সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২০ ১৫:০৩ Asia/Dhaka

শ্রোতাবন্ধুরা!৫ সেপ্টেম্বর শনিবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবরের শিরোনাম:

  • নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণে দগ্ধ ১৪ জনের মৃত্যু, প্রধানমন্ত্রীর শোক-মানবজমিন
  • দগ্ধ ২৫ জনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক-দৈনিক কালের কণ্ঠ
  • তিতাসের গাফিলতেই মসজিদে বিস্ফোরণ, অভিযোগ মুসল্লিদের-দৈনিক যুগান্তর
  • করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম-যুগান্তর
  • কিশোর গ্যাংয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ড, রাজধানী দাপাচ্ছে ৩৪ টি গ্রুপ-বাংলাদেশ প্রতিদিন
  • সৌদি যুবরাজের মনোরঞ্জনে ১৫০ মডেল, মালদ্বীপে বুক করা হয়েছিল রিসোর্ট-ইত্তেফাক
  • রাশিয়ার ভ্যাকসিন করোনার প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়তে সক্ষম: প্রতিবেদন-দৈনিক সমকাল
  • বিশ্বজুড়ে ব্যাংকে সাইবার হামলার আশঙ্কা-প্রথম আলো

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের শিরোনাম:

  • ভাবনাচিন্তার দৈন্যতার দায় ঈশ্বরের ঘাড়ে! অর্থনীতি নিয়ে নির্মলাকে বিঁধলেন তাঁর স্বামী পরকলা প্রভাকর-সংবাদ প্রতিদিন
  • ২৪ ঘন্টায় ভারতে আক্রান্ত ৮৬ হাজার!-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • লাদাখ সংঘাতের মাঝেই ভারত-চীন আড়াই ঘন্টা বৈঠক, রফাসূত্র অধরা-আজকাল
  • অশান্তির দায় ভারতের, এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না’, মস্কোর বৈঠকের পরই হুঙ্কার চীনের-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

শিরোনামের পর এবার দুটি বিষয়ের বিশ্লেষণে যাব। 

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১. জনাব সিরাজুল ইসলাম,নারায়ণগঞ্জের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় বেশ কয়েকজন মানুষ মারা গেছেন এবং অনেকে পুড়ে দগ্ধ হয়েছেন।এ ঘটনায় তিতাস গ্যাস কোম্পানির ব্যাপারে রিপোর্ট হয়েছে যে, গ্যাস লাইনের লিকেজ ঠিক করে দেয়ার আবেদন জানালেও তারা তা করে।নি। বিষয়টি নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কি?

২. ইসরাইল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে চুক্তি বাস্তবায়নে সহযোগিতা না করতে বাহারাইন এবং সৌদি আরবের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হামাস। আপনার কি মনে হয় হামাসের এই আহবানে সাড়া দেবে সৌদি ও বাহারাইন?

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর:

নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণে হতাহতের খবরটি ইত্তেফাক, প্রথমআলোসহ সব দৈনিকের অনলাইন সংস্করণে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে পরিবেশিত হয়েছে। এ সম্পর্কে দৈনিকগুলো ভিন্ন ভিন্ন খবরে লিখেছে,

নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪

নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৪। দগ্ধ ২৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।তার কেউ শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন ডা. সামন্ত লাল সন। মসজিদে বিস্ফোরণের উৎস এসি নয়-গ্যাস।মুসল্লিরা তিতাসকে দায়ী করেছে। এরইমধ্যে সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগ ও এসির অবস্থা পরীক্ষার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শামীম ওসমান মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় গভীরতম তদন্ত চান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখপ্রকাশ করেছেন। এ ব্যাপারে সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখছেন তিনি। আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন। দৈনিক মানবজমিনে এ খবরটি পরিবেশিত হয়েছে।

কিশোর গ্যাংয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ড, রাজধানী দাপাচ্ছে ৩৪টি গ্রুপ-বাংলাদেশ প্রতিদিন

অপরাধ সাম্রাজ্য নিজেদের দখলে রাখতে ‘কিশোর গ্যাং’-এর দিকে ঝুঁকছে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীরা। আর শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আসকারা পেয়ে ‘কিশোর গ্যাং’ এখন বেপরোয়া। কোনোভাবেই তাদের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক লোমহর্ষক খুনখারাবির ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের জড়িত থাকার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে সংশ্লিষ্টদের।

গোয়েন্দারা কেবল রাজধানীতেই ৬০টি কিশোর গ্যাংয়ের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে। এর মধ্যে সক্রিয় রয়েছে ৩৪টি গ্রুপ। মহল্লা-বস্তির ছিঁচকে সন্ত্রাসী থেকে ধনাঢ্য পরিবারের ধনীর দুলালদের সমন্বয়ে গড়া বেশ কিছু গ্যাংয়ের সদস্যদের কাছে এরই মধ্যে পৌঁছে গেছে দেশি-বিদেশি অস্ত্র। মাঝেমধ্যেই গ্যাংয়ের সদস্যরা নিজেদের ক্ষমতা দেখাতে অন্য এলাকাতেও মহড়া দিচ্ছে বলে খবর রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিশোর হওয়ার কারণে দণ্ডবিধিতে পুলিশ এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না। ১৮ বছর পর্যন্ত বয়সের কেউ অপরাধ করলে তাকে দণ্ডবিধিতে কোনো বিচারকার্য সম্পাদন করা যাবে না। তাদের আটক করে শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে পাঠাতে হয়। অথচ ঢাকার শিশু আদালতের বিচারিক কার্যক্রমের নথি অনুযায়ী গত ১৫ বছরে রাজধানীতে কিশোর গ্যাং কালচার ও সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে ৮৮টি খুনের ঘটনা ঘটেছে।

কিশোর গ্যাং

অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়সে কিশোর হওয়ার সুবাধে শাস্তির আওতায় আনতে আইনের যথেষ্ট ফাঁকফোকর থাকায় এর সুযোগ নিচ্ছে এসব গ্যাংয়ের লিডারসহ বাকি সদস্যরা। অনেক বড় বড় অপরাধ ঘটিয়েও বয়সের অজুহাতে সহজেই পাওয়া যাচ্ছে জামিনে বের হওয়ার সুযোগ। জামিনে বাইরে এসে এরা আবারও জড়িয়ে পড়ছে অপরাধে। তবে অভিভাবকদের উচিত হবে তাদের সন্তানদের বিষয়ে আরও সচেতন হওয়া। একই সঙ্গে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মাহবুব আলম পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি-মিডিয়া) মাহবুব আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম ব্যবহার করে অনেক কিশোর গ্যাং তৎপরতা চালাচ্ছে এমন খবর আমরা পাচ্ছি। তবে বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরই মধ্যে অনেক কিশোর অপরাধীকে আমরা গ্রেফতার করেছি। এসব বিষয়ে পরিবার এবং সামাজিকভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

২০১৭ সালে ট্রাস্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র আদনান কবীর খুনের পর থেকেই কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়টি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরে আসে। পরবর্তীতে লাগাতার অভিযানে ঢাকায় গজিয়ে ওঠা অর্ধশতাধিক কিশোর গ্যাংয়ের ৫ শতাধিক সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-পুলিশ। মাঝে কিছুটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়লেও বর্তমানে এসব গ্যাংয়ের সদস্যরা আবারও মাথাচড়া দিয়ে উঠেছে। গত ২৭ আগস্ট রাতে এক রিকশাওয়ালাকে বকাঝকা করার বিষয়ে প্রতিবাদ করায় উত্তরখান রাজাবাড়ি খ্রিস্টানপাড়া এলাকায় মো. সোহাগ নামে এক যুবককে খুন করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। ৩০ আগস্ট বকশীবাজার মোড়ে নয়ন আহমেদ নাজিম নামের এক যুবককে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে খুন করে ১৫/২০ জন যুবক। একই দিন লালবাগ কেল্লার সমানে বাপ্পীকে ১৫/২০ জন যুবক ছুরিকাঘাত করে। বাপ্পী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন। সড়কে এক পথযাত্রীকে অস্ত্র দিয়ে মারধর করে রক্তাক্ত জখম, চুরি ও হুমকির অভিযোগে গত ৩ আগস্ট সহযোগী নাজমুলসহ আলোচিত-সমালোচিত বাংলাদেশি টিকটকার ইয়াসিন আরাফাত অপু ওরফে ‘টিকটক অপু’ ওরফে ‘অপু ভাইকে’ গ্রেফতার করে উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশ। মারধরের ঘটনায় সে গ্রেফতার হলেও টিকটক অপুর বিরুদ্ধে কিশোর গ্যাং তৈরির প্রচেষ্টা খুঁজে পেয়েছে পুলিশ।

কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ভিকারননিসা নূন স্কুলের এক ছাত্রীকে দফায় দফায় অপহরণ করলেও এর প্রতিকার না হওয়ায় আতঙ্কে ভুগছেন চকবাজার এলাকার বাসিন্দারা। গ্যাং লিডার সাদিক আবদুল্লাহর নেতৃত্বে ওই ছাত্রীকে গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত তিন দফায় অপহরণ করা হয়। প্রতিবারই পুলিশ ওই ছাত্রীকে উদ্ধারসহ গ্যাং লিডার সাদিক আবদুল্লাহকে গ্রেফতার করে। অতি সম্প্রতি সাদিক জামিনে বের হয়ে পুনরায় তার সহযোগীদের দিয়ে প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে ভুক্তভোগী পরিবারকে। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই ছাত্রীর নোংরা ছবি ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মামলা প্রত্যাহারের জন্য তাকে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রীর অসহায় বাবা মো. মূসা।

গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাতমসজিদ হাউজিংয়ের পাইওনিয়ার গলিতে কিশোর গ্যাং ‘আতঙ্ক’ গ্রুপের হাতে খুন হয় ‘ফিল্ম ঝিরঝির’ গ্রুপের সদস্য স্কুলছাত্র মহসিন (১৬)। তাকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয় সহপাঠী সাব্বির (১৭) ও রাকিব (১৭)। এই খুনের দুই দিন পর কিশোর গ্যাং কালচার প্রতিরোধে রাজধানীর হাতিরঝিল থানার বিভিন্ন এলাকায় ব্লক রেইড দিয়ে ১১২ কিশোরকে আটক করে পুলিশ। জব্দ করা হয় ছয়টি মোটরসাইকেল। এখন আবার পুরনো চিত্র ফিরেছে।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, শুধু রাজধানীতেই ৬০টি কিশোর গ্যাংয়ের অস্তিত্ব রয়েছে। এর মধ্যে ৩৪ গ্রুপই সক্রিয়। এই ৩৪টি গ্রুপের সদস্যরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। কারাবন্দী টেন্ডার মাফিয়া জি কে শামীমের হয়ে মাঠ গোছানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন রানা মোল্লা নামের এক ব্যক্তি। ক্রীড়া পরিষদ ও পিডব্লিউডি, সেগুন বাগিচাসহ বিভিন্ন এলাকায় তিনি যুবলীগ নেতা পরিচয়ে টাঙ্গিয়েছেন ফেস্টুন। এরই মধ্যে নেপথ্য থেকে কিশোর গ্যাংয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন কেরানীগঞ্জের ওসমান, বাবু, হৃদয়, রাসেল, ইমন, শরীফকে।

বিদেশ পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদ নিজের অপরাধ সাম্রাজ্য যে কোনো মূল্যে ধরে রাখতে কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। এরই মধ্যে রামপুরা, শাহজাহানপুর, খিলগাঁওভিত্তিক অন্তত তিনটি গ্যাং তৈরি করেছেন। দেশে তার হয়ে সব কিছু দেখভাল করছেন তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী তানভীর, উজ্জ্বল, কাওসার, আশিক ও বাবু। ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, ঝিগাতলা, কলাবাগান, আজিমপুর এলাকায় নিজের নিয়ন্ত্রণ একচ্ছত্র রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন কারাবন্দী শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন। এলাকায় ইমনের বিভিন্ন বিষয় দেখভাল করেন হেজ্জাজ বিন আলম, জিতু, মুন্না, মিলন। তবে অস্ত্রের বিষয়টি দেখভাল করেন মুন্না। এ ছাড়া কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়টি দেখভাল করছেন তপু, জিগাতলা নতুন রাস্তার ভাগ্না রনি, মিতালী রোডের রুবেল, ধানমন্ডির তাহাজ্জিব, বাস্টার্ড সেলিম।

গত বছর কিশোর গ্যাং বাংলা গ্রুপের এক সদস্যকে লাভলেইন গ্রুপের সদস্যরা খুন করার পরই গোয়েন্দারা জানতে পারেন ইমনের কিশোর গ্যাংয়ে পৃষ্ঠপোষকতার বিষয়টি। একই অবস্থা মিরপুর, মগবাজার, মোহাম্মদপুর, উত্তরা এলাকায়। পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদত এবং জামিল অপরাধ জগতে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে কিশোর গ্যাংয়ের মদদ দিচ্ছেন। বখে যাওয়া তরুণদের বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা তাদের দলে টানছেন বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।

ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

লাদাখ সংঘাতের মাঝেই ভারত-চীন আড়াই ঘন্টা বৈঠক, রফাসূত্র অধরা-আজকাল

লাদাখ উত্তেজনা: মস্কো বৈঠকে সমাধান সূত্র নেই

সংঘাতের মধ্যেই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। মস্কোয় ভারত ও চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সেই বৈঠক ঘিরে জল্পনাও ছিল তুঙ্গে। শেষপর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘণ্টার দ্বিপাক্ষিক ম্যারাথন বৈঠকে সীমান্তে শান্তি ফেরানোর ইঙ্গিত মেলে। দু’পক্ষই লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর স্থিতাবস্থা জারি রাখার বিষয়ে সহমত হয়েছে। তবে কীভাবে সমস্যা মিটবে তা নিয়ে এদিনও কোনও রফাসূত্র মেলেনি বলেই খবর।  প্রসঙ্গত, সংঘাতের আবহে এই প্রথম এত উচ্চপর্যায়ের কোনও বৈঠক অনুষ্ঠিত হল। 

অশান্তির দায় ভারতের, এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না’, মস্কোর বৈঠকের পরই হুঙ্কার চীনের-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

বৈঠকেও গলল না সম্পর্কের বরফ। বরং রাশিয়ার (Russia) মাটিতে ভারতের সঙ্গে বৈঠকের পরই চিনের হুঙ্কার, “এক ইঞ্চি জমিও ছাড়বে না চিন”। এমনকী, লাদাখ সীমান্তে অশান্তির দায় ভারতের ঘাড়ে চাপাল ড্রাগন।

চীনের হুঙ্কার ' এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না'

সাংহাই কর্পোরেশন অর্গানাইজেশনের (SCO) বৈঠকে অংশ নেন মস্কোয় গিয়েছেন রাজনাথ সিং (Rajnath Singh)। এই বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন চিনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ওয়ে ফ্যাং-ও। সেখানে  রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেন চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী চান ফ্যাং। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে দু’পক্ষের মধ্যে বৈঠক চলে। কিন্তু তাতেও মিলল সমাধান সূত্র।

শনিবার সকালে চীন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, “ভারত ও চিন সীমান্তে উত্তেজনার কারণটা পরিষ্কার। এর জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী ভারত।” একইসঙ্গে ড্রাগনের হুঙ্কার, “চিন নিজেদের জমির এক ইঞ্চিও ছাড়বে না। চিনের সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব ও সীমান্ত রক্ষা করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী, সমর্থ ও তৈরি।”  তাঁদের তরফে আরও বলা হয়েছে, “চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে যা আলোচনা হয়েছিল তা বাস্তবায়িত করুক ভারত।আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হোক। দু’দেশেরই  নিজেদের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি ঘটানো উচিৎ। দুদেশের সম্পর্ক অবনতি হোক, এমন কোনও পদক্ষেপ কারোরই করা উচিৎ নয়। স্থিতিশীলতা, শান্তি ও সীমান্তের সামগ্রিক অবস্থা উন্নত করতে উদ্যোগী হওয়া উচিত দুই দেশের।”

ভারত-চীন সীমান্ত সমস্যায় ফের মধ্যস্থতার প্রস্তাব ট্রাম্পের, বললেন পরিস্থিতি ভয়াবহ- দৈনিক আনন্দবাজার

লাদাখ সীমান্তে ক্রমেই আগ্রাসী হয়ে উঠছে চীন। রুখে দাঁড়িয়েছে ভারতও। ফলে দু’দেশের মধ্যে তৈরি হয়েছে যুদ্ধের পরিস্থিতি। তার মধ্যেই ভারত–চীন বিবাদ থামাতে আসরে নেমে পড়লেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ভারত ও চীনের সীমান্ত পরিস্থিতি খুব খারাপ। এবং আমেরিকা দুই দেশের মধ্যে শান্তি ফেরানোর কাজে সাহায্য করতে পারলে খুব খুশি হবে। অর্থাৎ সোজা কথায় মধ্যস্থতার প্রস্তাব।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাব

এর আগেও মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু সেবারে ভারত এবং চীন দুই দেশই সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। দিল্লি এবং বেজিং–দুই দেশের তরফেই স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সীমান্ত ইস্যুতে তৃতীয় কোনও শক্তির হস্তক্ষেপের কোনও প্রয়োজন নেই। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাছোড়বান্দা। তিনি বলছেন, ‘ভারত এবং চীনের মধ্যেকার সীমান্ত পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। দুই দেশকে সম্মান জানিয়েই বলছি। আমরা ওদের সাহায্য করতে পারলে খুশি হব। দুই দেশের সঙ্গেই আমরা কথা বলছি। গোটা বিশ্বই চাইবে ওদের সাহায্য করতে।’‌ কিন্তু ভারত ও চীনের বিবাদ মেটানোর সুযোগ পেলে কার পক্ষ নেবেন? সে ইঙ্গিতও এদিন দিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। বর্তমান সীমান্ত পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার জন্য কি চীন দায়ী? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলছেন, ‘আমি আশা করব এমনটা নয়। তবে, চীন অবশ্যই মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে।’‌ 

শুধু সীমান্ত পরিস্থিতি নয়, এদিন আরও একবার করোনা ভাইরাস নিয়েও চীনকে তোপ দেগেছেন ট্রাম্প। তাঁর কথায়, ‘এই মুহূর্তে রাশিয়ার থেকেও চীন নিয়ে বেশি আলোচনা হওয়া উচিত। কারণ ওরা যেটা করছে সেটা আরও খারাপ। ভাবুন তো চীনা ভাইরাসটা ছড়িয়ে ওরা কী করল! ১৮৮টা দেশের কী পরিস্থিতি করল। আমার এটা একেবারেই ভাল লাগেনি। আমেরিকা, ইওরোপ, গোটা বিশ্বকে ভুগতে হচ্ছে।’‌

ভাবনাচিন্তার দৈন্যতার দায় ঈশ্বরের ঘাড়ে! অর্থনীতি নিয়ে নির্মলাকে বিঁধলেন তাঁর স্বামী পরকলা প্রভাকর-সংবাদ প্রতিদিন

অর্থনীতির দুর্দশার দায় পুরোপুরি ঈশ্বরের উপর ঠেলে দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। তাঁর দাবি ছিল, করোনা ঈশ্বরের মার। আর এই দৈবদুর্বিপাক বা অ্যাক্ট অফ গডের জন্যই দুর্দশাগ্রস্ত হয়েছে ভারতের অর্থনীতি। কিন্তু নির্মলার সেই যুক্তি এবার খারিজ করে দিলেন তাঁরই স্বামী পরকলা প্রভাকর (Parakala Prabhakar)। তিনি বলছেন, এই  দুর্বিপাক দেবতার নয়, এই দুর্বিপাক কেন্দ্রীয় সরকারের চিন্তাভাবনার। নিজেদের চিন্তাভাবনার দৈন্যতার দায় ঈশ্বরের উপর চাপানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্র।

ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ

ভারতে করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে প্রায় সব দৈনিকে বলা হয়েছে,ফের বাড়ল করোনা সংক্রণের হার, ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত ৮৬ হাজার! ৪০ লাখ ছাড়াল ভারতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। একদিনে মারা গেছে-১,০৮৯ আর মোট মৃত্যু হয়েছে ৬৯,৫৬১ জনের। আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে,গত কয়েকদিনে ভারতে যেভাবে নতুন সংক্রমণ বাড়ছে, তা করোনাকালে গোটা বিশ্বের কোনো দেশে হয়নি। বিষয়টি রীতিমত উদ্বেগের। গত ৫ দিন ধরে একাধারে বিশ্বে সর্বোচ্চ করোনা শনাক্তের সংখ্যা। 

ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৮ লাখ ৭৯ হাজার ১৫৪ জন এবং মোট আক্রান্ত ২ কোটি ৬৮ লাখ ৪ হাজার ৭৫৩ জন।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/৫

ট্যাগ