ভয়াবহ বন্যার কবলে বাংলাদেশ: বাড়ছে মৃতের সংখ্যা ও জনদুর্ভোগ
(last modified Mon, 14 Aug 2017 12:46:51 GMT )
আগস্ট ১৪, ২০১৭ ১৮:৪৬ Asia/Dhaka
  • ভয়াবহ বন্যার কবলে বাংলাদেশ: বাড়ছে মৃতের সংখ্যা ও জনদুর্ভোগ

বাংলাদেশে টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে ফুঁসে উঠেছে পদ্মা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র। একইসাথে এসব প্রধান নদ-নদীর শাখা-প্রশাখাগুলোতেও পানি তীর উপচে দু'পারের গ্রাম-গঞ্জ, লোকালয়, ক্ষেত-খামার, রাস্তাঘাট প্লাবিত করে দিচ্ছে দ্রুত গতিতে।  আগামী তিন দিন এসব নদীর পানি আরও বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

ওদিকে, পানি বৃদ্ধির কারণে দ্বিতীয়বারের মতো বন্যা দেখা দিয়েছে দেশের উত্তর এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে।

পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে যমুনা, তিস্তা, ধরলা, আত্রাইসহ সব প্রধান নদ-নদীর পানি বেড়ে  উত্তর ও উত্তর পূর্বাঞ্চলের ১৪ জেলা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। আজ  দিনাজপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, বগুড়া, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ ও জামালপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, আজ (সোমবার) সকাল নয়টায় পদ্মা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্রসহ দেশের ২০টি নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।  

বড় নদ-নদীগুলোর মধ্যে সিরাজগঞ্জে বাহাদুরাবাদে যমুনার পানি ১১৮ সেন্টিমিটার, কাজীপুরে ১০০ সেন্টিমিটার; কুড়িগ্রামে চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র ১১৮ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। গোয়ালন্দে পদ্মার পানি বয়ে যাচ্ছে বিপদসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। এ ছাড়া কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি ১৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে।

এদিকে, আজ সকালে নেত্রকোনায় জারিয়া-জঞ্জাইলে কংস নদের পানি বিপদসীমার সবচেয়ে বেশি ১৮১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বয়ে ছিল যাচ্ছিল।

সিলেটে কানাইঘাটে সুরমা নদীর ছিল বিপদসীমার ৯৭ সেন্টিমিটার ওপরে। আর অমলশীদে কুশিয়ারার পানি ছিল বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার ওপরে।

৩ জেলায় ১৮ জনের মৃত্যু

ওদিকে, বন্যায় জনদুর্ভোগের সাথে মৃত্যুরও খবর আসছে। দিনাজপুর, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে বন্যায় আজ সোমবার শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ হয়েছে বেশ কয়েকজন। এ নিয়ে তিন দিনে বন্যায় তিন জেলায় ১৮ জনের মৃত্যু হলো। এর মধ্যে গত দুই দিনে দিনাজপুরেই মারা গেছে ১৩ জন।

বন্যার কারণে দিনাজপুরের সঙ্গে ঢাকাসহ সারা দেশের রেল যোগাযোগ গতকাল রোববার সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে।

নীলফামারীর সৈয়দপুরের বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। পানি বাড়ছে, নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আজ (সোমবার) সৈয়দপুর বিমানবন্দরের দক্ষিণাংশের দেয়াল ভেঙে বন্যার পানি ঢুকতে শুরু করেছে।

'বন্যার্তদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ আছে'

আজ সকালে সৈয়দপুর শহরের পাটোয়ারীপাড়ায় খড়খড়িয়া নদীর ভেঙে যাওয়া বাঁধ পরিদর্শন করেছেন পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।

মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সৈয়দপুর শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙে জনপদটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কেবল সৈয়দপুর নয়, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, রংপুরসহ বেশ কিছু এলাকায় বাঁধ ভেঙে গেছে।

এ সময় তিনি বলেন, বন্যার্তদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ আছে।

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করছে: মায়া

এদিকে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, তাঁরা বন্যার্ত মানুষের পাশে আছেন।

আজ দুপুরের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে ত্রাণমন্ত্রী বন্যা মোকাবিলায় এ পর্যন্ত সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের বিবরণ দেন । এসময় মন্ত্রী অভিযোগ করেন, বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি ‘রাজনীতি’ করছে।

বিভিন্ন জেলায় বন্যার ভয়াবহ পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ করছে বিএনপি।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান/আশরাফুর রহমান/১৪

 

ট্যাগ