মার্চ ২৩, ২০২৩ ১৮:৩৭ Asia/Dhaka

বাংলাদেশে প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন মানুষ। প্রতিরোধে নানান চেষ্টা করেও যেন লাভ হচ্ছে না। বেশিরভাগ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রেই তদন্তে ফিটনেস ফেইলের তথ্য বেরিয়ে আসে। এসব বিষয়ে সরকারকে আরও জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দেয়া হয়েছে বারংবার, কিন্তু কার্যত ফলাফল কতটা এসেছে তা নিয়ে সংশয় রয়েই গেছে।

প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। শিরোনাম হয় মৃত্যুর সংখ্যা। সেই সংখ্যা একক থেকে দশক, দশক থেকে কখনো কখনো শতকের ঘরে গিয়ে ঠেকে। কিন্তু এর দায় নিতে চায় না কেউ, চলে একে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর খেলা।

যাত্রী অধিকার ও সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর তথ্য বলছে, প্রতি মাসে সারা দেশে শতাধিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ৫০ থেকে ৭০টি থাকে যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনা। ফলে মৃতের সংখ্যাটাও বেশি হয়। মহাসড়কে দুর্ঘটনার কারনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রচন্ড নাখোশ। আবার পুলিশের কর্মকান্ড নিয়ে পরিবহন নেতারাও খুশি হতে পারছেন না। কিছু দুর্নীতিবাজ পুলিশ সদস্য প্রতি মাসে ‘মাসোহারা’ নিয়ে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচলের সুবিধা করে দিচ্ছেন এমন অভিযোগ ওঠায় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চটেছেন দুর্নীতিবাজ পুলিশ সদস্যদের ওপর। এ নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে গতকাল বুধবারও একটি বৈঠক করেছেন শীর্ষ পুলিশ কর্তারা। পুলিশের বৈঠক সূত্র জানায়, সারা দেশের মহাসড়কগুলোতে ৮৮৩ বাঁকে দুর্ঘটনা বেশি ঘটছে। এসব বাঁক দ্রুত সোজা করার সুপারিশ করা হয়েছে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে। গত ১০ বছরে মহাসড়কে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে এসব বিপজ্জনক বাঁক চিহ্নিত করা হয় বলে বৈঠকে জানানো হয়। পাশাপাশি চাঁদাবাজ পুলিশ সদস্যদের ধরতে ছদ্মবেশে তৎপর থাকতে বিশেষ বার্তা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক ও দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক শাহনেওয়াজ হাসানাত-ই-রাব্বি বলেন, মহাসড়কের এসব বাঁক বছরের পর বছর আলোচনায় রয়েছে। এর মধ্যে কিছু বাঁক সোজা করা হয়েছে। তবে বেশিরভাগ বাঁক এখনো সোজা না করার কারণে দুর্ঘটনার হার বাড়ছে। পাশাপাশি অনেক যানবাহনের ফিটনেস না থাকার পরও তারা মহাসড়কে বেপরোয়া। বেশিরভাগ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রেই তদন্তে ফিটনেস ফেইলের তথ্য বেরিয়ে আসে। এসব বিষয়ে সরকারকে আরও জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।

নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন নিসচা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটার পর প্রতিবারই এর পেছনের কারণ বিশ্লেষণ করা হয়। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব কারণ ও বিশ্লেষণ নিয়ে কথা বলা মানে শুধু ‘উপসর্গ’ নিয়ে কথা বলা। কিন্তু ঘটনা ঘটার আগে যাদের বিষয়গুলো দেখার কথা, তাদের কার্যক্রম নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেন না ।

কথা হয় বিআরটিএর সাবেক উপ সহকারী পরিচালক মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে, তিনি বলেন, পেশাদার চালক তৈরীর ত্রুটি এবং পরীক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রের সীমাবদ্ধতায় ভাল চালক তৈরী হচ্ছে না। দুর্ঘটনার পেছনে এটিও একটি কারন বলে মনে করেন তিনি। #

 

পার্সটুডে/এমএএইচ/বাবুল আখতার/২৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ