কথাবার্তা: লাদাখ ইস্যুতে ৫ দফা চুক্তি, চীন মানবে কি?
প্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ১৩ সেপ্টেম্বর রোববারের কথাবার্তার আসরে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতেই ঢাকা ও কোলকাতা থেকে প্রকাশিত প্রধান প্রধান বাংলা দৈনিকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিরোনাম তুলে ধরছি।
প্রথমে বাংলাদেশের শিরোনাম:
- সচিবালয়ে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত বাড়ছে করোনার ঝুঁকি-দৈনিক ইত্তেফাক
- একাই কোপালেন ৫ জনকে, স্ত্রীসহ নিহত ৩-প্রথম আলো
- বাংলাদেশে করোনায় আরও ৩১ জনের মৃত্যু-দৈনিক সমকাল
- করোনার কবলে রোহিঙ্গা শিবির,চলছে বেঁচে থাকার সংগ্রাম-মানবজমিন
- অন্ধকারে ঢিল ছুঁড়বেন না, বিএনপিকে কাদের-দৈনিক যুগান্তর
- ভারত-বাংলাদেশ একে অপরের সহায়ক: সেতুমন্ত্রী কালের কণ্ঠ
- শ্রমিকের মরদেহ সরকারি খরচে দেশে আনতে আইন নোটিশ-বাংলাদেশ প্রতিদিন
ভারতের শিরোনাম:
- চীন রফা মানবে কি, প্রশ্ন সেটাই-আনন্দবাজার পত্রিকা
- দিল্লি হিংসার চার্জশিটে ইয়েচুরি, যোগেন্দ্র যাদব এবং দুই অধ্যাপকের নাম-দৈনিক আজকাল
- এবার হয়তো বলবে গুজরাট দাঙ্গার দায়ও নেহেরুর, দিল্লি হিসার চার্জশিট নিয়ে খোঁচা মহুয়ার-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন
শ্রোতাবন্ধুরা! এবারে চলুন বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।মানুষের বর্তমান জীবনের প্রধান খবর করোনা।

করোনার সর্বশেষ খবরে ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এখন পর্যন্ত বিশ্বে মোট মৃতের সংখ্যা-৯ লাখ ২৪ হাজার ছাড়াল। আক্রান্ত ২ কোটি ৮৯ লাখ ৪৭ হাজার ৫১০ জন।
ভারতের আনন্দবাজারসহ প্রায় সব পত্রিকায় লেখা হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছে ৯৪ হাজার ৩৭২ জন,এ সময় মারা গেছেন জন ১১১৪ জন, মোট মৃত্যু-৭৮ হাজার ৫৮৬ জন। আর মোট আক্রান্ত প্রায় ৪৭ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৬ জন। প্রতিদিন ভারতে যেভাবে হু হু করে বেড়ে চলেছে করোনা তাতে দুশ্চিন্তার মেঘ জমা হচ্ছে বিভিন্নমহলে।টিকা সম্পর্কিত খবরে প্রথম আলো লিখেছে-অক্সফোর্ডের টিকার ট্রায়াল আবার শুরু হয়েছে।বাংলাদেশের দৈনিকগুলোতে বলা হয়েছে, একদিনে সেদেশে করোনায় আরো ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় আক্রান্ত হয়েছেন ১৪৭৬ জন।

করোনার কবলে রোহিঙ্গা শিবির , চলছে বেঁচে থাকার সংগ্রাম-দৈনিক মানবজমিনের এ খবরে লেখা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের থাবা বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে। আতঙ্ক গ্রাস করছে তাদের। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে খোঁজ নিয়ে দেখা গেলো বছর তিরিশের এক ব্যক্তি করোনার কবলে পড়েন। তারপর তিনি যে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন তা বলে বোঝানো যাবে না। খবরটা জানাজানি হতেই তাঁর এবং তাঁর পরিবার কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনে পড়েন। তাঁদের পুরো পরিবারকে একঘরে করে দেয়া হয়, বাইরে বেরোলেই পুরো ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হবে বলে ক্রমাগত হুমকি আসতে থাকে । এমনকি তাদের বুঝিয়ে দেয়া হয়, করোনায় আক্রান্ত হওয়া চরম লজ্জার বিষয়। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক রিপোর্টে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, রোহিঙ্গা জনজাতির মানুষগুলি দুঃখ এবং দারিদ্রের মধ্যে দিয়ে নিরন্তর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

রাজনীতির খবরে দৈনিক ইত্তেফাক, মানবজমিনসহ প্রায় সব দৈনিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য পরিবেশিত হয়েছে। তিনি বলেছেন,শেখ হাসিনা সরকার কূটনৈতিক দক্ষতা দিয়ে প্রতিবেশীদেশের সাথে বৈরিতার বিপরীতে গড়ে তুলেছেন আস্থার সম্পর্ক। তিনি বলেন বাংলাদেশ-ভারত পারস্পরিক উন্নয়ন এগিয়ে নিতে দু'দেশ একে অপরের সহায়ক,তারই ধারাবাহিকতায় ভারতীয় ঋণ কর্মসূচির আওতায় যৌথভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। তিনি আজ সকালে ভারতীয় ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প এবং অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় একথা বলেন। ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের অন্য একটি অংশকে হাইলাইট করেছে দৈনিক যুগান্তর। সেখানে বলা হয়েছে, বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে সেতুমন্ত্রী বলেছেন, অন্ধকারে ঢিল ছুঁড়বেন না। আর বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য-আওয়ামী লীগ লুটেরা লীগে পরিণত হয়েছে।
ভোটের মাঠে দুই দল,অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ভয় আওয়ামী লীগে-বাংলাদেশ প্রতিদিনের এ প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, পাঁচ সংসদীয় আসনের আসন্ন উপনির্বাচনে দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দলই আওয়ামী লীগের বড় ভয়। মাঠের প্রতিপক্ষ বিএনপি প্রার্থীকে মোকাবিলা করার চেয়ে দলীয় কোন্দল নিরসনকেই বড় করে দেখছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। আর কোন্দল নিরসন করে সব পক্ষকে মাঠে নামানো গেলে নৌকার প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত বলে মনে করেন তারা। এ নির্বাচন পরিচালনার জন্য আওয়ামী লীগের ৫ নেতাকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিদেশে কোনো শ্রমিকের মরদেহ সরকারি খরচে দেশে আনতে আইনি নোটিশ-দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন

খবরটিতে লেখা হয়েছে,বাংলাদেশি শ্রমিক মারা গেলে তার মরদেহ সরকারি খরচে দেশে আনার বিষয়ে ব্যবস্থা চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান লিংকন জনস্বার্থে আজ সকালে ডাক রেজিস্টারযোগে নোটিশটি পাঠান।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নোটিশটি পাঠানো হয়েছে। এ নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে সরকারি খরচে বিদেশে দুর্ঘটনায় মৃত শ্রমিকদের মরদেহ দেশে আনার বিষয়ে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে নোটিশে।
নোটিশে বলা হয়েছে, যে খেটে খাওয়া মানুষগুলো তাদের পরিবার পরিজন ছেড়ে বিদেশে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল করার জন্য দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন সেই শ্রমিকদের প্রতি একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের দায়-দায়িত্বের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সরকার এই বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জোরাল ভূমিকা পালন করে আসছে।
আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন বলেন, সাধারণত বিদেশে কর্মরত অবস্থায় কোনো শ্রমিক মারা গেলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ উক্ত শ্রমিকের মরদেহ সংশ্লিষ্ট দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে থাকে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ করে ফ্রি ভিসা বা অন্যান্য কিছু ক্ষেত্রে শ্রমিক মারা গেলে সে যে দেশের নাগরিক সেই দেশকেই তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে, আমাদের দেশও এর ব্যতিক্রম নয়।
ওই আইনজীবী বলেন, ইতোপূর্বে আমাদের দেশে এ ধরনের শ্রমিকদের যারা বিদেশে মৃত্যুবরণ করেছে, তাদের লাশ বিমান বাংলাদেশ বিনা খরচে দেশে আনার ব্যবস্থা করে আসছিল। কিন্তু পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারলাম, বিমান কর্তৃপক্ষ নিজ খরচে আর মরদেহ বহন করবে না বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সেক্ষেত্রে বিদেশে কোনো শ্রমিক মারা গেলে তাঁর পরিবারের খরচে মরদেহ দেশে আনতে হবে। একারণে সরকারি খরচে যাতে মরদেহটি পরিবার পেতে পারে সেজন্য নোটিশটি পাঠানো হয়েছে।
আইন আদালত বিষয়ক আরো কয়েকটি খবর তুলে ধরছি। যুবলীগ নেতা ক্যাসিনো সম্ম্রাট আরমানের জামিন স্থগিত করা হয়েছে-যুগান্তর। ক্রসফায়ারে হত্যা:ওসি প্রদীপসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আরো টেকনাফের সিএমম আদালতে একটি মামলার আবেদন করা হয়েছে।
বাজার দর নিয়ে দৈনিক মানবজমিনের শিরোনাম এরকম-নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা চরমে। বিস্তারিত প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে,

বাজার ঘুরলেই যেন মাথা ঘুরে যাওয়ার মতো অবস্থা। যে কোনো সবজি পঞ্চাশ টাকার নিচে পাওয়া যায় না। আর মুদি বাজার? সেখানে আরো অস্থিরতা বিরাজ করছে। প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সব পণ্যের দাম। অস্বাভাবিক এই দাম বৃদ্ধির পেছনে যৌক্তিক কোনো কারণ নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, বারবার সেই পুরনো সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণেই মূলত এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে ওই সিন্ডিকেট সদস্যদের চিহ্নিত করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।ফলে নানা ইস্যুতে বছরে কয়েকবার নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজার অস্থিতিশীল করে তোলে তারা। আর সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অল্প সময়ে হাতিয়ে নেয় কয়েক হাজার কোটি টাকা।
ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:
চীন রফা মানবে কি, প্রশ্ন সেটাই-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে,

মস্কোয় ভারত এবং চীনের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকের পরে পাঁচ দফা রফাচুক্তি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাকে বাস্তবায়িত করে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন অঞ্চলকে মার্চ মাসের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথ সুগম হবে না বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা।
বৃহস্পতিবারের বৈঠক ও যৌথ বিবৃতির পরে গত কাল ভারত এবং চীনের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক ভাবে যে ঘরোয়া বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তাতে অবস্থানগত ফারাক স্পষ্ট। ভারতের পক্ষ থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্থিতাবস্থা লঙ্ঘন এবং তাকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনার কথা একাধিক বার বলা হলেও চিনের ভাষ্যে তার কোনও উল্লেখ

দেখা যায়নি। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে নতুন আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ ঘোষণা করে সীমান্ত থেকে পুরোপুরি সেনা সরানোর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। কিন্তু ঘটনা হল, এই সেনা সরানোর কাজটি করতে হবে দু’পক্ষকেই। দু’দেশের মধ্যে সমন্বয় না-থাকলে সেটা সম্ভব নয়। এই সংঘাতের আবহে যা আদৌ নেই। তা ছাড়া, সীমান্তে চিনের পরিকাঠামো অনেক ভাল। তারা ভারতের তুলনায় অনেক তাড়াতাড়ি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় বিপুল সেনা মোতায়েন করতে সক্ষম। ফলে ভারতীয় সেনা সূত্রের বক্তব্য, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে ভারত যতটা পিছিয়ে যাবে, চীনা সেনার তার থেকে বেশি পিছিয়ে যাওয়া দরকার। তবেই সামঞ্জস্য বজায় থাকবে এবং ভবিষ্যতে সংঘাত এড়ানো সম্ভব হবে। কিন্তু, সূত্রের মতে, চীন তাতে অবশ্যই রাজি হবে না।
এবার হয়তো বলবে গুজরাট দাঙ্গার দায়ও নেহেরুর’, দিল্লি হিংসার চার্জশিট নিয়ে খোঁচা মহুয়ার-সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে,
দিল্লি হিংসার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা চার্জশিটে নাম নেই কপিল মিশ্রদের অথচ রয়েছে সিপিআইএম এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, স্বরাজ অভিযানের নেতা যোগেন্দ্র যাদবের নাম। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই তাঁদের ‘টার্গেট’ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মুখ খুলে কেন্দ্রকে তীব্র কটাক্ষ করলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র । তাঁর দাবি, বিজেপি এবার হয়তো ইতিহাস পালটে ফেলবে। দেখা যাবে গুজরাট হিংসার জন্যও কোনওদিন নেহরুকে দায়ী করে বসবে। শনিবার রাতে নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে মহুয়া এমন মন্তব্য করেন। এদিকে, এই প্রসঙ্গে অন্যান্য বিরোধী দলগুলিরও বক্তব্যও একই। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, “সরকার বিরোধী যে কোনও মতকে দমন করতে গুজরাট মডেলকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
নাগরিকদের বাক স্বাধীনতা অবাধ বা সীমাহীন হতে পারে না, পর্যবেক্ষণ বম্বে হাই কোর্টের-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন
শিব সেনা সুপ্রিমো উদ্ধব ঠাকরের একটি ব্যঙ্গচিত্র সোশ্যাল মেসেজিং অ্যাপে শেয়ার নিয়ে শনিবার যখন মুম্বই সরগরম, ঠিক সেদিনই একটি মামলায় বম্বে হাই কোর্ট আরও একবার মনে করিয়ে দিল যে ভারতীয় সংবিধানের ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদে যে বাক স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে, সেগুলি শর্তহীন নয়। এদিন বিচারপতি এস এস শিণ্ডে এবং বিচারপতি এম এস কারনিকের বেঞ্চ বলেছে, বাক স্বাধীনতা (Freedom of speech) ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারকে অবাধ মনে করা ঠিক নয়।
ঘটনাচক্রে এই মামলাটিও মহারাষ্ট্রের ঠাকরে পরিবার ঘিরে। শিব সেনা সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এবং তাঁর ছেলে তথা মন্ত্রী আদিত্যকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘কুরুচিকর’ মন্তব্য করার অভিযোগে সুনয়না হোলি নামে এক মহিলার বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা দায়ের করে। তদন্তে সহযোগিতায় প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিম্ন আদালতে জামিন পেলেও, তিনি পরে তা আর পালন করেননি বলে পুলিশের অভিযোগ। গ্রেপ্তারি এড়াতে ওই মহিলা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। কিন্তু দুই বিচারপতির বেঞ্চ সেই আরজি খারিজ করে দিয়েছে। অভিযুক্তের আইনজীবী আদালতে বলেন, সংবিধানের (Constitution of India) ১৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাঁর মক্কেলের প্রাপ্য অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। তখনই বেঞ্চের তরফে বলা হয়, নাগরিকরা সম্ভবত এই ধারণা পোষণ করছেন বাক স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অবাধ। কিন্তু সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদের অধিকারগুলির কোনওটাই নিরঙ্কুশ নয়।
ভারতীয় সংবিধানের ১৯ থেকে ২২ নম্বর অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকারের মধ্যে ৬ ধরনের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। ১৯৯৪ সালে মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে অশালীন ও কুরুচিকর প্রবন্ধ ছাপার অভিযোগে বম্বে হাই কোর্টে (Bombay High Court) একটি মামলা হয় এক পত্রিকা সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট প্রবন্ধ লেখকের বিরুদ্ধে। সেই সময়ও বম্বে হাই কোর্ট জানিয়েছিল, বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার নিরঙ্কুশ নয়। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান পত্রিকার সম্পাদক। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টও হাই কোর্টের রায় সমর্থন করে বলেছিল, ভাবনাচিন্তা প্রকাশেরও সীমা রয়েছে।#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৩