জন। আজকের আসর উপস্থাপনায় রয়েছি আমি নাসির মাহমুদ, আমি আকতার জাহান এবং আমি আশরাফুর রহমান।

আশরাফুর রহমান: বন্ধুরা, আসরের শুরুতেই আমি একটি বাণী শোনাতে চাই। ইমাম হাদী (আ.) বলেছেন, "পৃথিবীতে মানুষকে সম্মান করা হয় সম্পদের মালিক হওয়ার কারণে এবং পরকালে সম্মান করা হয় ন্যায়নিষ্ঠ কাজ বা আমলের কারণে।"

আকতার জাহান: আমরা সবাই পরকালীন সম্মান লাগের জন্য ভালো কাজ করার চেষ্টা করব- এ কামনায় নজর দিচ্ছি চিঠিপত্রের দিকে।

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার গেন্ডারিয়া থেকে ব্যাংক কর্মকর্তা ও লেখক মো. জিল্লুর রহমান পাঠিয়েছেন আসরের প্রথম মেইলটি।

রেডিও তেহরানের সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান রংধনু আসর সম্পর্কে তিনি লিখেছেন, "রংধনু আসর শুধু শিশু-কিশোরদের কাছেই জনপ্রিয় নয়, বয়স্করাও এ অনুষ্ঠান থেকে অনেক মূল্যবান তথ্য জানতে ও শিখতে পারে। ২ নভেম্বর তারিখে প্রচারিত অনুষ্ঠানে হযরত ফাতেমা (সা. আ.)-এর একজন অভাবগ্রস্ত ভিক্ষুককে গলার হার দান করার বাস্তব কাহিনীটি শুনলাম। অনুষ্ঠানে বিষয়টি অত্যন্ত চমৎকারভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে হযরত ফাতেমার দানশীলতার দৃষ্টান্ত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার তৌফিক দান করুন। আমিন।"

নাসির মাহমুদ: একই অনুষ্ঠান সম্পর্কে কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহাদত হোসেন পাঠিয়েছেন একটি মেইল। তিনি লিখেছেন, "২ নভেম্বর তারিখে প্রচারিত রংধনু আসরে প্রথমেই দানশীলতা সম্পর্কে কিছু কথা বলা হয়। অতঃপর নবীনন্দিনী হযরত ফাতেমা (সা. আ.)-এর দানশীলতা সম্পর্কে একটি সত্য ঘটনার বিবরণ দেয়া হয়। কাহিনীটি শুনতে শুনতে মন কখনো আনন্দে ভরে উঠছিল, কখনো চোখ ভিজে যাচ্ছিল। দানশীলতার এমন দৃষ্টান্ত জগতে বিরল। আমরা যেন তা থেকে সামান্য হলেও অনুপ্রাণিত হতে পারি সে কামনাই করি।"

আশরাফুর রহমান: ভাই জিল্লুর রহমান ও শাহাদত হোসেন, আপনাদের চিঠি পড়ে মনে হলো- আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। তো, রংধনু আসর সম্পর্কে ভালোলাগার অনুভূতি জানিয়ে ইমেইল করায় আপনাদের দু'জনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আসরের পরের মেইলটি এসেছে ভারতের অসমের কোকরাঝাড় জেলার কাজিগাঁও থানার দলগাঁও থেকে। আর পাঠিয়েছেন ওসমান গনি।

তিনি লিখেছেন, "৪ নভেম্বর রাতে প্রচারিত অনুষ্ঠান আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। অর্থসহ কোরআন থেকে তেলাওয়াত শুনে আমার মন ও প্রাণ জুড়িয়ে গেল। বিশ্বসংবাদ আমার বরাবরই খুব প্রিয়। কারণ আমার জ্ঞানের পরিধি এখান থেকেই দিন দিন বৃদ্ধি হচ্ছে নানা দেশের খবরের মাধ্যমে। দৃষ্টিপাত ও কথাবার্তা অনুষ্ঠানও আমার খুব ভালো লাগে। এক কথায়- রেডিও তেহরানের প্রতিটি আয়োজনই আমার কাছে এক একটি করে জ্ঞানের ভাণ্ডার।"  

আকতার জাহান: রেডিও তেহরানের বিভিন্ন আয়োজন সম্পর্কে চমৎকার মূল্যায়নের জন্য ভাই ওসমান গনি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

চট্রগ্রাম থেকে অভিযাত্রী পত্রিকার সম্পাদক ও মানবাধিকারকর্মী এম. এইচ সোহেল পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি। এতে তিনি ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিভিন্ন দেশের ভূমিকার কথা তুলে ধরতে গিয়ে লিখেছেন, “ইহুদিবাদী ইসরাইল গাজার হাসপাতাল, স্কুল ও শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়ে শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ংকর মানবতাবিরোধী অপরাধ করে যাচ্ছে। সমস্ত মুসলিমবিশ্ব ফিলিস্তিনের প্রতি সহানুভূতি দেখাচ্ছে, বিবৃতি দিচ্ছে, ভালোবাসা প্রকাশ করছে। কিন্তু ইরান ও তার মিত্ররা ছাড়া সরাসরি সামরিক সহযোগিতা আর কেউ করছে না। ইরানের মত যদি মিশর, তুরস্ক, সৌদি আরব একই ধরনের ভূমিকা রাখতো পরিস্থিতি ভিন্নরকম হতো।”

নাসির মাহমুদ: একদম ঠিক বলেছেন সোহেল ভাই। আপনার মন্তব্য শুনে আমার মনে পড়ে গেল ইরানের ইসলামি বিপ্লবের নেতা মরহুম ইমাম খোমেনীর একটি ঐতিহাসিক বক্তব্য। তিনি বলেছিলেন, “বিশ্বের মুসলমানরা যদি ঐক্যবদ্ধ হতো এবং প্রত্যেকে এক বালতি করে পানি ঢালতো তাহলে ইহুদিবাদী ইসরাইল সেই পানির তোড়ে ভেসে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতো।”

আশরাফুর রহমান: মুসলিম শাসকরা যদি এখনও ঐক্যবদ্ধ হতে পারেন তাহলে ফিলিস্তিনের বুকে উড়ে এসে জুড়ে বসা ‘ইসরাইল’ নামক কোনো রাষ্ট্রের অস্তিত্ব থাকার কথা নয়। মুসলিম শাসকরা ঐক্যবদ্ধভাবে সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন- আমরা এ প্রত্যাশাই করছি। 

আসরের পরের মেইলটি এসেছে বাংলাদেশের বরিশালের কাশিপুর থেকে। আর পাঠিয়েছেন জিল্লুর রহমান জিল্লু। ফিলিস্তিনের নিরীহ জনগণের উপর নির্বিচার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি একটি কবিতা লিখেছেন। ‘ঐক্য গড়ি’ শিরোনামের কবিতাটির কিছু অংশ এরকম:

আকতার জাহান:

মুসলিম জাতি ঐক্য গড়ি

রক্ষা করি আল্ আকসা 

ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াই

পিছপা হব না সহসা।

শিয়া-সুন্নী মাজহাব ভুলে

এক কাতারে হই সামিল 

মুমিন মুসলিম ভাই-ভাই 

গড়ে তুলি দ্বীনের মিল।

নিজে বাঁচি ভাইকে বাঁচাই

ঈমানে দেই শান

বিশ্বজুড়ে জেগে ওঠো

সকল মুসলমান। 

নাসির মাহমুদ: গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সময়োপযোগী কবিতাটির জন্য জিল্লুর রহমান জিল্লু ভাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আসরের পরের মেইলটি এসেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা থেকে। আর পাঠিয়েছেন মহম্মদ ঘোরী শাহ।

তিনি লিখেছেন, "আজকের চিঠিটা অন্যদিনের মত হবে না, আজকের চিঠি যেন রক্তমাখা, বেদনার কলরোল মুর্ছিত, স্বজাতির বেঘোর ঘুমের সমালোচনা এবং পশুদের পৈশাচিকতা নিয়ে। ইসলামে সৌভ্রাতৃত্ববোধ একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আমার প্রশ্ন আর কত প্রাণের বিনিময়ে ফিলিস্তিনি ভাই-বোনেরা মুসলিমবিশ্বের সৌভ্রাতৃত্ববোধ ও সহমর্মিতা আদায় করতে পারবে? মুসলিম বিশ্ব কেন এত ভীত এবং সন্ত্রস্ত?"

'ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের স্বাধীনতা ও দেশভক্তির প্রত্যয় মধ্যপ্রাচ্যের জনমানসকে উদ্বুদ্ধ করুক, ভেঙে ফেলুক সাম্রাজ্যবাদীদের চক্রব্যূহ' এই কামনা করে লেখাটি শেষ করেছেন তিনি।

আশরাফুর রহমান:  ভাই মহম্মদ ঘোরী শাহ, সমসাময়িক বিষয়ে লেখাটির জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শ্রোতাবন্ধুরা, অনুষ্ঠানে এ পর্যায়ে আমরা কথা বলব বাংলাদেশি এক শ্রোতাবোনের সঙ্গে।  

নাসির মাহমুদ: ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট থেকে বিধান চন্দ্র সান্যাল পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি। তিনি লিখেছেন, "রেডিও তেহরান আমার পরম বন্ধু। শৈশবকাল থেকেই কখনোবা বিনোদন কখনোবা শিক্ষা লাভের প্রথাগত প্রিয় মাধ্যম হিসেবে আমার সঙ্গী হয়ে ওঠে। কখনো জ্ঞাতসারে বা কখনো অজ্ঞাতসারে আমার দৃষ্টিশক্তিকে প্রসারিত করে, অনুভবের পরিধিকে ব্যাপ্ত করে।  ছোটবেলা থেকে আমি নানান বেতারের সংস্পর্শে এসেছি। এগুলির মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় বেতারের তালিকাটি কিছুটা দীর্ঘ হলেও তার মধ্যে যে বেতারটি বার বার আমার মন কেড়ে নেয় এবং যা আমার মনে আনন্দ যোগায় সেটি হল রেডিও তেহরান।"

আশরাফুর রহমান: রেডিও তেহরান থেকে চমৎকার মূল্যায়নের জন্য বিধান চন্দ্র সান্যাল আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

রংপুর শহর থেকে ডক্টর মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি। তিনি আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব বাংলাদেশ-এর রংপুর বিভাগের সভাপতি।

মোস্তাফিজ ভাই লিখেছেন, "রেডিও তেহরান থেকে গত ৩ নভেম্বর প্রচারিত অধিবেশন শুনছিলাম। এতে প্রান্তিক আয়োজনে প্রচারিত হয় ধারাবাহিক অনুষ্ঠান 'সুন্দর জীবন'। গভীর মনোযোগ দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুনেছি। সত্যি সত্যি এই অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ও জনকল্যাণমূলক অনুষ্ঠান। যার মাধ্যমে প্রত্যেক শিশুকে আদর্শ ও নীতিবান শিশুরূপে প্রতিপালিত করা সম্ভব।"

আকতার জাহান: সুন্দর জীবন অনুষ্ঠান সম্পর্কে সুন্দর মতামতের জন্য ডক্টর মোস্তাফিজুর রহমান ভাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আসরের পরের মেইলটি এসেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডি থেকে। আর পাঠিয়েছেন দেবাশীষ গোপ।

তিনি লিখেছেন, "আমি আপনাদের একজন নিয়মিত শ্রোতা। অনুষ্ঠানের বৈচিত্র্যতা, নিজস্ব  বৈশিষ্ট্য ও নতুনত্ব আমায় অনুষ্ঠান শুনতে আগ্রহী করে তোলে। চলমান ঘটনার  গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলো একমাত্র রেডিও তেহরান বাংলা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে প্রচার  করে থাকে। ইসরাইল ও ফিলিস্তিন যুদ্ধের প্রকৃত ঘটনার বর্ণনা এখান থেকেই পেয়ে  থাকি। গাজা উপত্যকায় যে ভয়াবহ নৃশংসতা চলেছে তার সঠিক চিত্রও পাই একমাত্র রেডিও তেহরান থেকে।"

নাসির মাহমুদ: ভাই  দেবাশীষ গোপ, ফিলিস্তিন-ইসরাইল যুদ্ধ সম্পর্কে রেডিও তেহরানের ভূমিকার প্রশংসা করায় আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি আবারো লিখবেন।  

আজকের আসরের শেষ মেইলটি এসেছে বাংলাদেশের পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ীয়া থানার দক্ষিণ বন্দর থেকে আর পাঠিয়েছেন কৃষ্ণ কর্মকার (কৌশিক)।

হেমন্তের হালকা মেঘাচ্ছন্ন কুয়াশার শীতে একগুচ্ছ শেফালী ফুলের প্রীতিময় শুভেচ্ছা জানিয়ে চিঠিটি শুরু করেছেন তিনি। লিখেছেন, "অনেক দিন পর আবার রেডিও তেহরানে লিখলাম। ব্যস্ততার কারণে এতদিন লিখতে পারিনি। আমার জীবনে রেডিও তেহরান একটি পথপ্রদর্শক ও প্রদীপ শিখা; যে আলোতে আমি উদ্ভাসিত হয়েছি। রেডিও তেহরান-এর প্রতিটি অনুষ্ঠান শ্রুতিমধুর ও গঠনমূলক। একটি সুন্দর জীবন লাভ করতে এ সকল অনুষ্ঠানের গুরুত্ব অপরিসীম।"

আশরাফুর রহমান: ভাই কৃষ্ণ কর্মকার (কৌশিক), রেডিও তেহরান সম্পর্কে চমৎকার মতামতটির জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

শ্রোতাবন্ধুরা, ঘড়ির কাঁটা টিক টিক করে জানিয়ে দিচ্ছে যে, আর আর আমাদের হাতে তেমন সময় নেই। তবে, অনুষ্ঠান থেকে বিদায় নেওয়ার আগে আজ রয়েছে একটি গান। 'স্বাধীন হবে প্রাণের ফিলিস্তিন' শিরোনামে গানটির কথা, সুর ও শিল্পী শাহ নওয়াজ তাবিব

নাসির মাহমুদ: রেডিও তেহরানের সাবেককর্মী তাবিব ভাইয়ের কণ্ঠে গানটি শুনতে থাকুন আর আমরা বিদায় নিই প্রিয়জনের আজকের আজকের আসর থেকে।

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৪

 

ট্যাগ