কথাবার্তা: আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী: প্রধানমন্ত্রী; আ'লীগ গণতন্ত্রের মুখোশ পরে আছে: ফখরুল
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা! আজ ২৫ অক্টোবর রবিবার। প্রাত্যহিক আয়োজন পত্রপত্রিকার পাতা বিশ্লেষন অনুষ্ঠান কথাবার্তায় আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি আমি রেজওয়ান হোসেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো।
প্রথমে বাংলাদেশ:
- সরকারি-বেসরকারি অফিসে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’- দৈনিক প্রথমআলো। দৈনিকটি অপর শিরোনাম-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক জিয়া রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
- আ’লীগ গণতন্ত্রের মুখোশ পরে জনগণকে বোকা বানায়: ফখরুল-দৈনিক যুগান্তর
- দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদের সাথে জড়িতদের ছাড় নয়:প্রধানমন্ত্রী-দৈনিক নয়াদিগন্ত।
- নীতিহীন সাংবাদিকতা কোনও দেশের কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না: দৈনিক ইত্তেফাক
- সরকার বিশেষ শক্তিতে বলীয়ান হয়ে আছে: ফখরুল: দৈনিক মানবজমিন
- জেলেদের হামলায় ২০ নৌ-পুলিশ আহত: ৫ জনকে ঢাকায় প্রেরণ: দৈনিক কালের কণ্ঠ
কোলকাতার দৈনিকগুলোর কিছু শিরোনাম:
- পুজোয় অনুদান, বীরভূম জুড়ে মণ্ডপে মণ্ডপে ধন্যবাদ দিদি আর ভাই কেষ্টকে-দৈনিক আানন্দ বাজার
- দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন লিখেছে, ‘সীমান্তে উত্তেজনা শেষ হোক', দার্জিলিংয়ে ‘শস্ত্র পূজা'র পর বললেন রাজনাথ
- একুশে হারলে বাংলা ছাড়তে হতে পারে-দলীয় নেতাদের হুশিয়ারি অনুপম হাজরার- দৈনিক আজকাল
এবারে চলুন বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
সরকারি-বেসরকারি অফিসে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস- এ সংক্রান্ত খবর প্রথম আলোসহ প্রায় সব দৈনিকে ছাপা হয়েছে। এতে লেখা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় এখন থেকে মাস্ক ছাড়া আসলে কাউকে সরকারি ও বেসরকারি অফিসগুলোতে সেবা দেওয়া হবে না। এ জন্য ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস' নীতি বাস্তবায়ন করা হবে। বেসরকারি অফিসগুলোতে এই নীতি মানা হচ্ছে কি না তা পরিদর্শন করা হবে। আজ রোববার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। বৈঠকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়। তিনি জানান, অফিসের সামনে কাউকে মাস্ক ছাড়া ঢুকতে দেওয়া হবে না-লেখাও থাকবে।
আ'লীগ গণতন্ত্রের মুখোশ পরে জনগণকে বোকা বানায়: ফখরুল- শীর্ষক খবরে দৈনিক যুগান্তর লিখেছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রের মুখোশ পরে শুধু জনগণকে বোকা বানায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রাজধানীতে রোববার সকালে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, এই আওয়ামী লীগের সরকার তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেই না। শুধু জনগণকে বোকা বানানোর জন্য তারা গণতন্ত্রের মুখোশ পরে একদলীয় শাসনব্যবস্থা… প্রকৃতপক্ষে এক ব্যক্তির শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে।‘আমরা অনেক বলেছি, আমরা এই মানববন্ধন, মিছিল, হরতাল বহু কিছু করেছি। আমরা এখন পর্যন্ত এই সরকারের টনক নড়াতে পারিনি। কারণ তারা বিশেষ বিশেষ শক্তিতে বলীয়ান হয়ে আছে।’বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, এই নির্বাচন কমিশন ও সরকার যৌথভাবে নির্বাচনকে তাদের একটা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। তারা নির্বাচন নির্বাচন খেলা করছে। নির্বাচনের নামে তারা ত্রাস সৃষ্টি করেছে।
দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদের সাথে জড়িতদের ছাড় নয়: প্রধানমন্ত্রী শীর্ষক খবরে দৈনিক নয়াদিগন্ত লিখেছে, দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত কোরে, যারাই এ ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত থাকুক না কেন আইন অনুযায়ী তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় মনে করি, যখনই কোনো দুর্নীতি বা অন্যায় কাজ হবে তখনই আমাদের এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।'রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, একটা সময়ে যেকোনো প্রকার দুর্নীতির ঘটনা ধামাচাপা দেয়া স্বাভাবিক ঘটনা ছিল, কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার কখনই তা করে না।‘শেখ হাসিনা আরো বলেন, সরকার সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রেখেছে।‘
নীতিহীন সাংবাদিকতা কোনও দেশের কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না: শীর্ষক খবরে দৈনিক ইত্তেফাক লিখেছে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। দেশের প্রতি সবারই একটি দায়িত্ববোধ থাকতে হবে। এই দায়িত্ববোধের সঙ্গে সবাই কাজ করলে দেশ এগিয়ে যাবে। আমরা চাই, দেশ এগিয়ে যাক। এসময় নিজেকে সাংবাদিক পরিবারের সন্তান উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা নিজেই সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাংবাদিকতা হচ্ছে সমাজের দর্পণ। আর যেটা সমাজের দর্পণ, তাতে যেন মানুষের চিন্তা চেতনাটা ফুটে ওঠে। তার মধ্যে মানবতাবোধ যেন থাকে। তারা যেন মানুষের কল্যাণে কাজ করে।’
সরকার বিশেষ শক্তিতে বলীয়ান হয়ে আছে: ফখরুল: শীর্ষক খবরে দৈনিক মানবজমিন লিখেছে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার বিশেষ শক্তিতে বলীয়ান হয়ে আছে। সাংবাদিকেরা এখন লিখতে সাহস পান না। সরকার পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে হাতিয়ার করেছে। ভিন্নমত স্তব্ধ করার জন্য সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষ, যারা ভিন্নমত নিয়ে লেখালেখি করেন, তাদের নামে মামলা দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর মুক্তির দাবিতে আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এবারে কোলকাতার দৈনিকের কিছু খবররে বিস্তারিত
পুজোয় অনুদান, বীরভূম জুড়ে মণ্ডপে মণ্ডপে ধন্যবাদ দিদি আর ভাই কেষ্টকে-শীর্ষক খবরে দৈনিক আানন্দ বাজার লিখেছে, মণ্ডপে প্রতিমা। কিন্তু তার পাশে সমান উজ্জ্বল ‘তাঁর’ উপস্থিতি। মণ্ডপে ঢোকার মুখে বা ভিতরে তিনি আছেন। এমন জায়গায় তাঁর অবস্থান, যে প্রতিমার আগে তিনিই চোখ টেনে নিচ্ছেন। এ ছবি রাঢ়বঙ্গের বীরভূমের। জেলার সব প্রান্তে প্রায় সব মণ্ডপেই রয়েছেন তিনি— অনুব্রত (কেষ্ট) মণ্ডল। চোখে পড়ার মতো বড় ব্যানার বা ফ্লেক্সে পুজো কমিটির তরফে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। সে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা কঠিন কোভিড পরিস্থিতিতেও বারোয়ারি পুজো কমিটিগুলিকে সরকারের পক্ষ থেকে ৫০,হাজার টাকা করে অনুদানের জন্য। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই সেই ব্যানারে শোভা পাচ্ছে জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ছবি।

'সীমান্তে উত্তেজনা শেষ হোক', দার্জিলিংয়ে ‘শস্ত্র পূজা'র পর বললেন রাজনাথ শীর্ষক খবরে দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন লিখেছে, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং নবরাত্রিতে ‘শস্ত্র পূজা’ করলেন দার্জিলিংয়ের সুকনা ওয়ার মেমোরিয়ালে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নারাভানে। লাদাখে ভারত-চিন সংঘাতের আবহে সিকিমের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছাকাছি এসে রাজনাথের এই ‘শস্ত্র পূজা'-কে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। পুজোর পরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘ভারতের সাহসী যোদ্ধারা তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমরা চাই, ভারত-চিন সীমান্তে উত্তেজনা শেষ হোক এবং শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। কিন্তু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেই চলেছে। তবে আমি আত্মবিশ্বাসী, আমাদের সেনা কাউকে আমাদের ভূমির এক ইঞ্চিও দখল করতে দেবে না।
একুশে হারলে বাংলা ছাড়তে হতে পারে-দলীয় নেতাদের হুশিয়ারি অনুপম হাজরার- শীর্ষক খবরে দৈনিক আজকাল লিখেছে, অন্তর্দ্বন্দ্বে জেরবার রাজ্য বিজেপি। দলের বিভিন্ন মোর্চার কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব চলছে, সেই ছবি প্রকাশ্যে এনে দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সংগঠনের সম্পাদক অনুপম হাজরা। রবিবার নবমীর সকালে তাঁর একটি ফেসবুক পোস্টের পর গোটা বিষয়টা জলের মত পরিষ্কার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কাছে। দলের নেতাদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারিও দিয়ে ফেললেন বোলপুরের প্রাক্তন সংসদ। বললেন, এভাবে চলতে থাকলে আগামী বছর বাংলায় ক্ষমতায় নাও আসতে পারে বিজেপি। #
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/ মো.আবুসাঈদ/২৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।