'সৌদি আরবসহ কয়েকটি মুসলিম দেশের দালালির কারণে আল-কুদস মুক্ত হচ্ছে না'
ইরানের ইসলামী বিপ্লবের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম খোমেনী(র.)এর আল-কুদস দিবসের ঘোষণা কালজয়ী। রাজনৈতিক কারণে সৌদি আরবসহ কয়েকটি মুসলিম দেশ বিশ্ব আল-কুদস দিবসকে গুরুত্ব দিচ্ছে না এবং তাদের দালালির কারণে আল-কুদস মুক্ত হচ্ছে না। রেডিও তেহরানকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন, আল-কুদস কমিটি বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মোস্তফা তারেকুল হাসান।
তিনি আরও বলেন, মুসলমানদের প্রথম কেবলা মসজিদুল আকসা নিয়ে আমাদের সাধারণের মধ্যে বড় বেশি রকমের অজ্ঞতা রয়েছে। আমাদের ঈমানি দুর্বলতা রয়েছে। তবে আশাকরি জেরুজালেম-আল-কুদস মুক্ত হবে।
পুরো সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো। এটি গ্রহণ ও উপস্থাপনা করেছেন গাজী আবদুর রশীদ।
রেডিও তেহরান: জনাব অধ্যাপক মোস্তফা তারেকুল হাসান, ইরানের ইসলামী বিপ্লবের প্রতিষ্ঠাতা হযরত ইমাম খোমেনী (র.) রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে আন্তর্জাতিক কুদস দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন এবং সেই থেকে প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। প্রশ্ন হচ্ছে- এ পর্যন্ত এ দিবস মুসলিম বিশ্বের উপর কি প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছে?
মোস্তফা তারেকুল হাসান: বিশ্ব কুদস দিবস উপলক্ষে আপনার প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যেমনটি বললেন, ইরানের ইসলামী বিপ্লবের প্রতিষ্ঠাতা হযরত ইমাম খোমেনী (র.) রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে আন্তর্জাতিক কুদস দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। আমরা জানি ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী মানুষ এবং মুসলমানদের প্রথম কেবলা আল-কুদস ইহুদিবাদী ইসরাইলের হাতে বন্দি অবস্থায় আছে। আল কুদস ও নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের মুক্তির জন্য মূলত এ ঘোষণা দেন তিনি। ফলে ইমাম খোমেনী (র.)এর কুদস দিবসের ঘোষণা একটি কালজয়ী ঘোষণা।
আমরা যারা মুসলমান, আমাদের চেতনায় যাঁদের মধ্যে জেরুজালেম আল-কুদস আছে এবং ফিলিস্তিনের মুসলমানদের জন্য কান্না আছে; তাদের জন্য ইমাম খামেনী (র.) এর আল –কুদস দিবসের ঘোষণা একটা ম্যাগনাকার্টা। এটি একটি বড় দিক নির্দেশনামূলক ঘোষণা। আর ঐ ঘোষণা অত্যন্ত সময়োপযোগী। আর সেই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিশ্বের সাথে সাথে বাংলাদেশে আমরা পবিত্র রমজান মাসের শেষ শুক্রবার বিশ্ব কুদস-দিবস পালন করি।
আপনার প্রশ্নের মধ্যে আছে এই বিশ্ব কুদস-দিবস গোটা বিশ্বের উপর কি প্রভাব ফেলতে পেরেছে। আমি যতটুকু জানি বিশ্ব-কুদস দিবস, ইরান, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই পালিত হয়। কেবলমাত্র মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ ছাড়া। সারা পৃথিবীর মানুষ এই বিশ্ব কুদস-দিবসকে জানে,চেনে এবং পালন করে। এ দিবসে নানা ধরনের অনুষ্ঠান বিশ্বব্যাপী হয়ে থাকে।
রেডিও তেহরান: বলা হয়ে থাকে-মুসলিম বিশ্ব যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতো তাহলে ইহুদিবাদী ইসরাইল আল-আকসা মসজিদ বা বায়তুল মুকাদ্দাসকে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারত না। আপনার কি তাই মনে হয়? অনেকে বলে থাকেন আল-কুদস ইস্যুতে সৌদিসহ কয়েকটি আরব দেশের ভূমিকা লজ্জাজনক। আপনার মন্তব্য কি?
মোস্তফা তারেকুল হাসান: দেখুন, এটি আমাদের মুসলমানদের জন্য খুবই দুঃখজনক ব্যাপার। আমরা আল-কুদস মুক্তির জন্য বিশ্বব্যাপী ঐক্যবদ্ধভাবে দিবসটি পালন করতে পারছি না। পারছি না বিভিন্ন দেশের শাসক শ্রেণির কারণে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশের শাসক শ্রেণির মোড়ল হচ্ছে সৌদি আরব। আমাদের মুসলমানদের এখন মূল কেবলা হচ্ছে সৌদি আরব। আমরা সব সময় আশা করি মূল ডাক বা আহ্বানটা সেখান থেকেই আসবে। তাদের অগ্রণী ভূমিকা থাকবে। কিন্তু খুবই দুঃখজনক তারা উলঙ্গভাবে সাম্রাজ্যবাদী ও ইহুদিবাদীদের দালালি করছে। তারা রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ইরানের বিরোধীতা করছে এবং যেহেতু বিশ্ব-কুদস দিবসটি ইমাম খোমেনী (র.) এর ঘোষণা সে কারণে সৌদি আরব এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।
আমি ১৯১৬ সালে মূল হজে গিয়েছিলাম। এরপর উমরাহ হজেও গিয়েছিলাম। আমি যতটুকু ভাঙা ভাঙা আরবি জানি তা দিয়েই সৌদিদের সাথে আল-কুদস এবং মসজিদুল আকসা'র বিষয়ে আলাপ করেছি। আমি দেখেছি, খোদ মক্কা এবং মদিনার স্থানীয় আলেমদের চেতনায় রয়েছে আল-কুদস এবং মসজিদুল আকসা। তারা বিষয়টি খুব ভালোভাবেই জানে। বিষয়টি তো পবিত্র কুরআনে আছে। মসজিদুল আকসা আমাদের প্রথম কেবলা। এখান থেকেই রাসূল (সা.)মেরাজে গিয়েছিলেন। ফলে এরসাথে আমাদের স্মৃতি বিজড়িত। এই চেতনা তাদের মধ্যে আছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য সৌদি আরবের মোড়লিপনায় এবং তাদের নেতৃত্বের মধ্যে সাম্রাজ্যবাদীদের দালালির কারণে সমগ্র বিশ্বের মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধভাবে আল-কুদস মুক্তির আন্দোলনে একত্রিত হতে পারছে না।
আমরা যারা তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে আছি। আমরাতো তো আসলে উন্নয়নশীল দেশ। আমরা এবং আমাদের দেশের শাসকশ্রেণি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সাম্রাজ্যবাদীদের কাছে দায়বদ্ধ ও দালালি করে থাকে। এতেই তো সবকিছু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা এ কারণেই মূলত ঐক্যবদ্ধ হতে পারছি না। যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারতাম তাহলে নিঃসন্দেহে কোনোভাবেই জেরুজালেম আল-কুদস ইসরাইলের দখলে থাকত না। ইসরাইল তো ফুৎকারে উড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য আজও সেটা করা সম্ভ হয় নি। তবে আমি বিশ্বাস করি সেটা সম্ভব হবে। কারণ আল্লাহর স্পষ্ট নির্দেশ আছে 'আমরা পরস্পর যেন বিচ্ছিন্ন না হই, ঐক্যবদ্ধভাবে থাকি।' তো ইনশাআল্লাহ আমরা একদিন ইমাম খোমেনী র.এর ঘোষণায় সবাই ঐক্যবদ্ধ হব। আর সেদিন আমরা আল-কুদস মুক্ত করব, ফিলিস্তিনি ভাইদের মুক্ত করব বলে আমি বিশ্বাস করি।
রেডিও তেহরান: দীর্ঘদিন ধরে আল-কুদস দিবস পালন করা হলো এবং এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক কমিটি থাকা সত্ত্বেও এই আন্দোলনটা যে অবস্থানে এসেছে আপনি কি মনে করেন এত সময় পর তা আরো বেশি শক্তিশালী বা জোরদার হওয়া উচিত ছিল? যদি তাই মনে করেন তাহলে কোন আন্দোলন জোরদার করার উপায় কি?
মোস্তফা তারেকুল হাসান: আপনি চমৎকার একটি বিষয়ে প্রশ্ন করলেন। দেখুন, এ বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিবছর বিশ্ব আল-কুদস দিবসে আমাদের সেমিনারগুলোতে আলোচনা করি। আমরা গভীরভাবে উপলব্ধি করি যে আল-কুদস মুক্ত করার আন্দোলনটা মোটেও জোরাল হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে আমরা যেন খুব বেশি মাথা ঘামাচ্ছি না।
এর মূল কারণ হিসেবে আমার কাছে মনে হয়েছে, আমাদের ঈমানি চেতনায় দুর্বলতা রয়েছে। এ আন্দোলনটি সারা বিশ্ব জুড়ে আরও জোরাল হওয়া দরকার বলে আমি মনে করি। আরও বেশি প্রচার-প্রচারণা হওয়া দরকার।
দেখুন, আসলে মানুষের মধ্যে অজ্ঞতা অনেক বেশি। আল-কুদস মুক্তির আন্দোলন নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমার কাছে অজ্ঞতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। আমাদের মুসলমানদের বর্তমান কেবলা সম্পর্কেও কতটুকু ধারণা আছে! আর আমাদের আগের কেবলা মসজিদুল আকসা সম্পর্কেই বা মুসলমানারা কতটুকু ধারণা রাখেন। মসজিদুল আকসা মুক্তির আন্দোলনের মূল শক্তি যে সাধারণ মানুষ; তাঁরা আসলে বিষয়টি খুব একটা জানেন না।
তবে আমরা আল-কুদস কমিটি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আমাদের সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেও প্রচার প্রচারণা চালিয়ে থাকি। তবে আরও অনেক বেশি প্রচার হওয়া দরকার। মিডিয়াতে বেশি করে আসা দরকার। তবে খুব দুঃখজনক হচ্ছে, আল-কুদস দিবসের আগে আমরা বিভিন্ন পত্রিকা অফিসে যাই প্রেস রিলিস নিয়ে। আল-কুদস নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল ছাপানোর ব্যবস্থা করি। আমরা টেলিভিশন এবং অনলাইন পোর্টালগুলোতে যাই এসব নিয়ে। প্রেস রিলিজ প্রকাশ করা, আর্টিকেল ছাপান কিংবা খবর প্রচারের জন্য কতভাবে যে অনুরোধ করতে হয়! অনেক সময় তাদেরকে বায়াস করতে হয়। কিন্তু তারপর দেখা যায়- এক কলামে একটু 'আল-কুদস' দিবসের নিউজ আসে পত্রিকার পাতায়। আর টেলিভিশনে তো আসেই না। যদি আল-কুদস দিবসের সেমিনারে কোনো মন্ত্রী যান তখন দেখা যায় হয়ত কোনো একটা টিভি চ্যানেল দশ সেকেন্ডে বা পাঁচ সেকেন্ডের একটা খবর প্রচার করে। শুধু মন্ত্রী সেখানে গিয়েছিলেন- সেকারণেই এতটুকু প্রচার করা হয়।
আমরা বিভিন্ন সময় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, উলামায়ে কেরাম, বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করেছি। কিন্তু সেখানে কোনো টিভি চ্যানেলের মাথা ব্যথা দেখি নি। তারা সেসব সেমিনারের বক্তব্য প্রচার করে নি। তো এই হচ্ছে আমাদের প্রকৃত অবস্থা! আমাদের খুব গোড়ায় দুর্বলতা আছে। প্রচারণায় অনেক ঘাটতি আছে। সাধারণ মুসলমানদের মধ্যে একে পৌঁছে দেয়ার জন্য আমাদের যেভাবে কাজ করা উচিত সেভাবে করতে পারছি না। সেদিকে আরও বেশি নজর দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
রেডিও তেহরান: এবার আল-কুদস দিবস যখন পালিত হচ্ছে তখন ইহুদিবাদী ইসরাইল ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরকে সংযুক্ত করার পায়তারা চালাচ্ছে এবং আমেরিকা ইসরাইলকে এ বিষয়ে মোটামুটি সমর্থন দিচ্ছে। এক্ষেত্রে ওআইসি এবং আরবলীগের কি ভূমিকা থাকা উচিত?
মোস্তফা তারেকুল হাসান: দেখুন, ওয়াইসি এবং আরবলীগের বিষয়টি খুবই স্পষ্ট। তাদের মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ। তাদের অর্থে চলে এই দুটি সংগঠন। আর ওয়াইসি এবং আরবলীগের নেতৃত্বেও ঘুরেফিরে তাদের মধ্যে থেকে নানা ব্যক্তি আসেন। তারা আসলে সত্য কথা বলেন না। আর যা কিছু বলেন সেটাও ভেবে চিন্তে বলেন যাতে করে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি কিছু মনে না করে! সংস্থা দুটের নেতাদের কথাবার্তা খুবই আপোশকামী। তাদের ভূমিকা খুবই দুঃখজনক ও সন্দেহজনক।
আমি এ প্রসঙ্গে একটা উদাহরণ একটু আনতে চাই, আমাদের কোনো এক অনুষ্ঠানে একজন বিশিষ্ট বক্তা বলেছিলেন, 'ওআইসি'র মানে হচ্ছে ও আচ্ছা ‘ও-আইসি; আচ্ছা দেখি কি করা যায়! তাঁদের ভূমিকা সবসময় এরকমই। আমি সোজা সাপ্টা যা বুঝি এসব সংগঠন ভেঙে তছনছ করে দিতে হবে। সত্যিকারভাবে মুসলিম জনগোষ্ঠী এবং মুসলিম দেশগুলোকে নিয়ে শক্তিশালী একটা ' ইসলামিলীগ' তৈরি করা দরকার। সেইসব দেশের মধ্যে অবশ্যই ইরান, সৌদি আরব থাকবে।
যেসব মুসলিম দেশ সারা পৃথিবীর মুসলমানদের হেফাজতের জন্য চিন্তা করে সেসব দেশ থাকবে। সেখানে কাশ্মিররের প্রতিনিধি থাকবে। ভারতের প্রতিনিধি থাকবে এবং অবশ্যই বাংলাদেশের জোরাল ভূমিকা থাকবে। গতানুগতিক ওআইসি এবং আরবলীগ দিয়ে সেটা সম্ভব না। তাদের কার্যক্রমে আমরা খুবই হতাশ এবং তারা কখনই ঘুরে আসতে পারবে না।
রেডিও তেহরান: জনাব মোস্তফা তারেকুল হাসান, প্রসঙ্গক্রমে জানতে চাই হিজবুল্লাহ, হামাস ও ইসলামী জিহাদ আন্দোলনসহ ইহুদিবাদী ইসরাইল বিরোধী যেসব প্রতিরোধকামী সংগঠন মধ্যপ্রাচ্যে গড়ে উঠেছে, আল-কুদস মুক্ত করার ক্ষেত্রে তাদের বর্তমান ও ভবিষ্যতের ভূমিকাকে আপনি কিভাবে দেখেন?
মোস্তফা তারেকুল হাসান: দেখুন, পৃথিবীতে জোরাল কোনো ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে তাদের অবদানই সবচেয়ে বেশি। প্রকৃতপক্ষে আমরা তো কিছুই করতে পারছি না। তারা অনেক বেশি সংগঠিত এবং বন্ধুত্বপূর্ণ। তাদের আন্দোলন পৃথিবী জুড়ে অনেক বেশি পরিচিত এবং আমরা সবাই তাঁদেরকে সমর্থন করি। আল-কুদসের মুক্তির ব্যাপারে তাদের ভূমিকা ও অবদান অনেক বেশি। তারাও চেষ্টা করছে। আমরা যেকোনো কিছুর বিনিময়ে তাদের সমর্থন করি।
রেডিও তেহরান: জনাব মোস্তফা তারেকুল হাসান, আপনি আল-কুদস কমিটি বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক। তো শুরুতেই আমরা যেকথা বলছিলাম যে ভিন্ন একটি পরিস্থিতিতে এবারের কুদস দিবস পালিত হলো। তো আপনাদের এবারের কর্মসূচি কি ছিল?
মোস্তফা তারেকুল হাসান: দেখুন, আপনি ঠিকই বলেছেন, বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারির কারণে এবার আমরা কুদস-দিবসের অনুষ্ঠান সেভাবে করতে পারিনি। প্রতিবছর এ দিবসকে নিয়ে আমরা অনেক বড় সেমিনার করি। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ অনেক অতিথিরা আসেন। সরকারেরও দায়িত্বশীল ব্যক্তি, মন্ত্রীরা আসেন। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা আমাদের সেমিনারে আসেন। তার একটা প্রভাব শহরে পড়ে। আল-কুদস দিবসের আগ থেকেই আমরা শহরজুড়ে পোস্টারিং, হ্যান্ডবিল বিতরণ,মসজিদের ইমামদের কাছে চিঠি দেয়া, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সামনে ব্যানার টাঙান, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আল-কুদস দিবস সম্পর্কে চেতনাশীল করার জন্য বিভিন্ন স্টিকার, কাগজপত্র বিলি করি। এরবাইরেও নানাভাবে আমাদের প্রচারণার কাজ চালাতাম যাতে করে আমাদের সেমিনার ও র্যালি বাস্তবায়ন হয়। তাছাড়া আল-কুদস দিবসে আমরা মিছিল করতাম।
তো এবার করোনা ভাইরাসের কারণে সারা বিশ্ব থমকে গেছে। আমরাও এসব অনুষ্ঠান করা থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের এবারের আল কুদস দিবস পালনের মাধ্যম হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া-অনলাইন। এসব বিষয় শেয়ার করা এবং লাইক দেয়ারও অনুরোধ জানাচ্ছি। তাতেই আমরা সবাই আল কুদসের প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করতে পারব বলে আমি বিশ্বাস করি।
রেডিও তেহরান: জনাব অধ্যাপক মোস্তফা তারেকুল হাসনা বিশ্ব কুদস-দিবস নিয়ে রেডিও তেহরানের সাথে কথা বলার জন্য আপনাকে আবারও অনেক অনেক ধনবাদ জানাচ্ছি।
মোস্তফা তারেকুল হাসান: রেডিও তেহরানকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২৬