আওয়ামীলীগের শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা
রাজধানীসহ দেশজুড়ে বিএনপির পদযাত্রা;বিভিন্নস্থানে সংঘর্ষ-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ
পদযাত্রাকে বিজয় যাত্রা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন দেশের মানুষ সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গাবতলী থেকে পুরান ঢাকা পরযন্ত পদযাত্রা কর্মসূচির আগে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সকাল থেকেই বিভিন্নস্থান থেকে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে গাবতলী বাস টার্মিনালে জড়ো হন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। এতে অংশ নেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ কেন্দ্রীয় নেতারা। এসময় দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা বলেন,আওয়ামী লীগ যে সব সময় বলে তাদের সরকার জনগণের সরকার, এ দাবী কিন্তু আজ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,বর্তমান সরকারকে অবৈধ উল্লেখ করে,শেখ হাসিনার অধীনে আর কোন নির্বাচন নয় বলে আবারো স্পষ্ট ঘোষনা দেন। বলেন,ঢাকা ১৭ এর উপ-নির্বাচন তামাশায় পরিণত হয়েছে। গণ আন্দোলনে সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায় করে,নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে,জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে বলেও জানান মির্জা ফখরুল।
এদিকে পদযাত্রাকে ঘিরে মিরপুরে বাংলা কলেজের সামনে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় দুটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
দেশের বিভিন্ন জেলায়ও বিএনপির পদযাত্রায় ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ছিল দিনভর। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে রাবার বুলেটে ছোড়ে বিভিন্ন স্থানে। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে জেলা শহরগুলোতে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বগুড়া, ফেনী, খাগড়াছড়ি ও কিশোরগঞ্জের সংঘর্ষে দু দলের নেতাকর্মীরা বেশি আহত হন।
বগুড়ায় পুলিশের সাথে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তেজিত নেতা কর্মীরা সদর পুলিশ ফাড়িতে হামলা চালায়। তবে বিএনপি ও পুলিশ একে অপরকে দোষারোপ করছেন।
জেলা শহর ফেনীতে পদযাত্রায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ,বিএনপির নেতাকর্মী ও সাংবাদিকসহ অর্ধশত লোক আহত হয়েছেন। ফেনী শহরের জিরোপয়েন্ট এলাকায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়। থেমে থেমে চলে এ সংঘর্ষ। সরকারের পদত্যাগসহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের একদফা দাবীতে কিশোরগঞ্জে বিএনপি’র পদযাত্রা কর্মসূচিতেও পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জসহ বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। এ সময় সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতা-কর্মী আহত হয়েছে।
অন্যদিকে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সিটিটিউশনের সামনে থেকে আজ বিকেলে শুরু হয় আওয়ামীলীগের শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা। দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে সড়কে গণ পরিবহন ছিল না বলেই চলে। অফিসগামী সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা পড়েন চরম দুর্ভোগে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তার একপাশে শুরু হয় তীব্র যানজট।
বিকেলে আওয়ামীলীগের শান্তি সমাবেশের অনুষ্ঠান থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির চলামান পদযাত্রা তাদের পতন যাত্রায় পরিনত হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয় শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় নির্বাচন সামনে কোন উস্কানিতে পা না দিতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
বিএনপি জামাতের সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ অপ-রাজনীতি ও অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এতে যোগ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। শোভাযাত্রায় যোগ দিতে দুপুর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনে জড়ো হতে থাকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন,বিএনপি জামাত আবারও আন্দোলনের নামে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এভাবে নাশকতা করলে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সব ধরনের কূট কৌশলে ব্যর্থ বিএনপি এখন পদযাত্রায় নেমেছে। জনগণ এবং বিদেশীদের কাছ থেকে ব্যর্থ বিএনপি এখন হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বিএনপির সামনে এখন শুধু অন্ধকার। এ দেশে আর তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফিরে আসবে না। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি ইন্জিনিয়াস ইনস্টিটিউট থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ,এলিফ্যান্ট রোড, সাইন্স ল্যাব হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়ে শেষ হয়। #
পার্সটুডে/বাদশা রহমান/বাবুল আখতার/১৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।