সরকার খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে সচেতনভাবে হত্যা করছে: ফখরুল
(last modified Fri, 03 Dec 2021 09:03:44 GMT )
ডিসেম্বর ০৩, ২০২১ ১৫:০৩ Asia/Dhaka
  • বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
    বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি আবারো অভিযোগ করেছে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুরুতর অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে না পাঠিয়ে তাকে তিলে তিলে হত্যার ষড়যন্ত্র চলছে।

আজ (শুক্রবার) সকালে রাজধানীতে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটা মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে, অত্যন্ত সচেতনভাবে তিলে তিলে হত্যা করা হচ্ছে-এই কথা আমরা বার বার বলছি। পৃথিবীর সমস্ত দেশ এটা জানে। আমাদের দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন সংগঠন, বুদ্ধিজীবী সবাই বলেছেন যে, দেশনেত্রীকে বাইরে চিকিৎসার করার সুযোগ দেন। কিন্তু নিপীড়ক সরকার সে সব আমলে নিচ্ছে না। 

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত  হয়। সহাস্রাধিক নেতা-কর্মী দলের চেয়ারপারসনের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়।

আদালতের রায়ে ১৭ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ নেই- সরকারের মন্ত্রীদের এমন মন্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা বলছেন, তিনি সাজাপ্রাপ্ত। কিন্তু সাজাপ্রাপ্ত হলেও তিনি তো দেশের নাগরিক। তার তো অধিকার আছে চিকিৎসা করার।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এই সরকার তাকে তিলে তিলে সচেতনভাবে হত্যা করছে। আমরা চাই আমাদের দেশনেত্রীকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসার সুযোগ করে দেন। এটা সর্বনিম্ন দাবি। এটা কোনো দয়া নয়, মহানুভবতা নয় কিংবা মানবিক ব্যাপার নয়। এটা নাগরিক হিসেবে অধিকার। আপনারা বলবেন উনি তো সাজাপ্রাপ্ত নাগরিক। সাজাপ্রাপ্ত নাগরিকও তো চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার রাখেন।

খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা করার যৌক্তিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘তার রক্তক্ষরণ হচ্ছে। লিভার সিরোসিস অত্যন্ত মারাত্মক রোগ। এদেশে তার যথাযথ চিকিৎসা নাই। এটা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানিতে হয়। তার যদি আবার রক্তক্ষরণ হয় তবে তিনি বাঁচবেন না। তাই আমাদের দাবি, তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হোক।’

খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সংগ্রামের কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এটা প্রমাণিত যে, খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্র অবিচ্ছেদ্য। এটা আলাদা করা যায় না। এদেশে কজন নেতা আছেন, যারা কারাগারে থেকে, হাসপাতালে থেকে দেশের জন্য সংগ্রাম করছেন। খালেদা জিয়া মাথা নুয়াননি। তিনি মানুষের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করছেন। তাই তার অধিকার হচ্ছে চিকিৎসা পাওয়ার। আমাদের অধিকার হচ্ছে, ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার, গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার।’

গণতন্ত্র বাঁচাতে না পারলে দেশ অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন,‘আজকে যদি খালেদা জিয়াকে সরকার বিদেশে না পাঠায়, যদি আমরা গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে না পারি তাহলে এ দেশের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যাবে।’

গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে তরুণদের শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব হল, আজ আমাদের জেগে উঠতে হবে। দুরাত্মা, দুঃশাসনকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থে ন্যায়, সত্য সুন্দর ও মুক্ত গণতন্ত্রের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

নির্বাচন নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। নির্বাচন ব্যবস্থা কি আছে? আপনারা দেখেন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে কত মানুষের প্রাণ গেল, প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হলো।

সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাকির তুহিনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ