চিঠিপত্রের আসর প্রিয়জন
'তরতাজা সংবাদ এবং রুচিশীল অনুষ্ঠানের কারণে রেডিও তেহরান আমাদের অতিপ্রিয়'
শ্রোতাবন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক প্রীতি আর শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি চিঠিপত্রের আসর প্রিয়জন। আজকের আসর উপস্থাপনায় রয়েছি আমি গাজী আবদুর রশীদ, আমি আকতার জাহান এবং আমি আশরাফুর রহমান।
আশরাফুর রহমান: বন্ধুরা, আসরের শুরুতেই আমি একটি বাণী শোনাতে চাই। হজরত ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন: "যদি কোনো ব্যক্তি চায় তার কষ্ট ও দুর্দিনে প্রার্থনা কবুল হোক, তাহলে সে যেন সুখ ও আনন্দের দিনে বেশি করে প্রার্থনা করে।"
আকতার জাহান: আমরা সবাই মূল্যবান এই বাণীটি মেনে চলার চেষ্টা করব- এ কামনা করে নজর দিচ্ছি চিঠিপত্রের দিকে। আসরের প্রথমেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুপী থেকে আসা একটি মেইল চেক করছি। এটি পাঠিয়েছেন মহ: হাফিজুর রহমান।
তিনি লিখেছেন, "তরতাজা আর বাস্তবতানির্ভর সংবাদ এবং রুচিশীল অনুষ্ঠান প্রচারের কারণে রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগ আমাদের অতিপ্রিয়। দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগের অনুষ্ঠান শোনা ও যোগাযোগের ধারা অক্ষুণ্ন রাখতে পারায় আমি নিজে গর্ব বোধ করি। আমি মনে করি শ্রোতাবান্ধব অনুষ্ঠান প্রচারে বেতার কেন্দ্রটির বিকল্প এবং প্রতিদ্বন্দ্বী নিজেই। দিন দিন আধুনিকতার স্পর্শে এগিয়ে চলেছে বেতারকেন্দ্রটি। আমি মুগ্ধ বেতারকেন্দ্রের অনুষ্ঠান ও সংবাদ ও সংবাদভিত্তিক অনুষ্ঠান প্রচারে অগ্রগামীতে।"
আশরাফুর রহমান: রেডিও তেহরান সম্পর্কে চমৎকার কিছু কথা লিখেছেন হাফিজুর রহমান ভাই। তার পুরো লেখাটি আমাদের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। আগ্রহীরা পড়ে নিতে পারেন। তো সুন্দর লেখাটির জন্য হাফিজ ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসরের পরের মেইলটিও এসেছে ভারত থেকে। পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার রায়পুর থেকে এটি পাঠিয়েছেন রুস্তম আলি সেখ।
গাজী আবদুর রশীদ: অনেকদিন পর রুস্তম আলি সেখ ভাইয়ের লেখা পেলাম। তো কী লিখেছেন তিনি?
আকতার জাহান: রুস্তম আলি ভাই লিখেছেন, "আমি রেডিও তেহরানের অনেকদিনের পুরোনো শ্রোতা। আগে নিয়মিত অনুষ্ঠান শুনতাম ও চিঠি লিখতাম। বর্তমানে আপনাদের অনুষ্ঠান ফেসবুকের মাধ্যমে নিয়মিত শুনলেও চিঠি লিখা হয়ে ওঠে না। আপনাদের প্রতিটি অনুষ্ঠান আমাকে মুগ্ধ করে। বিশ্ব সংবাদ ও সাপ্তাহিক অনুষ্ঠানগুলো আমার খুবই প্রিয়।"
আশরাফুর রহমান: নীরবতা ভেঙে চিঠি লিখার জন্য রুস্তম আলি সেখ ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি আবারো লিখবেন।
গাজী আবদুর রশীদ: আসরের পরের মেইলটি এসেছে বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থেকে। আর লিখেছেন মোঃ আতাউর রহমান।
তিনি লিখেছেন, "সোমবার রাতে মুঠোফোন নিয়ে বসেছিলাম, যদি আমার লেখা 'মায়ের ভাষাই আমার ভাষা' কবিতা শুনতে পাই। আশা পূর্ণ হলো, নিজের লেখা কবিতা শুনে। সত্যি, রেডিও তেহরানে নিয়োজিত বন্ধুরা খুব ভালো। তাদের বচন-বাচন শোনার মতো। আমাদের পাঠানো চিঠিগুলোর ভাষাকে তারা নাটকের ডায়ালগে পরিণত করে শোনায়, যা প্রেরককে মুগ্ধ করে।"
আকতার জাহান: ভাই আতাউর রহমান, চিঠিপত্রের আসর প্রিয়জন সম্পর্কে আপনার মতামত জেনে ভালো লাগল। আশা করি এভাবেই প্রেরণা জোগাবেন।
আশরাফুর রহমান: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার চাপড়া থানার হাতিশালা থেকে আশরাফ হোসেন পাঠিয়েছেন আসরের পরের মেইলটি।
তিনি লিখেছেন, "আমার কাছে হারিয়ে যাওয়া এক স্বপ্নের নাম 'রেডিও তেহরান'। কখনো ভাবিনি আবার ফিরে পাব। কুড়িগ্রামের আবদুল কুদ্দুস ভাই-এর মাধ্যমে প্রিয় রেডিওকে ফিরে পেয়ে নতুন করে ভাবতে পারছি পুরোনো সেই দিনের কথা। রেডিও তেহরানকে পাওয়ার সাথে সাথে ফেসবুকের সৌজন্যে অনেক পুরোনো ও নতুন বন্ধুর দেখা পেয়েছি। রেডিও তেহরান-এর কলাকুশলীদের চমৎকার কণ্ঠে আবারো নানান রকমের অনুষ্ঠান শুনতে পেরে খুব ভালো লাগছে।"
গাজী আবদুর রশীদ: ভাই আশরাফ হোসেন, আপনাকে ফিরে পেয়ে আমাদেরও ভালো লাগছে। আশা করি আমাদের সঙ্গেই থাকবেন।
আসরের পরের মেইলটি এসেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার হটুদেওয়ান নাগেরপাড়া থেকে। আর পাঠিয়েছেন তপতী সরকার।
বৃষ্টিস্নাত বসন্তের দুপুরের একরাশ প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি চিঠিটি শুরু করেছেন তিনি।
আকতার জাহান: আমরাও বোন তপতী সরকারকে শুভ্র বরফের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
আশরাফুর রহমান: একদম সময়োপযোগী শুভেচ্ছা জানিয়েছেন আপনি। এবার তেহরানে সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় বরফ পড়েছে অনেক বেশি। আমাদের অফিসের চারপাশ একেবারে সাদা হয়ে গেছে। এমন দৃশ্য খুব কমই দেখা যায়।
গাজী আবদুর রশীদ: হ্যাঁ, ঠিকই বলেছেন আশরাফ ভাই। এবার আমরা খুবই এনজয় করেছি বরফের দিনগুলো। যাইহোক, এবার আমরা বোন তপতী সরকারের চিঠিটি পড়ছি। তিনি লিখেছেন, “২৬ ফেব্রুয়ারি প্রিয়জন অনুষ্ঠানে আসরে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের নয় জন শ্রোতার মেইল নিয়ে আলোচনা, আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব বাংলাদেশ ২০২৩ সালে রেডিও তেহরানের শ্রেষ্ঠ ক্লাব হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় ক্লাব সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী যুবরাজ মহাশয়ের বার্তা এবং ভারত ও বাংলাদেশের ছয় জন শ্রোতার মেইলের প্রাপ্তিস্বীকার করা হয়। বলাবাহুল্য, এই সপ্তাহেও আমার মেইল পড়া হয়। ধন্যবাদ তেহরান বেতারের পরিবেশকদের।”
আকতার জাহান: বোন তপতী সরকার আপনাকেও ধন্যবাদ নিয়মিত অনুষ্ঠান শোনার পাশাপাশি মতামত জানিয়ে ইমেইল করার জন্য।
শ্রোতাবন্ধুরা, আপনার নিশ্চয়ই জানেন যে, আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব বাংলাদেশ-এর রংপুর বিভাগীয় শাখা রেডিও তেহরান কর্তৃক ২০২৩ সালে শ্রেষ্ঠ কর্মমুখর শ্রোতা ক্লাবের শিরোপা জিতেছে। এ বিষয়ে আমরা কথা বলেছি ক্লাবের সভাপতি ডক্টর মো: মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বললেন:
আশরাফুর রহমান: রংপুর বিভাগে নবগঠিত আইআরআইবি ফ্যান ক্লাবের কর্মকাণ্ড ও সাফল্যের রহস্য সম্পর্কে বলছিলেন ডক্টর মোস্তাফিজ ভাই। তাকেসহ ক্লাবের সকল উপদেষ্টা ও সদস্যদেরকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
গাজী আবদুর রশীদ: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার নওদা থানার ছাতুমারা গ্রাম থেকে আজাদ পাওয়ার বিশ্বাস পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।
রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগের সমস্ত কলাকুশলীকে বাসন্তী শুভেচ্ছা তিনি লিখেছেন,”তেহরান সমস্ত নিপীড়িত,নিষ্পেষিত, বঞ্চিত মানুষের কণ্ঠস্বর। সমস্ত মানুষের প্রাণের স্পন্দন। সবসময় ধ্বনিত করে চলেছে প্রতিটি কণ্ঠস্বর,যে কণ্ঠস্বর ছড়িয়ে যেতে চায় বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে। জানান দিতে চায় সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর মুখোশের আড়ালে লুকানো রূপ। বিশ্বের যেকোনো গণমাধ্যমের চেয়ে নিজস্ব নিরপেক্ষ ব্যতিক্রমী স্বকীয়তা থাকায় রেডিও তেহরান সত্যিই অনন্য। তাই রেডিও তেহরান ছাড়া মনের চাহিদা মেটে না। রেডিও তেহরান আধুনিক বিশ্বকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস।”
আকতার জাহান: রেডিও তেহরান সম্পর্কে চমৎকার মূল্যায়নের জন্য আজাদ পাওয়ার বিশ্বাস আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার ডিমলা থানার মিয়া পাড়া থেকে মোঃ আজিনুর রহমান লিমন পাঠিয়েছেন আসরের এবারের মেইলটি।
রেডিও তেহরান সম্পর্কে তিনি লিখেছেন, “দেশ ও বিদেশ অঙ্গনে বাংলা বেতারের সংখ্যা অনেক। যেগুলো আমাদের জীবন চলার পথে অনেক দিকনির্দেশনা প্রদান করে থাকে। অনেক বেতার নান্দনিক অনুষ্ঠান প্রচার করে জীবনকে রঙিন করে তোলার চেষ্টা করে। কিন্তু আল্লাহ প্রদত্ত মানব জীবনকে দুনিয়ার রঙে নয়, আল্লাহর রঙে রঙিন করার প্রয়াসে নেমে পড়তে হবে। সেই প্রয়াসে জীবন পরিচালনার নির্দেশনামূলক অন্যতম একটি বেতারের নাম রেডিও তেহরান। রেডিও তেরানের অনুষ্ঠান মানে পবিত্র কুরআনুল কারিমের দিক নির্দেশনা। বিশ্ব যখন দিন দিন অন্ধকারাচ্ছন্নে পরিণত হওয়ার দিকে ধাবিত হচ্ছে,তখন রেডিও তেহরান তাদের প্রচারণা দিয়ে বিশ্বকে কুরআনের আলোয় আলোকিত করার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও গাজা ফিলিস্তিনের সঠিক সংবাদের একমাত্র বাহন হলো রেডিও তেহরান।”
আশরাফুর রহমান: রেডিও তেহরানের ভূমিকা সম্পর্কে সুন্দর মতামতের জন্য ভাই আজিনুর রহমান লিমন আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
আসরের পরের মেইলটি এসেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডি থেকে। আর পাঠিয়েছেন দেবাশীষ গোপ।
তিনি লিখেছেন, “পবিত্র শবে বরাত এবং ইমাম মাহদি আলাইহিস সালামের জন্মদিন উপলক্ষে প্রচারিত বিশেষ অনুষ্ঠানটি খুব ভালো লাগল। অনুষ্ঠান থেকে জানতে পারলাম যে, ১৫ই শাবান ইসলামের বিশেষ পবিত্র একটি দিন যা অনন্যসাধারণ। এটি মুসলমানদের গুনাহ মাফ করবার দিন। অনুষ্ঠান থেকে আরও জানতে পারলাম যে, ইমাম মাহদী যখন আসবেন তখন পৃথিবীতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি
আসবে। খুশির আবহাওয়া আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে পড়বে। মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ দেখা যাবে। আমরা সেই দিনের অপেক্ষায় আছি।“
গাজী আবদুর রশীদ: আমাদের একটি বিশেষ অনুষ্ঠান সম্পর্কে মতামত জানানোর জন্য ভাই দেবাশীষ গোপ আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসরের পরের মেইলটি এসেছে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার খাদিমপুর বাজার থেকে। আর লিখেছেন সিনিয়র শ্রোতা মোখলেছুর রহমান।
তিনি ২২, ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত অনুষ্ঠান সম্পর্কে মতামত জানিয়েছেন। লিখেছেন, “২৫ তারিখে সাপ্তাহিক ধারাবাহিক অনুষ্ঠান ‘দর্পন’-এর ২য় পর্বে ইউরোপে ইসলাম আতংকের নানা তৎপরতা সম্পর্কে তথ্যবহুল আলোচনাটি শুনে খুব খুশি হয়েছি। একইদিন ‘শেষ ত্রাণকর্তা’ নামক ধারাবাহিক অনুষ্ঠানে পবিত্র কুরআন ও হাদিসের আলোকে মানব জাতির শেষ ত্রাণকর্তা ইমাম মাহদি (আ.)-এর জীবন ইতিহাস সম্পর্কে চমৎকার আলোচনাটি শুনে আমার খুব ভালো লেগেছে।”
আকতার জাহান: মোখলেছ ভাইকে ধন্যবাদ নিয়মিত অনুষ্ঠান শোনার পর মতামত জানিয়ে চিঠি লিখার জন্য।
আজকের আসরের শেষ মেইলটি এসেছে বাংলাদেশের রাজবাড়ী জেলার চন্দনী গ্রাম থেকে। আর পাঠিয়েছেন ‘রাজবাড়ী জেলা বেতার শ্রোতা কমিটি’র সভাপতি শ্রী গোপী নাথ পাল্।
তিনি লিখেছেন, “গত ২৯ জানুয়ারি তারিখে প্রচারিত প্রিয়জন অনুষ্ঠানে আমার একটি লেখা ঠাঁই পেয়েছে। এজন্য আমি প্রিয়জনের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি আপনাদের নতুন শ্রোতাবন্ধু। আপনাদের অনুষ্ঠানগুলো আমার খুব ভালো লাগছে। আমি সেই সাথে আশা রাখছি আপনাদের সকল আয়োজন-এর সাথে থাকবো এবং নতুন শ্রোতা তৈরি করতে কাজ করব। বেতার হোক তথ্য, শিক্ষা ও বিনোদনের মাধ্যম।”
আশরাফুর রহমান: ভাই গোপী নাথ পাল্, রেডিও তেহরানের শ্রোতাবৃদ্ধিতে আপনি কাজ করবেন জেনে ভালো লাগল। চিঠি লিখার জন্য আপনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।
তো শ্রোতাবন্ধুরা, দেখতে দেখতে আমাদের আসরের জন্য নির্ধারিত সময় প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। অনুষ্ঠান থেকে বিদায় নেওয়ার আগে আপনাদের জন্য রয়েছে একটি দেশাত্ববোধক গান। 'সবুজের বুকে লাল' শিরোনামের গানটির কথা ও সুর মিলটন খন্দকারের। আর শিল্পী আসিফ আকবর।
গাজী আবদুর রশীদ: তো বন্ধুরা, আপনারা গানটি শুনতে থাকুন আর আমরা বিদায় নিচ্ছি প্রিয়জনের আজকের আসর থেকে।
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৭