ঐক্য সংহতি, শান্তি ও সংলাপের রূপকার ইমাম খোমেনী
ইরানের ইসলামী বিপ্লবের মহান নেতা মরহুম সাইয়েদ রুহুল্লাহ খোমেনী (রহ.)-এর ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় ‘ঐক্য শান্তি ও সংলাপের রূপকার ইমাম খোমেনী (রহ.)’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২ জুন বিকেল ৪ টায় ঢাকার বি এম এ মিলনায়তনে ইরানি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।
খোমেনী (রহ.) ছিলেন কালের শ্রেষ্ঠ মহামানব’
সেমিনারে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘ইমাম খোমেনী (রহ.) ছিলেন আত্মপ্রত্যয়ী ও প্রবল আত্মবিশ্বাসী একজন সংগ্রামী মানুষ। ইরানি জনতার আত্মচেতনা এবং ইমামের চেতনার সাথে একাত্ম হয়েছিল বলেই ইরানের জনগণ একযোগে একই সুরে একই লক্ষ্যপানে ছুটে দেশটিতে এক বিরাট পরিবর্তন সাধন করতে সক্ষম হয়েছিল। অত্যাচারী রেজা শাহ পাহলভী ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা পালিয়ে গিয়েছিল। তিনি ছিলেন ধৈর্য্যশীল এবং সুগভীর ও দীর্ঘমেয়াদী চিন্তার এক জাতীয় ব্যক্তিত্ব। তার অনুমান শক্তি ছিল অত্যন্ত প্রখর। তিনি বিপ্লবী ছিলেন ও দেশের পটপরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছিলেন কিন্তু হত্যা, সন্ত্রাস ও ক্যু-এর রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন না। জনসংহতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। গণ-ঐক্যে বিশ্বাসী ছিলেন। সর্বদা ঐক্য সম্প্রীতি ও সংলাপে বিশ্বাসী ইমাম খোমেনী (রহ.) ছিলেন কালের শ্রেষ্ঠ মহামানব।
‘ইমাম ছিলেন ঐক্য ও সংলাপে বিশ্বাসী’
এইচ টি ইমাম বলেন, ইমাম খোমেনী দেশ ভাষা বর্ণ মাজহাব নির্বিশেষে সব মুসলমানদের মাঝে যেমন ঐক্য চেয়েছিলেন এবং সংলাপে বিশ্বাসী ছিলেন তেমনি অন্যান্য জাতি-ধর্মের মানুষের সাথেও সংলাপে ও ঐক্যে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি তাই একদিকে যেমন সমাজতান্ত্রিক রাশিয়ার নেতা মিখাইল গর্বাচেভকে সংলাপের অভিপ্রায়ে পত্র প্রেরণ করেছিলেন তেমনি গোড়া খ্রিস্টান সম্প্রাদায়ের নেতা পোপের সঙ্গেও শান্তি-সংলাপ ও আলোচনার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এটা তার এক বিরাট রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দার্শনিক দূরদর্শিতার পরিচায়ক যা তাঁর ব্যক্তিত্বের বিরাটত্বকে জাহির করে। প্রকৃত ইসলামের শিক্ষাই হচ্ছে এটা।
‘ইমাম খোমেনী ছিলেন ইলমে মারেফতসম্পন্ন ব্যক্তি’
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদের খতিব ড. সাইয়েদ ইমদাদ উল্লাহ বলেন,‘‘আল্লাহ যখন কোনো ব্যক্তিকে ভালোবাসেন ও পছন্দ করেন তখন আকাশের ফেরেশতারাও তাঁকে ভালোবাসে, আকাশ ভূমণ্ডল প্রকৃতির সকল কিছুই তাঁকে ভালোবাসে দুনিয়ার সকল মানুষ তাঁকে ভালোবাসে। তিনি (ইমাম খোমেনী) ছিলেন একজন মার্জায়ে তাকলিদ। ইলমে মারেফতসম্পন্ন ব্যক্তি। তিনি কামালিয়াত হাসিল করতে পেরেছিলেন। ইমাম খোমেনী (রহ.) নিজে যেমন আল্লাহকে ভালোবাসতেন তেমনি আল্লাহও তাকে ভালোবেসেছিলেন। এর অনেক নজীর তার জীবনেতিহাস থেকে পাওয়া যায়। গোটা ইরানি জাতি তাঁকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতো। আর ইরানের বাইরে মূসলিম উম্মাহ তাঁকে আজও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। তাঁর জানাজায় কোটি লোকের সমাগম তাকে ভালোবাসারই নিদর্শন। তিনি বড় একজন ওলি ছিলেন। তিনি আহলে বাইতের বংশোদ্ভূত ছিলেন এবং ছিলেন আহলে বাইতের একজন একনিষ্ঠ ভক্ত। তাঁর ওলিত্বের প্রমাণ তাঁর ইবাদত বন্দেগী, তাঁর প্রাত্যাহিক জীবন, শিক্ষাজীবন, সামাজিক জীবনযাপনের মাঝে বিদ্যমান রয়েছে। তাঁর বেশ কয়েকটি কারামত লক্ষ্য করা যায়। তাঁর কিছু অনুমান প্রতিফলিত হয়েছিল এবং তা ইরানি জাতিসহ মুসলিম বিশ্ব অনুভব করতে পেরেছিল।
তাবাস মরুভূমিতে ইমামের কারামত
ড. সাইয়েদ ইমদাদ উল্লাহ বলেন, ইমামের সবচেয়ে বড় কারামত তাবাস মরুভূমিতে মার্কিন হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়া। মার্কিন হেলিকপ্টার গানশিপের মাধ্যমে চোরাগুপ্তা হামলা চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল ইরানে। কিন্তু দেখা গেলো তারা সফল হলো না। হেলিকপ্টারগুলো তাবাস মরুভূমিতে পৌঁছতেই একটা ধুলিঝড় উঠেছিল। অথচ ইরানি আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সেদিন কোনো ঝড়ের আলামতই ছিল না। সারা দেশে কোনো ঝড় নয় কিন্তু তাবাসে তাণ্ডব চালাল সেই ঝড়। হেলিকপ্টার গানশিপগুলো একটার সঙ্গে আরেকটার টক্কর লেগে বিধ্বস্ত হয়ে জমিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদের খতিব আরও বলেন, ইমাম খোমেনী একজন আল্লাহর খালেস বান্দা ছিলেন। আবেদ ছিলেন। তাঁর ইবাদত আল্লাহ কবুল করেছিলেন। তাঁর জাতি ইরান আজকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে পড়েছে এবং সমস্ত মুসলিম উম্মাহ’র কল্যাণ চিন্তায় তারা নিয়োজিত। তবে একটি ভয়ানক ক্ষতিকর পরিস্থিতির আন্দাজ করা যাচ্ছে আজ। সাম্রাজ্যবাদী শক্তি এক মুসলিম শক্তিকে আরেক মুসলিম শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধাংদেহী করে তোলার জন্যে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আজকে যদি কোনো কারণে সৌদি-ইরান সংঘাত বেধে যায় তবে মুসলিম উম্মাহ’র বিরাট ক্ষতি হবে। রক্ত ঝরবে। মুসলিম বিশ্বের প্রাণ ও সম্পদ মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়বে। আমি মনে করি ইরানি জাতি অত্যন্ত ধৈর্যশীল জাতি। তাঁরা অতীতের মতোই এসব ষড়যন্ত্র ও মারাত্মক ক্ষতিসাধণের লক্ষ্যে সাম্রাজ্যবাদী তৎপরতার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ার থাকবে ও ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করবে। যে কোন উপায়ে সংঘাত পরিহার করে ইমাম খোমেনী (রহ.)-এর মতো সংলাপ ও শান্তির পথ বেছে নেবে বলে আমার বিশ্বাস।
‘ইমাম ছিলেন শান্তিকামী’
ঢাকায় নিযুক্ত ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের রাষ্ট্রদূত আব্বাস ভায়েজী দেহনবী বলেন,‘ইমাম খোমেনী (রহ.) ছিলেন এক মহান বিপ্লবী। তিনি ইরানে যে ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিপ্লব সম্পন্ন করেছিলেন তা সারা বিশ্বে প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছিল। তিনি সমাজবাদী বা সমাজতন্ত্রী ছিলেন না, বস্তুবাদী ছিলেন না, ছিলেন না ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী। তিনি ইসলামী নেতা ছিলেন। তবে তার ইসলামী চেতনার ভেতর সকল মানবিক মূল্যবোধগুলো ছিল। মুসলমানদের অধিকারের কথাগুলো যেমন ছিল তেমনি জাতিধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষের মানবিক মূল্যবোধগুলো ছিল। তিনি শান্তিকামী ছিলেন কারণ ইসলাম শান্তির পক্ষে। সেজন্যে তিনি নির্যাতিত মুসলিম জাতিগুলো ও অপরাপর মজলুম জাতিগুলোর পক্ষে কথা বলতেন। বিশ্বের জালিম শক্তিগুলো এবং অত্যাচারী রাষ্ট্রগুলো বিশ্ব শান্তির পথে প্রধান বাধা। যেমন ইসরাইল আজ অর্ধ শতাব্দি যাবৎ ফিলিস্তিনের মজলুম মুসলিম জনতার ওপর জুলুম নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব শান্তির পক্ষে তিনি ইসরাইলের বিপক্ষে তাঁর অবস্থানকে পরিষ্কার করেছিলেন। আর তার পক্ষে সেটি সম্ভব হয়েছিল বিপ্লবের সফলতার পর ইরানকে একটি ইসলামী রাষ্ট্রে রূপদানের মাধ্যমে। তিনি মুসলিম উম্মাহ’র উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘মুসলিম জাতির উচিত নিজের পায়ে দাঁড়ানো। পরাশক্তির ওপর নির্ভরশীলতা ও লেজুরবৃত্তি ছেড়ে দেয়া। তাদের উচিত ঈমানি শক্তিতে, আত্মশক্তিতে বলিয়ান হওয়া। আল্লাহ’র উপর ভরসা করে শিল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে স্বয়ংসম্পন্ন হওয়া।
বিপ্লবের আগে ইরানি জাতি ছিল অত্যাচারী রেজা শাহ পাহলভীর শোষণ নির্যাতনের নির্মম শাসনের আওতায়। সে ছিল সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার পুতুল সরকার। কিন্তু ইমাম তাকে উৎখাতের জন্যে কোনো সত্যিকার ইসলাম ও মানবতাবিরোধী হটকারী প্রক্রিয়া তথা সন্ত্রাস, বোমাবাজী, স্বশস্ত্র প্রক্রিয়ার আশ্রয় নেননি। গুপ্ত হত্যার পথ বেছে নেননি। যদিও তার বহু অনুসারী ও ঘনিষ্ঠ শিষ্য গুপ্তঘাতকের হাতে প্রাণ দিয়েছিল। তিনি গণসম্পৃক্তিতে বিশ্বাসী ছিলেন। জনস্রোতে ভেসে গিয়েছিল শাহী তখতো। অথচ আজকে একটি ক্রান্তিকাল লক্ষ্য করা যাচ্ছে আজকে আমরা দেখি দু’একটি সম্প্রাদায় ইসলামের নামে তাদের ব্যাখ্যার সাথে ভিন্নমতপোষণকারী মুসলিম এবং অমুসলিম ও নানা উপজাতি সম্প্রাদায়কে হত্যা করে চলেছে। হত্যা করে চলেছে যুবক, বৃদ্ধ ও শিশুকে। অত্যাচার করছে নারীদের প্রতি। তারা ইসলাম ও ইসলাম পূর্বযুগের ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোকে ধ্বংস করে চলেছে মনগড়া ব্যাখ্যা দিয়ে। যে নিদর্শনগুলো মানবেতিহাসের মহামূল্যবান সম্পদ। আজ দেখতে পাচ্ছি চরমপন্থা যা ইসলাম সমর্থিত নয়। সঠিক পথ নয়। কারণ মুসলমানদেরকে মধ্যমপন্থী হতে বলেছে।
‘অত্যাচারী শাহকেও আত্মশুদ্ধির নসিহত করেছিলেন ইমাম খোমেনী’
ইমাম খোমেনী (রহ.) ছিলেন একজন আরেফ তথা আল্লাহ'র খালেস বান্দা। তিনি ছিলেন একমন এক আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব যিনি নবীদের চরিত্র ও শিক্ষা থেকে শেখার চেষ্টা করেছেন। তাদেরকে অনুসরণ করেছেন। নবীদের আখলাক আত্মস্থ করে তা তাঁর নিজের জীবনের সাথে জড়িয়ে নিয়েছিলেন। তিনি মানুষকে নসিহত করতেন। তিনি অত্যাচারী শাহকেও আত্মশুদ্ধির জন্যে নসিহত করেছিলেন। তিনি এই শিক্ষাটা আরো পেয়েছিলেন শেষ পয়গম্বর (সা.)-এর নাতি হযরত ইমাম হুসাইন (আ.)-এর কাছ থেকে। ইমাম হোসাইন (আ.) অত্যাচারী ইয়াজিদ ও ইবনে জিয়াদ এবং তার সাঙ্গপাঙ্গদেরকে যেমনিভাবে নসিহত করেছিলেন তেমনি তিনি অত্যাচারী শাহকে ও তার সাঙ্গপাঙ্গদেরকে নসিহত করেছিলেন সংশোধনের। কিন্তু ইযাজিদের মতো শাহ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা সংশোধিত হয়নি।
‘ইমাম ছিলেন জ্ঞানবিজ্ঞান সচেতন আধুনিক মুসলমান’
ইমাম খোমেনী ইরানে সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ধনী দরিদ্রের ব্যবধান কমিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন ইসলামের আলোকে। তিনি একজন মহান আলেম, ওলি এবং আরেফ ছিলেন। তিনি ছিলেন আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞান সচেতন একজন আধুনিক মুসলমান এবং একজন উঁচু পর্যায়ের দার্শনিক ও কবি। তিনি শেখ সাদী, রুমি ও হাফিজকে আত্মস্থ করেছিলেন নিজেও লিখেছিলেন অসাধারণ আধ্যাত্মিক কবিতা যা আত্মউন্নয়ন ও ব্যক্তিসংশোধনের ক্ষেত্রে সহায়ক। তিনি কামনা করেছেন মুসলিম বিশ্বের ঐক্য ও সংহতি। তিনি কামনা করতেন শিয়া, সুন্নিসহ সকল মাজহাবী ঐক্য। মুসলমান ও মানবজাতির অধিকারের পক্ষে তাদের অভিন্ন প্রতিবন্ধকতার বিপক্ষে সোচ্চার ছিলেন তিনি। ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের পক্ষে তার বলিষ্ঠ পদক্ষেপ ছিল আল কুদস দিবস প্রবর্তন। এর মাধ্যমে তিনি সকল মুসলমানকে অভিন্ন প্লাটফরমে আনার চেষ্টা করেছে।
‘ইমাম খোমেনী ছিলেন মজলুম জননেতা’
ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সাইন্সেস-এর ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোলায়মান বলেন, ‘ইমাম খোমেনী (রহ.) ছিলেন মুস্তাদাফিন বা শোষিত বঞ্চিত জনতার অধিকারের পক্ষের এক আত্মপ্রত্যয়ী মহামানব। তিনি ছিলেন মজলুম জননেতা। তার নেতৃত্বে ইরানি জনতা তাদের জন্যে যে স্বপ্নের স্বদেশ প্রত্যাশা করেছিল তা তারা পেয়েছে। আজ বিশ্বসমাজে ইরানের যে স্বাধীনচেতা স্বতন্ত্র অবস্থান আমরা লক্ষ্য করছি সেটা ছিল সেদিনের স্বপ্নের ফসল। সেটা ছিল ইমাম খোমেনী (রহ.) ও তাঁর রেখে যাওয়া সুযোগ্য ছাত্র অনুসারীদের সুযোগ্য নেতৃত্বের ফসল। ইমাম খোমেনী (রহ.)-এর নেতৃত্বের প্রভাব ছিল অত্যন্ত সুগভীর। ছাত্রজীবনে তিনি কঠোর অধ্যবসায়ী ছিলেন এবং ছিলেন আত্মপ্রত্যয়ী। তার ব্যক্তিজীবনও নানাভাবে ক্ষতবিক্ষত হয়েছিল। তিনি শৈশবে তার পিতা-মাতাকে হারান। তিনি তার শৈশব ও ছাত্রজীবনে কষ্টসহিষ্ণু ছিলেন। আশৈশব এই জীবন সংগ্রাম থেকেই তিনি হয়ে ওঠেছিলেন সময়ের শ্রেষ্ঠ মহামানব। তার জীবন থেকে আমাদের অনেক কিছুই শেখার আছে। তিনি ছিলেন শাশ্বত সুন্দর ও প্রকৃত ইসলামী আদর্শের উপর দণ্ডায়মান একজন ঈমানদার ব্যক্তি।
‘ইমাম ছিলেন ঐক্য সংহতি শান্তি প্রক্রিয়ার নায়ক’
বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, গবেষক, লেখক কবি ও ইরান গবেষক ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী বলেন, ‘‘ইমাম খোমেনী (রহ.)-এর মতো একজন মহান আলেম, আধ্যাত্মিক সাধক, অলি, ইনসানে কামেল, প্রজ্ঞাবান দার্শনিক, সর্বজন শ্রদ্ধেয় সফল বিপ্লবী নেতার পক্ষে মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় যে বিরাট কাজটি আঞ্জাম দেয়া সম্ভব হয়েছিল তা হচ্ছে ইরানকে বিশ্বের দরবারে একটি সফল ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। যেখানে বিশ্ববাসীর মনে একটি ধারণা তৈরি হয়েছিল যে, ১৪০০ বছর আগে মহানবী (সা.) যে ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে সে ধরণের কোনো রাষ্ট্রব্যবস্থা আজ আর সম্ভব নয়। সে ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করে ইমাম খোমেনী (রহ.) ইরানকে একটি আধুনিক ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে দুনিয়ার বুকে একটি উদাহরণ সৃষ্টি করলেন যে, ইসলামের আলোকে আজও রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব। সেজন্যে প্রয়োজন ইসলাম ও আধুনিক চিন্তাধারা সমন্বয়ে সমাজের সব শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষ নিয়ে মতবিনিময় করে একটি গভীর ইজতেহাদী সিদ্ধান্তে পৌঁছা। যে যোগ্যতা আজও অনেকজনের মাঝে নেই। সেটা ইমাম খোমেনী (রহ.)-এর ছিল। তিনি ছিলেন একজন মুজতাহিদ আলেম ও মারজা। এবং তিনি যে ঐক্য সংহতি শান্তি প্রক্রিয়ার নায়ক ছিলেন সেটি সম্ভব হয়েছিল এই ইসলামী রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠার কারণেই। তিনি ছিলেন একজন সফল বিপ্লবী নেতা। তাঁর নেতৃত্বে এই ইসলামী রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠিত না হলে তিনি বিশ্বনেতায় পরিণত হতে পারতেন না। তাঁর পক্ষে ঐক্য সংহতির লক্ষ্যে মুসলমান ও অপরাপর নির্যাতিত জাতিসমূহের উদ্দেশ্যে সম্প্রীতি ও সচেতনতার বাণী-বিবৃতি প্রদানের প্লাটফরমটি তিনি পেতেন না। বিশ্বে তার কথাগুলো গৃহিত হতো না এবং প্রভাব ফেলত না। কাজেই ঐক্য সংহতি ও শান্তি সংলাপের জন্যে ইরানের ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্টা ছিল একটি যুগান্তকারী মাইলফলক।
ঐক্য, সম্প্রীতিও সংহতির জন্য ইমামের চেষ্টা ছিল আজীবন
ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী বলেন, ইমাম খোমেনী মুসলমানদের বিভিন্ন মাজহাবের মানুষদের মাঝে ঐক্য, সম্প্রীতি ও সংহতির জন্যে আজীবন কাজ করেছেন, চেষ্টা প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তিনি তাঁর দাওয়াতি কাজগুলো চালিয়ে গেছেন অবিরাম মেহনত করেছেন সময় দিয়েছেন। এই ঐক্য সংহতির জন্যে তিনি সকল মাজহাবের মুসলমানদের সাধারণ প্রতীকগুলো বেছে নিয়েছেন। তিনি মহানবী (সা)-এর জন্মমাস মাহে রবিউল আওয়ালের ১২ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত দিবসকে ঐক্য সপ্তাহ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তিনি বিশ্ব শান্তির জন্যে হুমকি হিসেবে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলকে চিহ্নিত করেছিলেন। এবং সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকাকে বড় শয়তান হিসেবে চিহ্নিত করে বলেছিলেন এরাই আসলে বিশ্বকে অস্থিরকারী দেশ। এই দেশগুলো নিজেদের দুনিয়াবী লোভ লালসা ও সম্পদের পাহাড় জমানোর প্রচেষ্টার লক্ষ্যে অন্য রাষ্ট্রগুলোর ওপর যে অর্থনৈতিক ও সামরিক আগ্রাসন চালায় ও তাঁবেদার বানানোর প্রচেষ্টা করে ও বিভিন্ন দেশে তাদের পুতুল সরকার দাঁড় করায় সেটাই বিশ্ব শান্তি, সম্প্রীতি ও সংলাপের পরিবেশ ভণ্ডুলকারী প্রধান সমস্যা। আজ পাশ্চাত্যের মদদে প্রতিষ্ঠিত সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইল ৫০ বছর যাবত ফিলিস্তিনি মুসলমান গণমানুষের ওপর যে জুলুম নিপীড়ন চালাচ্ছে এবং সারা আরব বিশ্বে শান্তি বিনষ্ট করছে এবং মুসলমানদের প্রথম কিবলা যেখানে রয়েছে অধিকাংশ নবী রাসুলদের (আ) স্মৃতি যা মুসলমানদের অন্যতম গৌরব ও ঐক্যের প্রতীক, এর গুরুত্ব উপলদ্ধির জন্যে ইমাম খোমেনী (রহ.) মাহে রমজানের শেষ শুক্রবারকে ইয়াওমুল কুদস বা আন্তর্জাতিক কুদস দিবস ঘোষণা করে ঐক্য প্রক্রিয়াকে আরো গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ করার চেষ্টা করেন। যা ছিল ইমামের অন্যতম যুগান্তকারী ঘোষণা।
শিয়া-সুন্নি ঐক্য প্রতিষ্ঠায় ইমামের তৎপরতা
ঈসা শাহেদী আরও বলেন, তিনি শিয়া-সুন্নি ঐক্যের জন্যে ব্যাপকভাবে তৎপর ছিলেন। তিনি বলেছিলেন ‘যারা শিয়া ও সুন্নিদের মাঝে বিরোধ তৈরি করে তারা শিয়াও নয় সুন্নিও নয় তারা হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদীদের দালাল যারা চায় মুসলিম দেশগুলোকে তাঁদের হাতে তুলে দিতে।’’
তিনি হজ্জ্বের মৌসুমে মক্কা ও মদীনায় গমণকারী শিয়া মুসলমানদেরকে বলেছিলেন, তারা যেন সেখানে আলাদাভাবে কোনো জামায়াত না করে মক্কা-মদিনার আলেমদের পেছনেই নামাজ পড়েন। আজও ইরানি মুসলমানরা সেটাই করে। আজকে সাম্রাজ্যবাদীরা শিয়া-সূন্নিদের মাঝে নতুন করে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে চলেছে। এর ফলে আমরা বিশ্বে হত্যা রক্তপাত দেখতে পাচ্ছি। ইসলামের নামে কিছু সন্ত্রাসী গ্রুপকে দেখতে পাচ্ছি তারা তাদের নিজস্ব ব্যখ্যার সাথে দ্বিমত পোষণকরা মুসলমান ও শিয়াদেরকে নির্বিচারে হত্য করে চলেছে। শিয়া-সুন্নি সমন্বয় সম্প্রীতি ঐক্যের বিপরিতে বিদ্বেষকে উস্কে দেয়ার পেছনে কাজ করছে সাম্রাজ্যবাদের দোসর ও পদলেহী মধ্যপ্রাচ্যের কিছু রাজা-বাদশা ও স্বৈরাচারী সামরিক শাসক ও তাদের কাছ থেকে সুবিধাভোগী তাঁবেদার আলেম-উলামা।
জনাব শাহেদী বলেন. ‘‘আমার অত্যন্ত সৌভাগ্য যে বিপ্লব চলাকালিন দীর্ঘদিন আমি ইরানে ছিলাম এবং ইমামকে কাছে থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। নবীবংশের সন্তান এই মহাপুরুষের পবিত্র অবয়ব সৌম্য চেহারা সহসাই কাউকে আকৃষ্ট করত। আমার এও সৌভাগ্য হয়েছে এই মহান ব্যক্তির নামাজে জানাজায় অংশগ্রহণের। ইমাম খোমেনী (রহ.) সম্পর্কে তাঁর স্মৃতি বর্ণনা করতে গিয়ে এক পর্যায়ে ড. ঈশা শাহেদী ভীষণ আবেকপ্রবণ হয়ে যান এবং কেঁদে ফেলেন।
‘ইমামের আদর্শ আলোকবর্তিকা রূপে আলো বিলিয়ে যাচ্ছে’
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকাস্থ ইরানি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সিলর সাইয়েদ মুসা হোসাইনি বলেন, বিশ্ববরেণ্য নেতা ইমাম খোমেনী (রহ.) তাঁর রেখে যাওয়া আদর্শের জন্যে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। তাঁর আদর্শ আলোকবর্তিকা রূপে আলো বিলিয়ে যাচ্ছে। এই মহান আরেফ, সাধক পুরুষের জীবন ও তাঁর ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন দিক নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে, গবেষণা হয়েছে। পিএইচডি হয়েছে। আজকের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে “ঐক্য সংহতি, শান্তি ও সংলাপের রূপকার ইমাম।”
সাম্রাজ্যবাদীদের অপচেষ্টা সম্পর্কে সচেতন ছিলেন
তিনি সবসময় ঐক্য সংহতির আহ্বান জানাতেন। সত্য-সুন্দরের দাওয়াত দিতেন। মুসলিম ও মানবতার ঐক্যের লক্ষ্যে দিকনির্দেশনাপূর্ণ বক্তব্য রাখতেন। বাণী ও বিবৃতি পেশ করতেন। সকল বিভেদ ভুলে এক হওয়ার আহ্বান জানাতেন। ঐক্য ও শান্তি বিনষ্টের পথে সাম্রাজ্যবাদী ও তাদের দোসরদের সুবিধাবাদী আচরণ ক্ষতিকর প্রচেষ্টার ব্যাপারে তিনি সচেতন ছিলেন এবং জনগণকেও তিনি সচেতন থাকার পরামর্শ দিতেন। তাঁর এসব প্রচেষ্টা বিশ্বের সমগ্র ইসলামী জাতি ও অপরাপর মানবজাতির জন্যে এক মাইলফলক। ফের্কায়ী ভেদাভেদকেন্দ্রিক বৈষম্য এবং একে কেন্দ্র করে বিদ্বেষের ব্যাপারে তিনি সচেতন ছিলেন। ছোটখাট মতপার্থক্য নিয়ে তিনি বিদ্বেষ পছন্দ করতেন না। আজকে মুসলমনাদের অভিন্ন শত্রু যারা মুসলমানদের সম্পদ শুষে নিচ্ছে সেই আমেরিকা ও ইসরাইল এবং তাদের দোসররা মুসলমানদের ভেতর মতপার্থক্যকে বড় করে হিংসা বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিচ্ছে। তারা এক মুসলমানকে আরেক মুসলমানের বিপক্ষে মুখোমুখি দাঁড় করাতে সক্ষম হচ্ছে। আজ এটি একটি আপদরূপে আবির্ভূত হয়েছে। যা মুসলিম বিশ্বে ভয়াবহ বিপদের সম্ভাবনা তৈরি করছে। তারা ধর্মীয় ও জাতিগত সংঘাত চাপিয়ে দিতে সক্ষম হচ্ছে। মুসলমানের মাধ্যমে মুসলমানকে ধ্বংসের জন্যে ইসলামের নাম দিয়ে বিভিন্ন গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। তারা সন্ত্রাস গোঁড়ামী, দ্বন্দ্ব-বিদ্বেষের মাধ্যমে ইসলামের সুমহান আদর্শ সম্পর্কে একটি ভয়াবহ নেতিবাচক ধারণা তৈরি করেছে। ঠিক এই কাজটিই চেয়েছিল ইসলাম বিরোধী পরাশক্তিগুলো। আজ ইসলামের ভাব-অবয়বের ভীষণ ক্ষতি হয়েছে বিশ্বে। আজ এই সময়ে মহানবী (সা)-এর খাঁটি উম্মত ইমাম খোমেনী (রহ.)-এর মতো মহান ব্যক্তির আদর্শকে সামনে রেখে আমাদের ঐক্য সংহতিকে আরো সমন্বিত করতে হবে।
‘ইমাম ছিলেন একজন কালজয়ী আধ্যাত্মিক নেতা’
সেমিনারের প্রবন্ধকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড মুহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান খান তার প্রবন্ধে বলেন, ‘‘শতাব্দীর মহানায়ক মহান ইমাম ছিলেন একজন কালজয়ী আধ্যাত্মিক নেতা। তাঁর নামটি ছিল রুহুল্লাহ। তিনি একদিকে যেমন আধ্যাত্মিকভাবে রুহানী কামালিয়াত হাসিল করেছিলেন। তেমনি ছিলেন একজন সফল সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতা। তাঁর কাছ থেকে আমরা ঐক্য সংহতি ও সম্প্রীতির নানা চেতনা পাই। তিনি ঐক্য সম্প্রীতি ও সংলাপের পক্ষে ছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন আন্তঃ মুসলমানে ঐক্য, আন্তঃ মাজহাবী ঐক্য, আন্তঃধর্মীয় ঐক্য, আন্তঃ রাজনৈতিক মতাদর্শগত সংলাপ এবং জাতিতে জাতিতে ঐক্য। তার আদর্শের প্রভাব যেমন মুসলমানদের মাঝে পড়েছিল তেমনি, আফ্রিকা ল্যাটিন আমেরিকার জাতিরাষ্ট্রগুলোর মাঝেও পড়েছিল। তিনি বলতেন, আমাদের প্রধান সমস্যা অনৈক্য নিজেদের অনৈক্যই আমাদেরকে বিপদে ফেলে যেমনি ভাবে অনৈক্যের কারণে দলছুট ভেড়া পড়ে বাঘের কবলে।
ইরানি জাতি ইমাম খোমেনী (রহ.)-এর মতো একজন সুযোগ্য নেতা পেয়েছিল। এখনো সেখানে তাঁর সুযোগ্য উত্তরসুরীরা রয়েছে। তিনি শিয়া-সুন্নি ঐক্য সবসময় কামনা করেছেন। তিনি ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত ও আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষিতের মধ্যেও ঐক্য স্থাপনে সক্ষম হয়েছেন। ইরানে আজ এই দুই শিক্ষাকে অপূর্বরূপে সমন্বিত করা হয়েছে।
ইমামের কয়েকটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ
মহানবী (সা)-এর জন্মদিবসকে কেন্দ্র করে মহানবী (সা)-এর জন্ম মাস মাহে রবিউল আউয়ালের ১২ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত মোট ছয় দিনকে মুসলিম ঐক্য সপ্তাহ ঘোষণা, ইসরাইলি দখলদারদের কাছ থেকে মুসলমানদের অভিন্ন ঐক্যের প্রতীক, নবী রাসুলদের স্মৃতিবিজড়িত মুসলমানদের প্রথম কিবলা আল কুদস মুক্তির লক্ষ্যে জুমাতুল বিদাকে আন্তর্জাতিক আল কুদস দিবস ঘোষণা এবং মহানবী (সা), পাক কুরআন ও নবীবংশ ও নবীপরিবার সম্পর্কে খারাপ মন্তব্যকারী নিন্দিত পুস্তক স্যাটানিক ভার্সেস রচয়িতা ব্রিটেনের কুখ্যাত লেখক সালমান রুশদীর বিরুদ্ধে যুগান্তকারী ফতোয়া মুসলিম ঐক্যের পথে তাঁর একেকটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তাঁর মহান জীবন নিয়ে অতীতেও গবেষণা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে ইনশাল্লাহ
পবিত্র কালামে পাক থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে সেমিনার শুরু হয়। পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ক্বারী মাহমুদুল হাসান। সেমিনারে ইমাম খোমেনী (রহ.) কে নিবেদিত ‘তিনি কালের শ্রেষ্ঠ মহানায়ক’ শীর্ষক একটি স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি আমিন আল আসাদ এবং ইমামকে নিবেদিত কবি আবদুল হাই শিকদার রচিত একটি বিখ্যাত কবিতা ‘ইমাম’ আবৃত্তি করেন লেখক গবেষক হুজ্জাতুল ইসলাম আবদুল কুদ্দুস বাদশা।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৪