উত্তর জনপদে ও মধ্যাঞ্চলে পানি কমলেও বন্যা ও ভাঙ্গনের আশঙ্কা
বাংলাদেশে আবারো বন্যার শঙ্কা, ভাঙ্গনের আতংকে নদী পাড়ের মানুষ
বাংলাদেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে উজানের ঢলে সব কটি নদ-নদীর পানি বাড়ছে। তিস্তা নদীর পানি বেড়ে চার দিন ধরে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা-দুধকুমার নদের পানিও বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।
পানি বেড়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলসহ নদীর তীরবর্তী জমির ফসল ডুবে গেছে। এসব নদ-নদীর অববাহিকায় আবার বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন গনমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ধরলা নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ছে। তবে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই।
উজানের বৃষ্টি কমে গেলে এক সপ্তাহের মধ্যে কুড়িগ্রামের সব নদ-নদীর পানি স্বাভাবিক হবে বলে জানান তিনি।আর উজানে ভারী বর্ষণে,আবারও সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে শহররক্ষা বাঁধের হার্ড-পয়েন্ট এলাকায় বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে। উজানে বৃষ্টিপাতের ফলে, চতুর্থ-বারের মতো যমুনায় পানি বৃদ্ধিতে বন্যার আশংকায় রয়েছেন স্থানীয়রা। তবে আগামীকাল থেকে পানি কমার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
এদিকে আগের দফার বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় আড়িয়াল খাঁ ও পদ্মা-মধুমতী নদী তীরের মানুষ পড়ছেন ভাঙ্গনের কবলে। ভাঙন অব্যাহত থাকায় আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের। এছাড়া ঝুঁকিতে রয়েছে বহু স্থাপনা ও বসতবাড়ি। আড়িয়াল খাঁ ও পদ্মা-মধুমতী নদীর ভাঙ্গনে নিঃস্ব হয়েছেন অনেক পরিবার। যদিও ভাঙন ঠেকাতে জরুরি কার্যক্রম শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ঢাকার অদূরে মানিকগঞ্জে পদ্মার ভাঙনের কবলে ১শ ১১ বছরের হরিরামপুরের মুকুন্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অর্ধেকটা ঝুলে আছে নদীতে,বাকিটা যেকোনো সময় বিলীনের অপেক্ষায়। এভাবে পদ্মা গিলে খাচ্ছে বসতভিটাসহ ফসলি জমি ও পাকা সড়ক। অনেকে গাছপালা কেটে ঘরবাড়ি নিরাপদে সরিয়ে নিচ্ছেন। হঠাৎ ভাঙনে সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেক পরিবার।
তবে পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে জরুরি প্রতিরক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এমনটা জানিয়েছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঢাকা কেন্দ্রীয় অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো.আসাদুজ্জামান।এছাড়া, ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন পাঁচুরিয়া,বানা ও গোপালপুরের দেড় কিলোমিটার অংশ জুড়ে, মধুমতী নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। কয়েক বছরে বিলীন হয়ে গেছে দুই কিলোমিটার জায়গা, দুই শতাধিক বসতভিটা ও কয়েক’শ একর ফসলী জমি। এমন চিত্র জেলা সদর,চর ভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলায় পদ্মা ও আড়িয়াল খা নদীর পাড়ে। অনেকে সব হারিয়ে দিন কাটাচ্ছেন, খোলা আকাশের নিচে।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা জানালেন,ভাঙন রোধে তাদের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা। তবে যেভাবেই হোক ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরু করার দাবী ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর।#
পার্সটুডে/বাদশাহ রহমান/২৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।