বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে চলব: একুশে পদক বিতরণকালে প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একুশ আমাদের শিক্ষা দিয়েছে মাথা উঁচু করে চলার, কারো কাছে কাছে মাথা নিচু না করা, নিজেদের গৌরব ও সম্পদ নিয়েই সামনে এগিয়ে চলা। একুশের সেই শিক্ষাকে বুকে ধারণ করে আমরা বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে চলব, কারো কাছে মাথা নিচু করব না। আগামী প্রজন্মকেও এজন্য নিজেদেরকে তৈরি করার আহ্বান জানান তিনি।

আজ (সোমবার) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০১৭ সালের একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ১৯৫৪ সালের আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট সরকারই উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকে সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেয়, একুশে ফেব্রুয়ারিকে মহান শহীদ দিবস হিসেবে পালন শুরু করে। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগই দেশের পক্ষ থেকে ইউনেস্কোতে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের প্রস্তাব দেয় এবং সেটি পাস হয়।

একুশ মাথা উঁচু করে যেকোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শেখায় বলে উল্লেখ করে একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরো বলেছেন, পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয়নি। ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে গ্রহণ করা এবং স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব গুণী ব্যক্তিত্ব এখনও আড়ালে আছেন, তাদেরকে খুঁজে বের করে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মানিত করা হবে। দেশ-জাতির জন্য তাদের অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে আমরা কৃতার্থ হব।

অনুষ্ঠানে ভাষা-শিল্প-সাহিত্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গৌরবময় অবদান ও কীর্তির স্বীকৃতিস্বরূপ ১৭ গুণী ব্যক্তির হাতে একুশে পদক ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন শেখ হাসিনা।পদক প্রাপ্তরা হলেন- ভাষা আন্দোলনের জন্য ভাষাসৈনিক অধ্যাপক শরিফা খাতুন, শিল্পকলায় (সংগীত) সুষমা দাস, জুলহাস উদ্দিন আহমেদ, ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম, শিল্পকলায় (চলচ্চিত্র) তানভীর মোকাম্মেল, শিল্পকলায় (ভাস্কর্যে) সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ, শিল্পকলায় (নাটক) সারা যাকের, সাংবাদিকতায় আবুল মোমেন ও স্বদেশ রায়, গবেষণায় সৈয়দ আকরম হোসেন, শিক্ষায় প্রফেসর ইমেরিটাস আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, সমাজসেবায় অধ্যাপক মাহমুদ হাসান, ভাষা ও সাহিত্যে (মরণোত্তর) কবি ওমর আলী, ভাষা ও সাহিত্যে সুকুমার বড়ুয়া, শিল্পকলায় (নৃত্য) শামীম আরা নীপা এবং শিল্পকলায় (সংগীত) রহমতউল্লাহ আল মাহমুদ সেলিম।

একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। অনুষ্ঠানে শিল্প-সাহিত্যসহ সমাজের বিভিন্ন অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২০