দেশে পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রসারে সমাজে ধর্মীয় বিচ্যুতি বাড়ছে, উদ্বিগ্ন আলেম সমাজ
(last modified Tue, 14 Feb 2023 12:00:47 GMT )
ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩ ১৮:০০ Asia/Dhaka

১৯৯৩ সালে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার আয়োজনে বাংলাদেশে তথাকথিত ভালোবাসা দিবস নামের একটি সংস্কৃতির যাত্রা শুরু হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন আয়োজনে বাড়ে এর পরিধি। যা বর্তমানে কর্পোরেট সংস্কৃতির অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভালোবাসা দিবস-এর ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে এনসাইক্লোপিডিয়াসহ আরো বহু রেফারেন্স থেকে জানা যায়, "রোমান এক খ্রিস্টান পাদ্রির নাম ছিল সেন্ট ভ্যালেন্টাইন। চিকিৎসা বিদ্যায় সে ছিল অভিজ্ঞ। খ্রিস্টধর্ম প্রচারের অভিযোগে ২৭০ খ্রিস্টাব্দে রোমের সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াসের আদেশে ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। সে যখন বন্দি ছিলো তখন তরুণ-তরুণীরা তাকে ভালোবাসা জানিয়ে জেলখানাযর জানালা দিয়ে চিঠি ছুঁড়ে দিতো। বন্দি অবস্থাতেই সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ঐ জেলখানার জেলারের অন্ধ মেয়ের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেয়ার চিকিৎসা করেন। তখন মেয়েটির সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে উঠে। মৃত্যুর আগে মেয়েটিকে লেখা এক চিঠিতে সে লিখে যায়, "ফ্রম ইউর ভ্যালেন্টাইন।" অনেকের মতে, সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নামানুসারেই পোপ প্রথম জুলিয়াস ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে 'সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে' হিসেবে ঘোষণা দেয়।

প্রাপ্ত ইতিহাস দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, তথাকথিত ভালোবাসা দিবস কখনোই এদেশীয় অর্থাৎ বাঙালি সংস্কৃতির অংশ ছিলো না। আর মুসলমানদের সংস্কৃতিতো নয়ই। বরং তা সম্পূর্ণরূপেই বিজাতীয়  তথা পশ্চিমা প্রবর্তিত নিয়মনীতি। এর ফলে ১৪ ফেব্রুয়ারি এলে ভ্যালেন্টাইনস ডের নামে উঠতি বয়সী অনেক ছেলে মেয়েদের চলাফেরায় দেখা দেয় ক্ষেত্র বিশেষে অসামাজিক ও বিশৃঙ্খলা। যা কখনো কখনো সভ্য সমাজের প্রথাবিরোধী বলেও মন্তব্য করেন দেশের আলেম সমাজ।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইমাম সমিতির সভাপতি হাফেজ মাওলানা লুৎফর রহমান বলেন, তথাকথিত ভালোবাসা দিবসের নামে মূলত চলে বেপর্দা-বেহায়াপনার নির্লজ্জ উৎসব। যাতে ইবলিস শয়তানের ওয়াসওয়াসা থাকে এবং নফস বা প্রবৃত্তির উদ্দামতাও যুক্ত হয় কখনো। যা কুরআন শরিফ ও সুন্নাহ মুতাবিক শক্ত কবিরাহ গুনাহ। পরকালে এসব কাজের জন্য কঠিন শাস্তি পেতে হবে এবং জাহান্নামে যেতে হবে বলে মনে করেন হাফেজ মাওলানা লুৎফর রহমান।

আর মুফাসসিরে কুরআন মাওলানা খন্দকার মাহবুবুল হক মনে করেন, যারা 'ভ্যালেন্টাইন ডে' পালন করবে তারা কুফরি করবে। কারণ ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালোবাসা দিবস সম্পূর্ণরূপেই ইহুদি-নাছারা, মজুসি-মুশরিক তথা কাফিরদের প্রবর্তিত নিয়মনীতি বা তর্জ-তরিক্বা। যা মুসলমানদের মুসলমানিত্ব নির্মূলের গভীর ষড়যন্ত্রও বটে।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নেহাল করীম বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহারে উম্মুক্ত আকাশ সংস্কৃতির কারণে পশ্চিমা ধ্যান ধারণা জেকে বসেছে বাংলাদেশেও। যা থেকে পরিত্রানের সহজ কোন পথ নেই বলেই মনে করেন তিনি। তবে ব্যক্তির নিজস্ব পারিবারিক মূল্যবোধের উদয় হলেই এধরনের বিপথগামীতা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন এই সমাজবিজ্ঞানী। #

পার্সটুডে/বাদশা রহমান/বাবুল আখতার/১৪ 

ট্যাগ