উজানের ঢলে সিরাজগঞ্জে ৭'শ একর জমির ফসল পানির নীচে
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে সিরাজগঞ্জে নদীর তীরবর্তী পাঁচ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৭’শ একর জমির কালো বোরো ধানসহ অন্যান্য ফসল তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে অসময়ে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে করে নদীপাড়ের মানুষের মধ্যে দারুন আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এদিকে যমুনা ও তার শাখা নদী করতোয়া, বড়াল ও হুড়াসাগর নদীতে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, গত ১০ দিনে চৌহালী উপজেলার দক্ষিণ এলাকার বেশকিছু বাড়ি-ঘর ও অনেক ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দক্ষিণ চৌহালীর বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিনানুই থেকে চর সলিমাবাদ পর্যন্ত যমুনা নদীর বাম তীরে তীব্র নদীভাঙন শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
চৌহালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক সরকার জানান, বাঘুটিয়া ও খাষপুখুরিয়া বেশ কিছুদিন ধরেই যমুনার ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে অনেক ফসলি জমিসহ বেশ কিছু বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে, বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।
সিরাজগঞ্জ পাউবো-এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন জানান, চৌহালী উপজেলার এতদিন টাঙ্গাইল নির্বাহী প্রকৌশলীর অধীনে থাকা ওই অংশে যমুনার ভাঙন শুরুর বিষয়টি শুনেছি। তবে সম্প্রতি ওই অংশটি সিরাজগঞ্জের আওতায় আসলেও এখনও অফিসিয়ালি কোনো চিঠি পাওয়া যায়নি।
ওদিকে, উজানের ঢলে দ্রুত বাড়ছে নদ-নদীর পানি। ভারতের মেঘালয় ও দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গত দুদিন ভারি বৃষ্টি হওয়ায় বাড়ছে পাহাড়ি ঢল। বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে মেঘনা, ধনু ও কালনী-কুশিয়ারার পানি। পাহাড়ি ঢলে কিশোরগঞ্জে নদ-নদীর পানি বাড়ছে। দু-এক দিনের মধ্যে নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ অবস্থায় ফসলডুবির শঙ্কায় হাওড়ের কৃষকদের দ্রুত ধান কেটে ফেলার আহ্বান জানিয়ে এলাকায় মাইকিং করছে প্রশাসন।
দুই সপ্তাহ আগে উজানের ঢলে কিশোরগঞ্জের প্রায় ৮০০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে যায়। দ্বিতীয় দফায় জমি তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় কাঁচা-পাকা ধান কেটে ফেলছেন কৃষক। তারা বলছেন, বাঁধগুলো রক্ষা করা না গেলে পানিতে তলিয়ে যাবে পুরো হাওড়ের বর ধান ।
কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান বলেন, ‘প্রতিদিনই যে হারে পানি বাড়ছে, এ হারে বাড়তে থাকলে আগামী এক থেকে দুদিনের মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে হাওরে পানি প্রবেশ করার সম্ভাবনা থাকবে। তাই আমরা আমাদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছি।’
উল্লেখ্য, কিশোরগঞ্জের তিনটি হাওড় ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামে উপজেলায় অবস্থিত। চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলে ১ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এখন পর্যন্ত মাত্র ২০ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/ বাবুল আখতার /১৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।