জুলাই ২৬, ২০২১ ১৫:০০ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: ২৬ জুলাই সোমবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবরের শিরোনাম:

  • সরকারি সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে পোশাক কারখানা-ইত্তেফাক
  • বিধিনিষেধে চালু আছে ৩০৩ কারখানা -প্রথম আলো
  • ফের শুরু টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম-মানবকণ্ঠ
  • অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ব্রিফিং-ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের আহবান মানবজমিন
  • দ্রুত বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী ৯৯ শতাংশই ঢাকায় -কালের কণ্ঠ
  • সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে ভোট স্থগিত -যুগান্তর

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের শিরোনাম:

  • পেগাসাস কাণ্ডে তদন্ত কমিশন গঠন করল রাজ্য-দিল্লি যাওয়ার আগে ঘোষণা মমতার-আনন্দবাজার
  • কেন্দ্রের বিতর্কিত কৃষি আইনের প্রতিবাদ, ট্রাক্টর চালিয়ে সংসদে গেলেন রাহুল গান্ধী -সংবাদ প্রতিদিন
  • হঠাৎ দিল্লিতে দিলীপ, বাড়ছে জল্পনা! লাঠি ঝাটা খেয়ে পড়ে আছে, কটাক্ষ সৌগতর-আজকাল

এবার বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

লকডাউন

বাংলাদেশের সব জাতীয় দৈনিকের খবর কঠোর বিধিনিষেধের আজ চতুর্থ দিন চলছে। কঠোর বিধিনিষেধেও বেপরোয়া মানুষ!সড়কে যানবাহনের চাপ আগের চেয়ে বেড়েছে, চেকপোস্টেও ঢিলেঢালা ভাব-ইত্তেফাক

বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে- ঈদ-পরবর্তী বিধিনিষেধের তৃতীয় দিন গতকাল রবিবার রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানবাহনের চাপ আগের চেয়ে বেড়েছে। বেড়েছে মানুষের চলাচল। পাশাপাশি বিভিন্ন চেকপোস্টে ছিল তল্লাশিও। তবে চেকপোস্টে ঢিলেঢালা ভাব লক্ষ্য করা গেছে। রাজধানীতে প্রধান সড়ক থেকে অলিগলিতে লোকজন বেশি বের হচ্ছে। তারা অকারণে ঘোরাঘুরি করছেন।শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরিগুলোতে শত শত যাত্রী ও প্রাইভেট কারের ভিড় দেখা গেছে। আর মানবজমিনে লেখা হয়েছে ঢিলেঢালা ‘হরতালে’ কি করোনা রুখবে?

বিধিনিষেধে চালু আছে ৩০৩ কারখানা-প্রথম আলো

গার্মেন্টস

ঈদের ছুটি শেষ। তবে করোনা সংক্রমণ রোধে দুই সপ্তাহের কঠোরতম বিধিনিষেধ চলছে। এ সময় অধিকাংশ শিল্পকারখানা বন্ধ থাকলেও অল্প কিছু উৎপাদন চালাচ্ছে। তার অধিকাংশই অবশ্য বিধিনিষেধের আওতামুক্ত শিল্পকারখানার তালিকাভুক্ত। আর ইত্তেফাকের শিরোনাম-সরকারি সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে পোশাক কারখানা। খবরটিতে লেখা হয়েছে, কঠোর লকডাউনের নিয়ম অমান্য করে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি রপ্তানিমুখী পোষাক কারখানার টেক্সটাইল ও ডাইং বিভাগ খোলা রেখেছে মালিকপক্ষ। অভিযোগ উঠেছে ওই বিভাগে দুই শিফটে প্রায় ১৮০০ শ্রমিককে জোর করে কাজ করানো হচ্ছে।

শনাক্ত বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ-একদিনে মৃত্যু ২২৮ মানবজমিনের খবর। দৈনিকটির অপর এক খবরে লেখঅ হয়েছে, পাঁচ জেলায় ২৪ ঘণ্টায় ৯০ জনের মৃত্যু। প্রথম আলোর করোনা সম্পর্কিত কয়েকটি খবর-২০২২ সালের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যবিভাগ। দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতির মধ্যে টিকা নিতে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। সক্ষমতার চেয়ে কম টিকা দেওয়া হচ্ছে। ময়মনসিংহ মেডিকেলের করোনা ইউনিটে সর্বোচ্চ ২৩ জনের মৃত্যু-ইত্তেফাক। দৈনিকটির অপর এক খবরে লেখা হয়েছে,বরিশাল শেবাচিমের করোনা ওয়ার্ডে আরও ১৬ জনের মৃত্যু 

করোনা ওয়ার্ডে মৃত্যু হাজার ছাড়িয়েছে। মানবজমিন লিখেছে,করোনা কেড়ে নিলো জাবি শিক্ষকের প্রাণ। করোনায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীর মৃত্যু। আরেকটি খবর মর্মান্তিক-টিকা নিয়েও রক্ষা পেলেন না আনোয়ারা, গর্ভেই সন্তান মারা গেছে সানজিদার।

দ্রুত বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী ৯৯ শতাংশই ঢাকায়-কালের কণ্ঠ

ডেঙ্গু

চলতি জুলাই মাসের গত ২৫ দিনে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এক হাজার ৩০৭ জন রোগী। এর মধ্যে ৯৯ শতাংশই ঢাকায়।গতকাল সারা দেশ মিলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল ৪৬০ জন রোগী,বিশেষজ্ঞরা জানান, বর্ষায় পানি জমে থাকার কারণে এবং নিয়মিত পরিষ্কার না করায় এডিস মশার প্রজনন বেড়ে গেছে; যা থেকে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটছে। এ ক্ষেত্রে ঢাকায় সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম আরো জোরালো করার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ স্থগিত চেয়ে রিট-তারপর নির্বাচন স্থগিত করেছে আদালত। খবরটিতে লেখা হয়েছে-করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি বিবেচনায় নিয়ে আগামী ২৮ জুলাই অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদের সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট ।

সোমবার দুপুরে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের একক ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।এর আগে সকালে স্থানীয় সাতজন বাসিন্দা এবং ছয়জন আইনজীবী এ রিট আবেদন করেন। তবে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার আগে মানবজমিনের একটি খবরে লেখা হয়েছে,রিটার্নিং কর্মকর্তার মৃত্যু, চার কর্মকর্তা আক্রান্ত, তবুও নির্বাচন হচ্ছে সিলেটে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ব্রিফিং-ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের আহবান-মানবজমিন

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল

অনলাইনে সাধারণ মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর চালানো দমনপীড়ন বন্ধ করতে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সোমবার ভোরে প্রচারিত সংস্থাটির এক ব্রিফিং-এ এই আহবান জানানো হয়। নিবর্তনমূলক ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (ডিএসএ) বাতিল বা আইনটিকে আন্তর্জাতিক মান ও মানবাধিকার আইনের অনুসরণে সংশোধন করারও আহবান জানিয়েছে সংস্থাটি।

‘নো স্পেইস ফর ডিসেন্ট’ শীর্ষক এই ব্রিফিংয়ে সামাজিক মাধ্যমে ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের সমালোচনা করায় গুম, বিনাবিচারে আটক ও নির্যাতনের মতো নানান ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ১০ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডিএসএ’র অধীনে দায়েরকৃত মামলা পর্যালোচনা করা হয়েছে।

ব্রিফিং এ বলা হয়, ২০২১ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে ডিএসএ’র অধীনে দায়ের হওয়া মামলায় অন্ততপক্ষে ৪৩৩ জন কারাবন্দী আছেন; যাদের বেশিরভাগকেই অনলাইনে ভুল এবং আক্রমাণাত্মক তথ্য প্রকাশের অভিযোগে ধরা হয়েছে। যাদেরকে আইনটির নিশানা বানানো হয়েছে তাদের মধ্যে সাংবাদিক, কার্টুনিস্ট, গায়ক, এক্টিভিস্ট, উদ্যোক্তা, শিক্ষার্থী এমনকি লেখাপড়া না জানা এক কৃষকও রয়েছেন। ডিএসএ’র অধীনে একটি মামলায় লেখক মুশতাক আহমেদ বিচারবিহীনভাবে ১০ মাস ধরে কারাগারে ধুঁকে মৃত্যুবরণ করেছেন। একজন কারাবন্দী অভিযোগ করেছেন তাঁকে নির্যাতন করা হয়েছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল'র দক্ষিণ এশিয়া ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মাদি বলেন, ডিএসএ’র আওতায় কর্তৃপক্ষ যে ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে তা থেকেই স্পষ্ট, বর্তমানে বাংলাদেশে কোনো কিছুর প্রতিবাদ করা বা ভিন্নমত পোষণ কতটা বিপদজ্জনক হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন ধরনের মতপ্রকাশে এমন অন্যায্য বিধিনিষেধ আরোপ বাংলাদেশি সমাজের সর্বস্তরে ভয়ের বার্তা ছড়িয়েছে এবং স্বাধীন মিডিয়া ও সুশীল সমাজের কাজের পরিসরকে সংকুচিত করেছে।

শুধুমাত্র নিজেদের মতপ্রকাশের অধিকার চর্চার কারণে যেসব মানুষকে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ বন্দী করেছে তাদেরকে অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে।

শুধু অনলাইনে একটি মন্তব্য করার কারণে যে কোনো জায়গায় অভিযান চালানো, ডিভাইস ও তাতে থাকা তথ্যাদি জব্দ করা এবং বিনা ওয়ারেন্টে ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার মতো নির্বিচার ক্ষমতা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রদান করে ডিএসএ। এ ধরনের অনুশীলন ইন্টারন্যাশনাল কভেনেন্ট অন সিভিল এন্ড পলিটিক্যাল রাইটস (আইসিসিপিআর) দ্বারা সুরক্ষিত মতপ্রকাশের স্বাধীনতার লঙ্ঘন; যেখানে বাংলাদেশও একটি স্বাক্ষরকারী পক্ষ।

সাদ হাম্মাদি বলেন, ডিএসএসহ যাবতীয় আইনকে আইসিসিপিআর এর সাথে সাযুজ্যপূর্ণ করতে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যাপারে ২০১৮ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ চলাকালীন জাতিসংঘের বিভিন্ন সদস্য দেশের যেসব সুপারিশ তারা গ্রহণ করেছিলেন সেগুলোর বিষয়ে আমরা বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।

ব্রিফিং-এ বলা হয়, ২০১৮ সালের অক্টোবরে প্রবর্তন করা ডিএসএ সামাজিক মাধ্যম, ওয়েবসাইট এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্লাটফর্মে ভিন্নমত দমনের জন্য ক্রমাগতভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে; যাতে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে রয়েছে যাবজ্জীবন। অনলাইনে ভুয়া, আক্রমাণাত্মক, অবমাননাকর ও মানহানিকর বক্তব্য ছড়িয়েছেন এমন অজুহাতে কর্তৃপক্ষ সমালোচনাকারীদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।

এমনকি আইনটি প্রণয়নের আগে জাতিসংঘের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত এবং মানবাধিকার রক্ষকদের পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিশেষ দূতরা ডিএসএ’র খসড়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। অনলাইনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার স্বার্থে ডিএসএ সংশোধনের জন্য বাংলাদেশের ইউপিআর-এ জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারকে সুপারিশ করেছে। এসব সুপারিশ গ্রহণ করার পরও সরকার এখন পর্যন্ত নিজের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে।

ব্রিফিং এ বলা হয়, মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয়ার কারণে ২০২১ সালের ২৬ই ফেব্রুয়ারি মানবাধিকারকর্মী রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে অযাচিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং জামিনে মুক্তির আগে তাঁকে ৪৫ দিন কারাবন্দী রাখা হয়। কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট করার কারণে ২০২০ সালের মে মাসে লেখক মুশতাক আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরপর ৬ বার জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর ২০২১ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি তিনি কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বলে জানা যায়।

ব্রিফিং-এ সাদ হাম্মাদি বলেন, কারাগারে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করা তো দূরের কথা, মুশতাক আহমেদের এক মিনিটও কারাগারে থাকার কথা ছিলো না। ডিএসএ’র অনেকগুলো ধারায় এমন অনেক কাজকে অপরাধ বানানো হয়েছে যেগুলো আদৌ কোনো অপরাধ হিসেবে গণ্য হওয়া উচিত নয়। ভিন্নমত দমনের জন্য আইনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের এই অনুশীলন থেকে বেরিয়ে আসতে আমরা কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাচ্ছি।

মতামত-কতিপয় আমলার লোভ ও আশ্রয়ণ প্রকল্প-প্রথম আলো

ড. মইনুল ইসলাম একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক তার মতামত কলামে লিখেছেন-দেশের গৃহহীন পরিবারগুলোকে সরকারি খাসজমিতে টিনের ছাউনি-পাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মসূচিকে অনেকের কাছে ‘ঐতিহাসিক’ মনে হয়েছিল, কিন্তু এক বর্ষার বৃষ্টির আঘাতেই ঘরগুলো ভেঙে পড়তে শুরু করায় যে সত্যটা ফুটে উঠেছে, তা হলো দুর্নীতির সর্বগ্রাসী বিস্তারের প্রেক্ষাপটে আমলাদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এই নির্মাণযজ্ঞ যে মুখ থুবড়ে পড়বে, সেটা প্রধানমন্ত্রী অনুধাবন করতে পারেননি। সরকারি খাসজমিতে দুই শতক জায়গায় প্রতিটি ঘর নির্মাণে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল, কিন্তু মহাদুর্নীতিগ্রস্ত বাংলাদেশের আমলাতন্ত্রের ব্যবস্থাপনায় নির্মাণ-ঠিকাদারির বাস্তবতায় বরাদ্দ অর্থের সিংহভাগই যে স্রেফ লোপাট হয়ে যাবে, তা তো না বোঝার কিছু ছিল না।

এই পাকা ঘরগুলোর দেয়াল, পিলার বা মেঝেতে স্রেফ বালুর সঙ্গে নামকাওয়াস্তে সিমেন্ট দিয়ে পুঁজি-লুণ্ঠনের মহাযজ্ঞ চালানো হয়েছে, সেটারই অকাট্য প্রমাণ ফুটে উঠেছে ধসে পড়া ঘরের দেয়াল, পিলার ও মেঝেগুলোতে! টেলিভিশনে দেখা গেল হাত দিয়ে টান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝুরঝুর করে মেঝের ভাঙা অংশ উঠে আসছে, দেয়াল বা পিলার খসে পড়ছে। বালুর সঙ্গে যথাযথ অনুপাতের সিমেন্ট থাকলে এমন দশা হওয়া অসম্ভব! দেশের প্রান্তিক অবস্থানের গৃহহীন জনগোষ্ঠী দানের ঘরগুলোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অজস্র শোকরিয়া জানিয়েছিল, সর্বনাশা দুর্নীতির তাণ্ডবে তাঁর সদিচ্ছা নস্যাৎ হতে দেখে তাঁরাও নিশ্চয়ই হতবাক!

‘দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স’ নীতি শুধুই কথায় পরিণত হওয়ায় এবং দুর্নীতি দমনে কার্যকর উদ্যোগের অভাব দেশের রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতিকে গত এক যুগে এমন সর্বনাশা ও সর্বব্যাপ্ত স্তরে নিয়ে গেছে যে দেশের জনগণ এখন ‘মেগা প্রকল্প’সহ সব সরকারি প্রকল্পকেই দুর্নীতি ও পুঁজি লুণ্ঠনের মহাযজ্ঞ হিসেবে বিবেচনা করছে। অতএব আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো যে এক বর্ষার বৃষ্টিতেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ছে, তাতে কারও অবাক হওয়ার কারণ নেই। বাংলাদেশের প্রতিটি সরকারি প্রকল্পের অবশ্যম্ভাবী নিয়তি হলো প্রাক্কলিত ব্যয় প্রকৃত ব্যয়ের চেয়ে অনেক বেশি নির্ধারণ সত্ত্বেও প্রকল্পের কাজ অহেতুক বিলম্বিত করে কয়েক দফায় প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে নেওয়া, যাতে আমলা, প্রকৌশলী, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং ঠিকাদারেরা পারস্পরিক যোগসাজশের মাধ্যমে প্রকল্প থেকে পুঁজি-লুণ্ঠনের মওকা পেতে পারেন। সে জন্যই এ দেশের প্রায় প্রতিটি সরকারি প্রকল্পের ব্যয় বিশ্বের উন্নত-উন্নয়নশীল নির্বিশেষে সব দেশের চেয়ে বেশি পড়ে যাওয়াই নিয়মে পরিণত হয়েছে।

‘দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স’ নীতি শুধুই কথায় পরিণত হওয়ায় এবং দুর্নীতি দমনে কার্যকর উদ্যোগের অভাব দেশের রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতিকে গত এক যুগে এমন সর্বনাশা ও সর্বব্যাপ্ত স্তরে নিয়ে গেছে যে দেশের জনগণ এখন ‘মেগা প্রকল্প’সহ সব সরকারি প্রকল্পকেই দুর্নীতি ও পুঁজি লুণ্ঠনের মহাযজ্ঞ হিসেবে বিবেচনা করছে।

আর ঠিকাদারদের প্রায় সবাই যেহেতু ক্ষমতাসীন দল বা জোটের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকাটাই এ দেশের নিয়ম, তাই ওপরে উল্লিখিত পুঁজি-লুণ্ঠনযজ্ঞের সবচেয়ে বড় ফায়দাভোগীও হয়তো রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরাই। কিন্তু সব পর্যায়ের আমলাতন্ত্রও এর ভাগীদারে পরিণত হয়েছে। দুর্নীতিতে বাংলাদেশ পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত। ২০০১ সালে সরকারে ক্ষমতাসীন ছিল আওয়ামী লীগ, আর ২০০২ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতাসীন ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট। ২০০৭-২০০৮ সালে সামরিক বাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুর্নীতিবাজদের ‘প্রবল ঝাঁকি’ দেওয়ায় বাংলাদেশের ভাগ্যে দুর্নীতির বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ আর না জুটলেও আমাদের অবস্থান এখনো দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্নে এবং বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ১৫টি দেশের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে।

অথচ ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত এক যুগে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পালে প্রবল হাওয়া লেগেছে। দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে বাড়তে বাড়তে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮ দশমিক ২ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল। করোনাভাইরাস মহামারির তাণ্ডবে ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার কমে গেলেও তা ৫ শতাংশের ওপরে রয়ে গেছে, যেটা অবশ্যই প্রশংসনীয়।

কিন্তু জিডিপির প্রবৃদ্ধির এই সাফল্যের সুফল যে সমাজের কয়েক হাজার ব্যবসায়ী-শিল্পপতি, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, দুর্নীতিবাজ আমলা এবং দুর্নীতিতে নিমজ্জমান সামরিক কর্মকর্তারাই একতরফা দখলে নিয়ে যাচ্ছেন, তারই অকাট্য প্রমাণ ফুটে উঠেছে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ আরেকটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ অর্জনের মাধ্যমে—ধনাঢ্য ব্যক্তি সৃষ্টির প্রতিযোগিতায় ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বার্ষিক ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার অর্জন করেছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ‘ওয়েলথ এক্স’-এর প্রতিবেদন ওয়ার্ল্ড আলট্রা ওয়েলথ রিপোর্ট-২০১৮ মোতাবেক এই পাঁচ বছরে অতি ধনীদের সংখ্যা বৃদ্ধির দিক দিয়ে বড় অর্থনীতির দেশগুলোকে পেছনে ফেলে বিশ্বে ১ নম্বর স্থানটি দখল করেছে বাংলাদেশ।

ওই গবেষণা প্রতিবেদনে ৩০ মিলিয়ন বা ৩ কোটি ডলারের (প্রায় ২৫৫ কোটি টাকা) বেশি নিট সম্পদের অধিকারী ব্যক্তিদের ‘আলট্রা-হাই নেট-ওয়ার্থ’ ইনডিভিজু্যয়াল হিসেবে অভিহিত করে বলা হয়েছে বাংলাদেশে ধনকুবেরের সংখ্যা ২৫৫ জন। ধনাঢ্য ব্যক্তিরা এ দেশে যেভাবে নিজেদের আয় এবং ধনসম্পদ লুকোনোতে বিশেষ পারদর্শিতা প্রদর্শন করে থাকে, তাতে হয়তো দেশে ধনকুবেরের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হবে। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি লজ্জাজনক অর্জন। কারণ, ধনকুবেরদের সম্পদের প্রবল স্ফীতির অর্থই হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফলের সিংহভাগ দেশের ধনাঢ্যদের কাছে গিয়ে জমা হয়ে যাচ্ছে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ন্যায্য হিস্যা থেকে দেশের সাধারণ জনগণ বঞ্চিত হচ্ছেন ক্ষমতাসীন মহলের ভ্রান্ত নীতির কারণে।

এই ন্যক্কারজনক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ অর্জনের পরও দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের টনক নড়ছে না। বেশ কয়েকজন ধনাঢ্য ব্যক্তির অতীতের কর্মকাণ্ডের মূল্যায়ন না করে বরং তাঁদের দেশের অর্থনীতি পরিচালনার প্রত্যক্ষ দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর গঠিত সরকারে। বর্তমান সরকারের আমলে ‘ক্রোনি ক্যাপিটালিজম’ আরও দৃঢ়ভাবে গেড়ে বসছে অর্থনীতি ও রাজনীতিতে। দেশের বর্তমান সাংসদদের ৬২ দশমিক ৭ শতাংশ ব্যবসায়ী, সরকারের মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্য ব্যবসায়ী।

সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে পুঁজি পাচার নিয়ে দেশের সংবাদমাধ্যমে প্রবল আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। কানাডার ‘বেগমপাড়া’ এবং মালয়েশিয়ার ‘সেকেন্ড হোম’ পুঁজি পাচারের প্রতীকী গন্তব্য হিসেবে প্রবলভাবে আলোচিত হলেও যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, অন্যান্য ইউরোপীয় দেশ, দুবাই, সিঙ্গাপুর এবং ভারত প্রকৃতপক্ষে এ দেশের পুঁজি পাচারের সবচেয়ে বেশি সুফলভোগী। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিপ্লবের কল্যাণে পুঁজি পাচারকারীর নাম-ঠিকানা এবং হাঁড়ির খবর সংগ্রহ করা একেবারেই সহজ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও সরকারের সদিচ্ছা ও আগ্রহের অভাবে এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। অথচ নিচে উল্লেখিত প্রতিরোধ কার্যক্রমগুলো অবিলম্বে গ্রহণ করা উচিত বলে আমি মনে করি:

সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে পুঁজি পাচার নিয়ে দেশের সংবাদমাধ্যমে প্রবল আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। কানাডার ‘বেগমপাড়া’ এবং মালয়েশিয়ার ‘সেকেন্ড হোম’ পুঁজি পাচারের প্রতীকী গন্তব্য হিসেবে প্রবলভাবে আলোচিত হলেও যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, অন্যান্য ইউরোপীয় দেশ, দুবাই, সিঙ্গাপুর এবং ভারত প্রকৃতপক্ষে এ দেশের পুঁজি পাচারের সবচেয়ে বেশি সুফলভোগী।

১. সরকারে চাকরিরত যেসব বেসামরিক ও সামরিক আমলার পরিবার দেশের অর্থ পাচার করে বিদেশে ঘরবাড়ি কিনে বসবাস করছে, তাঁদের চিহ্নিত করতে হবে। তাঁদের অবিলম্বে বরখাস্ত কিংবা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়ে অবসর-পরবর্তী সব আর্থিক সুযোগ-সুবিধা বাজেয়াপ্ত ও পেনশন বাতিল করতে হবে।

২. এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একই সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক মামলা করে প্রয়োজনে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাঁদের কারাদণ্ড নিশ্চিত করা এবং দেশে থাকা সম্পদ ক্রোক করতে হবে।

৩. যেসব ঋণখেলাপিকে তদন্তের মাধ্যমে পুঁজি পাচারকারী সাব্যস্ত করা যাবে, তাঁদের অবিলম্বে সব ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণে অযোগ্য ঘোষণা করা এবং একটি ‘ঋণখেলাপি ট্রাইব্যুনাল’ গঠনের মাধ্যমে আপিল-সুবিধাহীন দ্রুত বিচার সম্পন্ন করা।

৪. কোনো ঋণখেলাপি ব্যাংকের মালিক কিংবা পরিচালক থাকলে অথবা তাঁরা সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো পদে অধিষ্ঠিত থাকলে, তাঁদের ওই সব পদ থেকে অবিলম্বে অপসারণ করা।

৫. কোনো পুঁজি পাচারকারী ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের কোনো সংগঠনের নেতৃত্ব পদে থাকলে অথবা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের কোনো নেতা-কর্মী পুঁজি পাচারকারী সাব্যস্ত হলে ওই পদ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করে তাঁর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা করা।

সবশেষে সরকার প্রধানের প্রতি অনুরোধ, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নেতৃত্ব দিয়ে আপনি ইতিহাসে যে স্থান করে নিয়েছেন, সেটাকে ‘চিরস্থায়ী’ করতে হলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি ঐতিহাসিক প্রতিরোধযুদ্ধেও আপনাকে নেতৃত্ব দিতে হবে। আমার একান্ত কামনা, আপনি এ সুযোগ হারাবেন না।

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

পেগাসাস কাণ্ডে তদন্ত কমিশন গঠন করল রাজ্য-দিল্লি যাওয়ার আগে ঘোষণা মমতার –আনন্দবাজার পত্রিকা

মমতা বন্দোপাধ্যায়

দিল্লি যাওয়ার ঠিক আগেই জরুরি ক্যাবিনেট বৈঠক। তাতে যে বড়সড় কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সেই আন্দাজ ছিল। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) নিয়ে ফেললেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক সিদ্ধান্ত। পেগাসাস (Pegasus) স্পাইওয়্যার ইস্যুতে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়াতে রাজ্যে তদন্ত কমিশন (Enquiry Commission) তৈরি করার ঘোষণা করলেন তিনি। সোমবার নবান্নে অল্প কিছুক্ষণের জন্য মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক হয়। তাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর। অবসরপ্রাপ্ত দুই বিচারপতি – মদন বি লোকুর এবং জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যর নেতৃত্বে তৈরি হচ্ছে তদন্ত কমিশন। রাজ্যে কোন কোন ভিআইপি, সাংবাদিকের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল, তার তদন্ত হবে এই দুই বিচারপতির নেতৃত্বাধীন কমিশনে। জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তৃণমূলের সঙ্গে জোট! বিজেপিবিরোধী যে কোনো দলের সঙ্গে কাজ করতে রাজি –বললেন বিমান আজকাল/আনন্দবাজার পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে,বিজেপি বাদে যে কোনো দলের সঙ্গেই কাজ করতে তৈরি বামফ্রন্ট। তাই ২০২৪ এ বিজেপিকে ঠেকাতে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তৃণমূলের সঙ্গেও হাত মেলাতে তাঁদের আপত্তি নেই বলে এবার সাফ জানিয়ে দিলেন বাম ফ্রন্টের  চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনি বলে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা, কচ্ছ থেকে কোহিমা-আন্দোলনের প্রশ্ন দেখা দিলে বিজেপিবিরোধী সব শক্তির সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। আসল শক্র চিনতে ভুল করেছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনে শূন্য পেয়ে, তা হয়তো কিছুটা বুঝতে পেরেছিলেন। লোকসভা নির্বাচনে তার পুনরাবৃত্তি চান না সিপিএম নেতৃত্ব। যে কারণেই হয়তো বিমানের এমন মন্তব্য।

কেন্দ্রের বিতর্কিত কৃষি আইনের প্রতিবাদ, ট্রাক্টর চালিয়ে সংসদে গেলেন রাহুল গান্ধী-সংবাদ প্রতিদিন

আটমাস অতিক্রান্ত। বিতর্কিত তিন কৃষি আইনের (Farm Laws) বিরুদ্ধে এখনও দেশজুড়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে কৃষক সংগঠনগুলি। অন্যদিকে, আইন বাতিল না করা নিয়ে অনড় কেন্দ্রও। ইতিমধ্যে বাদল অধিবেশন চলাকালীনই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কৃষকরা। এই পরিস্থিতিতে এবার তাঁদের পাশে দাঁড়ালেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। সোমবার বিতর্কিত কৃষি আইনের নজিরবিহীন প্রতিবাদ করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)।

এদিন ট্রাক্টর চালিয়ে সংসদে গেলেন রাহুল গান্ধী। বিজয়চক দিয়ে সংসদে প্রবেশ করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন পাঞ্জাব-হরিয়ানার একাধিক সাংসদ। কংগ্রেসের তরফ থেকে টুইট করা ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে, ট্রাক্টরে চালকের আসনে বসে রাহুল। পাশে আরও বেশ কয়েকজন সাংসদ। ট্রাক্টরের সামনে আবার বড় একটি ব্যানারও লাগানো ছিল। তাতে লেখা ছিল, বিতর্কিত কৃষি আইন কেন্দ্রকে ফেরত নিতে হবে। এরপরই সাংবাদিকদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখার সময় কেন্দ্রকে তোপ দেগে তিনি বলেন, “তিন কৃষি আইন অবিলম্বে বাতিল বাতিল করতে হবে। এই তিন আইন কৃষক বিরোধী। এতে কৃষকদের কোনও লাভ হবে না। বরং দেশের দু-তিনজন শিল্পপতিই লাভবান হবেন। আমি কৃষকদের আওয়াজই সংসদে তুলে ধরতে চাই। কারণ কেন্দ্র সংসদে এই নিয়ে কোনও আলোচনা করতে দিচ্ছে না।”#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২৬

ট্যাগ