ইলিশের নিষিদ্ধ জালে অবাধে শিকার হচ্ছে জাটকা, প্রকাশ্যেই হচ্ছে বিক্রি
দেশের দক্ষিনাঞ্চলের নদ নদীতে অবাধে শিকার হচ্ছে ইলিশের পোনা (জাটকা)। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এই অঞ্চলের জেলেরা মাছ শিকার করলেও তা দেখভালে তেমন কোন নজরদারী নেই। স্থানীয় প্রশাসনের মাঠ কর্মকর্তারা মনোযোগী না থাকার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন অসাধু জেলেরা। আর এই জাটকা ইলিশ প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে বরিশালসহ দখিনের বিভিন্ন জেলার হাট বাজারসহ গ্রামের পারা মহল্লায়।
ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ ধরার সময় বাঁধা ও খুঁটিসহ বিভিন্ন ধরনের নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করছেন জেলেরা। এতে প্রতিদিন জাটকা ও ইলিশের রেণুসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা ধ্বংস হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন নদীতে ইলিশের বংশবিস্তার ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে মারা যাচ্ছে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা। অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালী একটি মহল কোস্টগার্ড ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এ জাল ব্যবহার করছে।
জেলেরা বলছেন, প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে প্রভাবশালী কয়েকজন মৎস্য ব্যবসায়ী মেঘনা নদীর বিভিন্ন স্থানে খুঁটিজাল ও বাঁধাজাল ব্যবহার করে জাটকা ও ইলিশের পোনাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা ধরছেন। সরজমিন তথ্যে দেখা গেছে, ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের ভাংতিরখাল ও কাচিয়া ইউনিয়নের কাঠিরমাথার মেঘনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে রয়েছে শতাধিক বাঁধাজাল। যার মধ্যে আটকা পড়ছে মাছের রেণু। পাশাপাশি রয়েছে খুঁটিজাল। নদীতে খুঁটি পুঁতে তার সঙ্গে একটি বিশেষ জাল বেঁধে নদী থেকে তোলা হচ্ছে মাছ ও রেণু। এ জালটি শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি কমে গেলে বিভিন্ন স্থানে জেগে ওঠা ডুবোচরে বেঁধে রাখা হয়। জোয়ারের সময় ওই চরে জমে থাকা পলিতে ইলিশ, পোয়া, বেলে ও চিংড়িসহ দেশীয় প্রজাতির মাছ ও পোনা চলে আসে। এরপর ভাটার সময় নিচে থাকা জাল প্রতিটি খুঁটির ওপরের অংশে বেঁধে দেয়া হয়। পানি নেমে গেলে জালে আটকা পড়ে জাটকা, ইলিশের পোনাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
ভোক্তাদের অভিযোগ এ অবস্থা চলতে থাকলে ইলিশের বংশ বিস্তার ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এ ব্যাপারে ভোলার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘নদীতে যেকোনো ধরনের নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ যাবত তারা অভিযান পরিচালনা করে নদী থেকে এ ধরনের জাল উৎখাত করতে সক্ষম হয়েছেন। এর পরও তাদের অজান্তে কোনো জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ী যদি এ ধরনের নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে, তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে ডিম ছাড়ার জন্য সাগর থেকে মা-ইলিশ নদীতে চলে আসে। সে সময় থেকে টানা চার মাস ওই মাছের রেণু বাড়তে থাকে। তাই এ সময়ে নদীজুড়ে থাকে ইলিশের পোনাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অবাধ বিচরণ।#
পার্সটুডে/বাদশাহ রহমান/বাবুল আখতার/২৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।