ডিসেম্বর ০৮, ২০২৩ ১৫:৫১ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ৮ ডিসেম্বর শুক্রবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। পরে বিস্তারিত খবরে যাব।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • ১১ চাকরিপ্রার্থীকে ‘অপহরণের’ প্রমাণ গায়েবে সিসিটিভির হার্ডডিস্ক খুলে নিল ছাত্রলীগ-প্রথম আলো
  • গার্মেন্টস সেক্টর নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে: ওবায়দুল কাদের-ইত্তেফাক
  • রিজার্ভ কমলো আরও ৩৬ কোটি ডলার-মানবজমিন
  • তদন্তে প্রমাণিত প্রার্থীর আচরণবিধি লঙ্ঘন-সতর্ক করেই দায়মুক্তি-যুগান্তরের  শিরোনাম
  • অযাচিত-অযৌক্তিক চাপের অভিযোগ তুলে জাতিসংঘকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চিঠি-ডেইলি স্টার বাংলা

কোলকাতার শিরোনাম:

  • নিয়োগ মামলায় ‘অস্বস্তি’তে অভিষেক-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • পালটা লাভ জিহাদ! ‘বিয়ের জন্য মুসলিম মেয়েদের অপহরণ করছে হিন্দুরা’, বিস্ফোরক দাবি কেরলে-সংবাদ প্রতিদিন
  • বিধানসভা ভোট কবে? কাশ্মীরে দুই বিলে প্রশ্ন তারিগামির-গণশক্তি

শিরোনামের পর এবার বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকগুলোর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত তুলে ধরছি। দৈনিকগুলো ভিন্ন ভিন্ন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে। প্রথমে দৈনিকগুলোর  রাজনীতি বিষয়ক খবরের দিকে দৃষ্টি দেই।

ছিলেন পৌর সচিব, এখন বিপুল সম্পদের মালিক-প্রথম আলোর এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, 

যশোর জেলার শার্শা উপজেলার বেনাপোল পৌরসভার সচিব ছিলেন রফিকুল ইসলাম। চাকরিকালে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘রাইসা বিল্ডার্স’ নামের একটি নির্মাণপ্রতিষ্ঠানের পরিচালক পদে আছেন রফিকুল। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী তাঁর স্ত্রী ইসরাত জাহান। রফিকুল পৌর সচিব থাকাকালে প্রতিষ্ঠানটি চালু করা হয়।

রাইসা বিল্ডার্স রাজধানীর মিরপুরের পীরেরবাগে একটি ১০ তলা (আবাসিক-বাণিজ্যিক) ও একটি ৯ তলা ভবন (আবাসিক) নির্মাণ করেছে। পীরেরবাগে প্রতিষ্ঠানটির আরেকটি ১০ তলা আবাসিক ভবন নির্মাণাধীন। এসব ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে কোথাও থেকে ঋণ নিতে হয়নি বলে রফিকুল নিজেই প্রথম আলোর কাছে স্বীকার করেছেন। রফিকুলের বিরুদ্ধে শতকোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের একটি অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনুসন্ধান করছে বলে সূত্র প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে।

দৈনিকটির অপর এক খবরে লেখা হয়েছে, ১১ চাকরিপ্রার্থীকে ‘অপহরণের’ প্রমাণ গায়েবে সিসিটিভির হার্ডডিস্ক খুলে নিল ছাত্রলীগ।যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে যাওয়া ১১ চাকরিপ্রার্থীকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগী প্রার্থী আরাফাত হোসেন বাদী হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানাসহ ১৩ নেতা-কর্মীর নামে মামলাটি করেন।

এদিকে শিক্ষার্থীদের হলে আটকে রাখার প্রমাণ গায়েব করতে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে গেছেন, এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ইত্তেফাকের খবরে লেখা হয়েছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গার্মেন্টস সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলছে। নিজেদের বাণিজ্যিক স্বার্থে একটি মহল শ্রমিকদের ব্যবহারের পাঁয়তারা করছে। আমাদের অর্থনৈতিক স্বার্থে গার্মেন্টসের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রাখতে হবে। আর যুগান্তরের খবরে লেখা হয়েছে, ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি নিষেধাজ্ঞা দিতে চায়, সেটি শুধু একমাত্র বিএনপি ও তার দোসরদের ওপর দিতে পারে। তারা এ নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে।

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

পালটা লাভ জিহাদ! ‘বিয়ের জন্য মুসলিম মেয়েদের অপহরণ করছে হিন্দুরা’, বিস্ফোরক দাবি কেরলে-সংবাদ প্রতিদিনের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, ভিনধর্মে বিয়ে মানেই ধর্মনাশের চেষ্টা, এমন অভিযোগে মাঝে মাঝেই শোরগোল ওঠে দেশে। এমনিতে তার নিশানা থাকে মুসলিম সম্প্রদায়ের দিকেই। হিন্দু মেয়েদের বিয়ে করে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ানোই উদ্দেশ্য তাদের, এহেন দাবি তুলে বারে বারেই সরব হতে দেখা গিয়েছে হিন্দুত্ববাদীদের। কিন্তু এবার সেই অভিযোগ এল উলটো দিক থেকে। মুসলিম মেয়েদের অপহরণ করে ভিনধর্মে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করে বসেছেন কেরলের সুন্নি সংগঠন সামাস্থার নেতা নজর ফইজি কুড়াথায়ি।বামশাসিত কেরলে বাম নেতাদের প্রশ্রয়েই এহেন ঘটনা ঘটছে বলেও কড়া আক্রমণ শানিয়েছেন ওই নেতা।

পালটা লাভ জিহাদ! ‘বিয়ের জন্য মুসলিম মেয়েদের অপহরণ করছে হিন্দুরা !

এমনিতে মুসলিম যুবকদের সঙ্গে হিন্দু মেয়েদের মেলামেশা বিপজ্জনক বলে বরাবরই দাবি করে থাকেন হিন্দুত্ববাদীরা। ভিনধর্মের মধ্যে প্রেম, এবং তারপর বিয়ের ঘটনা ঘটলে প্রায়শই তাকে ‘লাভ জিহাদ’ বলে দাগিয়ে দেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, আসলে হিন্দু মেয়েদের ভুলিয়েভালিয়ে বিয়ে করতে চায় মুসলিম ধর্মাবলম্বী পুরুষেরা। তারপর জোর করে মেয়েটির ধর্মান্তর করে এবং তার গর্ভে একাধিক সন্তানের জন্ম দিয়ে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ানোই তাদের লক্ষ্য।

সম্প্রতি উলটো দাবিতেই সুর চড়িয়েছেন কেরলের সুন্নি সংগঠন সামাস্থার নেতা নজর ফইজি কুড়াথায়ি। এই নেতা আবার সুন্নি যুবজন সঙ্গমের রাজ্য সেক্রেটারিও। সম্প্রতি এক সমাবেশ থেকে তিনি দাবি করেছেন, কেরলে মুসলিম মেয়েদের অপহরণ করা হচ্ছে। আর সেই কাণ্ডে আসলে সমর্থন রয়েছে বাম নেতৃত্বের। ধর্মনিরপেক্ষতার নামে মুসলিম মেয়েদের ভিনধর্মে, সোজা কথায় হিন্দু পুরুষের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যাকে ধর্মনাশের চেষ্টা বলেই মনে করছেন ওই মুসলিম নেতা। আসলে হিন্দু মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিয়েতেই যে তাঁর আপত্তি, সে কথাই স্পষ্ট করে দিয়েছেন ফইজি। আর সেই বিষয়ে বাম সরকার কেন বাধা দিচ্ছে না, এই প্রশ্ন তুলেই বাম দলগুলির বিরুদ্ধে জোর আক্রমণ শানিয়েছেন কেরলের ওই মুসলিম নেতা।

দৈনিকটির অপর এক খবরে লেখা হয়েছে, মুসলিমদের দেখানো পথ ধরেই কমবয়সি মেয়েদের বিয়ে করা উচিত হিন্দু ব্যক্তিদের, সম্প্রতি এমন নিদান দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন এক মুসলিম নেতা। তাঁর কথায়, বিয়ের আগে দু-তিনজন মহিলার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রাখে হিন্দুরা, কিন্তু তারা সন্তানের জন্ম দেয় না। তাই জনসংখ্যা বাড়াতে চাইলে মুসলিমদের নীতিই অনুসরণ করা উচিত, এমনটাই মত এআইডিইউএফ প্রধান বদরুদ্দিন আজমল-এর। এই মন্তব্যের জেরে স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক উসকে উঠেছে নানা মহলে।

বিধানসভা ভোট কবে? কাশ্মীরে দুই বিলে প্রশ্ন তারিগামির-গণশক্তি পত্রিকার এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের ক্ষমতায়ন চাইলে বিধানসভা নির্বাচন কেন হচ্ছে না। কেন সুপ্রিম কোর্টের বিবেচনাধীন হওয়া সত্ত্বেও আসন পুনর্গঠনের আইন পাশ করানো হলো সংসদে। কাশ্মীরী পণ্ডিত সম্প্রদায়ের জন্য আসন সংরক্ষণ করার প্রচার চলছে। অথচ এই সম্প্রদায়ের বাস্তুচ্যুত মানুষকে স্বভূমিতে ফেরানোর কথা হচ্ছে না। কেন?

লোকসভায় জম্মু ও কাশ্মীর সংক্রান্ত পাশ দুই বিল নিয়ে এভাবেই প্রশ্ন তুললেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহম্মদ ইউসুফ তারিগামি। ভেঙে দেওয়ার আগে তিনি নিজেও জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভার সদস্য ছিলেন।

মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজ লোকসভায়

আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে লেখা হয়েছে, মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজই হল লোকসভায়, ভোটাভুটিতে সরকার পক্ষের বহিষ্কারের প্রস্তাব পাশ করা হলো। এর আগে মহুয়াকে বসিয়ে দিলেন স্পিকার, কংগ্রেস ও তৃণমূলের আর্জি সত্ত্বেও কথা বলতে দেওয়া হল না। ‘প্রশ্নঘুষ’কাণ্ডে সাংসদ মহুয়া মৈত্র কথা বলতে চেয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে এথিক্স কমিটি।

মহুয়াকে বলতে না দেওয়ার তৃণমূলের তরফে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মহুয়াকে বলতে না দিয়ে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

দৈনিকটির অপর এক খবরে লেখা হয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ‘অস্বস্তি’তে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ৮