ঈদে ঘরমুখো মানুষের ঢল: যাত্রী ভোগান্তি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ
পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের ঢল। আজ শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সকাল থেকেই রাজধানীর কমলাপুর ট্রেন ষ্টেশন, আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল এবং সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দেখা গেছে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়।
আজ সকালে কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি ট্রেন ছিল ঘরমুখী যাত্রীতে ঠাসা। আজ সকালে কমলাপুর স্টেশনের ব্যবস্থাপক জানান, ট্রেনে ঈদযাত্রার চতুর্থ দিনে বেলা ১১টা পর্যন্ত ১৬টি আন্তঃনগর ও লোকাল ট্রেন কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে গেছে। গতকাল পোশাক কারখানা, সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ছুটি হওয়ায় রেলপথে যাত্রীর চাপ বেড়েছে । কমলাপুর রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, ‘গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার মানুষ ট্রেনে ঢাকা ছেড়েছেন। তবে, বেশি যাত্রীর চাপ এবং মানুষের যে স্রোত সেটা ঠেকানো যাচ্ছে না।’ তিনি বলেন, 'আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, জিআরপি পুলিশ সবাই যাত্রী চাপের কাছে ব্যর্থ হয়েছে। ট্রেনের ছাদ থেকে যাত্রী নামানো যাচ্ছে না।'
কয়েকটি ট্রেন দেরিতে ছাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, পূর্বাঞ্চলের ট্রেনগুলো যথাসময়ে ছেড়ে যেতে পারছে। কিন্তু উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলো ঠিক সময়ে কমলাপুর ছেড়ে যেতে পারছে না। এর মধ্যে কোনোটা এক থেকে দুই ঘন্টা দেরিতে যাচ্ছে বলেন তিনি। খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস প্রায় তিন ঘণ্টা দেরিতে ছেড়ে গেছে।
গতমাসে পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলে বাসে যাতায়াত বেড়েছে। উত্তরাঞ্চল ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষেরও মূল যাতায়াত বাসে। গত ঈদুল ফিতরে দূরপাল্লার পথে বিপুল যাত্রী ঝুঁকি নিয়ে মোটরসাইকেলে বাড়ি গেছেন অনেকে। এবার সরকার ঈদে মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। এ সুযোগে বাস মালিক–শ্রমিকেরা ইচ্ছে মতো ভাড়া বাড়িয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে, পরিবহন খাতের সূত্রগুলো জানায়, ঈদ উপলক্ষে বড় কিছু পরিবহন কোম্পানি অগ্রিম টিকিট বিক্রি করে। সেই টিকিট ছাড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত একটি চক্র এই টিকিটের একটা অংশ কিনে রাখে বলে অভিযোগ রয়েছে। শেষ দিকে তারা চড়া দামে এসব টিকিট কালোবাজারে বিক্রি করে।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতিবছরই ঢাকার তিনটি বাস টার্মিনালে তদারকি ডেস্ক বসানো হয়। এবারও বসেছে। এতে বিআরটিএ, মালিক–শ্রমিক প্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা থাকেন। এর বাইরে টার্মিনাল ও আশপাশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসেছে।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাঁদের মূল কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখা। যানবাহনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখা। বাড়তি ভাড়া আদায় নিয়ে খুব একটা তৎপরতা দেখা যায় না।
এদিকে, আজ রাজধানীর গাবতলীতে বাস না পেয়ে হাজারো মানুষ হেঁটে আমিনবাজারের দিকে রওনা দেন। বাসে আসন ফাঁকা না থাকায় ট্রাক ও পিকআপে করেই মূলত আমিনবাজার এলাকা থেকে যাত্রীরা ঢাকা ছাড়ছেন।#
পার্সটুডে/আব্দুর রহমান খান/রেজওয়ান হোসেন/৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।