রুশ বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান: বিশ্ববাসী ইরানের তুলনাহীন অস্ত্রগুলোর কার্যকারিতা দেখেছে
(last modified Wed, 09 Jul 2025 11:53:26 GMT )
জুলাই ০৯, ২০২৫ ১৭:৫৩ Asia/Dhaka
  • অধ্যাপক ভ্লাদিমির লিথুনিনকো
    অধ্যাপক ভ্লাদিমির লিথুনিনকো

পার্সটুডে : খনিজবিষয়ক রাশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ইসলামী ইরানের উপর সাম্প্রতিক মার্কিন ও ইসরাইলি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। ১২ দিনের সাম্প্রতিক হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন,  ইরানের বিজ্ঞানী ও সুদক্ষ প্রকৌশলীরা অক্লান্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে যেসব তুলনাহীন অস্ত্র নির্মাণ করেছেন সেগুলোর কার্যকারিতা বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেছে ইরানি সশস্ত্রবাহিনীর মাধ্যমে এই যুদ্ধে। অধ্যাপক ভ্লাদিমির লিথুনিনকো এ মন্তব্য করেছেন একটি চিঠিতে।

ওই চিঠিটি তিনি পাঠিয়েছেন ইরানের ইমাম হুসাইন (আ.) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান মোহাম্মদ রেজা হাসানি অহানগারের কাছে। তিনি ইরানের বিজ্ঞানী ও বেসামরিক জনগণের উপর ইসরাইলি হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন বলে নিন্দা জানান।  

কয়েক মেরুকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার দিকে অগ্রযাত্রা 

এই চিঠিতে তিনি বলেছেন, ইরানের উপর সাম্প্রতিক ইসরাইলি ও মার্কিন হামলার কারণ হলো বিশ্ব এক মেরু কেন্দ্রিক ব্যবস্থা থেকে যেভাবে বহু মেরু কেন্দ্রিক ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তার প্রতিক্রিয়া। তিনি এ প্রসঙ্গে লিখেছেন, মানব জীবনের সবক্ষেত্রে পশ্চিমা লিবারেলিজম বা কথিত উদারনৈতিকতাবাদের ধ্বংসাত্মক প্রভাব স্পষ্ট। ফলে আমাদের সভ্যতা এখন সাংস্কৃতিক, আদর্শিক প্রযুক্তিগত ও বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে অচলাবস্থার শিকার, আসলে আমাদের গোটা সভ্যতাই এখন অস্তিত্বের হুমকির মুখে রয়েছে।

রুশ এই অধ্যাপক বিগত বছরগুলোতে বিশ্ব অঙ্গনের নানা পরিবর্তনের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, বিশ্বে অনেক মৌলিক পরিবর্তন এসেছে এবং আঞ্চলিক নানা ব্যবস্থার সূচনা হয়েছে। তিনি আরো লিখেছেন, লিবারেলিজমের ক্ষয়, ধস ও মৃত্যুর নানা লক্ষণ ফুটে উঠেছে। আর এইসব লক্ষণের মধ্যে রয়েছে অপসংস্কৃতির বিস্তার, নানা বিচ্যুতিকে আইনসিদ্ধ করা, পরিবার ব্যবস্থার ধ্বংস সাধন, জন্মহার কমে যাওয়া, সংখ্যালঘুদের শাসন বা কর্তৃত্ব, প্রকাশ্যে শয়তান- পূজার প্রচারণা চালানো এবং জ্ঞান বিজ্ঞান কে আদর্শিক ও রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা ‌।

ইরানের উপর হামলা ছিল অযৌক্তিক 

রাশিয়ার এই অধ্যাপক মনে করেন বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশগুলোর জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও বৈধ সরকারগুলোকে ধ্বংস করার ও সশস্ত্র সংঘাত উস্কে দেয়ার চেষ্টা চলছে। বিশ্ব সভ্যতাকে পারমাণবিক বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমে ধংস করার হুমকি আজ কেবল কল্পনা নয় বরং অনুভবযোগ্য বাস্তবতা। আর এ কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার ক্ষমতার দাপট দেখানোর জন্য ইসলামী ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু স্থাপনাগুলোর উপর বোমা বর্ষণ করেছে! 

জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অগ্রগামী দেশগুলোর শীর্ষে রয়েছে ইরান

রুশ এই অধ্যাপক ওই চিঠিতে আরো বলেছেন, লিবারেলিজম বিরোধী এই বৈশ্বিক পরিবর্তনে ও পাশ্চাত্যের মোকাবেলায় জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষার সংগ্রামে দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে। তিনি এ চিঠির শেষাংশে ইমাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধানকে লিখেছেন, সম্ভ্রান্ত ইরানি জাতির যেসব নিরপরাধ নাগরিক ও পরিবার হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছেন তাঁদের কাছে আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কমিটির সদস্যদের ও কর্মকর্তাদের গভীর শোক ও সমবেদনা পৌঁছে দেবেন। এই হামলার ফলে ইরানি জাতি আগের চেয়েও বেশি ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সক্রিয় হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সম্প্রতি শহীদ হওয়া ইরানি বিজ্ঞানীদের অনেকেই দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার চুক্তির কারণে রাশিয়ার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে পরিচিত ছিলেন বলে জানা গেছে।#

পার্সটুডে/এমএএইচ/এমএআর/৯