ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩ ১৬:২০ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ১৮ ডিসেম্বর সোমবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। পরে বিস্তারিত খবরে যাব।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • ইন্ডিয়া টুডের রিপোর্ট, জন কিরবির জবাব এবং বাংলাদেশের নির্বাচন গণতন্ত্রের জন্য বড় পরীক্ষা-মানবজমিন
  • শূন্য হাতে ফিরছেন লাখো প্রবাসী-প্রথম আলো
  • বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে ভালো হতো সবাই অনুভব করেছে: সিইসি-ডেইলি স্টার বাংলা
  • ২৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা-ইত্তেফাক
  • ‘এক রাতে সব বিএনপি নেতার মুক্তি’, আলোচিত বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন কৃষিমন্ত্রী-যুগান্তরের খবর 

কোলকাতার শিরোনাম:

  •  অধীর-সহ লোকসভার ৩০ জনের বেশি সাংসদকে সাসপেন্ড করা হলো -আনন্দবাজার পত্রিকা
  • কলমের আড়ালে মারণাস্ত্র! বাংলাদেশে ভোটের আগে উদ্ধার মুঙ্গেরি ‘পেন পিস্তল’-সংবাদ প্রতিদিন
  • গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি দাউদ-গণশক্তি
  • ২০৩৬ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন মমতা ব্যানার্জি, তারপর মুখ্যমন্ত্রী হবেন অভিষেক ব্যানার্জি- বললেন কুনাল ঘোষ-আজকাল

শিরোনামের পর এবার বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকগুলোর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত তুলে ধরছি।

ফখরুল-খসরুর রিমান্ড নাকচ

ফখরুল-খসরুর রিমান্ড নাকচ, জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ-যুগান্তর,প্রথম আলোসহ প্রায় সব দৈনিকের খবরে লেখা হয়েছে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ করেছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী আজ সোমবার এই আদেশ দেন।

ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে যাবে ব্যালট পেপার-যুগান্তরের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের দিন সকালে ভোটগ্রহণ শুরুর আগে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে ব্যালট পেপার। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (সিসি)। পরিপত্রে জানানো হয়েছে, ভোটগ্রহণের দিন সকালে অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার পৌঁছানোর জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

ডেইলি স্টার বাংলার খবরে লেখা হয়েছে, সিইসি বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে ভালো হতো সবাই অনুভব করেছে। আমার ব্যক্তিগত স্বস্তি বা অস্বস্তি তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে এটা ঠিক যে নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দল অংশগ্রহণ করছে না। অংশগ্রহণ করলে অনেক ভালো হতো।’ ইত্তেফাকের খবরে লেখা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২৭ ডিসেম্বর দলটির নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করা হবে।

 ‘এক রাতে সব বিএনপি নেতার মুক্তি’, আলোচিত বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন কৃষিমন্ত্রী-যুগান্তরের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, বিএনপিকে নিয়ে যা বলেছি, কোনো ভুল বলি নাই, যা বলছি সব ঠিকই বলেছি। তবে বক্তব্যের সবটুকু তো প্রচার হয় নাই। আমরা সব সময় চেয়েছি বিএনপিসহ সব দল নির্বাচনে আসুক। কিন্তু সংবিধানের বাইরে করার কিছু করার নেই।সোমবার বিএনপিকে নিয়ে আলোচিত বক্তব্যর বাখ্য দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী।কৃষিমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ আন্তরিকভাবে চেয়েছে বিএনপি নির্বাচনে আসুক। আর তারা (বিএনপি) সব সময় চেয়েছে নির্বাচন বানচাল করতে। নির্বাচনে এলে আইনি প্রক্রিয়ায় বিএনপি নেতাদের ছাড়ার উদ্যোগ নিতো নির্বাচন কমিশন।–গতকাল কৃষিমন্ত্রী একটি টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, 

শূন্য হাতে ফিরছেন লাখো প্রবাসী

শূন্য হাতে ফিরছেন লাখো প্রবাসী-প্রথম আলো পত্রিকার এ শিরোনামের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, দুই বছর ধরে প্রতি মাসে গড়ে লাখের বেশি নতুন কর্মী যাচ্ছেন বিভিন্ন দেশে। তাঁদের অনেকেই গিয়ে কাজ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ আছে। তাই বিপুল কর্মসংস্থানের স্রোতের মধ্যেই ব্যর্থ হয়ে ফিরছেন অনেক প্রবাসী। তাঁদের কোনো হিসাব পাওয়া যায় না। সব হারিয়ে, পুলিশের হাতে আটক হয়ে, একদম বাধ্য হয়ে, শূন্য হাতে যাঁরা ফিরে আসেন; হিসাব আছে শুধু তাঁদের।

নিঃস্ব এমন প্রবাসীদের হাতে পাসপোর্ট থাকে না। দেশে ফেরার জন্য দূতাবাস থেকে তাঁদের একটি আউট পাস (ভ্রমণের বৈধ অনুমতিপত্র) সরবরাহ করা হয়। আউট পাস নিয়ে দেশে ফেরা প্রবাসীদের তথ্য সংগ্রহ করে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরে প্রবাসীদের বিভিন্ন সেবা দিতে এ ডেস্ক কাজ করে।

ওকাপের  চেয়ারপারসন, শাকিরুল ইসলাম বলেছেন,  অসফল হয়ে ফিরে আসা মোট প্রবাসীর সংখ্যা আউট পাস নিয়ে ফেরা সংখ্যার চেয়ে দুই থেকে তিন গুণ বেশি হওয়ার কথা। এর সামাজিক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকির দিক আছে। তাই এটা প্রতিরোধ করা খুব জরুরি।

ঋণ করে দালালের মাধ্যমে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ওমান গিয়েছিলেন টাঙ্গাইলের মো. আবদুল বাসেত। হোটেলে কাজ করার কথা থাকলেও তা পাননি। পরে একটি সাপ্লাই কোম্পানিতে নিয়ে যায় দালাল। সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় বাদ পড়েন তিনি। এরপর মরুভূমিতে দালালের এক আস্তানায় ১৩ দিন আটকে ছিলেন খাবারের কষ্ট নিয়ে। বাধ্য হয়ে দেশে ফিরে আসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, খালি হাতে দেশে ফিরলে ভিক্ষা করতে হবে। তাই অনেক অনুরোধ করেছেন, কিন্তু কাজ পাননি। দেশ থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেই গেছেন। এখন পাঁচ লাখ টাকা ঋণের দায় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

কয়েক লাখ টাকা খরচ করে পরিবারের ভাগ্য ফেরাতে বিদেশে গেছেন। নির্ধারিত সময়ের আগেই ঋণগ্রস্ত হয়ে ফিরে এসেছেন দেশে। এমন প্রবাসীরা বলছেন, সৌদি আরবে প্রচুর কর্মী যাচ্ছেন। কিন্তু সেখানে পর্যাপ্ত কাজ নেই। তাই গিয়ে বেকার জীবন যাপন করতে হচ্ছে। শুধু সৌদি নয়, মধ্যপ্রাচ্য থেকে ফেরা কর্মীদের মধ্যে কারও ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। কারও কারও ইকামা (কাজের বৈধ অনুমতিপত্র) নেই।

দেশে ফেরত প্রবাসী কর্মীদের সেবা দিতে বিমানবন্দরে কাজ করা একাধিক সংস্থার সূত্র বলছে, কয়েক মাস ধরে দিনে ২৫০ থেকে ৩০০ জন করে প্রবাসী ফিরে আসছেন খালি হাতে। তাঁদের জামাকাপড় ঠিক নেই, পকেটে টাকা নেই। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির আওতায় বাড়ি ফেরার জন্য এক হাজার টাকা করে যাতায়াত খরচ দেওয়া হয়। 

এমন পরিস্থিতিতে আজ ১৮ ডিসেম্বর পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস। প্রবাসী কর্মীর ভূমিকা ও তাঁদের অধিকারকে সম্মানিত করার বিষয়টিতে এবার গুরুত্ব দিয়েছে জাতিসংঘ।

সরকারি সংস্থার তথ্য বলছে, এ বছরের প্রথম ১১ মাসেই দেশে ফিরে এসেছেন ৭৮ হাজার ৩২৮ প্রবাসী। তবে এর বাইরে যাঁরা পাসপোর্ট নিয়ে ফিরে আসছেন, তাঁদের কোনো হিসাব নেই এ সংস্থার কাছে। তবে অভিবাসন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ব্যর্থ অভিবাসনের প্রকৃত চিত্র আরও নাজুক। বছরে এটি লাখের অনেক বেশি হবে।

ফিরে আসা বাড়ছে

২০১৯ সালে আউট পাস নিয়ে দেশে ফিরে আসেন ৬৪ হাজার ৪৩৮ জন। এরপর ২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরুর পর প্রবাসীরা দেশে ফিরতে শুরু করেন। ওই সময় দেশে ফেরা সব প্রবাসীর হিসাব রাখতে শুরু করে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক। এতে বছরে প্রায় চার লাখ প্রবাসী কর্মীর তথ্য পাওয়া যায়। যদিও তাঁদের মধ্যে একটি বড় অংশ ছুটিতে দেশে আসেন, যাঁদের অধিকাংশই আবার ফিরে গেছেন। তবে এখন ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা প্রবাসীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।

ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তথ্য বলছে, এ বছরের ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত শূন্য হাতে দেশে ফিরে এসেছেন ৮০ হাজার ৮১১ জন প্রবাসী। এর মধ্যে পুরুষ কর্মী ৭৮ হাজার ৭৯ জন ও নারী কর্মী ২ হাজার ৭৩২ জন। তবে এটি আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। 

সৌদি আরবে নিয়মিত অভিযান চলছে। নানা কারণে অবৈধ হয়ে পড়ায় কর্মীদের দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে। একই কাজ করছে মালয়েশিয়াসহ অন্য আরও কিছু দেশ। সরকারি তথ্য বলছে, গত অক্টোবরে দেশে ফিরেছেন ৬ হাজার ৪৯৩ জন। আর নভেম্বরে দেশে ফিরেছেন ৮ হাজার ৪৫২ জন।

গত ২ মার্চ দালালের মাধ্যমে সৌদি আরব যান ঢাকার আশিস মণ্ডল। একসঙ্গে গিয়েছিলেন ১৮ জন। যথাযথ কাগজ না থাকায় দাম্মাম বিমানবন্দরে দুজনকে আটকে দেওয়া হয়। তিন দিন সেখানে রেখে ফেরত পাঠানো হয় দেশে। বাড়ি ফিরে ১৫ হাজার টাকা এনে বিমানকে পরিশোধ করার পর পাসপোর্ট ফেরত পান আশিস। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ করে খালি হাতে ফিরেছেন। এখন ধারদেনায় জর্জরিত পরিবার। দালালের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না। এভাবে বিদেশে পাঠালে তো ভিক্ষা করা ছাড়া উপায় থাকবে না।

তৃণমূল পর্যায়ে অভিবাসীদের সংগঠন অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের (ওকাপ) চেয়ারপারসন শাকিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আউট পাস নিয়ে যাঁরা ফেরেন, তাঁরা সর্বস্বান্ত হয়ে, আটক হয়ে ফেরেন। এর বাইরে অসুস্থ হয়ে, কাজ না পেয়ে, স্বেচ্ছায় অনেকে ফিরে আসেন। তাঁদের সংখ্যা কারও জানা নেই। তাই অসফল হয়ে ফিরে আসা মোট প্রবাসীর সংখ্যা আউট পাস নিয়ে ফেরা সংখ্যার চেয়ে দুই থেকে তিন গুণ বেশি হওয়ার কথা। এর সামাজিক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকির দিক আছে। তাই এটা প্রতিরোধ করা খুব জরুরি।

পাঁচ ব্যাংককে দেওয়া চিঠি ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা: বাংলাদেশ ব্যাংক-প্রথম আলো

ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক- তারল্যসংকটে পড়া শরিয়াহভিত্তিক এই  পাঁচ ব্যাংককে লেনদেন থেকে বিরত রাখার বিষয়ে চিঠি দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয়ের নিয়মিত কাজ বলে জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানটি। এটা ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা। তবে লেনদেন থেকে বিরত রাখার বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। নির্ধারিত সময় ২৬ ডিসেম্বরের পর পরিস্থিতি কী হয়, সেটা দেখে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ইসলামি ধারার শুধু এই পাঁচ ব্যাংকই কেন সংকটে, এই প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, এগুলোর ব্যবসার ধরন একই রকম। আর সব ব্যাংক একই সময়ে সমস্যায় পড়বে, এটাও কোনো কথা না।

প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেনের মতামত কলামের শিরোনাম- ‘ইটস নট দ্য ইকোনমি, স্টুপিড’।এ কলামে তিনি লিখেছেন, নির্বাচনের সঙ্গে অর্থনীতির সম্পর্ক নিয়ে শেষ কথাটা বলে গিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের ক্যাম্পেইন ম্যানেজার জেমস কার্ভিল। ১৯৯২ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিল ক্লিনটনের প্রতিপক্ষ ছিলেন জর্জ ডব্লিউ বুশ। ইরাকের কুয়েত আক্রমণ এবং উপসাগরীয় যুদ্ধের কারণে ১৯৯১ সালেও জর্জ বুশের জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী।

কিন্তু এক বছরের মধ্যেই সেই জনপ্রিয়তায় ধস নামে। অর্থনীতির মন্দাই এর প্রধান কারণ। মূল্যস্ফীতি ছিল বেশি, চাকরি হারানোর শঙ্কায় ছিল মার্কিনিরা। এ রকম এক সময় মার্কিন নাগরিকেরা বুশকে নয়, ক্লিনটনকে কেন ভোট দেবেন, এমন এক প্রশ্নের জবাবে জেমস কার্ভিল একটা কথাই বলতেন, ‘ইটজ দ্য ইকোনমি, স্টুপিড’।

এ কারণেই ৩১ বছর আগের সেই কথাটা রাজনৈতিক অভিধানে বেশ ভালোভাবেই ঢুকে গেছে। জো বাইডেনের যুক্তরাষ্ট্রেও সামনে নির্বাচন। ফলে আবারও বলা শুরু হয়েছে অর্থনীতির কথা। বলা হয়, এটাই নির্বাচন জেতার আসল মন্ত্র।

বাংলাদেশের গণতন্ত্রে অনেক ঘাটতি ছিল। তারপরও নির্বাচনকেন্দ্রিক গণতন্ত্র টিকে ছিল। এখন সেটাও নেই। ফলে ভোটারের স্বস্তি বা অস্বস্তি—কোনোটাই রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বিবেচ্য বিষয় আর নেই। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ভোট, রাতের ভোট আর এবার সমঝোতার ভোট—এখানে ভোটারের কোনো ভূমিকা নেই। সুতরাং বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ‘ইটস নট দ্য ইকোনমি, স্টুপিড’।

মুশকিল হয়েছে বাংলাদেশ নিয়ে। বিশ্বের বড় বড় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও অর্থনীতিবিদ নির্বাচনকালীন অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে যত গবেষণা করেছেন, কোনোটার সঙ্গেই ঠিক মিলছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর নিজেই বলেছেন, তিনি তাঁর ৩৬ বছরের চাকরিজীবনে অর্থনীতির এতটা খারাপ অবস্থা কখনো দেখেননি। দেশের অর্থনীতি প্রায় দুই বছর ধরেই সংকটে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ডলার-সংকট, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতন, বিনিয়োগে মন্দা, জ্বালানিসংকট, আর্থিক হিসাবে ভারসাম্যহীনতা—সংকট আসলে প্রায় সব সূচকেই। ৮৬ টাকার ডলার এখন ১১০ টাকা বলা হলেও, কার্যত তা প্রায় ১২৫ টাকায় উঠে গেছে।

প্রতি মাসে রিজার্ভ কমেছে ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার করে। দুই বছরে রিজার্ভ অর্ধেক হয়ে গেছে। ১০ বছরের মধ্যে প্রথম দেখা দিয়েছে আর্থিক হিসাবে বড় ঘাটতি। মূল্যস্ফীতি গড়ে প্রায় ১০ শতাংশ। রপ্তানি আয়ে খানিকটা স্বস্তি থাকলেও টানা দুই মাস ধরে সেখানেও ঘাটতি। তীব্র জ্বালানিসংকটের অর্থই হচ্ছে কম কর্মসংস্থান ও উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয়। অনেক ধরনের উদ্যোগ নিয়েও প্রবাসী আয়েও প্রবৃদ্ধি খুবই কম। এর সঙ্গে যুক্ত রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা।

গভর্নরের ভাষ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের অর্থনীতি একেবারে তলানিতে আছে এবং এর চেয়ে আরও খারাপ হওয়ার সুযোগ নেই। প্রশ্ন হচ্ছে, এ রকম এক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কেন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কোনো দল বা ভোটারদের কাছে অ্যাজেন্ডা হিসেবে স্থানই পাচ্ছে না। যেকোনো বিচারেই এটা ভোট পাওয়ার জন্য আদর্শ পরিস্থিতি নয়। এ রকম এক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে কোনো ক্ষমতাসীন দলেরই নির্বাচন নিয়ে স্বস্তিতে থাকার কথাও নয়। অথচ অর্থনীতি নিয়ে সব আলোচনাই ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। যা-ই হোক না কেন, নির্বাচনের পরে দেখা যাবে।

বারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

মুঙ্গেরি ‘পেন পিস্তল’

কলমের আড়ালে মারণাস্ত্র! বাংলাদেশে ভোটের আগে উদ্ধার মুঙ্গেরি ‘পেন পিস্তল’-সংবাদ প্রতিদিনের এ খবরে লেখা হয়েছে, পকেটে রাখা ছোট্ট একটি ‘কালির কলম’। আসলে মারণাস্ত্র। আরও পাঁচটি কলমের মতো তার মাথায় রয়েছে খাপ। রয়েছে বোতামের মতো একটি বস্তুও। কিন্তু ওই বোতামে চাপ দিলেই কলম পালটে হয়ে যাবে আগ্নেয়াস্ত্র (Arms)। এক বোতামের চাপেই খেল খতম! রক্তাক্ত ‘শিকার’ লুটিয়ে পড়বে মাটিতে। পকেটে রাখা ছোট্ট একটি ‘কালির কলম’। আসলে মারণাস্ত্র। আরও পাঁচটি কলমের মতো তার মাথায় রয়েছে খাপ। রয়েছে বোতামের মতো একটি বস্তুও। কিন্তু ওই বোতামে চাপ দিলেই কলম পালটে হয়ে যাবে আগ্নেয়াস্ত্র (Arms)। এক বোতামের চাপেই খেল খতম! রক্তাক্ত ‘শিকার’ লুটিয়ে পড়বে মাটিতে। সামনেই বাংলাদেশের ভোট। তার আগে গোপনে সীমান্ত পেরিয়ে চোরাপথে বাংলাদেশে (Bangladesh) এই অতি ছোট মাপের পিস্তল পাচারের ছক চলছে বলে ধারণা গোয়েন্দাদের।

পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, বস্তুটি দেখতে অবিকল কলমের (Pen) মতো। একটু ভারী। তবে সহজেই রাখা যায় বুকপকেট বা প‌্যান্টের পকেটে। আবার রাখা যায় পেনের বাক্সেও। খুব ভালভাবে না লক্ষ‌্য করলে কারও পক্ষেই বোঝা সম্ভব নয় যে সেটি একটি মারণাস্ত্র হয়ে উঠতে পারে। আবার শুধু উপরের খাপ খুললে দেখা যায়, তাতে পেনের নিব নেই। তার বদলে রয়েছে নল। সেখান দিয়ে ভরা যায় একটি বুলেট (Bullet)। প্রয়োজনমতো সেই বুলেট ৭.৬৫ মিমি বা ৯ মিমি হতে পারে। স্প্রিংয়ের সঙ্গে আটকে যায় বুলেটটি।

এর পর ট্রিগার টানা তথা বোতাম টেপার পালা। গোয়েন্দাদের মতে, এই মুঙ্গেরি পিস্তল দূর থেকে ‘ট্রিগারিং’ করলে তা ধরাশায়ী করতে পারে যে কোনও ব‌্যক্তিকে। 

আর একটু কাছে বা পয়েন্ট ব্ল‌্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে তা ব‌্যবহার করলে ঘটতে পারে মৃত্যুও। শুধু ব‌্যক্তিগত কারণে হামলা নয়, কোনও জঙ্গি সংগঠন ‘লোন উলফ অ‌্যাটাক’ করার ছক কষলে অতি সহজেই ব‌্যবহার করতে পারে এই পেন পিস্তল। বহু বছর আগেও এই পিস্তল ব‌্যবহার করা হয়। যদিও এখন পালটেছে তার প্রযুক্তি (Technology)। এই পিস্তল হয়েছে অনেক আধুনিক।

পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙা থেকে চলন্ত স্কুটার থামিয়ে চারটি অর্ধসমাপ্ত পিস্তল, আটটি ম‌্যাগাজিন ও দশটি ৯ মিমি বুলেট উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার হয় বনগাঁর বাসিন্দা জামাল মণ্ডল নামে এক পাচারকারী। ধৃতকে জেরা করে রাজ্যের গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, এবার এই রাজ্যের পাচারকারীদের নজর আরও ছোট পেন পিস্তলের উপর। তারা মুঙ্গের থেকে পেন পিস্তল আনার ছক কষছে। ছক অনুয়ায়ী উত্তর ২৪ পরগনা থেকে আরমান মণ্ডল ও বিলাল মণ্ডল হাওড়া থেকে বিহারের জামালপুরে যায়। জামালকে জেরা করে পাওয়া সেই তথ‌্য রাজ‌্য পুলিশের এসটিএফ আধিকারিকরা বিহারের গোয়েন্দাদের দেন।

জানা যায়, মুঙ্গেরের একটি বেআইনি অস্ত্র কারখানায় তৈরি সাতটি পেন পিস্তল তাদের সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। একেকটির দাম ধরা হয় ১৫ হাজার টাকা করে। সেই পিস্তল কলকাতায় নিয়ে এসে একেকটি ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করার ছক কষে আরমান ও বিলাল। জামশেদ নামে এক পাচারকারী তাদের এই পেন পিস্তলগুলি দেয়। তারা পুরো টাকা নগদে মেটায়। এর পর জামশেদের বাইকে করে তারা জামালপুর স্টেশনে আসে। স্টেশনে প্রবেশ করার আগেই তিনজন হাতেনাতে ধরা পড়ে বিহার পুলিশের হাতে। তাদের কাছ থেকে ১৪টি বুলেটও উদ্ধার হয়। গোয়েন্দাদের দাবি, চক্রটি বাংলাদেশের এজেন্টদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে।

অধীর-সহ লোকসভার ৩০ জনের বেশি সাংসদকে সাসপেন্ড, থাকতে পারবেন না বাকি দিনগুলিতে-আনন্দবাজার পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, গত বাদল অধিবেশনেও ‘অসংসদীয় শব্দ’ ব্যবহার করার জন্য সাসপেন্ড হয়েছিলেন লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সোমবার শীতকালীন অধিবেশনেও সাসপেন্ড করা হল অধীরকে। সঙ্গে ৩০ জনের বেশি বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা।

বিষ খাওয়ানো হয়েছে! করাচির হাসপাতালে ভর্তি দাউদ ইব্রাহিম-সংবাদ প্রতিদিন

দাউদ ইব্রাহিম

হাসপাতালে ভর্তি মুম্বইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ হামলার মূলচক্রী দাউদ ইব্রাহিম (Dawood Ibrahim)। সূত্রের খবর, শরীরে বিষক্রিয়ার জেরেই করাচির হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে তাঁকে। কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা হাসপাতাল। আন্ডারওয়ার্ল্ড ডনের অসুস্থতার খবর প্রকাশ্যে আসতেই পাকিস্তান (Pakistan) জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবাও ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। তবে সরকারিভাবে দাউদের অসুস্থতা নিয়ে কিছু জানানো হয়নি। পাক প্রশাসনের এমন পদক্ষেপের পরই দাউদের অসুস্থতা নিয়ে জল্পনা আরও বাড়ছে ওয়াকিবহাল মহলে। উল্লেখ্য, গত কয়েকমাস ধরেই পাকিস্তানে বসবাসকারী বেশ কয়েকজন জঙ্গি নেতার মৃত্যু হয়েছে। ভারতবিরোধী বলেই পরিচিত ছিলেন তাঁরা। এহেন পরিস্থিতিতে দাউদের অসুস্থতার খবরে তোলপাড় আন্তর্জাতিক মহল। প্রাথমিকভাবে খবর, বিষ খাওয়ানো হয়েছে কুখ্যাত ডনকে। তাঁর শারীরিক অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক বলেই সূত্রের খবর। যদিও দাউদের পরিবার বা করাচির হাসপাতালের তরফে এই নিয়ে কিছুই বলা হয়নি।

শ্রোতাবন্ধুরা! কথাবার্তার আজকের আসর এখানেই গুটিয়ে নিচ্ছি। আবারও কথা হবে আগামী আসরে ততক্ষণ সবাই ভালো ও সুস্থ থাকুন।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ১৮


 

ট্যাগ