নভেম্বর ২৭, ২০১৯ ১৬:৩৩ Asia/Dhaka
  • ঢাকা ও কোলকাতার পত্রপত্রিকার সব গুরুত্বপূর্ণ খবর
    ঢাকা ও কোলকাতার পত্রপত্রিকার সব গুরুত্বপূর্ণ খবর

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ২৭ নভেম্বর বুধবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি বাবুল আখতার। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • হোলি আর্টিজানে হামলায় সাত জঙ্গির ফাঁসির দণ্ড, একজন খালাস-দৈনিক প্রথম আলো
  • আইএসের টুপিসহ এজলাসে, তদন্তের ঘোষণা আইনমন্ত্রীর- কালেরকণ্ঠ
  • ঘরকে শাস্তি দিয়ে পরকে শেখাব: কাদের-দৈনিক যুগান্তর
  • বিমানবন্দর থেকে মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক গ্রেফতার-দৈনিক ইত্তেফাক
  • এ রায় বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী-দৈনিক মানবজমিন
  • রাজপথে অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সাংবিধানিক অধিকার : রিজভী

ভারতের শিরোনাম:  

  • রাজ্যপাল-উদ্ধব বৈঠক, মহারাষ্ট্রে কারা মন্ত্রী হবেন? শরদের সঙ্গে আলোচনায় কংগ্রেস-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
  • মহারাষ্ট্রে বিরোধী জোটের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকতে পারেন মমতা ব্যানার্জি -দৈনিক আজকাল
  • বাংলার বিধানসভা ভোটের সঙ্গে এনআরসির সম্পর্ক নেই, বললেন অমিত শাহ-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

পাঠক/শ্রোতা! এবারে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাব। জনাব সিরাজুল ইসলাম কথাবার্তার আসরে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি।

১. ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজলের বিরুদ্ধে হাজার কোটি টাকার অনিয়মের রিপোর্ট চূড়ান্ত করেছে সিভিল অডিট অধিদফতর। বিষয়টি নিয়ে কী বলবেন আপনি?
২. লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি বলেছেন, তিনি পরবর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হতে আগ্রহী নন। সে ক্ষেত্রে দেশটিতে নতুন করে রাজনৈতিক জটিলতা তৈরি হতে যাচ্ছে বলে মনে হয় আপনার?

জনাব সিরাজুল ইসলাম আপনাকে আবারো ধন্যবাদ

হোলি আর্টিজানে হামলায় সাত জঙ্গির ফাঁসির দণ্ড, একজন খালাস-দৈনিক প্রথম আলো

 তিন বছর আগে হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় করা মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। রায়ে ৮ আসামির মধ্যে ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ১ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

বিচার শুরু হওয়ার এক বছরের মাথায় আজ বুধবার বহুল আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা করলেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল।

ফাঁসির দণ্ড পাওয়া সাত আসামি হলেন রাকিবুল ইসলাম রিগ্যান ওরফে রাফিউল ইসলাম, রাজীব গান্ধী ওরফে জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ আসলাম হোসেন ওরফে র‍্যাশ, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মোহাম্মদ হাদিসুর রহমান সাগর ওরফে সাগর, মামুনুর রশিদ রিপন, শরিফুল ইসলাম খালেদ। আর খালাস পেয়েছেন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।

২০১৬ সালের ১ জুলাই হোলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়ংকর জঙ্গি হামলা স্তম্ভিত করেছিল পুরো বাংলাদেশকে।

২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এই হামলা মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। গত এক বছরে রাষ্ট্রপক্ষ এই হামলা মামলায় ১১৩ জন সাক্ষী হাজির করেছে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন নিহত পুলিশ সদস্যদের স্বজন, হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে আহত পুলিশ, হোলি আর্টিজান বেকারির মালিক ও কর্মী, জিম্মি হয়ে পড়া অতিথি এবং যেসব বাড়িতে আস্তানা গেড়ে নৃশংস এই হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, সেসব বাড়ির মালিকেরা।

আসলাস হোসেন, রাজীব গান্ধী ওরফে জাহাঙ্গীর আলম, মামুনুর রশিদ, রাকিবুল ইসলাম রিগ্যান, শরিফুল ইসলাম, সোহেল মাহফুজ ও হাদিসুর রহমান।

২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার গুলশানে ভয়াবহ ওই হামলার ঘটনা স্তম্ভিত করেছিল পুরো বাংলাদেশকে। একই সঙ্গে স্পষ্ট হয়েছিল জঙ্গিবাদের বিস্তারের এক বিপজ্জনক মাত্রা।

জঙ্গিরা হত্যা করেছিলেন ২০ জন দেশি-বিদেশি নাগরিককে, যাঁদের মধ্যে ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, ১ জন ভারতীয় ও ৩ জন বাংলাদেশি।

পুলিশের তদন্তে এসেছে, এই হামলায় জড়িত গোষ্ঠীর নাম নব্য জেএমবি, যারা ঘটনার পর নিজেদের আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস (ইসলামিক স্টেট) বলে দাবি করেছিল।

ওই ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একের পর এক অভিযান চালিয়েছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায়, ভেঙে দিয়েছে জঙ্গিদের অনেক আস্তানা। এসব অভিযানে নিহত হয়েছেন হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী তামিম চৌধুরীসহ জড়িত গুরুত্বপূর্ণ আট জঙ্গি। আক্রমণকারী পাঁচজন নিহত হন ঘটনার পরদিন সকালে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে। এ ঘটনায় জড়িত জীবিত থাকা আট জঙ্গি কারাগারে আছেন। তাঁদের বিচারের রায় ঘোষণা হলো আজ।

আইএসের টুপিসহ এজলাসে, তদন্তের ঘোষণা আইনমন্ত্রীর- কালেরকণ্ঠ- কালেরকণ্ঠ

হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা মামলার রায়ে সরকার সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এছাড়া আইএসের টুপিসহ এজলাসে আসামির প্রবেশের ঘটনাটি তদন্ত করা হবে বলে ঘোষণা করেছেন আইনমন্ত্রী।

আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় তিনি এ কথা জানান। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে হলি আর্টিজান মামলাটির রায় ঘোষণার পর এ প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

এক প্রশ্নের জবাবে আইএসের প্রতীক সম্বলিত টুপি পরে আসামির এজলাসে যাওয়া প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, এ প্রশ্নের জবাব আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে এ ব্যাপারটার তদন্ত হওয়া উচিত। তদন্ত যেন হয়, সেজন্য এ প্রেস কনফারেন্স শেষ করেই কথা বলবো আমি।

আমি সরকারের পক্ষ থেকে বলছি, আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, এরকম চাঞ্চল্যকর এবং যেসব মামলা দেশের শেকড়ে গিয়ে ধাক্কা দেয়, সেসব ঘটনার বিচার দ্রুত শেষ করতে পারছি, এটাও সন্তুষ্টির কারণ।

তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনাটি যখন ঘটেছিল ১ জুলাই, সেসময়ই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন, এসব অপরাধীদের দ্রুত বিচার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সে কথারই সত্যতা প্রমাণ হলো আজ। আমরা এ বিচার কার্যক্রম ও রায়ে সন্তুষ্ট।’

ঘরকে শাস্তি দিয়ে পরকে শেখাব: কাদের-দৈনিক যুগান্তর-দৈনিক যুগান্তর

মাদক, দুর্নীতি ও টেন্ডারবাজির বিরুদ্ধ চলমান শুদ্ধি অভিযানের প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে। আগে ঘরের লোকের শাস্তি দেব। তারপর পরের লোকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা ঘরকে শাস্তি দিয়ে পরকে শেখাব।

বুধবার দুপুরে যশোর ঈদগাহ ময়দানে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা দীর্ঘদিন দলে পদ পাননি, তাদের পদ দিতে হবে। এসব লোক নেতাদের পিছ পিছ ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু কোনো পদ পান না, তারা দল করেও পরিচয় দিতে পারেন না। দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগ, যুবলীগ করছেন, আওয়ামী লীগে কোনো পদ নেই, তাদের সামনে নিয়ে আসা হবে। ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মৌসুমী পাখিদের গুরুত্ব দেয়া যাবে না। দলের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করতে হবে। আন্দোলন সংগ্রামের সময় মৌসুমী পাখিদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।

নেতাদের সঠিক আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, নেতাদের আচরণ ভালো করতে হবে। কারণ একটি খারাপ আচরণে দশটি উন্নয়ন ঢেকে যাবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের দুষিত রক্তের দরকার নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ চায় বিশুদ্ধ রক্ত। দূষিত রক্তের দরকার নেই। আওয়ামী লীগে বিশুদ্ধ রক্তের অভাব নেই।

দলের ত্যাগী কর্মীদের খোঁজখবর নেয়ার তাগিদ দিয়ে নেতাদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের অনেক নেতাকর্মী আছেন, যারা দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। এখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেও তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। কিছু নেতার কপাল খুলেছে। কিন্তু ত্যাগী নেতাদের অনেকেই এখনো কুড়োঘরে বসবাস করেন। ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে পারেন না। অনেকে অসুস্থ আছেন। চিকিৎসা করাতে পারছে না। দলের নেতাকর্মীদের চিকিৎসার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার দরজা খোলা। প্রয়োজনে তিনি বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। আপনার আমাদের জানাবেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য্য। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সদস্য এস এম কামাল হোসেন, পারভীন জামান কল্পনা।

উল্লেখ্য, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। ওই সম্মেলনে শহিদুল ইসলাম মিলনকে সভাপতি ও শাহিন চাকলাদারকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়। পরে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা আওয়ামী লীড়ের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এবারের সম্মেলনে ৪৫৫ জন কাউন্সিলর ও প্রায় ১১ হাজার প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন।

বিমানবন্দর থেকে মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক গ্রেফতার-দৈনিক ইত্তেফাক

বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে হাইকোর্টের সামনে গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার ভোর রাতে তাকে গ্রেফতারের পর শাহবাগ থানায় নেয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান।

সাজ্জাদুর রহমান জানান, গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্ট এলাকায় পুলিশের ওপর হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা এক মামলায় রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে শাহবাগ থানায় নেয়া হয়।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতের একটি ফ্লাইটে তিনি মালয়েশিয়া যাচ্ছিলেন। সেখান থেকে আমেরিকা যাওয়ার কথা ছিল উলফাতের। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা হাইকোর্টের সামনে অবস্থান নেন। দুপুর ২টার দিকে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে লাঠিচার্জ ও বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।

পুলিশের ধাওয়ায় নেতাকর্মীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। গাড়ি ভাঙচুর করতে করতে বিক্ষুব্ধ কর্মীরা সটকে পড়ে। এতে কিছু সময়ের জন্য ওই এলাকা যেন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে পুলিশ বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ৫০০ জনের নামে একটি মামলা হয়। মামলা নং ৩২।

রাজপথে অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সাংবিধানিক অধিকার: রিজভী-দৈনিক নয়াদিগন্ত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে তো গণতন্ত্র। দেশে গণতন্ত্র থাকলে রাজপথে অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হবে এটা সাংবিধানিক অধিকার। বুধবার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও বিনামূল্যে ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচির আয়োজন করে বেসরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ ছাত্রদল। সংগঠনের সভাপতি এএসএম রাকিবুল ইসলাম আকাশের সভাপতিত্বে কর্মসূচির উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লাবিদ রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, বেসরকারী মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক তানজীম রুবাইয়াত আফিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক লিংকন ভুইয়া প্রমুখ।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তারেক রহমান পরিশ্রমী রাজনীতিবিদ। তিনি আগামী দিনের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। যিনি বাংলাদেশের অসহায় দরিদ্র মানুষের মধ্যে স্বাবলম্বী করার নানাবিধ কাজ করেছেন। আসলে তার রাজনীতি শুরুই হয়েছে মানবকল্যাণের মধ্য দিয়ে। যা কুচক্রী মহল ভালোভাবে নেয়নি। তারা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে কুৎসা রটিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ টাটকা ডাহা মিথ্যা কথা বলে। কারণ জনগণের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আলো ও ন্যায়ের পথে। যারা প্রকৃত সাহসী তারাই মানবতার পক্ষে। ছাত্রদলের রক্তদান কর্মসূচি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। যারা ক্যাসিনো আর জুয়ার পক্ষে তারা তো আলোর পথে নেই।

রিজভী বলেন, আমরা গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন করছি। হামলা, গুলি মামলা উপেক্ষা করে রাজপথে পেশাজীবী ও মুক্তিযোদ্ধারা নেমে পড়েছে। গতকাল আপনারা রাজপথে তার দেখেছেন। আজকে মুক্তিযুদ্ধের শহীদ পরিবারের সন্তান জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতকে গ্রেফতার করেছে রাতের অন্ধকারে।

তিনি আরো বলেন, দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে তো গণতন্ত্র। দেশে গণতন্ত্র থাকলে রাজপথে অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হবে এটা সাংবিধানিক অধিকার। আর আপনি সেসময় মুক্তিযোদ্ধা উলফাতকে গ্রেফতার করেন। আসলে আপনার মন তো রাজাকার দ্বারা আচ্ছাদিত। সারাদিন রাজাকারদের বিরুদ্ধে কথা বলেন। তাহলে রাজাকারদের পেঁয়াজ আমদানি করলেন কেন? জিয়া আধুনিক সেনাবাহিনী গঠন করেছিলেন। অথচ ৭২-৭৫ সালে সেনাবাহিনীর পায়ে রাবারের জুতা দেয়া হতো।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আজকে পুশইন করে ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে ঢোকানো হচ্ছে। কই সেখানে তো একটা কথাও বলেন না। আর বিএনপির নেতা কোনো কথা বললে তার বিরুদ্ধে মামলা আর হামলা।

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, তারেক রহমান বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। তিনিই প্রথম ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করেছেন। আজকে আমাদের সম্পদ চুরি করে আওয়ামী লীগ তাদের বলে প্রচার করছে। বিএনপির আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে আওয়ামী লীগ এখন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ মেনে নিয়েছে। কারণ আওয়ামী লীগের মূলনীতি বাঙালি জাতীয়তাবাদ। সুতরাং তারা বিএনপির বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে। পেঁয়াজ ব্যবসায়ীকে মন্ত্রী বানালে পেয়াজের দাম কমে না। ব্যাংক ব্যবসায়ীকে অর্থমন্ত্রী বানালে অর্থনীতি ধ্বংস হবে এটাই স্বাভাবিক। আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবো ইনশাআল্লাহ।

এ রায় বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী-দৈনিক মানবজমিন

রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরায় হামলার বিচার একটি দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেছেন, হলি আর্টিজান হামলার বিচারের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।আজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রী একথা বলেন।

Image Caption

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হলি আর্টিজানের ঘটনায় আমরা সন্ত্রাসীদের বিচারের মুখোমুখি করেছি। ইউরোপ-আমেরিকায় এমন ঘটনায় সবাইকে মেরে ফেলা হয়। তবে আমরা কিছু মেরেছি, আর বাকিদের বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি।তিনি বলেন, এই বিচার অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। সন্ত্রাস প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে।উল্লেখ্য, ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান আজ দুপুরে ওই হামলা মামলায় ৮ আসামীর মধ্যে সাতজনের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেছেন। খালাস দেয়া হয়েছে একজনকে।।

এবার ভারতের বিস্তারিত খবর তুলে ধরছি

রাজ্যপাল-উদ্ধব বৈঠক, মহারাষ্ট্রে কারা মন্ত্রী হবেন? শরদের সঙ্গে আলোচনায় কংগ্রেস-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা

রাজ্যপালের আমন্ত্রণ মেলার পর সরকার গঠনে তৎপরতা বেড়েছে মহারাষ্ট্রের তিন দলীয় জোটে। বিধানসভায় শপথ গ্রহণের মাঝেই  রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করলেন উদ্ধব ঠাকর। অন্য দিকে, মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম বাছাইয়ের বিষয়ে তৎপর হল কংগ্রেস। এরই মাঝে চলছে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে উদ্ধব ঠাকরের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অতিথি আমন্ত্রণের কাজও।

বুধবার সকালে বিধানসভায় শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের মাঝেই রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারীর সঙ্গে দেখা করেন সস্ত্রীক উদ্ধব ঠাকরে। রাজভবনের ওই বৈঠককে সৌজন্যমূলক বলে জানানো হয়েছে। যদিও তাতে সরকার গঠন করা নিয়ে দু’জনের আলোচনা হয়েছে বলে রাজনৈতিক পরযবেক্ষকদের ধারণা।

আগামিকাল, বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে উদ্ধবের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। তাতে কাদের অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ জানানো হবে, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা  শুরু করে দিয়েছেন জোটের শীর্ষ নেতারা। তবে প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়েছে, ওই তালিকা থেকে চূড়ান্ত ভাবে অতিথিদের নাম বাছাই করবেন এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার। এ দিন দুপুরে তাঁর বাসভবনে গিয়ে দেখা করবেন কংগ্রেস নেতারা। তবে প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে, আগামিকালের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। আমন্ত্রণপত্র যাবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল, অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নায়ডু, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত এবং উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের নামেও। তবে আগামিকালের অনুষ্ঠানে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী বা রাহুল গাঁধী উপস্থিত থাকতে পারবেন কি না, তা নিশ্চিত নয়।

শরদের বাড়িতে এ দিন পৌঁছন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং আহমেদ পটেল। শরদের সঙ্গে মন্ত্রিসভার সদস্যদের প্রস্তাবিত নাম নিয়েও আলোচনা হয় তাঁদের। প্রাথমিক ভাবে ঠিক ছিল, উপমুখ্যমন্ত্রী হবেন এনসিপির জয়ন্ত পাটিল ও কংগ্রেসের বালাসাহেব থোরাট। তবে থোরাট বলেন, উপমুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’’ দফতর বণ্টন নিয়ে আগামী দু’দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন থোরাট। তবে স্পিকারের পদ নিয়ে কংগ্রেসের মনোভাব নমনীয় হয়েছে বলে সূত্রের খবর। যদিও তার পরিবর্তে কংগ্রেস থেকে ৯ জনকে পূর্ণমন্ত্রী এবং ৪ জনকে রাষ্ট্রমন্ত্রী করা হবে বলে আপাতত স্থির হয়েছে।  

সরকার গঠনের তৎপরতার মধ্যেই শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি জোটের সঙ্ঘবদ্ধ ছবিটা আরও স্পষ্ট হয়েছে। বিধানসভায় শপথ গ্রহণের আগে শরদ-কন্যা সুপ্রিয়া সুলের থেকে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়েছেন দিন কয়েক আগে বিজেপি শিবিরে হাত মেলানো এনসিপি নেতা অজিত পওয়ার। শনিবার ফডণবীসের সঙ্গে উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার গত কাল দুপুরে আচমকাই ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। এ দিন বিধায়ক হিসাবে শপথের পর অজিত বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরই ইস্তফার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’’ জোট-শিবিরে ফিরলেও তাঁকে নিয়ে এনসিপি যা সিদ্ধান্ত নেবে, তা মেনে নেবেন বলেও মন্তব্য করেছেন অজিত। এ দিন মুম্বইয়ে এনসিপি বিধায়কদের বৈঠকে যোগ দেন তিনি। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ছগন ভুজবল, পরিষদীয় নেতা জয়ন্ত পাটিল, দিলীপ পাটিল-সহ দলের শীর্ষ নেতা।

জোট-শিবিরে সরকার গড়ার তৎপরটা বাড়লেও বিজেপি শিবিরে যেন ছন্নছাড়া অবস্থা। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েও আস্থাভোটের আগে ইস্তফা দেওয়া বিজেপির দেবেন্দ্র ফডণবীসের স্বীকারোক্তি, অজিত পওয়ারের হাত ধরাটাই একটা ভুল। তিনি বলেন, ‘‘চিন্তা করবেন না, সঠিক সময়ে সঠিক কথা বলব।’’ তবে সেই সঠিক সময় কখন আসবে, তা খোলসা করেননি ফডণবীস।

মহারাষ্ট্রে বিরোধী জোটের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকতে পারেন মমতা ব্যানার্জি -দৈনিক আজকাল

টানটান নাটকের যবনিকা পতনের পর এখন নতুন সকাল শিবসেনা–এনসিপি–কংগ্রেসের জন্য। হ্যাঁ, তা অবশ্যই মারাঠা ভূমি মহারাষ্ট্রে। আর এই নাটকের ক্লাইম্যাক্স যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে ছিল তখন কথা হয় সোনিয়া গান্ধী–মমতা ব্যানার্জির মধ্যে। আসলে বিরোধী জোটের সূচনা তো বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরেই। তাই এই মহারাষ্ট্রের শিবাজি পার্কের ঐতিহাসিক শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করা হল বাংলার নেত্রীকে। সেখানে শপথ নেবেন শিবসেনার সুপ্রিমো উদ্ধব ঠাকরে। শপথ নেবেন দুই উপ–মুখ্যমন্ত্রীও।

আর মমতার উপস্থিতি সেখানে দীর্ঘ লড়াইয়ের বৃত্তকে পূর্ণ করবে। মারাঠা স্ট্রংম্যান শারদ পাওয়ারও অবশ্য তাই চান। একই অভিমত কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর। আর এটা বেশি করে চান শিবসেনা প্রধানও। আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলিকে এককাট্টা করতে যখন মরিয়া হযে উঠেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তখন দেখা করেছিলেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধবের সঙ্গেও। তারপর কেটে গিয়েছে অনেকটা সময়। কিন্তু ভোলেননি উদ্ধব ঠাকরে। তাই তাঁর শপথ অনুষ্ঠানে মমতা ব্যানার্জি থাকবে না তা কী হয়!‌ না তা যে হয় না, সেটা প্রমাণ করলেন নেত্রীকে ফোন করে আমন্ত্রণ করে বলে সূত্রের খবর। আর এই শপথ অনুষ্ঠানের মধ্যমণি হতে চলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ‌‌

বাংলার বিধানসভা ভোটের সঙ্গে এনআরসির সম্পর্ক নেই, বললেন অমিত শাহ-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

দেশজুড়ে এনআরসি হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন। সেই বক্তব্যেই অনড় থাকলেন অমিত শাহ। ফের স্পষ্ট ভাষায় বললেন, “আমি ভাল করে সবাইকে জানিয়ে দিতে চাই যে দেশে এনআরসি তৈরি হবে এবং তা সারা দেশেই হবে।” তবে একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এদিন জানিয়ে দিলেন পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের সঙ্গে এনআরসির কোনও সম্পর্ক নেই। বুধবার একটি সংবাদমাধ‌্যমের সাক্ষাৎকারে শাহ বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নাম না করে বলেন, “যে সব দল এনআরসির বিরোধিতা করছে তাদের আমি দেশের জনতার সামনে প্রকাশ্যে জানতে চাইছি, দেশের সব মানুষের জন‌্য একটা রেজিস্টার থাকা কি জরুরি নয়? না কি ধর্মশালার মতো দেশের চলা উচিত?”

অসমের জাতীয় নাগরিকপঞ্জির পর বাংলায় এনআরসি হতে দেবেন না বলে আগেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই ঘোষণার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন বাংলার মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে প্রসঙ্গে অমিত শাহর বক্তব‌্য জানতে চাওয়া হলে তিনি এদিন বলেন, “মমতা ব‌্যানার্জি কী ঠিক বলবেন বা এ ব‌্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেবেন তা আমি ঠিক করতে পারি না।” আগামী বিধানসভা ভোটে এই এনআরসি ইস্যুতে মমতা যে বিজেপিকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করবেন তা অনুমান করেই আগাম এদিন দলের নীতি স্পষ্ট করে দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ

বাংলাদেশ থেকে দীর্ঘদিন আগে ভারতে আসা শরণার্থীদের এ দেশের নাগরিক হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে সরব হন মমতা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেন, “শ্রীলঙ্কা থেকে যখন তামিলরা এসেছিল, উগান্ডা থেকে যখন উদ্বাস্তুরা এসেছিল তখন তো কেউ প্রতিবাদ করেনি? পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশে নানা হামলা-অশান্তিতে যখন মানুষ নিপীড়িত হয়, তখন তারা আর কোথায় যাবে?” সব ধর্মের মানুষই এনআরসি আওতায় আসবেন তা ফের স্পষ্ট করে অমিত শাহ এদিন বলেন, “এনআরসিতে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ নেই। নাগরিক সংশোধনী বিলে হিন্দুদের মতোই বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি ও খ্রিস্টান শরণার্থীদেরও আমরা নাগরিকত্ব দেব।” যদিও এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী স্পষ্ট করেননি কোন সালে আসা উদ্বাস্তুদের ভারতের বৈধ নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কাদের দেওয়া হবে না। যাঁরা এ দেশে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করা সত্ত্বেও সবক’টি প্রয়োজনীয় নথি দিয়ে নাগরিকত্বের প্রমাণ দেখাতে পারবেন না অসমের এনআরসি তালিকায় নাম না থাকা ব‌্যক্তিদের মতো তাঁদেরও কোনও ডিটেনশন ক‌্যাম্পে রাখা হবে কি না তা অবশ‌্য স্পষ্ট করেননি শাহ।

কয়েক সপ্তাহ আগেও রাজ‌্যসভায় এনআরসি নিয়ে বক্তব‌্য রাখতে গিয়ে শাহ বলেছিলেন, “সারা দেশে এনআরসি হবে। তবে কোনও ধর্মের মানুষের ভয়ের কারণ নেই। সবাইকে এনআরসির আওতায় আনার জন‌্য এটা একটা অত‌্যন্ত সাধারণ পদ্ধতি। অসমেও ফের নতুন এনআরসি হবে।” একইসঙ্গে তিনি এই এনআরসি আর নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল এক নয় বলে দাবি করেছেন। অসমে এনআরসি তালিকায় নাম না ওঠা ব‌্যক্তিদের আতঙ্ক কমানোরও ব‌ার্তা দেন অমিত শাহ। এনআরসির খসড়ায় যঁাদের নাম নেই তঁাদের ট্রাইবুনালে গিয়ে আবেদন করার অধিকার দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। অসমের ট্রাইবুনালে আবেদন করার অর্থ না থাকলে সেই ব‌্যক্তিকে অসম সরকার আইনজীবীর খরচ দিয়ে সাহায‌্য করা হচ্ছে। এদিন এনআরসি ছাড়াও মহারাষ্ট্র সরকার বিজেপির হাতছাড়া হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গেও মুখ খুলেছেন অমিত শাহ। এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারের বিধায়কদের সই নিয়ে মহারাষ্ট্রে দেবেন্দ্র ফড়নবিসের সঙ্গে দেখা করা প্রসঙ্গে শাহ বলেন, “অজিত পাওয়ার সেই সময় বিধায়কদের সই এনে বিজেপিকে দেখিয়েছিল। তাই ওদের সাহায্য নিয়েই বিজেপি মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ে। এতে অসাংবিধানিক কিছু হয়নি। নির্বাচনের আগে শিবসেনার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী পদের ভাগাভাগি নিয়ে কোনও রফা হয়নি।”

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

পার্সটুডে/এমবিএ/২৭

ট্যাগ