ইউক্রেনে রুশ হামলার জের
বিশ্বে খাদ্য সংকট শুরুর আশঙ্কার মাঝে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মন্ত্রীর আশ্বাস বাণী
ইউক্রেনে রুশ হামলার পর খাদ্য সংকট শুরু হয়েছে বিভিন্ন দেশে। এমন পরিস্থিতিতে আসন্ন মাসগুলোতে বিশ্বজুড়ে খাবারের ঘাটতি দেখা দেবে বলে আশংকা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এমনকি এর কারণে বছরের পর বছর ধরে বিশ্বজুড়ে দুর্ভিক্ষ চলতে পারে বলেও সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছে সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার (১৯ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
খাদ্য নিয়ে বিশ্বব্যাপী এমন আশঙ্কার মাঝে বাংলাদেশের খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বিশ্বে খাদ্য সমস্যা আছে। তবে দেশে কোনোভাবেই খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা নেই। কৃষিপ্রধান দেশ বলেই ধান-চালে আমাদের সমস্যা নেই। গম যতটুকু লাগবে, আমরা আমদানি করে নিতে পারবো। আর চালের দাম খুব শিগগির সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে খাদ্যমন্ত্রী সাধন মজুমদার বলেন, অটো রাইস মিল মালিকরা ধান কিনছেন। কিন্তু তাঁরা উৎপাদনে যাননি। যে ধান দু'দিনে শুকাত, বৃষ্টির জন্য সেটা পাঁচ থেকে সাত দিন লাগছে। ফলে চালের দাম বেড়েছে। এ অবস্থায় দাম নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। চিন্তার কিছু নেই। জোগান কম নেই।
মন্ত্রী এমন আশ্বাস বাণীর তোয়াক্কা না করেই গত কয়েক দিন ধরে চালের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পাইকারি বাজারে চালের দাম বাড়ায় এ প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। গতকাল বুধবার প্রায় সব ধরনের চালের দাম খুরচা বাজারে কেজিপ্রতি ৩-৫ টাকা বেশিতে কিনতে হয়েছে।
ভরা মৌসুমেও কেন চালের দাম বাড়তি এমন প্রশ্নে কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলেন, বোরো ধানের বড় অংশই কৃষকের কাছ থেকে কিনে নিয়েছে ফড়িয়া ও মিলাররা। চাল করে বাজারে ছাড়ার কথা তাদের। তারা তা না করে গুদামে আটকে রেখেছে। মিলারদের কাছ থেকে চালের পর্যাপ্ত সরবরাহ বাজারে আসছে না। এ কারণে চালের সংকট ও দাম দুই বাড়ছে। এদিকে, গমের মজুতও তলানিতে। গত বছর এ সময় গমের মজুত ছিল ২ লাখ ৮৫ হাজার টন। এ বছর গমের মজুত আছে মাত্র ১ লাখ ৬ হাজার টন।
গত ১৩ মে ভারত গম রপ্তানি বন্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করার পর আটা ও ময়দার বাজারে প্রভাব পড়েছে। আটা প্রতি কেজি এখন ৪০ টাকায় উঠে গেছে।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেছেন, সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, দেশে খাদ্যশস্যের কোনো ঘাটতি হবে না। গম নিয়েও কোনো চিন্তা নেই। চলমান সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে। কিন্তু কীভাবে সমাধান হবে- এ বিষয়ে পরিস্কার কিছু বলছেন না। সরকারের মধ্যে ধোঁয়াশা থাকলে চালের দাম আরও বাড়বে। এ জন্য সরকারকে খোলাসা করে কথা বলতে হবে।
কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেছেন, আমাদের দেশের চালের যে চাহিদা তার বেশিরভাগ দেশেই উৎপন্ন হয়। তাই সরকারের আরও বেশি কঠোর হওয়া উচিত যাতে আন্তর্জাতিক বাজারের সুযোগ নিয়ে কোনো গোষ্ঠী দেশীয় চালের বাজার অস্থির করতে না পারে।’#
পার্সটুডে/ আব্দুর রহমান খান/ বাবুল আখতার/১৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।